Monday 22 February 2010

কিছু সেটআপ গেমসের গেটআপ কথাবার্তা

সৃষ্টির আদিকাল থেকে মানুষ জীবিকার সন্ধানে এদিক সেদিক ছুটছেন যার যার সামর্থ্য আর যোগ্যতানুযায়ী। কেউ মুন্সীগঞ্জের লঞ্চে ওঠে সদরঘাট নামে আর কেউ কুর্মিটোলার প্লেনে ওঠে ভিন দেশে নামে। যার যার যোগ্যতানুযায়ী তাকে অনেক ধরনের ট্যারা ব্যাঁকা প্রশ্নের মাধ্যমে ঝাঝড়া হয়ে, তীক্ষন এক্সরে মার্কা দৃষ্টির সামনে ফালা ফালা হয়ে তার গন্তব্যের টেবলে পৌঁছতে হয়। এরমধ্যে অনেক প্রশ্নই থাকে নেহাত গৎবাঁধা আর বেহুদা। প্রশ্নকর্তাকে যেহেতু কোন একদিন ইন্টারভিউতে এপ্রশ্ন করা হয়েছিল, তাই তিনি আজ সেই প্রশ্ন প্রতিশোধমূলকভাবে তার অধঃস্তনকে ফিরিয়ে দিয়ে তার উশুল তুলবেন টাইপ ব্যাপার।যেমন ফালতু প্রশ্ন তেমন তেলানী উত্তর। যুগ যুগ ধরে এই মিথ্যের বেসাতী চলছে চলবে টাইপ অবস্থায় পৌঁছে গেছে।তার সামান্য একটু নমুনা আজ পেশ করছি।

প্রশ্নঃ এই কোম্পানীতে কেনো কাজ করতে চাও?
সত্যি উত্তর মনে মনেঃ এই কোম্পানীতে এই পোষ্টটা খালি আছে, অন্য কোম্পানীতে নাই তাই চাই, শালা। তাছাড়া এই কোম্পানীর বেতন - বোনাস ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ভালো।
মিথ্যে উত্তর সামনা সামনিঃ এই কোম্পানী অনেক স্বনামধন্য। অর্থনীতি, সমাজে অনেক অবদান রেখেছে। নিজেকে উন্নত করার এবং নিজের প্রতিভা দ্বারা কোম্পানীর ও কাজের মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখার সুযোগ পেতে চাই এন্ড সো অন সো অন
প্রশ্নঃ তোমার জব প্রোফাইলের কোন কাজটা তোমার কাছে আকর্ষনীয়?
সত্যি উত্তর মনে মনেঃ কোনটাই না শালা কুত্তা। কিন্তু এগুলার বাইরে কিছু জানি না, এইটা গুতাইয়া খাই তাই এই প্রোফাইলের জবের জন্য বাধ্য হয়ে এ্যাপ্লাই করেছি।
মিথ্যে উত্তর সামনা সামনিঃ আমি চিন্তা ভাবনা করতে ভালোবাসি। জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারলে অনাবিল আনন্দ লাভ করি। স্ট্রেস হ্যান্ডল করা কোন ব্যাপার না। খুব ঠান্ডা আমার মাথা ব্লা ব্লা ব্লা
প্রশ্নঃ কাজ করতে পছন্দ করো নাকি নটা পাঁচটার রুটিন চাও?
সত্যি উত্তর মনে মনেঃ শালা কাজ দেখলে পালাতে ইচ্ছে করে। সারাদিন শুয়ে শুয়ে বই পড়তে, রিমোট নিয়া চ্যনেল ঘুরাতে ইচ্ছে করে। ঠ্যাং এর ওপর ঠ্যাং দিয়া ফেসবুক, জিটক করতে ইচ্ছে করে। কাঁধে ক্যাম, মাথায় টুপি বেড়িয়ে পড়ো অজানায় সেই চিন্তা মনে ঘুরে
মিথ্যে উত্তর সামনা সামনিঃ কাজকে আমি সন্তানতুল্য জ্ঞান করি। যতোক্ষন ক্লায়েন্ট সন্তুষ্ট না হবে ততোক্ষন নটা – পাঁচটা কেনো, দশটায়ও বাড়ি যবো না। দ্বায়িত্ব নিয়া কোন ছেলেখেলা না ইত্যাদি ইত্যাদি
প্রশ্নঃ কোম্পানীকে কিভাবে কন্ট্রিবিউট করবে বলে ভাবছো?
সত্যি উত্তর মনে মনেঃ তুই যেমনে করতেছস আমিও ঠিক সেভাবেই করবো। টেবিলের ঐপারে বইসা ফুটানী ঝাড়স? আমাদের ট্যাক্সের টাকায় বুড়া বয়সের পেনশন খাবি আবার আমাদের সাথেই শাতিলি ঝাড়স?
মিথ্যে উত্তর সামনা সামনিঃ দিনরাত এক করে দিয়ে ভাববো কি করে র‌্যান্ডম প্রসেসকে আরো নির্ভুল, এফিসিয়েন্ট আর ক্লায়েন্টের মনমতো করা যায়। অতি দ্রুত অতি নির্ভুল সেবা প্রদানের জন্য সদা নিয়োজিত থাকিব।
মনে মনেঃ নইলে তার কয়দিন পরে আবার আমাদের চাকরী খাবার প্ল্যান করবি কি করে? আমাদের দিয়ে অর্গানাইজেশন ডিজাইন করাইয়া আমাদের চাকরী খাইয়া দিবি, এহসান ফারমোশ কুত্তে।
প্রশ্নঃ তোমার পজিটিভ দিকগুলো সম্বন্ধে বলো?
সত্যি উত্তর মনে মনেঃ আমার সত্যিকারের পজিটিভ দিক শুনলে তোর কোম্পানীর ফিট খাইতে লাগবো। মেজাজ খারাপ হইলে এমন জোরে চিল্লান দেই যে ১৭৬০ বর্গফুট কভার করি। মাথা গরম হইলে এমন ঝগড়া করি যে ভূ-ভারতে কেউ আমার সাথে জিততে পারবে না। রান্না করতে পারি, ঘর মুছতে পারি, ভালো ফুল সাজাতে পারি ইকেবোনা শিখা ছাড়াই, মজার ব্লগ লিখতে পারি কিন্তু সেইগুলা তোর জবের সাথে রিলেট করে না ব্যাটা।
মিথ্যে উত্তর সামনা সামনিঃ আমার মাথা ঠান্ডা, এ্যাডজাষ্টম্যান্ট পাওয়ার ভালো, সদা হাস্যময়ী, লাস্যময়ী এন্ড দিস এন্ড দ্যাট এন্ড দিস
প্রশ্নঃ তোমার নেগেটিভ দিকগুলো সম্বন্ধে বলো?
সত্যি উত্তর মনে মনেঃ আসল কথা কইলে আর তুমি জব দিছো।
মিথ্যে উত্তর সামনা সামনিঃ (বিণয়ে বিগলিত ভাব ধরে)ডাচ উচ্চারনটা ঠিক পার্ফেক্ট না অনেক সময় মনে হয় ভাষার পিছনে আর একটু সময় দেয়া দরকার
তানবীরা
২২।০২।১০

2 comments:

  1. জটিল! হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছি। আসলে কাহিনী ত এটাই....:)))

    ReplyDelete
  2. ধন্যবাদ আপনাকে, আনন্দ পেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো

    ReplyDelete