Saturday 26 September 2020

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – ২৫শে (সেপ্টেম্বর)

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – ২৫শে (সেপ্টেম্বর) "করোনা ভাইরাসের কারণে জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত, আজকে এ সময় আমার ইউরোপীয় ইউনিয়নের মীটিং এ থাকার কথা ছিলো কিন্তু চেয়ারম্যান শ্যারেন মিশেল বেলজিয়ামের নিয়ম অনুযায়ী কেয়ারন্টিনে থাকায় এক সপ্তাহের জন্যে মীটিং পোস্টপোন্ড" জানালেন মিনিস্টার প্রেসিডেন্ট মার্ক রুতে। একশো হাজারের ওপর মানুষ এই মুহূর্তে নেদারল্যান্ডসে করোনায় আক্রান্ত, আজ সাতাশ শো সাতাত্তর জন আজকে পজিটিভ হয়েছে যেখানে গত সপ্তাহে উনিশ শো সাতাত্তর জন পজিটিভ ছিলো। ইনটেনসিভ কেয়ার, হাসপাতাল সব জায়গায় ভীড় বাড়ছে। করোনা রোগীদের ভীড় বাড়ায় তাদেরকে হাসপাতালের আলাদা জায়গায় শিফট করা হয়েছে যেখানে আলাদা করোনা টীম করে তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, এতে অন্য রোগের রোগীদের করোনা সংক্রমণ, চিকিৎসা টীম আর করোনা রোগীদের থেকে সর্বতো ভাবে এড়ানো যাবে বলে আশা করা যায়। গত সপ্তাহে সংক্রমনের ঝুঁকির ভিত্তিতে ছয়টি শহরকে দ্বিতীয় মারাত্বক মাত্রায় ফেলা হয়েছিলো, এ সপ্তাহে আরো আটটি শহরের নাম সেখানে যুক্ত হয়েছে, শহরগুলো হলো খ্রোনিংগেন, নর্থ ব্র্যাবান্ড, সাউথ ওয়েস্ট ব্র্যাবান্ড, হিলভারসাম, ফ্লেভোল্যান্ড, আলমেইরে, খেল্ডারল্যান্ড ও নাইমেইখেন। রোববার সন্ধ্যা ছটা থেকে এই শহর গুলোতেও ঝুঁকিপূর্ন শহরের আইন প্রযোজ্য হবে। আমস্টার্ডাম, রোটারডাম আর ডেনহাগে যেহেতু সংক্রমণ প্রচন্ড মাত্রায়, এই শহরের মেয়রদের সাথে সামনের সোমবার দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হবে, সংক্রমণ ঠেকাতে আর কি কি ব্যবস্থা নেয়া যায় এই নিয়ে। সংসদ, যোগাযোগ, প্রেস কনফারেন্স ইত্যাদি নিয়েও আমরা আবার একটা স্বাভাবিক রুটিনে ফিরে যেতে চাই, প্রাথমিক ভাবে দ্বিপাক্ষিক রুটিনকে ভাবা হচ্ছে, যদিও ভাইরাস আমাদের প্ল্যানের কিংবা রুটিনের তোয়াক্কা করছে না তাই প্রয়োজনে রুটিনের বাইরে যেতে হবে। আবারও বলছি, নিয়মনীতি হয় আমাদের দায়িত্বশীলতা এখানে মূখ্য, সতের মিলিয়ন মানুষের আচরণবিধি করোনাকে ঠেকাবে নিয়ম নয়। সাংবাদিক প্রশ্ন করলেন, এ সপ্তাহে টিলবার্গে ফুটবল খেলায় হাজার মানুষের জমায়েতকে রুতে কি চোখে দেখছেন? সেখানের প্রশাসনের কাছে কি জবাবদিহিতা চাওয়া হয়েছে? প্রিমেই রুতে জনালেন, প্রথমে তিনি মানুষদের দায়িত্বহীন আচরণের কথা ভাবছেন, রোজ যেখানে হাজার মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে সেখানে কি করে মানুষ এত বড় জনসমাগমে যাওয়ার কথা নিজে ভাবতে পারে? তারপর অবশ্য সমাবেশের ব্যাপারে টিলবার্গ প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কথা স্বীকার করেন তিনি এবং প্রশাসন সেটি দেখবে। টিলবার্গের মেয়র নিজেও এ ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, এমন ভুল আর কখনো হবে না, ভুল থেকেই সবাই শিখতে পারে। লকডাউনের সম্ভাবনা কতদূর? রুতে জানালেন, আমরা একটার পর একটা পদক্ষেপ নিচ্ছি এবং তার ফলাফল পর্যালোচনা করছি, এর বাইরে আমি কোন মন্তব্য করবো না। শহরভিত্তিক বিধিনিষেধ কাজ করছে না, পুরো দেশকে বিধি নিষেধের মধ্যে নিয়ে আসার সময় নয় এখন? সেটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে বিবেচনা করবো, যেসব শহরে সংক্রমনের হার কম সেখানে বিধিনিষেধ দিয়ে তাদেরকে আটকে রেখে লাভ কি? আর প্রতিটি পদক্ষেপের অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া থাকে, সেটিকেও বিবেচনা করতে হবে আর তারপরও প্রয়োজন হলে সেদিকে হয়ত এগোতে হবে কিন্তু ততদূর এখনো এগোয়নি। সংক্রমণ বাড়ছে আর ঐদিকে জরিমানা আর শাস্তির পরিমান কমিয়ে আনা হয়েছে, এটা কি অযৌক্তিক নয়? রুতে জানালেন, না, তিনি এটাকে অযৌক্তিক ভাবছেন না। ক্রমাগত শাস্তি দেয়া কিংবা বাড়ানোর মধ্যে কোন কৃতিত্ব নেই। সব দায়িত্ব আপনি নাগরিকদের আচরণবিধির ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন? তারচেয়ে খেলাধূলা কিছুদিন বন্ধ রাখাই কি বেশি দায়িত্বের পরিচয় ছিলো না? খেলাধূলা সব বন্ধ রাখাও স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর জানালেন প্রিমেই রুতে। মার্চ থেকে যখন সব বন্ধ রেখেছিলেন, তখন অনেক মানুষ অন্যভাবে অসুস্থ হয়েছে। খেলাধূলা শুধু মানুষের শারীরিক নয় মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যেও দরকার। আপনার কি মনে হয় না মানুষজন আপনার কথা শুনছে না? আমার দায়িত্ব মানুষকে বলা আর সচেতন করা। মানুষের দায়িত্ব তার আচরণবিধি মেনে চলা, সেটা তার নিজ দায়িত্বে থাকাই ভাল। আমার কথা শোনার চেয়ে তার নিজের দায়িত্ব পালনটুকু অনেক বেশি জরুরী। সেটাই গনতন্ত্র। আমার অবাক লাগে প্রথম ওয়েভের এই ভয়াবহতার পর কি করে আমরা সেকেন্ড ওয়েভের জন্যে ভালভাবে প্রস্তূতি নেই নি? আসলে ভালভাবে প্রস্তূতি নেয়ার কিছু এখানে নেই, যতদিন ভ্যাক্সিন না আসবে ওয়েভের পর ওয়েভ আসতে থাকবে আর আমাদেরকে সেটি মোকাবেলা করে যেতে হবে। কাল রাতে টিভিতে টিলবার্গের ফুটবল দেখে আপনি প্রথমে কি শব্দ করেছিলেন প্রিমিয়ে রুতে? প্রত্যেকটি মানুষের অভিব্যক্তি প্রকাশের ভঙ্গী আলাদা, কি বলেছিলেম সেটা এখন আর আমার মনে নেই। টিলবার্গের মেয়রের সাথে এই নিয়ে কথা বলেছেন আপনি? কি বলেছেন তাকে আপনি? সেটি নিয়ে আমি এখানে কথা বলবো না। জুনের প্রেস কনফারেন্সে জানিয়েছিলেন, করোনা এপ, করোনা প্যাকেজ ইত্যাদি চালু করে করোনাকে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসবেন, সেসবের কি হলো মাননীয় মিনিস্টার প্রেসিডেন্ট? এখনও সেসব তৈরী নয়? এগুলো কি জরুরী ভাবছেন না তবে? এগুলো অবশ্যই জরুরী, সাধ্যমত কাজ চলছে তবে আবারো বলছি করোনা নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে নেই ওটা জনগনের হাতে। নিয়ম মেনে চললেই করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে অন্য কিছুতে নয়।

No comments:

Post a Comment