ডিজিটাল বাংলাদেশে কাউকে ইমেইল পাঠালে আবার অন্য মাধ্যমে খবর জানাতে হয়, মেইল করেছি - চেক করো, নইলে মেইল চেক করে না। এখানে ফোনের বিল, অফিসের বেতন, ডাক্তারের প্রেসক্রিপশান, মেয়ের স্কুলের চিঠি, বাস থেকে নেমে গেছি ভুলে চেকাউট না করে কিসের মেইল না আসে। প্রতিদিন কয় বার মেইল চেক করতে হয়!
প্রতিটি অফিসে সরকারী কিংবা বেসরকারী, ফোন করলেই যান্ত্রিক গলায় যেই বার্তাটি বেজে ওঠে সেটি হলো, প্রয়োজনীয় সব তথ্য ওয়েবসাইটে দেয়া আছে, পড়ে নাও, তারপরও যদি না বোঝো তবে মেইল করো, একান্তই যদি কারো সাথে কথা বলতে চাও, তাহলে লাইনে থাকো, তোমার সিরিয়ালের অপেক্ষা করো, টেলিফোন করতে মানুষকে নিরুৎসাহী করতে অনেক সময়ই এই টেলিফোনগুলোতে পয়সা চার্জ করা হয়, পুরো নেদারল্যান্ডসে ল্যান্ড ফোন প্রায় ফ্রী, এমনকি মোবাইলও আনলিমিটেড। পুরো ইউরোপকে জোনে ভাগ করে নিয়ে, এখন ওদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে ইউরোপের মধ্যে আনলিমিটেড টক টাইম দেয়া নিয়ে।
এখানে যদিও যানজট এত প্রকট নয়, তারপরও বিশেষ কোন প্রয়োজন না হলে কোন অফিসে কোন এপয়ন্টমেন্ট দিতে চায় না, যতটুকু সম্ভব ইমেইলের মাধ্যমেই সমাধান করে দিতে চায়। এর অবশ্য আর একটি কারণ, সময় বাঁচানো, খরচ বাঁচানো। অথচ বাংলাদেশে প্রতিটি জিনিস নিয়ে মৌখিক আলোচনা হয়। মেইলের সুবিধা হলো, ভুলে গেলে লেখা আছে, আবার দেখে নেয়া যায়। লিখিত থাকে বলে, কথা ঘোরানোর সুযোগও অনেক কম থাকে। প্রতিটি শহরে যে পরিমান যানজট, মানুষের প্রতি নিয়ত হয়রানী অথচ মেইল এই সমস্যার অনেকটাই সমাধান দিতে পারে। কিন্তু হায় --- লেখালেখিতে কেউ নেই
বাংলাদেশের প্রায় কোন শপিং মলেই এটিম কার্ডে পে করার সুযোগ নেই। এর বদলে আছে ডেবিট কার্ড, তাতে যত পয়সা চার্জ করা আছে, তার বেশি খরচ করার সুযোগ নেই, যাকে বলে পকেটের টাকার একটা লিমিটেড ভার্সন। কিন্তু ডিজিটালি পুরো ব্যাঙ্ক হাওয়া হয়ে দেশ থেকে বিদেশে চলে যাচ্ছে! আজব কারখানা। দেশে ছিনতাই এর এত প্রকোপ, দিনরাত মানুষ আহত এবং অনেক ক্ষেত্রে নিহতও হচ্ছে, তারচেয়ে ও কষ্টকর বিদেশে’র এই ব্যাঙ্কিং সিস্টেমগুলো’র ইনোভেশান এবং ডেভেলাপমেন্টে বাংলাদেশের অনেক তরুণ/তরুণী প্রশংসনীয় অবদান রাখছে অথচ বাংলাদেশের নাগরিকরা এই সুবিধার কোন ছিটেফোঁটা ও উপভোগ করতে পারলো না! তাদেরকে ময়লা –ছেড়া নোট ঘসতে ঘসতে, গুনে গুনেই জীবন কাবার করতে হবে। দুর্নীতিবাজ দেশের যে তকমা গায়ে সাঁটা আছে তার থেকে বের হতে “ট্রান্সপেরেন্সি” এর প্রয়োজন আর নগদ লেনদেন করে সেটা থেকে কখনও উত্তরণ সম্ভব কি? ডকুমেন্টবিহীন লেনদেন সবসময় ম্যানিপুলেট করা যায় এমনকি পাড়ার কনফেকশনারীতেও
তাই তো বলি, সতের কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী, ফেসবুক দিয়েছো কিন্তু ডিজিটাল করোনি।
*** মাল্টিন্যাশনাল, ইউএন, বা পুরোপুরি বিদেশী কনসার্ণে যারা কাজ করেন শুধু তারাই এর ব্যতিক্রম। তারা রোজ মেইল চেক করে এবং জবাবও দেয়। ***
No comments:
Post a Comment