Friday 21 October 2011

ছাগুনয়া

G – O – A – T মানে ছাগু। ছাগু করে নাদু তাতে উৎপন্ন হয় ছাগুনয়া। কিছু কিছু ছাগু আছে যাদের পক্ষে কোনটা চুল আর কোনটা বাল তা আলাদা করা অসম্ভব। কিন্তু তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ডিগ্রী পকেটে রেখে, সওদাগরি অফিসের নরম গদি গরম করে, মোটা মাইনেতে নিজে ও পরিবারকে তাজা করে ভাবে, আমি বুঝি না বা জানি না পিরথিমিতে এমন কিছু আবার আছে নাকি? ছাগু যতো না তার নাদির গন্ধে মুগ্ধ তার চাইতে তার পরিবার আরো বেশি মুগ্ধ। ভাবে, ওগো মোর ছাগু, কি সুবাসিত তোমার হাগু। কিন্তু তাতে যে পিরথিমির পরিবেশ খারাপ হচ্ছে সেটা বোঝার মতো অনুভূতি তাদেরকে দিয়ে প্রকৃতি তাদেরকে পিরথিমিতে পাঠায় নাই। তারা আসে তাদের ছাগুত্ব দিয়ে পৃথিবীর গড়া জিনিসকে নষ্ট করতে। ছাগুনয়া জিন্দাবাদ। ছাগু ও ছাগুত্ব অমর হোক।

তানবীরা
২২.১০.২০১১


Thursday 13 October 2011

মৃত্যুর সাথে বসবাস

রুমকির অফিসে কাজ করতে করতে শরীরের একটু অস্বস্তিকর ম্যাজম্যাজানি অনুভূতির জন্যে ডাক্তারের কাছে যাওয়া হঠাৎ ই, তেমন কোন বিরাট পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া। ডাক্তার সব শুনে কিছু চেকাপ লিখে দিলেন। আবার হসপিটালে যাও, চেকাপ করাও এই বিরক্তি নিয়ে অফিসের মাঝে হাসপাতালে যাওয়া। হাসপাতালে প্রথম চেকাপ হয়ে যাওয়ার পরে বিশেষজ্ঞ ডেকে নিয়ে বললেন, আমি আর একটু নিশ্চিত হতে চাই তাই তুমি আবার আসো, আরো কিছু পরীক্ষা করবো। তারপর আবারো তেমনই মন নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া, ভাবা পাবেনাতো কিছুই, ওষুধও দিবে না, মাঝ থেকে খোঁচাখুচি করা।

কিন্তু না, এবার বিনা মেঘে বজ্রপাত। এবার বলা হলো, তোমাকে শীগগীর ভর্তি করা হবে এবং অপারেশন করা হবে। তোমার শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ন অংগ প্রায় বিকল অবস্থায়। যতোদিন না তোমাকে অপারেশন করা হচ্ছে, তুমি যেকোন ধরনের অস্বস্তিতে এই স্প্রে ব্যবহার করবে দুবার আর অপেক্ষা করবে না, সাথে সাথে এম্বুলেন্স ডাকবে, জরুরি বিভাগে চলে আসবে। কোন ধরনের চান্স নিবে না বুঝলে, কোন ধরনের চান্স নিবে না। বিভিন্নভাবে তাকে বুঝানো হলো কোন ধরনের চান্স নেয়ার সময় তার এখন না। মাথায় পুরো আকাশটাই যেনো ভেঙ্গে পড়লো। কতো স্বপ্নে এখনো রঙ ভরা হয়নি, কতো সুখ কল্পনা রয়ে গেছে এখনো অধরা। এর মধ্যেই কি ঘন্টা বেজে গেলো? ছুটির সেই অমোঘ ঘন্টা যাকে এড়ানোর সাধ্য কোন জীবিত প্রাণীর নেই? এতো ছোট মানুষের জীবন? এতো অসহায় সে নিয়তির কাছে? এতোই ঠুনকো সব? ভাবছি দিনরাত ভর, যখন কাউকে বলে দেয়া হয়, তুমি আর তিন থেকে চার মাস বাঁচবে তার তখন কেমন অনুভূতি হয়? সে মানুষ কি করে তার প্রতিটি প্রহর কাটায়? সিনেমায় দেখেছি অবশ্য বহুবার এধরনের দৃশ্য কিন্তু কখনো সেভাবে অনুধাবন করিনি তখন অভিনেতা অভিনেত্রীর এক্সপ্রেশন কিংবা তার পরের দৃশ্য দেখার জন্যে ব্যাকুল ছিলাম হয়তো। কিন্তু যখন তার আর পর নেই ..................?

ঘুমের মধ্যে একটু শব্দ হলেই চমকে উঠি সব ঠিক আছেতো? স্প্রে এর দরকার নেইতো? একটু হাঁচি এলে কিংবা কাশি হলেও মনে হয়, জরুরী বিভাগের যাবার দরকার নাতো আবার। সব ঠিক আছেতো? কি হবে কিংবা কি হবে না? যখন থাকবো না তখনো ঠিক এভাবেই সূর্য উঠবে, এভাবেই পাখি গাইবে। এভাবেই ফুল তার গন্ধ ছড়াবে, প্রেমিক তৃষার্ত আদ্র চোখ নিয়ে প্রেমিকাকে বলবে, ভালোবাসি তোমায়। কারো থাকা না থাকায় জগতের একটি মুহূর্ত এদিক ওদিক হবে না, সব ঠিক একই নিয়মে চলবে, যেমন সবসময় চলে যায়।

সিড়ি দিয়ে নামতে গেলে সারাক্ষণ মনে হয় পা ঠিক জায়গায় পড়ছে না, আমি হড়কে পরে যাচ্ছি। বার বার মনে হয় গড়িয়ে যাচ্ছি নীচে। এরই নাম কি নার্ভাস ব্রেকডাউন? অনেক শুনেছি এই শব্দটা। এর লক্ষনই কি বা গুনাগুনই কি? সারারাত দুচোখের পাতা এক না হওয়া? চোখের পাতায় সূঁচকুমার রুপকথার গল্পের নায়কের মতো হাজার হাজার সূঁচ বিঁধে থাকে কিন্তু ঘুমের দেশে হারাতে পারি না, মিছেই চোখ বন্ধ করে থাকা। কিছুক্ষণের জন্যে ঘুমালেও সারা ইন্দ্রিয় জেগে থাকে। রাতের নিঃশব্দতা ভেঙ্গে কোথায় কুকুর ডাকলো, কার বাচ্চা ঘুমের মধ্যে অকারণে কেঁদে ওঠলো, কে উল্লাসে নিশি উদযাপন করে সোল্লাসে রাস্তা দিয়ে গান গেয়ে বাড়ি ফিরছে সব কান ভেদ করে মাথায় গিয়ে পৌঁছে। ঘুমের মধ্যে এই ঠান্ডা আবহাওয়াতেও গা ভিজে জবজবে হয়ে যায়। পেট মুঁচড়ে মুঁচড়ে কি যেন একটা গলার কাছে এসে আটকে থাকে। সেটা কি বমি না কান্না, নাকি কোন নাম না জানা ব্যাথা। উগড়ে গেলে আরাম হতো কিন্তু কিছু বের হচ্ছে না। আচ্ছা, কতো সময় লাগবে নার্ভের ওপর, নিজের ওপর আবার নিয়ন্ত্রন ফিরে পেতে, কে জানে?

দূর থেকে দেখে মনে হবে সব চলছে স্বাভাবিক নিয়মে, হয়তো তাই। সবকিছু করে যাচ্ছি যেনো দম দেয়া পুতুল। অথচ আবার কিছুই করছি না যেনো। ছোট একটা বাচ্চা ধাক্কা দিলে মনে হয় উড়ে পড়ে যাচ্ছি, শরীরে কোন শক্তিই অবশিষ্ট নেই আর। সারা শরীরে কেমন যেনো একটা কাঠ কাঠ অনুভূতি হয়ে আছে। কোন কিছুতেই সেইভাবে আর মন লাগাতে পারি না। চিন্তা সারাক্ষণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মনের মধ্যে একটা কিযেনো চলছে সারাক্ষণ। হঠাৎ কখনো হাসলে মনে হয়, “হোটো পে কার্জ রাক্ষা হ্যায়”। একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে জানি। আবার হয়তো কিছুই ঠিক হবে না, এর মধ্যেই অভ্যস্ত হয়ে যাবে রুমকি। এটাই হয়ে যাবে তার স্বাভাবিক জীবন।

তানবীরা
১৩.১০.২০১১