Sunday 14 August 2011

সুখ তুমি কি বড় জানতে ইচ্ছে করে ..................

অনেকেই আল পটকা আমরা সুখ-দুঃখ, সুখি হওয়া দুঃখি হওয়া ব্যাপারগুলো নিয়ে আলোচনা করি, হাসি, মন্তব্য করি। সুখি হওয়া মানে কি? শরীরে কোন বিশেষ হরমোনের বেড়ে যাওয়া বা দ্রুত প্রবাহ যা নাকি হঠাত আনন্দ এনে দেয়? আর দুঃখি হওয়াটাই বা কি? কোন বিশেষ হরমোনের লেভেল নীচে নেমে যাওয়া? বা তার প্রবাহ, সঞ্চালনে ভাটা পড়া? মানুষের শরীরের রোগ নির্নয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞান যতোটা সাফল্য অর্জন করেছে, মনের রোগ নির্নয়ে ঠিক ততোটা নয়। যদিও গবেষনা করে দেখা গেছে বড় বড় অপরাধ, শারীরিক অসুস্থতা, সামাজিক সমস্যা – অস্থিরতার পিছনে মনের গঠন সঞ্চালন বিরাট ভূমিকা রাখে। কিন্তু আশ্চর্য আর চরম কষ্টের ব্যাপার হলো শরীরের ব্যাধি নিরাময়যোগ্য কিংবা ওষুধের সাহায্যে একে সহনশীল পর্যায়ে রাখা যায় কিন্তু মনের ব্যাধি নিরাময়ের কোন ওষুধ নেই। এই ওষুধ খেলে মন এই পরিমান ভাল হবে কিন্তু মাথা বা মন ঠিকমতো কাজ করবে টাইপ কোন ওষুধ এখনো বাজারে আসেনি। যদিও মনোবিদরা বিভিন্ন উপায় খুঁজছেন আর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। একসময়ে মন নিয়ে প্রেমিক যুগল ছাড়া অন্যকেউ মাথা না ঘামালেও আজকাল পৃথিবী জুড়ে মনের সমস্যা অনেকের নজরেই পড়ছে। মন আর অবহেলার কোন বিষয় না, সমাজের সুস্থতা রক্ষায় অনেক গুরুত্বপূর্ন।

সুখ আসে কি থেকে? মানসিক সুখের সাথে শারীরের গ্রন্থির ব্যাপারটা এখনো অনাবিস্কৃত। প্রথম আলো বেশ কিছুদিন আগে বিদেশিদের গবেষনার বরাত দিয়ে প্রবন্ধ ছেপেছিল। মানুষ সুখি হওয়ার জন্যে টাকা পয়সাকে যতোই তুচ্ছ ভাবুক, আসলে টাকা পয়সা ততো তুচ্ছ না। সুখি হওয়াতে টাকা পয়সার অবদান অনেক। একটা দামি রেষ্টুরেন্টে খেয়ে আপনি যে আনন্দ লাভ করেন, সেই সুখতো আপনি টাকা দিয়েই কিনছেন, তাই না? কিংবা কোথাও ছুটিতে গিয়ে আপনি ফাইভ স্টার হোটেলে থাকলেন, তার আনন্দও টাকা দিয়েই পাওয়া যায়। এরকম ভুরি ভুরি উদাহরন প্রথম আলো ছেপেছিল। কিন্তু আমার মনের খটকা এখনো যায় না? সুখ কিসে, অনেক দামি শাড়িতে? ব্র্যান্ডেড গাড়িতে কিংবা বিরাট লন ছাওয়া বাংলো বাড়িতে? তাই যদি হবে, তাহলে এতোসব যাদের আছে তারা কিসের “লাগিয়া” দিনরাত এ প্রান্ত ও প্রান্ত ছুটে মরে? আর কি চাই তাদের? তাহলে কি জাগতিক দ্রব্য মানসিক সুখ আনতে পারে না? তাই কি পুরাকালে মনীষীরা বলে গেছেন, ভোগে নয় ত্যাগেই সুখ? ভোগের তথা চাওয়ার কোন শেষ নেই, পাওয়ার চেষ্টা বৃথা তাই? বেশি পাওয়া কি তাহলে কখনো কখনো মানুষকে বেশি হতাশ করে?

Seeking Attention Disorder (SAD) রোগটা কি মেয়েদের মধ্যে বেশি পুরুষের তুলনায়? ছোটবেলা থেকে মেয়েরা এই যে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সাজুগুজু করে, সেখান থেকেই এই রোগের উদ্ভব নয়তো? অন্যের চোখে নিজেকে সুন্দর দেখানোর এই মানসিকতাই কি পরে SAD হয়ে দাঁড়ায়? সারাক্ষণ অন্যের কাছে নিজেকে গুরুত্বপূর্ন করে তোলার এই প্রবনতা। আর অসুখি হওয়ার অসুখের শুরু কিন্তু এখানে থেকেই। আমাকে অন্যের চেয়ে বেশি আকর্ষনীয় হতে হবে, বেশি গুরুত্ব নিতে হবে। তার জন্যে ছল বল কৌশল যা লাগে লাগুক। বেশি সাজতে হবে আরো বেশি, সবার মনোযোগের কেন্দ্র হতে হবে আমাকেই। সব হাত তালি আজ আমার জন্যে। http://www.bullyonline.org/workbully/attent.htm

কিন্তু চেষ্টা যদি কেউ করে, খুব চেষ্টা তাহলে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া কি একেবারে অসম্ভব? না, তা মনে হয় না আমার। চেষ্টা করলে মানুষ সুখি হলেও হতে পারে। অহংকারকে একটু দমন করলে, জয়ি হওয়ার অদম্য জিঘাংসাটা সব সময় মনের মধ্যে কাজ না করলে, সব শিরোপা নিজের মাথায় না চাইলে, অন্যকেও মানুষ মনে করলে এই অসুখও সারতে পারে কখনো। কেউ কেউ অবশ্য নিরাময় অযোগ্যা তাদের কথা আমি বলছি না ..................তবে হ্যা মানুষ চেষ্টা করলে কি না পারে?

তানবীরা
১০.০৮.২০১১

No comments:

Post a Comment