Tuesday 24 March 2015

বৈদেহীঃ নাসরীন জাহান

বৈদেহীঃ নাসরীন জাহান


নাসরীন জাহান-এর বৈদেহী পড়লাম। একটি চমৎকার বিষয় নিয়ে বইটি লেখা হয়েছে। মূল আখ্যায়িকায় বলা, সংবেদনশীলতা আর আমাদের শৈশবের শিক্ষা আমাদের পরবর্তী জীবন আর মানসিকতার ওপর কী প্রভাব ফেলে। কিন্তু লেখিকার লেখার মুন্সিয়ানার অভাবের কাছে মার খেয়ে গেছে অনেকটাই লেখাটি। উপন্যাসটি আরো ভাল হতেই পারতো। বানান ভুলগুলোও দেখা দরকার ছিলো।

আমাদের ঘরে ঘরে এমন নিরালা আছে। যারা জানেই না তারা নিজেরা জীবনে কী চায়। তাদের জীবনের ঘড়ি আবর্তিত হয় স্বামীর ইচ্ছে সাথে। স্বামী কী খেতে ভালবাসে কী বাসে না ভাবতে ভাবতে নিজের কিছু চাহিদা ছিলো কিনা তাই ভাবতে ভুলে যায়। শৈশবের শিক্ষার কারণেই জুজু তাদের তাড়িয়ে বেড়ায় জীবনভর। ধর্মের জুজু, স্বামীর জুজু, পরকালের জুজু আর এই লোকভয় প্রোথিত করে গুরুজনেরা। ধর্ম হলো কাউকে শাসনে রাখার বড় হাতিয়ার। একবারও কোন মেয়ে প্রশ্ন করতে সাহস পায় না, ধর্ম শুধু মেয়েদের প্রতি এতো কঠিন কেন? মেয়ে হয়ে জন্মানো কেন তবে? ধর্ম  কী তাহলে ইচ্ছে করে সমস্যা তৈরী করতে ভালবাসে? মেয়েদের না তৈরী করলে কী হতো না? কিংবা শুধু নারী দেহ তৈরী করতে পারতো, ব্রেইন না দিলেও সমস্যা ছিলো না। কিংবা গৃহস্থালী কাজ করার জন্যে যতটুকু মগজের দরকার তার বেশী না দিলেই হতো। সর্বশক্তিমান কী এইটুকু শক্তি বা ক্ষমতা নিয়ন্ত্রন করতে পারতেন না?

আশা করছি, এই বিষয়টার ওপরে ভবিষ্যতে আরো অনেকেই কাজ করবেন। মেয়েরাই বোধ হয় সবচেয়ে ভাল কাজ উপহার দিতে পারবেন কারণ ভুক্তভোগী ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তাদেরই বেশি এই স্থানটিতে।

জীবনের যাতনার বিষে নীল হতে হতে, নিজেকে নারী দূরে থাক এমনকি মানুষ হিসেবেও অগ্রাহ্য করতে করতে ভার্জিনিয়া উলফের সেই দীর্ঘশ্বাস মনে পড়ে, নিজের একটা ঘর!
উপন্যাস থেকে তুলে ধরি নিরালা কিছু তেতো নোনা অভিজ্ঞতা:

দাদীআম্মার জীবনে প্রাণের চেয়েও মূল্যবান শব্দ সতীত্ব। এই বিষয়ে তাঁর আবেগ এমনই প্রবল, তিনি হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে মূল্যবান এবং পবিত্র বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করেন একসময়ের সহমরণকে। সীতা দাদীআম্মার জীবনের প্রধান এক আদর্শ। তিনি চোখমুখে আলো জ্বেলে গল্প করতেন, কি করে রাবণ রাক্ষসের মতো লম্পটের কাছে গিয়ে সেই বৈদেহী নিজেকে সতী রেখেছিল-বলতেন, তুই হবি তা-ই। কেউ তোকে যদি  এ বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ করে, ধরণীকে নির্দ্বিধায় বলবি, দু ফাঁক হতে। আগুনকে বলবি, তোকে আশ্রয় দিতে।

নিরালার মনে তার দাদীকে নিয়ে প্রশ্ন জাগে কিন্তু তা প্রশ্রয় পায় না নানামুখি চাপে ও তাপে:

শিক্ষা তাঁকে বিচিত্র করেছে। কিন্তু আলোকিত করতে পারে নি। যেহেতু পরকালই মানুষের জীবনের অনন্ত জীবন, সেহেতু এই স্বল্পকালীন জীবনের ভুল-ভ্রান্তির জন্য অন্ধকার কবরে গিয়ে ফেরেশতাদের দেয়া কঠিন যন্ত্রণা যাতে ভোগ করতে না হয়, এই বিষয়ে ছিল তাঁর সচেতন দৃষ্টিত্যাগ আর তিতিক্ষাই তিনি করেছিলেন জীবনের প্রধান ধর্ম। এই বিষয়ে সুরে গান রচনা করতেন তিনি-“এই দুনিয়া ঘোরের বাজার, সুন্দরী পাপ হাজার হাজার, সেই ভুলে পা দিও না গো বেহেশতরেই পাখি, মোহের খেলা বন্ধ হবে, বন্ধ হলে আঁখি।” সৃষ্টিকর্তার পরই যেহেতু ইহদুনিয়ায় স্বামীর স্থান, স্বামীকে তিনি গুরুত্ব দিতেন পয়গম্বরেরও অধিক হিসেবে।

নিরালার স্বামী হাসানের হতাশ অভিজ্ঞতা:

নীরার সাথে এই একটি জায়গাতেই আমার প্রবল মিল, আমরা দুজনেই খুব কুণ্ঠিত, নির্জন, চাপা স্বভাবের। এক ঘন্টা এক সঙ্গে আছি, হয়ত দেখা যাচ্ছে দুজনের মধ্যে কোনো কথাই হচ্ছে না, কিন্তু উভয়েই এতে প্রাণের উত্তাপের কোন ঘাটতি অনুভব করছি না। তবে ওকে কেন্দ্র করে আমার একটাই শূন্য দিক, ও আমাকে বড় জ্ঞান করে, শ্রেষ্ঠ জ্ঞান করে, এক সমান্তরালে দাঁড়ানো বন্ধু মনে করতে পারে না। ও দুঃখে, প্রেমে, ক্রুদ্ধতায় সবকিছুতেই আমার কাছে নত। ওর এই স্বভাব যতটা না অনুভব থেকে উঠে আসে তার চেয়েও বেশি আসে তার আজন্ম শিক্ষা থেকে। এই বিষয়ে ও এমনভাবে নির্মিত, আমি এই একটি বিষয়কেই চেঁছে কোনো নতুন রূপ দিতে পারি নি।

মুসলিম পরিবারে জন্মেছি তাও বাংলাদেশে। নেহাত নিরালা হতে হতে হয়ে ওঠা হয়নি কারণটা হয়তো শহরে জন্মানো আর বড় হওয়ার কারণে। যৌথ পরিবারে বাবা কাকারা জীবিকার তাগিদে বাইরে বাইরে থাকতেন সারাদিন। মা, চাচীরা, দাদীর কাছ থেকে এই শুনতে শুনতে বড় হয়েছি। মেয়েদের কী করতে আছে আর কী করতে নেই। জোরে হাঁটতে, লাফাতে নেই মাটি ব্যথা পাবে, ভাইয়ের সাথে ঝগড়া করাটা ঠিক না সমান সমান কারণ ভাই ছেলে তার অধিকার বেশি, সেইতো বাড়ির স্থায়ী বাসিন্দা আমি বা আমরাতো অস্থায়ী। মেয়েদের জোরে কথা বলা নিষেধ, যখন তখন ঘরের বাইরে যাওয়া নিষেধ। দাদু বলতেন, এমন করে চলতে হবে যাতে অন্য পুরুষ টের না পায়, পৃথিবীতে যে একজন অন্য নারী আছে, এটা অবশ্য দাদুর নিজের কথা নয়, হাদীসের কথা।

গা ঢাকো, পা ঢাকো, মাথা ঢাকো শেখাতে শেখাতে ছোটবেলা থেকেই মেয়েগুলোকে এমন করে তুলে যে জীবন কেটে যায় ঢাকতে ঢাকতে। মন আর অন্যদিকে দেয়ার সময় পায় না। নিজেকে সবার সমকক্ষ ভাবার বীজ অঙ্কুর হওয়ার আগেই মিশে যায়। ধর্মের বলি থেকে তখন হয়ে ওঠে ধর্মের রক্ষক। নিজের জীবনে যা পেয়েছে তাই বংশ পরিক্রমায় বিলাতে থাকে। আজকাল চারপাশে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ির এই মানসিকতা শিশুরা বাইরে কোথাও থেকে আহরন করেনি। দাদী, মা, নিরালাই নিয়ে এসেছে ধীরে ধীরে ......

সব মিলিয়ে বৈদেহী আমার কাছে কিছু রেখে গেলো।


তানবীরা

২২/০৩/২০১৫ 

Sunday 22 March 2015

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সমীপে


মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,

আসসালাম ওয়ালাইকুম। আশাকরি আপনি সর্বাঙ্গীণ কুশলে ও মঙ্গলে আছেন। আমরা ভাল নেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের ষোল কোটি জনতা নিরাপদে নেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

অভিজিৎ রায়ের হত্যার আজ প্রায় পঁচিশ দিন পার হয়ে গেলো। খুনিরা ধরা পড়লো না, এমনকি কারা খুন করেছে তাদের নামও জানা গেলো না। আমাদের এতো দক্ষ পুলিশ, র‍্যাব, গোয়েন্দা বাহিনী থাকা সত্ত্বেও একের পর এক হত্যাগুলো এমনি সমাধান না-হয়ে রহস্যের জালে আটকা পড়ে এক সময় নিভৃতে চলে যায় আর রচনা করে নতুন আর একটি হত্যার ক্ষেত্র। সাগর-রুনী, আহমেদ রাজীব হায়দার, ত্বকী, অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস, আশরাফুল আলম, আরিফ রায়হান দ্বীপ ...।


যে-দেশের জনতার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের জন্যে তিরিশ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে সে-দেশের মানুষ বলে কি এটাই তাহলে নিয়তি বলে ধরে নিতে হবে আমাদের? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এসব কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আপনার কি মনে হয় না, বুদ্ধিজীবী হত্যার যে-পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল একাত্তরে, এগুলো তারই অংশ? সুপরিকল্পিতভাবে দেশ থেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার, প্রতিবাদ করার কণ্ঠ বিলুপ্ত করে দেয়ার যে-চেষ্টা একাত্তরে শুরু হয়েছিল, সেই একই লোকজন একই কাজ আবার এই স্বাধীন বাংলায় চালিয়ে যাচ্ছে। আপনার কি মনে হয় না, একাত্তরে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা না-হলে হয়তো পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা এতো সহজ হতো না? বঙ্গবন্ধু হত্যার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন তাঁরা করতে পারতেন এবং তাঁর বিচার আরো ত্বরান্বিত হত? একাত্তরের পরাজিত শক্তি এতোদিন বাংলাদেশে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারতো না।

যাঁরা একাত্তরে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে তাদেরই নীল নকশায় পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন। বেঁচে থাকে নি আপনার ছোট্ট ভাই রাসেলও। তাদেরই একাংশ আপনার ওপর একুশে আগস্ট গ্রেনেড ছুঁড়েছে এবং এখন আপনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে ক্ষতি করার পরিকল্পনা করছে। সব একই সূতোয় গাঁথা। বারে বারে তারা আঘাত করছে কারণ তারা হত্যায় বিশ্বাসী এবং মুক্তচিন্তা আর মুক্তবুদ্ধির মানুষকে তারা তাদের পথের কাঁটা মনে করে। তারা হুমায়ূন আজাদকে কুপিয়েছে, আহমেদ রাজীব হায়দারকে মেরেছে, তারা অভিজিৎ রায়কে খুন করেছে কারণ তারা প্রগতিশীল, মুক্তকণ্ঠ রোধ করে দিতে চায়। তারা এখানেই থেমে থাকবে না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, তারা আস্তে আস্তে আরো সামনে অগ্রসর হবে। দেশের জনগণ যেমন নিরাপদ নয় তাদের হাত থেকে, তেমনি নিরাপদ নন আপনি কিংবা আপনার পরিবার।


আপনি উগ্র মৌলবাদীদের সাথে আপোষকামী বা ধীরে চলার যে-নীতি হয়তো গ্রহণ করেছেন, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জনগণ এবং পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আপনি এবং হয়তো তাদের পরবর্তী টার্গেট আপনার পরিবারও। একটার পর একটা অন্যায়ের সাফল্য তাদের পরবর্তী অন্যায়ের পরিকল্পনা করতে দ্বিগুণ উৎসাহ যোগাবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তিতে অত্যন্ত ধীরে চলা নীতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, চুয়াল্লিশ বছর যারা অপেক্ষা করছে তারা আর কতো কাল অপেক্ষা করবে তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে সংগঠিত হওয়া অন্যায়ের শাস্তি পেতে! যে-সন্তান একাত্তরে ভূমিষ্ঠ হয় নি সে এখন চল্লিশ পার করা তরুণ, অপেক্ষায় আছে স্বাধীন দেশে তার বাবার হত্যাকারীর শাস্তি দেখার। চুয়াল্লিশ বছরের অপেক্ষা কী যথেষ্ট নয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?
তেমনি অপেক্ষায় আছে সাগর-রুনীর ছেলে মেঘ, অভিজিৎ রায়-এর পরিবার আর তার সাথীরা, রাজীবের পরিবার ও বন্ধুরা, অধ্যাপক এম তাহের, প্রভাষক জিয়াউদ্দিন জাকারিয়া, জগৎজ্যোতি তালুকদার সর্বোপরি দেশের ষোল কোটি জনতা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, করজোরে প্রার্থনা আপনার দরবারে, আমাদের নিরাশ করবেন না। জনগণের পাশে দাঁড়ান। একবার অন্তত প্রমাণ করুন, জনগণের জন্যে রাজনীতি, রাজনীতির জন্যে জনগণ নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আদেশ দিন তাদের দায়িত্ব পালন করতে, জনগণের করের টাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে। ভারতের দিল্লিতে ধর্ষিতা হওয়া জ্যোতির অপরাধীদের ধরতে দিল্লি পুলিশের সময় লেগেছিলো মাত্র দুদিন। অভিজিৎ রায়ের হত্যার আজ কুড়ি দিন অতিবাহিত হচ্ছে। এ-ব্যর্থতার লজ্জা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শুধু একার নয়, এ লজ্জা আমার, আপনার, পুরো বাংলার জনগণের।


আপনি নিরাপদে থাকুন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে আপনিই আমাদের শেষ আশা। আপনার সর্বাত্মক সৌভাগ্য ও নির্বিঘ্ন নিরাপত্তা কামনা করছি।


তানবীরা তালুকদার
১৬/০৩/২০১৫



Sunday 15 March 2015

রইলো তাঁহার বাণী, রইলো ভরা সুরে


সর্বনেশে ২০১৫ সালের ১২ই মার্চ স্যার টেরি প্র্যাচেট দি গ্রেট আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। সব বয়সের মানুষের মধ্যে কল্পনা ছড়িয়ে দিতে পারা এই যাদুকর মাত্র ছেষট্টি বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন। তার লেখা বিখ্যাত সব বইয়ের মধ্যে আছে “দি কালার অফ ম্যাজিক” “রেইজিং স্টীম, “মোর্ট” “আ হ্যাট ফুল অফ স্কাই” এর মধ্যে “দি কালার অফ ম্যাজিক” “ট্রোল ব্রীজ” “জনি এন্ড দ্যা ডেথ” সিনেমাও হয়েছে। সাহিত্যে অবদানের জন্যে তিনি “নাইট” খেতাবে ভূষিত হন।

তার সম্মানে তার বিখ্যাত দশটি উক্তির ভাষান্তর:

১. লোকে বলে মৃত্যুর আগে মানুষ তার ফেলে-আসা জীবনের ঝলকানি দেখতে পায়। খুব সত্যি কেন জানো, এর নামই জীবন

২. মৃত্যু বললো, জীবন শেষ-হওয়াটা মর ভেবো না। ভেবে নাও, তুমি ভিড় এড়াতে আগে প্রস্থান করছো

৩. জানো না, যতক্ষণ একজন মানুষের নাম পৃথিবীতে উচ্চারিত হয়, সে তখনো মৃত নয়।

৪. আমি যে কাজটা করতে চাই, যদি তার জন্যে মূল্য দিতে হয় তবুও আমি প্রস্তত। সে যদি মৃত্যু হয় তাহলে মরব। এর যা পরিতি হবে আমি মেনে নেবো। এই আমার সিদ্ধান্ত, আমি জেনেশুনে এই সিদ্ধান্ত নিলাম।

৫. যতদিন কারো কর্ম পৃথিবীতে বেঁচে থাকে ততদিন সে মারা যেতে পারে না।

৬. সবসময় একটি শেষ সুযোগ পাওয়া যায়।

৭. সময় একটি নেশা। অনেক বেশি অলস সময় মৃত্যুর কাছে নিয়ে যায়।

৮. একটি পড়ন্ত তারকা হওয়ার চাইতে উড়ন্ত উল্লুক হতে আমি বেশি ভালবাসি।
৯. পৃথিবী এতো সুন্দর, মায়াময় আর সময় এতো কম।

১০. মৃত্যু নিষ্ঠুর নয়, শুধুমাত্র ভয়ঙ্করভাবে, নির্দয়তার সাথে তার কাজটি করে যায়।

http://metro.co.uk/2015/03/12/rip-terry-pratchett-10-of-his-most-moving-quotes-about-life-and-death-5100810/

তানবীরা

১২/০৩/২০১৫

Thursday 12 March 2015

দীর্ঘ নীরবতা ............ দ্যা লং সাইলেন্স



নীরবতা স্বস্ত্বি আনে তাই নীরব থাকা শ্রেয় ... নিজেকে রক্ষা করো মোর প্রিয়
এর অন্য নাম কী কষ্ট
সমাজের দৃষ্টিতে যখন হতে না চাই নষ্ট
দোষ ত্রুটি এড়িয়ে যেতে চাই
নিজের অনুভূতি লুকিয়ে বেড়াই
নাকি এই নীরবতা নিরর্থক!
যখন মন চায় আলো
তখন লেখালেখিই কী ভাল?
নিঃশ্চুপ থাকলে মেঘ আপনি কেটে যায়
কিন্তু যার কারণে এই দশা সেকী জানতে তা পায়
যা হয় সব ভালোর জন্যে
ভাগ্যের কথা চিরকালই মান্য
আমি বলতে চাই না আমরা কাছাকাছি আসছি
হেরে যেতে চাই না এই খেলায়।
নীরবতার আর এক নাম কিন্তু দ্বন্দ্ব
এই সম্পর্ক কী খুব কিছু মন্দ?
নাকি নীরবে সব সয়ে যাওয়া
কখনো অভিমানের হাওয়া,
নীরবতার এক নাম কখনো হার না মানা
কখনো নিঃশ্চুপ থেকে যুদ্ধে ইতি টানা  


 মূল কবিতাঃ

Silence is golden so is silence, a way to prevent been drained ,
another name of pain,
another way of not being someone to blame,
a way of preventing committing a sin,
a way of signaling your feelings
but then silence is lame,
cause silence doesnt enforce,
better to keep writing another prose,
Silence is the way to keep things smooth,
not to gesture to whatever you choose,
we're going great,
i'll just follow fate,
we're winning, i dont speak much cause
i dont want us to loose.
Silence another name for confusion,
another way of dillusion,
another way for bearing,
sometimes another way of raging,
silence another name for rising,
sometimes another way of compromising.

ভাষান্তর ঃ 

তানবীরা
১১/০৩/২০১৫







Saturday 7 March 2015

কোমল অনুভূতিসম্পন্ন মানুষদের সমীপে দুটি কথা

বাংলাদেশের মানুষ কোমল অনুভূতিসম্পন্ন। ধর্ম নিয়ে একটি কথাও তারা সইতে পারে না। তাদের অনুভূতি বিপন্ন হয়ে পরে। যারা তাদের অনুভূতিতে আঘাত হানবে তাদের যেকোন ধরনের শাস্তি যথার্থ। রাস্তায় কুপিয়ে কুপিয়ে তারা বিশ্বজিৎ হত্যা দেখতে পারে, মোবাইলে ভিডিও করতে পারে, চোর সন্দেহে বিপুল বিক্রমে পিটিয়ে পিটিয়ে যেকোন মানুষকে রাস্তায় সাপ মারার মতো করে মেরে তার ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করতে পারে, তাতেও কোথাও কারো কোন অনুভূতি বিপন্ন হয় না। শুধু প্লীজ ধর্মে হাত দিও না, নট টু টাচ ......... একজন মানুষও কী দ্বিধাহীন কন্ঠে বলতে পারে না, “আস্তিক-নাস্তিক নির্বিশেষে যেকোন মানুষের এ ধরনের মৃত্যু কোন সভ্য দেশের ভূখন্ডে কাম্য নয়। আমরা এই অন্যায়ের তীব্র নিন্দা জানাই।“  তারা কী তাহলে সৃষ্টিকর্তার ওপর আস্থা রাখতে পারছে না, পরকালের শাস্তি নিয়ে কী নিজেরাই দ্বিধায় আছে?  

ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোত্র, ভাষা নির্বিশেষে যেকোন হত্যা বা অন্যায়ের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করে, যারা কোন সীমার মধ্যে নিজেকে বাঁধে না, তাদের বিরুদ্ধে মানুষের অভিযোগের কিংবা ঘৃণার অন্ত নেই। মুক্তমনা, নাস্তিক প্রতিটি শব্দই অত্যন্ত ঘৃণার সাথে উচ্চারিত হয়। ব্যঙ্গ করে বলা হয়, মুক্তমনা আবার কী জিনিস?

মুক্তমনা হয়তো তারাই যারা হাজার হাজার বছর আগে অন্যে কী বলে গেছে কিংবা কী করেছে সেটাকে গুরুত্ব দেয়ার থেকে বর্তমান সময়ে নিজের শিক্ষা, বিবেক, বুদ্ধি, নৈতিকতার ওপর বেশি আস্থা রাখে। শোনা কথায় অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করার চেয়ে যুক্তিকে বেশি প্রাধান্য দেয়

কোমল অনুভূতিসম্পন্নদের বলছি, মহানবী তাঁর বাবা দাদার ধর্ম প্রচার করেননি। তিনি নতুন চিন্তা ভাবনা প্রচার করেছিলেন, প্রচলিত বিশ্বাসের বাইরে যেয়ে নতুন ভাবনা প্রচার করলেন, সেই অর্থ তিনি মুক্তমনা ছিলেন না? তিনি আক্রান্ত হননি সনাতন বিশ্বাসীদের দ্বারা? তিনি তার সময়ের প্রয়োজন অনুযায়ী তার আশপাশের দেখা অনাচার, অবিচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেননি? পরিবর্তন আনেনি আরব সমাজে?

ছোট বড় অনেক যুদ্ধের পর, হাজার মানুষের কল্লা কেটেই আজকের শান্তির ধর্ম প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। পূর্ব পুরুষদের পূজার মূর্তি ভেঙ্গেই কাবা ঘর প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তখন কোমল অনুভূতি কোথায় ছিলো? গ্যালিলিও, ব্রুনো, সক্রেটিস কেউই কোমল অনুভূতি পায়নি। কোন যুগেই পায়নি। নবী বোধহয় তখনো জানেননি আরবদের পরেই যেই বর্বর জাতি পৃথিবীতে আছে তার নাম বাঙালি। জানলে তার পরবর্তী নবী বাংলাদেশেই আসতো। যুগে যুগে যেখানে হেদায়তের দরকার সেখানেই নবীর আবির্ভাব।

শুভানাধ্যায়ী, বন্ধুরা পরামর্শ দিচ্ছেন, ধর্ম নিয়ে কিছু লিখলে যেনো নিজ নামে আর না লিখি, ছদ্মনামে লিখতে। কোমলপ্রাণের মানুষদের অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার ফল ভাল হবে না। কিছু উদাহরণতো চোখের সামনেই আছে। লিখবো না কিছু তাই আপাতত ভাবছি। আর যদি কিছু কখনো লিখি তাহলে নিজ নামেই লিখবো। আর কতোদিন কোমল অনুভূতিসম্পন্ন মানুষের ভয়ে মুক্তমনারা নিজের নাম পর্যন্ত লুকিয়ে ফেলবে? কবে কাটবে এই অমানিশা ...............


" আমি ভেবে পাইনে দিশে

সব জিনিস যে পয়দা করলো
সে পয়দা হইলো কিসে?"
~লালন