আজ চব্বিশ বছর বিদেশ আছি। বাসা থেকে কাজে আসি আর কাজ থেকে
বাসায় যাই। তার বাইরে কোন দিন এক পা’ও দেই নাই। কাঁচাবাজার যা লাগে বাবু’র আব্বা
নিয়ে আসে। জামা কাপড় ওই ভাল চিনে, ওর পছন্দ ভাল। বাজারে গেলেও বাবু’র আব্বু’র
সাথেই যাই।
আজকে বিশ বছর চাকুরী করি। বেতনে’র টাকা সবটা বাবু’র আব্বুকে
দিয়ে দেই। ওই সব কিছু দেখাশোনা করে তো। কোনদিন বেতনের টাকা থেকে একটা বার্গার
কিনেও খাই নাই।
বাবু’র আব্বু অন্য জামা কাপড় পরা পছন্দ করে না। ঠান্ডা হলেও
তাই শাড়ি’ই পরি। ওর শাড়ি’ই পছন্দ।
বিয়ের আগে অনেক সাজতাম, অনেক ফ্যাশন করতাম, হাত ভর্তি নানা
রঙের কাঁচের চুড়ি, ম্যাচিং বড় টিপ ছাড়া তো শাড়িই পরতাম না। বাবু’র আব্বুর আবার এসব
পছন্দ না। তাছাড়া বয়স ও হয়ে গেছে, আর কত, হিজাব করি।
বাবার অনেক ইচ্ছে ছিলো আমি সরকারী অফিসার হবো। ছোটবেলা
থেকেই আমাকে বার বার বলেছে। বিসিএস দিলাম, তখন বিয়ে হয়ে গেলো। বিয়ের পরে দেখলাম,
বিসিএসে টিকেছি। শাশুড়ি’র আবার চাকুরী করা বউ পছন্দ না। বাবু’র আব্বু আবার তার
মাকে খুব ভালবাসে, দুঃখ দিতে পারে না। তাই আর চাকুরী করা হয় নি। দেশেও যখন করি নি
তখন বিদেশেও আর ভাবি নি। আর বাবু’র আব্বুর টাকায় তো আমাদের চলেই যায়।
শুটকি মাছ আমার খুব পছন্দ। আমার বাবা মায়ের ও খুব পছন্দ,
ছোটবেলা অনেক খেয়েছি, খুব হত আমাদের বাড়িতে। বাবু’র আব্বু শুটকি’র গন্ধ নিতে পারে
না তাই আর রান্না করি না। বাইম মাছ আমি খেতে পারি না, কেমন সাপ সাপ দেখতে। বাবু’র
আব্বুর আবার ভীষণ পছন্দ তো, ওকে করে দেই। আমার শাশুড়ি’র কাছ থেকে ভাল করে শিখে
নিয়েছি। এখন ঠিক ওনা’র মত পারি।
সুখী সুখী গলায় অহংকারের সাথে এই কথা গুলো যারা বলেন, তাদের
মধ্যে প্রফেশনাল মেয়ে থেকে আমার মত আকাট মূর্খ মেয়ে ও আছে।
০৬/০৯/২০১৭
No comments:
Post a Comment