Thursday 9 December 2021

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – টুয়েন্টি সিক্সথ নভেম্বর টুয়েন্টিটুয়েন্টি ওয়ান

প্রিমিয়ে রুতেঃ চৌদ্দই ডিসেম্বর দুই হাজার বিশে প্রথমবারের মত নেদারল্যান্ডসে লকডাউন হয়েছিলো, এই বছরের সাথে গত বছরের পার্থক্য হলো, বেশীর ভাগ মানুষরেই এবছর ভ্যাক্সিন দেয়া। যার ভ্যাক্সিন দেয়া আছে তার করোনার কারণে ইনটেন্সিভ কেয়ারে আসার সম্ভাবনা শতকরা পঁচিশ ভাগ কম। আগামী তিন সপ্তাহের জন্যে এই নিয়মগুলো থাকবে তারপর অবস্থা বুঝে আবার বিবেচনা করা হবে। সামনের চৌদ্দই ডিসেম্বর আবার আপনাদের সাথে পর্ববর্তী করনীয় নিয়ে কথা হবে। বারোই নভেম্বর থেকে দেয়া সব নিয়মগুলো বলবৎ থাকবে আজকের গুলো তার ওপর দিয়ে প্রযোজ্য হবে। আটাশে নভেম্বর রোববার থেকে সামনের তিন সপ্তাহ, সন্ধ্যা পাঁচটা থেকে সকাল পাঁচটা পর্যন্ত সমস্ত কিছু বন্ধ থাকবে। সুপারমার্কেট, ওষুধের দোকান সন্ধ্যা আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। গাড়ির তেলের দোকান আর চিকিৎসাকেন্দ্রগুলো খোলা থাকবে তাদের স্বাভাবিক সময়সূচী অনুযায়ী। প্রফেশনাল টুর্নামেন্টগুলো চলবে তবে দর্শকবিহীন। ক্ষতিগ্রস্ত বিভাগগুলোকে সমস্ত রকম সহযোগিতা দেয়া হবে। আর বিশেষজ্ঞদের সাথে সব সম্ভাবনা দেখা হচ্ছে, ভবিষ্যতে এরকম বন্ধ করে দেয়ার পরিস্থিতি কি করে এড়ানো যায়। যেখানে যেখানে বসার স্থান নির্দিষ্ট করে দেয়া আছে সেখানেও, মাস্ক আর দেড় মিটারের সামাজিক দূরত্ব বাধ্যতামূলক করা হলো। নির্দিষ্ট ধারন ক্ষমতার এক তৃতীয়াংশ মানুষ আসতে পারবে। আর দোকানে কিংবা যেসব জায়গায় মানুষ চলাচল করে সেখানে প্রতি পাঁচ বর্গমিটারে একজন মানুষ থাকবে। যতদূর সম্ভব ভ্রমণ না করাই শ্রেয়। চারজনের বেশী কোথাও অতিথি না হওয়া, এক বাসায় আতিথেয়তা নেয়ার পর সেদিনই অন্য আর এক বাসায় না যাওয়া। অন্য বাসায় যাওয়ার আগে সেলফ টেস্ট করিয়ে নেয়া। কিংবা একদিনে দুইবার অতিথি আসার আগে হোস্ট আগে সেলফ টেস্ট করে নেয়া। অফিসে দেড় মিটারের সামাজিক দূরত্ব আবশ্যিক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। এমন নয় যে সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে না, তবে স্কুল বন্ধ করে দিলে বাচ্চাদের মানসিক ও শারীরিক সমস্যা এত প্রবল আকার ধারণ করে এবং সামাজিক জীবনের এর প্রভাব এত মারাত্বক পরে যে যতদূর পারা যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে রাখার চেষ্টা করা হবে। হাঁটার সময় বাচ্চাদের মাস্ক পরতে হবে। গার্জেনদের বলছি, বাচ্চাদের পৌঁছে দেয়ার দরকার নেই, তারা একাই স্কুলে আসুক। প্রাইমারি স্কুলের গ্রুপ সিক্স থেকে শুরু করে প্রত্যেক ক্লাশের টিচার আর ছাত্রদের সপ্তাহে দু’দিন সেলফ টেস্ট করা বাধ্যতামূলক। শিক্ষার সাথে যুক্ত প্রত্যেকটি মানুষকে তাদের আন্তরিকতা আর সদয়তার জন্যে পুরো জাতির পক্ষ থেকে আবারও আমার আন্তরিক ধন্যবাদ রইলো। সর্ত্তোধ্ব মানুষদের সাথে বাচ্চাদের যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বাচ্চাদের মাধ্যমে দাদা-দাদী, নানা-নানী অসুস্থ হচ্ছেন সেদিকটিতে তীব্র দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। দেখা করার চেয়ে বেশি ভিডিওকল করার জন্যে অনুরোধ করছি। সিন্টারক্লাশ পালন করার আগেও প্রত্যেককে সেলফ টেস্ট করার অনুরোধ করছি। নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে, গতকাল নেদারল্যান্ডসের অনেক বিল্ডিংই কমলা রঙে রাঙা হয়েছিলো। করোনার কারণে পারিবারিক সহিংসতা অনেক বেড়ে গেছে, নারীরা তার শিকার আর বাচ্চারা অনিরাপদ। তাদেরকে সাহায্য করো। অনেকেই একাকীত্বে ভুগছেন। একাকী বয়স্ক মানুষদের পাশে দাঁড়াও এবং তাদের সঙ্গ দেয়ার চেষ্টা করো। খুব কঠিন সময় যাচ্ছে আমরা জানি তারপরও পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতা ধরে রাখতে হবে। হুগো দ্যা ইয়ংঃ আটাশি দশমিক পাঁচ ভাগ মানুষের ভ্যাক্সিন নেয়া হয়ে গেছে। তারপরও গত এক সপ্তাহ ধরে বাইশ হাজারেরও বেশী মানুষ প্রতিদিন সংক্রমিত হচ্ছে। ছাব্বিশো মানুষ করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে যাদের মধ্যে পাঁচশো আটাশ জন ইনটেনসিভ কেয়ারে। তবে হাসপাতালে আসা শতকরা পঞ্চাশ জন আর ইনটেন্সিভ কেয়ারে থাকা শতকরা সত্তর জন ভ্যাক্সিন না নেয়া মানুষ। যে এক দশমিক দুই মিলিয়ন মানুষ এখনো ভ্যাক্সিন নেয়নি এই শীতের শেষে তারাও করোনপ্রুফ হয়ে যাবে, হয় তারা ভ্যাক্সিন নেবে নয় করোনায় ভুগে। ভ্যাক্সিন দেয়ার পরও এত অল্প সময়ে এত মানুষ সংক্রমিত হবে এটা আমাদের কল্পনার বাইরে ছিলো। ভাইরাস বা করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা আগে থেকে আর আশাবাদী হতে চাই না, বারবারই সংক্রমনের গতি প্রকৃতি আমাদের নিরাশ করছে। আমরা যত চেষ্টাই করি না কেন দেখা যাচ্ছে এই শীতের পরেও ভাইরাস আমাদের মধ্যে থেকে যাবে, হয়ত অন্য কোন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে, পুরোপুরি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না। তানবীরা হোসেন ১২/০৯/২০২১

No comments:

Post a Comment