Thursday 29 March 2018

ডাচ নির্বাচন

গতকাল মহাসমারোহে নেদ্যারল্যান্ডসে পৌরসভা নির্বাচন ও গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সেবা’র জন্যে উপদেষ্টা মন্ডলী’র প্রয়োজনীয়তা’র ওপর নির্বাচন হয়ে গেলো। যদিও এই সমারোহ টের পাওয়ার কোন উপায় নেই। কোলাহলবিহীন, প্রার্থীবিহীন, হাকডাকবিহীন, মিছিলবিহীন ম্যান্দামারা নির্বাচন। ভোট দিলে ফ্রিজ, কালার টিভি, এমনকি বিরিয়ানি খাওয়ানো’র ও কোন প্রতিশ্রুতি নেই। নিজের দরকার মনে হলে এসে ভুটিয়ে যাও, এমন নিদারুন অবস্থা। কি আর করা, তবুও যেয়ে নাগরিক দায়িত্ব পালন করে ভুটিয়ে এলুম। সামনের চার বছরের জন্যে প্রার্থী নির্বাচন করার দায়িত্ব এই নগরীর বাসিন্দাদের। এন্ডহোভেনের পৌরসভা’র সদস্য সংখ্যা পয়তাল্লিশ জন।


নির্বাচন হচ্ছে, আর যেয়ে মুখ বুজে একখানা ভোট ঠেকিয়ে আসবো, সেই ভাল বান্দা/বান্দী কি আমি? বসে বসে নেটানেটি করা হলো। কেন, কাকে, কি কারণে ভোটাবো সেটা জানতে তো হবে। নেট গুতাতে গুতাতে খুব ভাল একটা “প্রশ্নমালা” পেলাম। “প্রশ্নমালা”টি তৈরি করেছে, “দৈনিক এন্ডহোভেন”। আপনি আপনার শহরে কি কি চান, কি কি পেতে পারেন, কারা কি কি পরিবর্তন, পরিবর্ধন করবে বলে কি কি আশ্বাস দিয়েছে, সেরকম ত্রিশটি প্রশ্নের জবাবের ওপর ভিত্তি করে আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, কোন দলের প্রার্থীকে আপনি আপনার শহরের জন্যে চান।


প্রার্থীদের দেয়া প্রতিশ্রুতির ওপর ভিত্তি করে এই জরিপ তৈরী করা হয়েছে। উত্তর দেয়ার সুযোগ আছে তিন রকম, ১. চাই, ২. কোন মতামত নেই ৩. চাই না।


উদাহরণস্বরুপ কিছু প্রশ্নঃ
পুরনো সুইমিং পুলটি মেরামত করে, আধুনিক সুবিধা দিয়ে নতুন করে চালু করা প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন নাকি ভেঙে ফেলে সেখানে অন্য একটা পার্ক তৈরী করা যেতে পারে?
শহরের ভেতরে গাড়ি চলাচল আরও কমিয়ে দেয়া প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন?
পুলিশের গায়ের ভেতরে ক্যামেরা কি অপরাধ কমাতে সাহায্য করবে বলে আপনার ধারনা?
রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীদের জন্যে আলাদা বসবাসের জায়গা দেয়া উচিত?
নতুন চাকুরী ও কাজের জন্যে কি এ শহরের বেশি বেশি বিনিয়োগ দরকার?
ইত্যাদি ইত্যাদি ---- আগ্রহীদের জন্যে মন্তব্যের ঘরে লিঙ্কটি সংযুক্ত করে দেয়া হলো।


আমি নিবিষ্ট মনে চরম আন্তরিকতায় মনের মাধুরী মিশিয়ে এই “প্রশ্নমালা” শেষ পর্যন্ত পূরণ করলাম। দুই দলের সাথে পঞ্চাশ ভাগ মিল হলো, আর একদলের সাথে সাতচল্লিশ ভাগ তাই পঞ্চাশ ভাগ ওয়ালা একজনকেই ভোট দিলাম


এখানের নির্বাচনে আইভী – শামীম যত জন ইচ্ছে দাঁড়াতে পারে এক দলের হয়েই। “জো জিতা বোহী সিকান্দার” ---আমি একজন বিদেশী প্রার্থীকে (নন ডাচ) ভোট দিয়েছি। প্রার্থী লিস্ট থেকে বাছাই করলাম। আমার ধারনা, শুধু ইউরোপীয়ান পোশাক পরলে, ইউরোপীয়ান খাবার খেলেই “ইন্টিগ্রেশান” হয় না। যেহেতু দিনের পর দিন অন্যান্য নাগরিকের মত আমরাও সব ধরনের “কর” পরিশোধ করে যাই তাই নাগরিক ও জন জীবন গঠনে মতামত রাখতে অধিবাসী ডাচ নাগরিকদেরও এগিয়ে আসা উচিত, সুযোগ পাওয়া উচিত। আমরা যে এখন এই সমাজেরই অংশ, বাইরের কেউ নই সেটা প্রতিষ্ঠিত করার সবচেয়ে সুন্দর রাস্তা তো এটাই।

প্রশ্নমালা পূরণ করতে করতে ভাবছি হায় ডিজিটাল বাংলাদেশ - তুমি এসব থেকে কত দূরে।


https://www.gemeentekieswijzer.nl/eindhoven/#intro

No comments:

Post a Comment