Thursday 8 December 2011

একটা কিচ্ছা

আমাদের চার তালার আন্টি মারা গেলেন ক্যান্সারে। চার দিনের মিলাদ হলো। হুজুর আসলেন তিনি মাশাল্লাহ একবার শুরু করলে থামেন না। হয়তো গান বাজনার ধাক্কায় হুজুররা সারা মাস কোন ঠাসা থাকেন বলে একবার প্রতিভা দেখানোর সুযোগ পেলে শতরঞ্চি ধরে টান না মারা পর্যন্ত থামতে চান না। আমাদেরকে মুখ কালো আর গম্ভীর করে বিরাট লম্বা কাল কাটাইতে হয় মিলাদের পরের তেহারীর আশায়। চল্লিশার মিলাদে আমরা ভাইবোনেরা কেউ আর বিরিয়ানীর আশায়ও ওপরে যেতে রাজি না। সেই বয়সে পৌঁছে গেছি যে ঘাড় ত্যাড়া করে বাবা-মাকে অগ্রাহ্য করে ফেলতে পারি। আর জানি বাসার বাউন্ডারীর মধ্যে বিরিয়ানি রান্না হয়েছে যখন তখন কিছু না কিছু বাড়ি পর্যন্ত আসবেই।

আম্মি প্রথমে রাগ করে পরে অনুরোধ করে বলে ক্ষান্ত দিয়ে নিজে রেডি হতে লাগলেন। একজন শুধু আমাদের বাসায় বাবা মায়ের বাধ্য সন্তান। তো তিনি গেলেন আম্মির সাথে আম্মির মন আর বাড়ির মান রক্ষা করতে। সন্ধ্যা ছয়টায় যেয়ে রাত দশটায় তারা নীচে নামলেন ক্লান্ত বিধ্বস্ত চেহারা নিয়ে। নীচে নেমে আম্মি "ওনা"কে বোঝালেন, হুজুর যখন কথা বলছিল, তখন তুমি কেনো অন্যদের সাথে হাসছিলে, কথা বলছিলে? হুজুর ভাল ভাল কথা বলছিল, সেগুলো শুনতে হয়। তখন হাসা, কথা বলা বেয়াদপি, অভদ্রতা। প্রথমে হুজুরের অত্যাচার তারপর আম্মির হিতোপোদেশে দিশেহারা হয়ে বাড়ির আইডিয়াল সন্তান বলেই ফেললো, "আমি জানি ভালো কথা বলছিল হুজুর, কিন্তু ভালো কথা অনেকক্ষণ শুনতে ভালো লাগে না"। আচমকা বেমক্কা জবাব পেয়ে আম্মি একদম প্রস্তরবত মূর্তি।

এরপর এটা বাসায় বুলি হয়ে গেল। সবাই সবাইকে বলি, ভাল কথা বইল্লো না, শুনতে ভাল লাগে না।

No comments:

Post a Comment