Sunday 30 July 2023

রায়হান রাফি

পাইরেসি’র কারণে দেখে ফেললাম রায়হান রাফি’র সদ্য রিলিজ পাওয়া সিনেমা “সুড়ঙ্গ”। ধন্যবাদ, আমার “পাইরেট” বন্ধুদের মানে যারা আমাকে লিঙ্ক দাও আর কি তাদেরকে মীন করছি। বাংলাদেশের বাংলা সিনেমা অবশেষে কোলকাতার বাংলা সিনেমাকে পেছনে ফেলে দিয়েছে (নিঃসন্দেহে)। কোলকাতা আটকে গেছে ফেলুদা আর ব্যোমকেশে। কিন্তু “পাইরেসি” কোয়ালিটিতে কোলকাতা আর বাংলাদেশ সমান বাজে। “অর্ধাঙ্গিনী” আর “সুড়ঙ্গ” একই রকম বাজে কোয়ালিটির। এদিক থেকে হিন্দী পাইরেটসরা ভালো, এরা উন্নতমানের ডিভাইস ইউজ করে। দুই বাংলার পাইরেটসদেরই এই দিকে একটু বেশি পয়সা খরচা করা উচিৎ। ফ্রাইডে, পরান তারপর সুড়ঙ্গ, রায়হান রাফির ফ্যান হয়ে গেছি। অমিতাভ রেজা’র কনফিউশান মুভি থেকে অনেক বেশি ক্লিয়ার (বোধগম্য) ছবি বানায় এই ছেলে। সুড়ঙ্গ মুক্তি পাওয়ার পর অনেকগুলো সমালোচনার একটা বারবার রিপিট করেছে যেটা হলো, “রাফি, মেয়েদেরকে নেতিবাচক ভাবে দেখায় তার মুভিতে।“। আমার মতে কথাটা ঠিক না। রাফি বরং যা হয় তাই দেখানোর সাহস করেছে। অকারণে রঙচঙ দিয়ে “মেয়ে” মানেই দুর্বল তারে সিমপ্যাথি কার্ড খেলতে দাও, সেই ফাইজলামি করে নাই। তিনটি সিনেমাতেই এক জিনিস এসেছে, “কর্মহীন কিংবা রোজগারবিহীন মেয়ে”। প্রতিটি ঘটনাই বাস্তবে ঘটেছে তারপর সিনেমা হয়েছে, সে নিজের থেকে কাহিনী বানানোর কষ্টও করে নাই, রোজ এগুলো পত্রিকার পাতায় থাকে। “ফ্রাইডে”তে স্বামী মারা যাওয়ার পর, ভদ্রমহিলা যদি নিজে একটা কাজ খুঁজতো, স্বাবলম্বী হবার চেষ্টা করতো তাহলে বাড়িওয়ালার এবিউজ এড়াতে পারতো। তার মেয়ে মুনা’ও সেই গৃহবধূ, ফলাফল স্বামীর দ্বারা এবিউজড। পরিনতিতে বাড়িসুদ্ধ খুন। আমাদের দেশে স্টুডেন্ট লাইফে মেয়েদের তেমন কাজকর্ম করার রীতি নেই। ছেলেরা টুকটাক টিউশনি করে। কিন্তু সাজগোজ আর বায়না করার বয়সও সেটা। অনেক মধ্যবিত্ত বাবাই সেটা এফোর্ড করতে পারে না। অনেক মেয়েই তখন অন্য রাস্তা ধরে। “অনন্যা” চরিত্রটিও ঠিক তাই। একজন পায়ে সেধে জিনিসপত্র দিতে আসছে, সে নেবে না? ঐটুকু বয়সে কেউ পরে কি হবে সেটা ভাবে? অনন্যার মা স্বাবলম্বী হলে কিংবা অনন্যা নিজের পকেট মানি নিজে আর্ন করলে এই ঘটনাটা না’ও ঘটতে পারতো। ছোট বয়সের চঞ্চলতার মাশুল দিতে এখন কারাগারে বসে ফাঁসির দিন গুনছে। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ময়না’র বিয়ে হয়েছে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি মাসুদের সাথে। নতুন বউয়ের হাজার শখ, তার বায়নায় হাবুডুবু মাসুদ যায় মালোশিয়া। অথচ মাসুদের আর ময়নার ঠিক করা দরকার ছিলো, ময়না’ও কাজ করবে এবং নিজের শখ নিজের টাকায় পূরণ করবে। ছুটির দিনে দুজন একসাথে বেড়াতে যাবে আনন্দ করবে। সব বোঝা একজনের কাঁধে না, ভাগাভাগি হবে। মেয়েরা স্বাবলম্বী হলে কি তবে সমস্যা কমে যায় বা শেষ হয়ে যায়? একদমই না। তবে সমস্যার ধরন পালটে যায়। খুন-খারাপি অন্তত এড়ানো যায়। ২৩শে জুন প্রথম আলো রিপোর্ট করেছে, প্রতি চল্লিশ মিনিটে ঢাকায় একটি করে ডিভোর্স হচ্ছে। ডিভোর্সের আবেদন সত্তর ভাগই আছে নারীর কাছ থেকে। ঢাকার বাইরেও একই চিত্র। এই নেতিবাচক খবরের ইতিবাচক দিক হলো, এখানের অর্ধেক স্বামী কিংবা স্ত্রী খুনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। আগের মতো এভরি অল্টারনেট ডে’তে এখন পেপারে খবর আসে না, রাজধানীতে আবারো গৃহবধূ খুন। মেয়েরা স্বাবলম্বী হতে শুরু হওয়ায় বাংলাদেশ আছে আর এক সমস্যায়। স্বাবলম্বী মেয়েদের জন্যে এই সমাজ কাঠামো এখনও তৈরি না। আশা’র কথা শুরু যখন হয়েছে তখন কাঠামোও বদলাবে, অনেক সময় নেবে তবে বদলাবে। তানবীরা ৩০/০৭/২০২৩

এক মন্দ বউয়ের উপাখ্যান

এক মন্দ বউয়ের উপাখ্যান https://epaper.protidinerbangladesh.com/second-edition/2023-07-28/8/6130?fbclid=IwAR3GUPGteLqC4wxiN3NSpOJRcj0WgLL5q0OJTk7rMODVdRa-I-_WPco0fbo নিশি খুব রেগে আছে, সজীবও। একজনের মুখ লাল আর অন্যজনের কালো। ঘরে এসির খানিকটা ধাতব শব্দ আর ল্যাপটপে ইতস্তত টাইপের মৃদ্যু শব্দ ছাড়া আর কোন শব্দ নেই। দুজনেই ঘরের দুই কোনায় দুজনের ল্যাপটপ নিয়ে বসে অফিসের কাজ করছে, যদিও দুজনের কারোই এখন অফিসের কাজের কোন পরোয়া নেই। না এখন কাজ নিয়ে ভাবার এতটুকু আগ্রহ আছে তাদের। সজীব নিশির দিকে আবার তাকালো। ভাবছে, এত স্বার্থপর, নিষ্ঠুর কেমন করে হতে পারে নিশি। তার জানা মতে তার আশেপাশে নিশিই ছিলো সবচেয়ে নরম, কোমল, মায়াবতী মেয়ে কিন্তু দেখা যাচ্ছে তার জানায় ভুল ছিলো। সকালের আলোচনায় নিশির এক কথার জবাবই যথেষ্ঠ ছিলো নিশির নির্মম আসল চেহারাটা দেখার জন্যে। যদিও সজীবের তরফ থেকে এটি এমন কোন আলোচনাই ছিলো না যেখানে নিশি এক কথায় একটা জবাব দিতে পারে। সজীব এখনো বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না যে নিশি সত্যিই এটা বলেছে। ঘটনার সূত্রপাত অবশ্য কয়েকদিন আগে। অপরিচিত একজন নিশিকে ফোন করে জানালো, নিশি’র বাবামা রিকশা থেকে পরে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে। আঘাত সেরকম মারাত্বক না হলেও গভীর। ডাক্তার তাদেরকে মাসখানেকের জন্যে নিয়মিত চিকিৎসা ও বিশ্রামের উপদেশ দিলেন। বয়সের কথা ভেবে ডাক্তার তাদের সেবা যত্নের দিকে প্রখর দৃষ্টি রাখার কথা জানালেন। নিশি তার বাবামায়ের একমাত্র সন্তান। যে মুহূর্তে নিশি বাবামায়ের দুর্ঘটনার কথা জেনেছে সেই মুহূর্তে সে অফিস থেকে অর্নিদিষ্টকালের ছুটি নিয়ে নিয়েছে। সজীবকে বলেছে, টুকটুকির খেয়াল রাখতে, বাড়ি সামলাতে, যেটা সজীব খুশী মন নিয়েই করেছে। নিশি দিনরাত এক করে বাবামায়ের সেবা করেছে, ডাক্তার, নার্স, বাজার, ঔষধ, ফিজিওথেরাপি সব। বাবামা কি খাবে সেই রান্না, বাড়ি এখন কিভাবে চলবে সেসব বন্দোবস্ত, সাহায্যের লোক ঠিক করা, জামাকাপড় কাঁচা কি নয়। স্বাভাবিকভাবেই, ঢাকার এই জ্যাম ঠ্যাঙ্গিয়ে সে এই কয়দিন এ বাড়ি আসেনি। তাই নিয়ে সজীবের কোন আপত্তিও ছিলো না। বরং সজীব খুশী হয়েছিলো এই দেখে, কিভাবে একা তার বউ এত কিছু সামলাতে পারে। কি সুন্দর করে নিশি তার বাবামায়ের সেবাযত্ন করছে। সবচেয়ে বেশি যেটা ভাল লেগেছে, ছোট বাচ্চাদের মত করে বাবামায়ের যত্ন করছে যেনো ওরাই নিশির সন্তান। এরই মধ্যে নিশি তার বাবামাকে আস্তে আস্তে রাজি করালো, তাদের বাসার কাছাকাছি বাসা নিয়ে চলে আসতে। প্রথমে তারা স্বাভাবিকভাবে প্রচন্ড আপত্তি করেছিলো, নিজের বাড়ি ছেড়ে এই বয়সে তারা কোথাও যাবে না, ভাড়া বাড়িতো নয়ই। একদিনতো রেগে বলে দিলো তোকে এসে আর আমাদের দেখাশোনাও করতে হবে না। বাসা বদলানোর পরও, এই অসুবিধা, সেই অসুবিধা দেখিয়ে নিশিকে প্রায়ই বকাঝকা করতো। তারপর একদিন পৃথিবীর নিয়মেই আস্তে আস্তে সবাই মানিয়ে নিতে লাগলো, জীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরলো। আজ সজীব আর নিশি সকালে নাস্তা করছিলো। সজীব জিজ্ঞেস করলো, কিছু মনে না করো যদি, তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে চাই। তুমি যেভাবে বলছো তাতে তো মনে হচ্ছে এতে মনে করার কিছু আছে, যাহোক, বলে ফেলো তো। যেভাবে নিজের বাবামায়ের সেবা করেছো তুমি, দেখাশোনা করছো তাদের, আমার বাবামায়ের জন্যেও কি তুমি তাই করবে? তাদের সাথে থেকে তাদেরকে নিজ সন্তানের আদর দেবে? পছন্দের খাবার রান্না করে খাওয়াবে তাদের? পাশে থাকবে তাদের তুমি? আমি জানি আমরা এখন তাদের থেকে আলাদা থাকছি কিন্তু আমার মনে হচ্ছে যখন ওদের কোন বিপদ হবে, তুমি তাদেরকে কিছুতেই ফেলে দেবে না। পাশে থাকবেতো তাদের, নিশি? অবিশ্বাসের চোখে নিশি সজীবের দিকে তাকিয়ে রইলো। সত্যিই কি সজীব তাকে এই কথা জিজ্ঞেস করছে? মুহূর্তের ভগ্নাংশের মধ্যে নিশি জ্বলে উঠলো, শান্ত গলায় বললো, না, কখনোই না, আমার বাবামাকে আমি যেভাবে দেখাশোনা করেছি, সেভাবে আমি কখনোই তোমার বাবামায়ের দেখাশোনা করবো না সজীব। বলেই নিশি সজীবকে আর একটি কথা বলার কোন সুযোগ না দিয়ে অফিসে চলে গেলো। আর এখন, সারাদিন পর অফিস থেকে এসে নিজের ল্যাপটপ খুলে বসে পরেছে। সজীব, ভাবছিলো, সকালের রুক্ষন ব্যবহারের জন্যে সে অনুতপ্ত হবে, সেটা নিয়ে কথা বলবে কিন্তু তার তো কোন লক্ষনই নেই। এভাবে তো ছাড়া যায় না সিদ্ধান্ত নিয়ে সজীব নিজেই জিজ্ঞেস করলো, নিশি, সকালে ওভাবে কথা বললে কেন ? তুমি কি সত্যি সত্যিই বলছো যে তুমি আমার বাবামায়ের দেখাশোনা করবে না? আমার বাবামায়ের জন্যে আমি যেভাবে করেছি, তোমার বাবামায়ের জন্যে আমি সেভাবে করবো না। দ্বিগুন রাগে অংগার হয়ে গেলো সজীব। অনেক কষ্টে নিজেকে সংযত করে বললো, দয়া করে একটু খুলে বলবে, তোমার সমস্যাটা কি? তুমি এখন পক্ষপাত করছো না? এই যে সারাক্ষণ সাম্যতার কথা বলো, তোমার নিজের বাবামায়ের সাথে ব্যবহার আর আমার বাবামায়ের সাথে ব্যবহারের সাম্যতা এখন কোথায়, শুনি? সজীবের দিকে নিশি কিছুক্ষণ একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো, তারপর বললো, “পক্ষপাত? পক্ষপাত নিয়ে তুমি কথা বলছো? তোমার প্রশ্নটাই কি পক্ষপাতিত্বমূলক ছিলো না? তোমার বাবামায়ের যত্ন নেয়া বলতে তুমি কি বোঝাতে চাইছো, রান্না করা, ইত্যাদি ইত্যাদি আর সব? এরমধ্যে তুমি সমতা চাও? ঠিকাছে চলো, সমান সমান করি। যখন আমার বাবামায়ের দুর্ঘটনা ঘটলো, ওদের সাথে হাসপাতালে আমি ছিলাম, তুমি কোথায় ছিলে? তোমার মেয়ে নিয়ে বাসায়। ঠিকাছে আমিও তাই করবো, মেয়ে নিয়ে বাসায় থাকবো আর তুমি তাদের সাথে হাসপাতালে থাকবে। বাবামায়ের বাসায় যখন ছিলাম তাদের জন্যে রান্নাবান্না করেছি আর তুমি নিজের মেয়ের যত্নআত্তি করেছো। তুমিও যাও, তাদের জন্যে রান্নাবান্না করো, আমিও বাসায় থেকে আমাদের মেয়ের খেয়াল রাখবো। ছোট বাচ্চাদের মত তাদের দেখাশোনা করে, বাড়ির সব কিছু গুছিয়ে দিয়ে আমি বাবামায়ের প্রতি আমার দায়িত্ব পালন করেছি আর সেসময় তুমি নিজের মেয়ের খেয়াল রেখে আমাকে সাহায্য করেছো। তুমিও তাদের সব কাজকর্ম সারো, গোছাও আমি আমাদের ঘর সংসার আর মেয়ের খেয়াল রেখে তোমাকে সাহায্য করে যাবো। বাবামায়ের দুর্ঘটনার পর থেকে সবাই আশা করে বসে আছে আমি আমার শ্বশুর শাশুড়ির জন্যেও একই দায়িত্ব করবো। না, আমি করবো না। আমি আমার বাবামায়ের প্রতি সন্তানের দায়িত্ব পালন করেছি, তোমার বাবামায়ের সন্তান তো তুমি, তাদের প্রতি দায়িত্ব তোমার, পালনও করবে তুমি। আর এটাই তো সমতা, নাকি? তোমার বাবামায়ের জন্যে রান্না তুমি করবে, ঘরদোর তুমি পরিস্কার করবে, জামাকাপড় তুমি ইস্ত্রি করবে, আমি না। আর তুমি যদি ভাবো, তুমি “পুরুষ মানুষ” এগুলো করলে লোকে কি ভাববে, সেটার জন্যে তুমি আমাকে অন্তত অসমতায় আসতে বাধ্য করো না। আর শেষবারের মত শুনে রাখো সজীব, দরকারে নিজের বাবামায়ের যত্ন নিজে না নিয়ে, বউ তোমার বাবামায়ের যত্ন করবে এই ভাবনাটা ছাড়ো। তুমি নিজে তোমার বাবামায়ের জন্যে কিছু না করে আশা করে আছো পরের বাড়ির মেয়ে সেটা করে দেবে। ওরা তোমার বাবামা, তুমি ওদের যত্ন করবে, আমি তোমাকে সাহায্য করবো যেমন তুমি আমায় করেছিলে। আশাকরছি, যথেষ্ঠ খুলে বলেছি, এর থেকে বেশি খুলে বলার কিছু আর নেই। সজীব চুপচাপ শুনে যাচ্ছিলো আর ভাবছিলো। নিজের ভুলটা সে নিজেই বুঝতে পারলো। অবাক হলো ভেবে, কতোটা স্বার্থপর সে, নিশির ওপর সে দুইজনের বাবামায়ের সেবাযত্নের ভার চাপিয়ে দিচ্ছিলো আর তার নিজের যে দায়িত্ব আছে সে কথা সে ভাবেইনি। ছোটবেলা থেকে সমাজের বিভিন্ন জায়গায় এই দেখে দেখে বড় হয়েছে সে বলে অনুভবই করেনি পুরুষেরা কতটা অলস আসলে। এখন সময় হয়েছে তার, নিশির কাছে ক্ষমা চাওয়ার। ভারতীয় লেখক আল্লাম ভাবানার লেখা থেকে ইষৎ পরিমার্জিত ভাষান্তর। তানবীরা হোসেন ০২/০৮/২০২৩ https://www.momspresso.com/parenting/ginger-thoughts/article/should-a-daughter-in-law-take-care-of-her-parents-in-law-an-honest-answer?fbclid=IwAR3mfyROMsZ2z8VS3EV9IF-DBqQ5b7FgrvIwoL2fBpBLnJwhiUZ2MCD8hzQ

ঐ রঙধনু থেকে কিছু কিছু রঙ এনে দাও না

জীবন মানেই জি-বাংলা, সমস্যা, ঝামেলা, দু:খ, আক্ষেপ, হতাশা, আনন্দ, হাসি নিয়েই আমাদের এইসব দিনরাত্রি। আসলে সুখী, পরিতৃপ্ত, শান্তির জীবন মানে কি? হতাশা, অনিশ্চয়তা,ব্যথা,দুঃখ-কষ্ট ছাড়া জীবনযাপন? আমরা অনেকেই ভাবি, এই ঝামেলাটুকু কাটিয়ে উঠলেই, “লিভিং হ্যাপিলি এভার আফটার”। আসলেই তাই হয়? একটি পূর্ণ জীবন যাপন করলে তবেই এই অভিজ্ঞতা আর উপলব্ধি আসে, “লাইফ ইজ নট আ বেড অফ রোজেজ”। হতাশা, গ্লানি, অবসাদ সব পরিপূর্ণ জীবনেরই অংগ। শারীরিক কিংবা মানসিক ব্যথা এড়িয়ে জীবন যাপন করার চেষ্টা খানিকটা অর্ধেক জীবনযাপন করারই শামিল। আমিও আর সবার মত জীবনের বিভিন্ন রঙ/স্তর দিয়ে যাবো এই চিন্তাটা না থাকলে বরং এটি মানসিক যন্ত্রণাকে বাড়িয়েই তোলে। তাহলে পরিপূর্ণ,সুখী জীবনের মূলমন্ত্র বা সূত্র কি? “এক্সেপটেন্স” খুব সাধারণস্য সাধারণ বাংলায় যাকে বলি আমরা “মানিয়ে নেয়া বা মেনে নেয়া”। জীবনে দুঃখ-কষ্ট, হতাশা, বেদনা আসবে, “পার্ট অফ লিভিং” ভেবে এর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করাই পরিপূর্ণ জীবনের যাদুমন্ত্র। সেদিন আলিয়া ভাটের একটা রিল দেখছিলাম, আলিয়া বলছে, “জীবন হচ্ছে, বেশিটা কষ্টের, হতাশার, হাহাকারের, দুঃখের আর অল্প কিছু সুখের মুহূর্তের সমষ্টি। আমরা সবাই আমাদের গভীর গোপনে, গহনে সেসব লুকিয়ে রেখে সারাদিন হাসিমুখে ঘুরি।“ ছোট বয়সেই মেয়েটার কি গভীর জীবনবোধ। নিজস্ব মূল্যবোধ, মেনে ও মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা, নমনীয়তা, শান্তিতে থাকার পথ প্রশস্ত করে। এটি আসলে প্রতিদিন অনুশীলণ করার মতো। অনুশীলণ করে করে নিজের মধ্যে অভ্যাস করে নিতে হবে, তবেই বেঁচে থাকার আনন্দ, স্বাধীনতা, “কোয়ালিটি অফ লাইফ” অনেক বেশি উপভোগ করতে পারা যাবে। (কিছুটা নিজের আর কিছুটা বইয়ের)