Thursday 11 April 2019

জার্নাল ২০১৯

“ এদেশের মুসলমান এক সময় মুসলমান বাঙালি, তারপর বাঙালি মুসলামান, তারপর বাঙালি হয়েছিলো; এখন আবার তারা বাঙালি থেকে বাঙালি মুসলমান, বাঙালি মুসলমান থেকে মুসলমান বাঙালি, এবং মুসলমান বাঙালি থেকে মুসলমান হচ্ছে। পৌত্রের ঔরষে জন্ম নিচ্ছে পিতামহ ”
হুমায়ূন আজাদ


রাজনীতি মার্কেট, মাদ্রাসা একটা প্রোডাক্ট আর জনগন তার কনজিউমার। "ডিমান্ড এন্ড সাপ্লাই" এর চিরতরের নীতি কাজ করবেই। রাজনীতিবিদরা মার্কেট সার্ভে করেই ব্যবসায় নেমেছে, তাদেরও তো দুটো করে খেতে হবে। মার্কেট বদলে গেলে, কনজিউমার না থাকলে, প্রোডাক্ট অটোমেটিক বদলে যাবে। উদাহরণ দিলাম না, ইউরোপে থেকে উদাহরণ দিলেই গালি খেতে হবে তবে অন্তর্জালের যুগে ইতিহাস সবার হাতের মুঠোয়।

শফি হুজুরের মাদ্রাসায় পড়ছে কারা? রাজনীতিবিদ্গনের ছেলেমেয়ে? শফি হুজুরের ওয়াজ শুনতে যায় কারা? মন্ত্রী-আমলা বড় ব্যবসায়ীরা? যারা যান, তারা বদলান, বাকি কিছু নিজ থেকেই বদলে যাবে। ইতিহাস সাক্ষী
ঠিক যে সময় বিজ্ঞানীরা "ব্ল্যাক হোলের" ছবি তুলেছে সে সময়ই "যুগান্তর" আগুন নেভার দোয়া ছেপেছে। "যুগান্তর" ব্যবসা করতে নেমেছে, সমাজসেবা নয়, তারা জানে এ দেশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা বিশ্বাস করে, "দোয়া" পড়লে আগুন নিভে যাবে শুধুমাত্র সে জন্যই তারা আগুন নেভার দোয়া ছাপিয়েছে।

মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্যে প্রধানমন্ত্রী একা কেন দায়ী হবে? সমান দায় কেন আপনার-আমার নয়? প্রধানমন্ত্রীকে গালি দিলেই সতের কোটি মানুষের মানসিকতা বদলাবে না, দশ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষেও এই "কনফিউজড" জাতির সমস্যা সমাধান করা সম্ভব না। প্রতিনিয়ত ঘটনাগুলো যে স্থানে ঘটছে তাতে প্রমানিত, সৃষ্টিকর্তা কত অসহায়, তবে কেন সব প্রধানমন্ত্রীর দায়! ক্ষত থাকবে কিন্তু ক্যান্সার না, সম্ভব?

নিভিয়ে প্রদীপ দীর্ঘ করে রাত
প্রতিবাদে চলে গেলো মনির-নুসরাত
বৃথা যেতে দিও না এই বলিদান
বদলে যাও, গাও মানবতার গান

11..04.2019



ইনসেনসিভিটি – এনিহয়্যার টু এভরিহয়্যার

পারিবারিক পরিবেশে সবার সাথে বসে হাসিখুশি গল্প করছেন, এরমধ্যে কোন একজন প্রিয় আপা, কিংবা খালাম্মা, কিংবা খুব কাছের কেউ খুব আন্তরিক গলায় বলে বসবে আপনার সন্তানসম কাউকে, মেয়েটার গায়ের রঙটা অনেক ময়লা হয়েছে, না। এখানেই থামবে না, হয়ত আপনার কাছেই কিংবা আপনার আর কাছের কাউকে বার বার জিজ্ঞেস করবে, শিউর হতে চাইবে, তিনি ঠিক ডিক্টেট করেছে কি না, হ্যাঁ ময়লা হয়েছে না? হ্যাঁ ময়লা হয়েছে না? থামবে না, বলতেই থাকবে, অনেক ময়লা তো, গায়ের রঙ অনেক ময়লা।

যে কিশোরীটিকে নিয়ে কথা হচ্ছে, সে গায়ের রঙের ময়লা-পরিস্কার সেভাবে এখনও বোঝে না। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বাংলা শব্দ গুলোকে এক সাথে জড়ো করে এর অর্থ উদ্ধার করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায়। তবে আশার কথা এই যে, আজকালের বাচ্চারা, পড়াশোনা, নাচে-গানে নিজেকে অনেকভাবে প্রমাণ করতে থাকে বলে, এদের আত্মবিশ্বাস ভাল, এসব কথায় আর যাই হোক মুখ কালো করলেও, আহত হলেও একেবারে ভেঙে পরে না।

বোনেরা বোনেরা একসাথে হেসে, গল্পে, আনন্দে গড়িয়ে পড়ছে। সেখানে একজন খুব কাছের আত্মীয়া উপস্থিত হয়ে, ফটাস করে বলে বসবে, ছোটটা বেশি সুন্দর, বড়টা ছোটটার কাছে কিছুই না। কিংবা উলটোটা। নিজের এই এক্সপার্ট অপিনিয়ন দিয়ে নিজেই গর্বে দশ হাত ফুলে যাবে। অন্যদের মধ্যে কি ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া হলো তাতে তার থোড়াই কিছু আসে যায়।

কারো সাথে দেখা হলে আপনি আনন্দে চনমন করে জড়িয়ে ধরতে যাবেন, আপনাকে ফট করে শুনতে হবে, এত মোটা হয়েছিস তুই? কিংবা চেহারাটা এত নষ্ট কেমন করে হলো? এজ ইফ মোটা হয়েছি না শুকিয়েছি, সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে না হয় নি এই ইনফরমেশানগুলো আপনার অজানা, তার কাছ থেকেই জানতে হবে।  

ইউরোপীয়ান কাউকে বলবেন, উফ, প্রচন্ড গরম পরেছে, সে অবলীলায় জবাব দেবে, চল্লিশ ডিগ্রীর মাঝ থেকে এসে এখানে গরম লাগে? এমন লুক দেবে যে আপনার অপরাধ হয়ে গেছে। থেমে যেতে হয়। বলা যায় না, ক্ষিধা লাগছে, তাহলে হয়ত বলে বসবে, ভিখ মাংগার দেশ থেকে এসে এখানে আবার ক্ষিদাও লাগে।

কিছু বলার আগে মানুষ কবে ভাববে যে অন্য মানুষটার কেমন লাগবে? নিজেকে ঐ জায়গায় রেখে ভাবলে হয়ত কথা গুলো খানিকটা হলেও বদলে যেতো।

২৯/০৮/২০১৯

No comments:

Post a Comment