Monday 19 December 2011

পয়েন্ট অভ নো রিটার্ন


পয়েন্ট অভ নো রিটার্ন বলে পৃথিবীতে কোন পয়েন্ট নেই। যেকোন মোড় থেকে যেকোন মানুষ যেকোন মূহুর্তে আবার ফিরে আসতে পারে। কারণ সে জন্যই মানুষ মানুষ। অনেক সময় দেখা যায় রৌদ্রজ্জল দিনের সামান্য হালকা বাতাস, কোনে পরে থাকা অনেক দিনের ঝুল, ময়লা ধূলো এক নিমিষের মধ্যে উড়িয়ে নিয়ে যায়। যারা ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত থাকে তারা কি এটা ভাবে? তারা কি জানে ষড়যন্ত্র আজ হোক কাল হোক, হাজার বছর পরেই হোক, প্রকাশ হয়ে যায়। গোপন থাকে না? উইকিলিক্স থেকে প্রবাসী, পলাশী থেকে ইরাক এটাই প্রমান করলো বারে বারে, ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে যায়। মায়া ভালবাসা স্নেহ ভরা মুহূর্ত এই আকাশের তলায় কোথাও না কোথাও বেঁচে থাকে, জেগে থাকে। সাময়িকভাবে হয়তো ভুল বোঝাবুঝির ধূলোতে ষড়যন্ত্রের চক্রান্তে ঢাকা পরে, কিন্তু যেকোন ছুতোয় তা আবার বেরিয়ে এসে মনকে সিক্ত করে দেয়।

ষড়যন্ত্রকারী হয়তো ভাবে প্রকাশ হলেই কি? ক্ষতি যা হওয়ার তাতো হয়েই যায়, সেই ক্ষত, সেই ঘা কি পূরণ হয়? কখনো সব কি আর আগের মতো হয়? মীর জাফরকে শাস্তি দিলেই কি সিরাজদ্দৌলা ফিরে আসবে? মার্কিনীদের ইরাক ষড়যন্ত্র প্রকাশ কি, ইরাকীদের সার্বভৌম ফিরিয়ে দিবে? না, তা আর হবে না। সেটা ধ্রুব সত্যি। অনেকদিন ঝুল জমে থাকার একটা দাগ লেগে থাকে বটে, কোনাকেওতো ঝুলখানি জমিয়ে রাখার প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। পুরোপরি পরিস্কার সেটা আর কখনোই হবে না। মানুষ কি আর সব ভুলে পাশে আসতে পারে? না, তা হয়তো পারে না। ঘা মরে গেলেও দাগ থেকে যায় আজীবন। বিশ্বাস পুনরুদ্ধার করা অসম্ভব ব্যাপার। শরীরের ঘা’য়ের থেকে মনের ঘা অনেক কঠিন, অনেক তিক্ত। কিন্তু ঝুল সরে গিয়ে তাজা বাতাস আসার আনন্দ তাতে কিছুমাত্র ম্লান হয় না। এটাও পার্ট অভ গ্রোয়িং আপ। মনের দাগ নিয়েও সামনে তাকানো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার চোখের বালি উপন্যাসে, চুনিকে তার স্বামীর সাথে সহজ করবার জন্যে, চুনির শাশুড়ির দ্বারা তাকে বলিয়েছিলেন, “প্রথমে বাহিরে ভুলিবার চেষ্টা করো, তাহলে আসতে আসতে ভিতরেও ভুলিবে”।

কিন্তু মানুষ যখন অনুভব করতে পারে, তারা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিল, তাদের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে যে ঘৃনাটা বের হয়, সেটা থাকে নিখাদ, নির্ভেজাল ঘৃনা। ষড়যন্ত্র সফল হওয়ার আনন্দ ক্ষণিকের, ভুল বোঝাবুঝিও ক্ষণিকের আর ঘৃনাটা হলো চিরস্থায়ী।

উৎসর্গঃ শিবানী রায় ব্যানার্জী

তানবীরা
১৯/১২/২০১১

No comments:

Post a Comment