Wednesday 20 January 2021

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক - একুশে জানুয়ারী

আছিলাম লকডাউনে যাচ্ছি কার্ফিউতে আর কটা দিন আর কটা দিন, ভেবে ভেবে রসুন বুনে যাচ্ছিলাম, রসুন কখনো ছিলো নিউইয়র্কে তো কখনো ঢাকাতে কিন্তু ইট সীমস এ নেভার এন্ডিং স্টোরি ---- ক্যাপিটল হিলতো বিএনপি অফিস দখলের ঘটনাকেও হার মানালো। এখন বাকি হলো নেদারল্যান্ডসের ক্যাবিনেট। প্রিমিয়ে মার্ক রুতে বুধবার দুপুরে কি বলবেন সেটা মঙ্গলবার দুপুর বারোটার মধ্যেই রেডিও, নিউজপোর্টাল, টিভি চ্যানেল আর হোয়াটসএপে গ্রুপ ম্যাসেজ হয়ে ঘুরতে থাকে। বেহুলার বাসর ঘরের অবস্থা। প্রিমিয়ে রুতে জানালেন, ভাইরাস তার রুপ পরিবর্তন করছে প্রতিনিয়ত আর আমাদেরকে এটি খুব সর্তকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তৃতীয় ঢেউ আসন্ন, তার জন্যে বড় প্রস্তূতি দরকার যাতে সামান্য ক্ষতির মধ্যে দিয়ে আমরা এটিকে পেরিয়ে যেতে পারি। পার্লামেন্ট অনুমোদন দিলে রাত সাড়ে আটটা থেকে ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত পুরো নেদারল্যান্ডসে কারফিউ থাকবে। আপাতত ফেব্রুয়ারির নয় তারিখ পর্যন্ত। পেশাগত কারণে কিংবা কুকুরকে পার্কে নিয়ে যেতে একা বের হতে পারবে তবে বাকি অন্যরা যদি যথাযথ কারণের প্রমাণ না থাকে তবে তাদেরকে জরিমানা গুনতে হবে। সুপারমার্কেট এবং অন্যান্য খাবারের দোকানও সাড়ে আটটার মধ্যেই বন্ধ হয়ে যাবে। কার্ফিউ দেয়ার লক্ষ্য হলো, মানুষের বাইরে ঘুরতে যাওয়া, এক সাথে হয়ে আড্ডা দেয়া আর বাড়ি বাড়ি বেড়ানো কমিয়ে আনা। যত কম মেলামেশা হবে সংক্রমণ তত কম হবে। আজ থেকে বাসায় দিনে একজন মাত্র অতিথি আসতে পারবে। তবে যদি কোন আত্মীয় বা বন্ধুকে সেবা দিতে কেউ যায় সেখানে এর ব্যতিক্রম হতে পারে। পঁচিশে জানুয়ারী থেকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে পঞ্চাশ জনের বেশি থাকতে পারবে না। কেউ নেদারল্যান্ডস ভ্রমণ করতে চাইলে এতদিন শুধু বাহাত্তর ঘন্টা আগে পিসিআর পরীক্ষা করলেই চলতো কিন্তু এখন থেকে প্লেনে ওঠার আগে আর একটি দ্রুত পরীক্ষা করাতে হবে। বলাবাহুল্য দুটি পরীক্ষার ফলই নেতিবাচক হতে হবে। এবং আসার পর দশদিন কেয়ারন্টিন বাধ্যতামূলক। যদি পাঁচদিন পর পরীক্ষায় নেতিবাচক ফলাফল আসে তবে কেয়ারন্টিনের মেয়াদ কমতে পারে। অনেকেই আসার পর কেয়ারন্টিন পালন করে না, তাই এখন থেকে যারা নেদারল্যান্ডসে আসবে তাদের ডিটেলস রেজিস্ট্রেশান করা হবে এবং চেক করা হবে, যারা নিয়ম মানবে না তাদের জরিমানা করা হবে। এই নিয়ম চালু করতে কিছুদিন সময় লাগবে তাই সামনের শনিবার থেকে যুক্তরাজ্য, দক্ষিন আফ্রিকা, আর দক্ষিন আমেরিকার সব দেশ থেকে প্লেন আসা বন্ধ থাকবে। মালামালের প্লেন, কাজের জন্যে আর চিকিৎসার জন্যে যারা বাইরে ছিল তারা আসতে পারবে। সাংবাদিক ও খেলোয়ারদেরও নিষেধের বাইরে রাখা হয়েছে। হুগো দ্যা ইয়ং বললেন, সংক্রমণ নীচের দিকে আসার পরও কেন এত কড়াকড়ি? সাধারণ করোনা সংক্রমণ একের নীচের দিকে আসলেও ব্রিটিশ টাইপ সংক্রমণের হার এক দশমিক তিন। আর ধারনা করা হচ্ছে, এপ্রিলের মধ্যে সাধারণ করোনা চলে যেয়ে পুরোটাই ব্রিটিশ করোনা দখল নেবে, সেই পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই সতর্কতা। যারা করোনা পজিটিভ হওয়ার পরও বাইরে যাচ্ছে, কেয়ারন্টিন পালন করছে না তাদের জন্যে কেয়ারন্টিন বাধ্যতামূলক করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কত দ্রুত কি পরিমান ভ্যাক্সিন আমরা পাবো তার ওপর নির্ভর করবে কত দ্রুত সবাইকে আমরা ভ্যাক্সিন দিতে পারবো। সংক্রমণ কমিয়ে আনতে আমরা আরো কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি যেমন, বায়োটেক আর ফাইজারের ভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজটি তিন সপ্তাহ পর না দিয়ে আমরা ছয় সপ্তাহ পর দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে কম সময়ে বেশী মানুষকে টিকার আওতায় আনতে পারি। ছয় জানুয়ারীতে ফেঘেল শহরে যেখানে প্রথম নেদারল্যান্ডসের করোনা ভাইরাস ধরা পরেছিলো, সেখান স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দিয়ে টিকাদান কর্মসূচী চালু হয়। ইতিমধ্যে একশো হাজারেরও বেশী মানুষকে ভ্যাক্সিন দেয়া হয়েছে এবং দিনে দিনে অনেক বেশী মানুষ ভ্যাক্সিন নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের পর সোমবারে হাসপাতাল আর পরিচর্যাকেন্দ্রে থাকা বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের ইতিমধ্যে টিকা দেয়া হয়েছে, বৃহসপ্রতি বার থেকে শুরু হবে হাউজ ফিজিশিয়ানদের তারপর তারা তাদের এলাকায় থাকা বৃদ্ধ ও ঝুঁকিপূর্ন মানুষদের টিকা দেয়া শুরু করবেন। সামনের সপ্তাহ থেকে নিজের বাসায় থাকা নব্বই বছর বয়সীদের টিকা নেয়ার জন্যে জিজিডিতে আসার আমন্ত্রণ জানানো হবে। ফেব্রুয়ারীর প্রথম সপ্তাহ থেকে পঁচাশি প্লাসদের ডাকা হবে জিজিডিতে। এবং এই সবই পরিকল্পিত সময়ের থেকে আগে হচ্ছে। এই বসন্তের মধ্যে আমরা বয়স্ক ও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের টিকাদান সম্পন্ন করে ফেলবো। এস্ট্রোজোনিকার ভ্যাক্সিন কত দ্রুত পাবো তারওপর নির্ভর করবে বাকি পরিকল্পনা। আমাদের লক্ষ্য আটই ফেব্রুয়ারী থেকে প্রাইমারী স্কুলগুলো আর তারপর মাধ্যমিক স্কুলগুলো খুলে দেয়া। সাংবাদিকঃ তাহলে ধরে নেবো ক্যাবিনেট কাল থেকে সন্ধ্যায় আর কোন মীটিং করবে না? প্রিমিয়ে রুতেঃ যত কম সম্ভব, যেগুলো নিরাপত্তার কারণে বাসা থেকে করা যাবে না সেগুলোই শুধু অফিস থেকে করা হবে, সেক্ষেত্রে আমরাও ব্যতিক্রম পেশার ক্যাটাগরীতে আসবো। সাংবাদিকঃ তিন সপ্তাহের টিকা ছয় সপ্তাহে দেয়া কতটা স্বাস্থ্যসম্মত? ঝুঁকিপূর্ণ নয়? হুগো দ্যা ইয়ংঃ আমরা এটি নিয়ে সব জায়গায় কথা বলেছি, তাদের মতামত নিয়েছি, ছয় সপ্তাহ পার হয়ে গেলে ঝুঁকি হতে পারে কিন্তু এই সময়ের মধ্যে টিকা দেয়াতে কোন ঝুঁকি নেই। সাংবাদিকঃ সতেরোই মার্চ নির্বাচন কি তাহলে হবেই? সংক্রমণের হার বেশী থাকলেও? প্রিমিয়ে রুতেঃ আমরা ডাকযোগে ভোটের ব্যবস্থা করবো, দরকার হলে একদিনে না করে কয়েকদিনে ভাগ করে করবো, আরো বেশী কেন্দ্র ভাগ করে দেবো।
২০/০১/২০২১

Monday 18 January 2021

জিও বেবির গল্প, চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় আর নিমিসা সাজায়ান ও সুরাজ ভেনজারামডু অভিনীত মালায়াম মুভি “দ্যা গ্রেট ইন্ডিয়ান কিচেন” দেখলাম। যারা খানিকটা প্যারালাল সিনেমা ভালবাসেন তাদের জন্যে মাস্ট সী। যাদের ইরফান খানের “লাঞ্চ বক্স” ভাল লেগেছিলো তাদের ভাল লাগতে পারে যদিও “লাঞ্চ বক্সে”র সাথে এর কাহিনীর তেমন কিছুই মিল নেই। সিনেমায় ম্যাসেজ আছে তবে সেটা খুব সূক্ষ্ণভাবে দেয়া। যাদের চোখ আছে শুধু তারাই বুঝতে পারবেন অন্যথায় বোর হবেন। আমার ব্যক্তিগত অভিমত, এই সিনেমার নাম অনায়াসে “দ্যা গ্রেট এশিয়ান কিচেন”ও হতে পারতো। আমার দেখা, ইন্দোনেশিয়া, চায়না, জাপান, কোরিয়া, সিংগাপুর কিংবা থাইল্যান্ডেও অবস্থা এরকমই, তেমন পার্থক্য নেই। সিনেমাটি নিয়ে মালায়লা মনোরামার লিটি সাইমন লিখেছেন, দুর্দান্ত দিকনির্দেশনা, সুনির্দিষ্ট চরিত্র এবং অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ বার্তার সাথে দক্ষ পরিবেশনা “দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কিচেনকে” একটি পরিপূর্ণ সিনেমায় পরিণত করেছে। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার অঞ্জনা জর্জ লিখেছেন, দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কিচেন আই-ওপেনার হিসাবে আসে, এমন সময়েও অনেক মহিলাকে অন্য দক্ষতার চেয়ে রান্নার দক্ষতার জন্য বিচার করা হয়। এটি কেবল এমন নব্য মহিলাদের সম্পর্কেই কথা বলেনি যারা এরকম অদম্য দাসত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলে সাথে সেই মহিলাদের জন্যও শ্রদ্ধা যাঁরা কয়েক শতাব্দী ধরে প্রতিটি বাড়ির ভেতরে নীরবে এটি পালন করে আসছেন। দ্য নিউজ মিনিটের সৌম্য রাজেন্দ্রন লিখেছেন, যে দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কিচেন পরিবার ও ধর্ম প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পিতৃতন্ত্রের আধিপত্যকে তুলে ধরে। হিন্দুস্তান টাইমসের হরিচরণ পুদিপদী লিখেছেন: গ্রেট ইন্ডিয়ান কিচেন সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পুরুষতন্ত্রের উপর সবচেয়ে শক্তিশালী চলচ্চিত্র সিনেমা হিসেবে অভিহিত করেছেন। দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাজিন শ্রিজিথ লিখেছেন: "এই ছবিটি আমাকে আমার পরিবারের প্রত্যেক মহিলার সাথে কথা বলতে এবং তাদের হতাশা কীভাবে সামাল দিয়েছে এবং তাদেরকে কেন তাদের বাড়ির পুরুষরা কখনো এ কথাটি জিজ্ঞাসা করেনি, জিজ্ঞাসা করতে বাধ্য করে।"

Sunday 17 January 2021

“ত্রিভঙ্গ” কিছু স্বপ্নভঙ্গ

আজকাল এক কিলো করোলা কিনতে গেলে, কিংবা বাসার পর্দা পরিবর্তন করতে গেলে নইলে আইফোনের মডেল চেঞ্জ করতে গেলেও প্রথমে ভাবতে হয়, সব যথাযথ বিশুদ্ধ নারীবাদের সূত্র মতো হয়েছে কিনা। অবস্থা এমন জায়গায় যেয়ে দাঁড়িয়েছে নারীবাদ শব্দটাতেই ইচিং শুরু হয়ে যায়, এলার্জি এসে গেছে। তবে আগেও কখনো নারীবাদের চর্চা করেছি কিংবা আস্থা রেখেছি এমনও নয়। জ্ঞানচক্ষু খোলার আগেই নেদারল্যান্ডসে আগমন আর বরফের মধ্যে সাইকেল নিয়ে বেশ কয়েকবার পরে, হাত-পা ছিলে মাস ছয়েকের মধ্যেই আমি জেনে গেছিলাম, এখানে টিকে থাকতে গেলে কোন বাদ আমাকে আবাদ করবে না, এদের একজন গণমানুষ হয়েই আমাকে টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যেতে হবে, এবারের সংগ্রাম, টিকে থাকার সংগ্রাম। এখনও টিকে থাকার সংগ্রামেই আছি বলে অন্যদিক নিয়ে চর্চা করাও হয়ে ওঠেনি। পনেরই জানুয়ারি নেটফ্লিক্সে এলো অজয় দেভগন প্রডাকশনের সিনেমা “ত্রিভঙ্গ-ট্যারি ম্যারি ক্রেজি”, চিত্রনাট্য আর পরিচালনায় রেনুকা সাহানে। তিনটি প্রজন্মকে নিয়ে তৈরি এই সিনেমাটি। প্রথমে মা নয়নতারা, নামিদামি লেখক, লেখাই তার একমাত্র প্যাশন। এক ছেলে, এক মেয়ে, স্বামী আর শাশুড়ি নিয়ে তার সংসার। ছিমছাম সংসার হলেও লেখা বাদে সংসারের অন্য কোন দিক দেখে না বলে শাশুড়ি পেছনে লেগেই থাকে। লেখার জন্যে, অভিনয়ের জন্যে, চাকুরীর জন্যে এমন গঞ্জনা অহরহ আমাদের উপমহাদেশের বেশীরভাগ মেয়েদের সহ্য করতে হয়। একদিন নয়নতারা আর সহ্য করতে না পেরে, গৃহকর্মী আর ছেলে-মেয়েসুদ্ধ বেরিয়ে পড়লো বাড়ি থেকে। স্বামী যেহেতু বিধবা মায়ের একমাত্র পুত্র, তাই তিনি মাকে ছেড়ে আসতে পারলেন না। যদিও এরপর সিনেমায় দেখানো হয়েছে, নয়নতারা চলে আসার পরই শাশুড়ি মারা যায়, তারপরও একই শহরে থেকে কখনও কেন নয়নতারার স্বামী, স্ত্রী আর বাচ্চাদের খোঁজ নেয়নি, কোন অর্থনৈতিক দায়িত্ব পালন করেনি, কিংবা তাদের বাড়ি ফিরিয়ে নেয়নি, নেয়ার চেষ্টা পর্যন্ত করেনি, সেটার কোন ব্যাখ্যা পরিচালক দেয়নি। কিংবা স্রেফ লেখালেখি করেই নয়নতারা কী করে এক সংসারের খরচ যোগাড় করতেন, তাও সেই সময়ে, সেটার ব্যাখাও আসেনি। তা যতো কয়টা পুরস্কারই তিনি পান না কেন।
এর অনেকদিন পর নয়নতারার বয়সে ছোট এক ফটোগ্রাফারের সাথে প্রেম ও বিয়ে। ওই ফটোগ্রাফার চৌদ্দ বছর বয়সী আনুকে ছাড়তে নারাজ। মেয়েকে নিপীড়ন শুরু করে সে। শুরু হয় অনুরাধা মানে আনু, কাজল, নয়নতারার মেয়ের গল্প। আনু ভাবে, মা জানে তার সাথে কী হচ্ছে, কিন্তু নিজের কথা ভেবে প্রতিকার করছে না, শুরু হয় মায়ের সাথে ঘৃণার, ভুল বোঝাবুঝির সম্পর্ক। নিরুপায় কষ্টে আনু আত্মহত্যা করার চেষ্টাও করে, তারপরও মা বুঝতে পারেনি। এখন কেউ কেউ বলতেই পারে, নারীবাদী মা কী করে বুঝে না! আমার সাধারণ জ্ঞানে আমি ভাবি, অ-নারীবাদী মা নারীবাদী মায়ের চেয়ে কিছু কম মা নন। আর নারীবাদী মায়ের কোন এক্সট্রা সেনসেশনাল পাওয়ারও থাকে না। আজকাল আমরা সবাইকে যত সন্দেহের চোখে দেখি, কিছুদিন আগেও সেই সতর্কতা আমাদের কারও মাঝেই ছিলো না। বাড়ি বসে, শিক্ষক, মৌলভি, আত্মীয়দের হাতে নির্যাতিত হওয়ার অনেক ঘটনা বিশ্বজুড়ে সবাই জানি। খোদ এমেরিকাতেই স্টেপ ফাদারের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার অগনিত ঘটনা রয়েছে। অনেক বছর পর আনু যখন কোন এক সাক্ষাতকারে তার এই যন্ত্রণার কথা বলেছিলো, মা সেটা পড়েছিলেন, জেনেছিলেন, কিন্তু ততদিনে দ্বিতীয় স্বামীর সাথে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়, করার আর কিছুই থাকে না। মা ক্ষত-বিক্ষত হন। আনুর কিংবা আনুর ভাইয়ের পড়াশোনা নিয়ে খুব কিছু দেখানো হয়নি সিনেমায়। উঠতি বয়সী আনু সিনেমায় অভিনয় শুরু করে, তার রাশান বন্ধু হয়, লিভ টুগেদার শুরু করে, যার ব্যবস্থা মা নয়নতারাই করে দেয়। আনু প্রেগন্যান্ট, বয়ফ্রেন্ডের সাথে মারামারি, তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। সব শুনে মা দৌড়ে এলে মাকেও বের করে দেয়। এরপরও আনু যখন তার মেয়ে মাশার জন্ম দেয়, মা আবার দৌড়ে আসে, কিন্তু এবার সাথে মায়ের নতুন বয়ফ্রেন্ড রায়না। আনুর ভাষায়, রায়না মায়ের জীবনে আগে এলে তাদের সবার জীবন অন্যরকম হতে পারতো। রায়নাকে সেই পুরুষ হিসেবে দেখানো হয়েছে যাকে প্রতিটি মেয়ে কামনা করে। মা এবং সন্তানদের যোগাযোগের বন্ধন হয়ে ওঠেন রায়না। এমনকি নাতনি মাশাকেও কোলেপিঠে করে বড় করতে থাকেন তিনি। রায়না শিল্প ভালবাসেন, সাহিত্য ভালবাসেন, সংগীত ভালবাসেন, কিন্তু বিয়ে প্রথায় বিশ্বাস করেন না। তারপরও আনু তার মাধ্যমে খুঁজে পায় তার জীবনের ভালবাসা ওড়িশি নাচ, আর ছেলে রবীন্দ্র পায় ঈশ্বরের খোঁজ। মায়ের সাথে উত্থান-পতনে চলছিলো জীবন আনুর। পুরুষ বন্ধুদেরকে টিস্যু দিয়ে নাক পরিস্কার করে ফেলে দেয়ার মতো আরামের তত্ত্বে বিশ্বাস করা আনুর মেয়ে যখন এক প্রাচীনপন্থী পরিবারের এক ছেলেকে বিয়ে করে বাচ্চা নিয়ে ফেললো, এখানে এসে নারীবাদ প্রচণ্ডভাবে আছাড় খেলো। কী করে সম্ভব! সেই পরিবার এতোই রক্ষণশীল যে বাড়িতে মেয়েরা মাথায় কাপড় দেয়, বাচ্চা হওয়ার আগে তারা বাচ্চার “লিঙ্গ” সম্পর্কে নিশ্চিত হতে যায়, মেয়ে সন্তান তাদের কাম্য নয়। নারীবাদীর মেয়ে এই সংসারে কী করে থাকতে পারে? তাইলে এতোদিনের নারীবাদ বিফলে গেলো। আমার প্রশ্ন এখানে, একজন ধার্মিকের মেয়ে যদি নাস্তিক হতে পারে, একজন অ-নারীবাদীর মেয়ে যদি নারীবাদী হতে পারে, তাহলে উল্টোটা হবে না ভাবার কারণ কী? ডাক্তারের মেয়ে ডাক্তারই হয়? যে বাচ্চাটি নানী বা মায়ের কাছে পরিবার পায়নি, স্কুলে বুলিংইয়ের মধ্য দিয়ে গেছে, তার কাছে হয়তো যেকোন মূল্যে এরকম পরিবারই প্রায়োরিটি। সবার প্রায়োরিটি আর চাহিদা একই হতে হবে কেন? কত মানুষতো নিজেই পরিবর্তন হয়ে যায়। বাংলাদেশের জনপ্রিয় নায়িকা শাবানা, পরিবার নিয়ে দেশত্যাগ করেছে, চলচিত্রের সাথে কোন সম্পর্কই রাখেনি, ফেরদৌস ওয়াহিদ গান ছেড়ে দিয়ে গ্রামে চলে গেছে, গুলশানের বিলাসবহুল জীবন বাদ দিয়ে বৈমানিক কামাল মাহমুদ গাজীপুরের অদূরে নিভৃতে আছে জল ও জংগলের কাব্যে। সোশ্যাল মিডিয়া যারা চালায় তাদের পুত্র কন্যাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় কোন একাউন্ট করাও নিষেধ দেখলাম নেটফ্লিক্স ডকুমেন্টরি সোশ্যাল ডেলিমাতে। তারপর আসে, সেই যুগান্তকারী সংলাপ, মা-বাবা কী শেখালো? একটা মানুষ তার নিজের মতো থাকে সত্তর ভাগ, আর বাকি ত্রিশ ভাগ থাকে বাইরের শিক্ষা। বাবা-মা আর পরিবার চাইলেই তাদের ছেলে-মেয়েদের সব শেখাতে পারে? শিখেছি আমরা? হয়েছি বাবা-মায়ের চাহিদানুযায়ী? নজরুলের ছেলে নজরুল হয়েছে? মা ছাড়া গৃহভৃত্যের কাছে মানুষ, রবীন্দ্রনাথ কিন্তু তিনি আর তাঁর স্ত্রী মৃণালিনী মিলেও আর একজন রবীন্দ্রনাথ আসেনি। ধার্মিকরা যেমন বলে, কন্যা সন্তান দত্তক নেয়া জায়েজ নয়, তেমনি নারীবাদীরা যখন বলে, ঐরকম পরিবারে বিয়ে করা নারীবাদ নয়, দুটোকেই আমার চরম জাজমেন্টাল, মৌলবাদিতা মনে হয়। কয়েকদিন আগে আনুশকার মৃত্যুতে সোশ্যাল মিডিয়া ভেসে গেলো আনুশকার মাকে ধুয়ে দিয়ে। কী করতো আনুশকার মা? সতের বছরের মেয়ে কোলে করে বসে থাকবে? মেয়ের ফেবু একাউন্ট চেক করবে? মেয়ের সাথে স্কুলে ক্লাশ করবে? বন্ধুদের বাড়ি বাড়ি যাবে? মেয়েকে যদি বলে ওর সাথে মিশিস না, মেয়ে লক্ষী হয়ে শুনে বসে থাকবে? পৃথিবীর কোথাও এরকম হয়? যেটুকু হয়, সেটা হলো আইনের শাসনের কারণে মানুষ অপরাধ করতে সতর্ক থাকে বা অপরাধপ্রবণতাই তাদের মধ্যে জন্ম নেয় না। একসময় ট্রেন্ড ছিলো, ব্রোকেন ফ্যামিলির ছেলেমেয়েরা ড্রাগ নিতো। এখন? ড্রাগ না নেয়াটাই বরং অসাধারণ ব্যাপার। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া মেধাবীরা হচ্ছে জঙ্গি। জীবন তো কোন ফর্মূলাকে অনুসরণ করে না, ফমূর্লা জীবনকে অনুসরণ করতে পারে। এই সিনেমার সকল ঘটনা ঘুরেছে তিন নারীকে কেন্দ্র করে, ছেলে রবীন্দ্রের চরিত্র এখানে তেমন গুরুত্ব পায়নি। কয়দিন আগেই দেখেছি বিশ্ববিখ্যাত ভারতীয় গণিতজ্ঞ শকুন্তলা দেবীকে নিয়ে বানানো সিনেমা, সেখানেও মায়েতে-মেয়েতে সংঘাত ছিলো। গণিতজ্ঞের মেয়ে গণিতজ্ঞ হয়নি, মলেস্টও হয়নি, তাই বলে সংঘাত থেমে থাকেনি। প্রাকৃতিক কারণেই হয়তো মা আর মেয়ের মধ্যে সংঘাত কিছু হয়। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে আজ মাকে যতটা বুঝতে পারি, আগে পারিনি, এও জানি, আজ মেয়ে যত রিয়াক্ট করে, আমার জায়গায় এসে গেলে সেও জেনে যাবে, মা হলে কীসের মধ্যে দিয়ে যায়। বিভিন্ন ঘটনায় যারা জাজমেন্টাল রায় দিতে ব্যস্ত থাকেন, তাদের জন্যে বলছি, এদের জ্ঞান দাও প্রভু, এদের ক্ষমা করো। কল্যাণ হোক সকলের। ১৭/০১/২০২১

Sunday 3 January 2021

The Corpse of Anna Fritz

অবশেষে, স্প্যানিশ মুভি The Corpse of Anna Fritz [2015] দেখলাম। সহকারী লেখক ও পরিচালক Hèctor Hernández Vicens। প্রথমে মনে হচ্ছিলো, সুস্মিতা সেনকে নিয়ে সৃজিত মূখার্জীর বানানো “নির্বাক” (২০১৫) এর কাছাকাছি। কিছুদিন আগে খবরে পড়েও ছিলাম, মৃত লাশের সাথে নির্যাতনের ঘটনা। এর আগেও পড়েছিলাম, কবর থেকে তুলে লাশকে নির্যাতনের ঘটনা। অনেক মেয়েই দুঃখ করে বলেন, মরলেই শান্তি। আসলে মরেও মেয়েদের শান্তি নেই, কবরে যতদিন দেহাবশেষ আছে ততদিনও নয়। মনে হচ্ছে যথেষ্ঠ স্পয়লার দেয়া হয়েছে? আচ্ছা, সিনেমাটা দেখার পর না হয়, জানাবেন। দুই হাজার পনেরর পনেরই মার্চে টেক্সাসের সাউথ বাই সাউথওয়েস্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রথম ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়। অক্টোবরে স্পেনে সিনেমাটি রিলিজ দেয়া হলে নয় হাজার জন দেখে। দুই হাজার ষোল সালের ফ্রেব্রুয়ারিতে পরিচালক দেখেন, ফেসবুক আর ইউটিউবের মাধ্যমে ফিলিপাইনে সিনেমাটি অবৈধভাবে পাঁচ থেকে সাত মিলিয়ন বার ডাউনলোড করা হয়েছে। তাকে এই নিয়ে আইনের আশ্রয় নিতে হয়েছে। যথেষ্ঠ ভাল রিভিউ পেয়েছে সিনেমাটি তবে, অনেকেই একে শর্ট ফিল্মের ক্যাটাগরীতে ফেলেছেন। দুই হাজার উনিশে একই প্লটে Husma নামে একটি সিংহল সিনেমাও বানানো হয়েছে। স্প্যানিশ ভাষায় বানানো সিনেমাটি ইংরেজি সাবটাইটেল সহ নেটে এভেইলেভল।

‘সোভিয়েত নারীর দেশে’

ছোট্টবেলায় রুশদেশের উপকথা, বাড়ির কাছে রাশান কালচারাল সেন্টার, রাশান সালাদ, ক্রিস্টাল, রাশান মাত্রিউশকা ডল, মস্কোর জার বেল, বৈকাল হ্রদ, মুখ থুবড়ে পড়া সমাজতন্ত্র, সেন্ট পিটার্সবুর্গ, ভদকা, সব মিলিয়ে এক বিস্ময়ের নাম ছিলো "রাশিয়া"। "সোভিয়েত নারীর দেশে" শুরুও হয়েছে সেই ছোটবেলার প্রান্ত থেকেই, সুপ্রীতিদি শুরু করলেন, ধানমন্ডি সাতাশ নাম্বারের মেফেয়ার থেকে স্টেপস স্টাইলে চুল কেটে --- আমাদের ছোটবেলায় একটা সময় ধানমন্ডি সাতাশ নাম্বারের মেফেয়ারই ছিলো ঢাকায় মেয়েদের চুলকাটার দুটো দোকানের একটা। সম্ভবত গুলশান মেফেয়ার আর ধানমন্ডি মেফেয়ার (স্মৃতি থেকে লিখছি)। শুক্রবারে চুল কাটতে গেলে অনেকের সাথেই দেখা হয়ে যেতো, বউ খোঁপা, বউ সাজ, যাদের বিয়েতে দাওয়াত হয়নি, তাদের কার কোথায় বিয়ে হচ্ছে, খোঁজ পাওয়া যেতো। আরও ছোটবেলা আছে বইতে, আমি যখন বেণী দুলিয়ে স্কুলে যাই, তখন সুপ্রীতিদি কলাবাগানে থেকেই এইচএসসি পড়ছেন এবং উচ্চশিক্ষার জন্যে বিদেশ যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন … লাকি দিদি, সোভিয়েট ইউনিয়নে অন্য ভাষায়, সব অন্য গ্রহের মানুষদের সাথে কিন্তু বিরাট আনন্দ নিয়ে দিন যাপন করেছেন। মুক্তমনা মানুষ ছিলেন, না খাওয়ার সমস্যা হয়েছে, না ধর্মের, না জামাকাপড় কিংবা বন্ধুত্বের, এ যেনো ভূপেন হাজারিকার সেই গান, "রঙের খনি যেখানে দেখেছি, রাঙিয়ে নিয়েছি মন"। ভিন্ন জাতীয়তার মানুষদের সাথে না মিশলে আসলে মানুষ হিসেবে শিক্ষার অনেক অপূর্ণতা থেকে যায়, সেটা মেশার পরেই অনুভব করা যায়। আর্মেনিয়ানদের ইতিহাস, সংস্কৃতি, তুর্কিদের অত্যাচার, আরারাত পাহাড় বেদখল কত কী জানলাম দিদির হাত ধরে, সাথে তাদের অতিথিপরায়ণ স্বভাব, মানুষকে আপন করে নেয়ার অদ্ভূত ভালবাসার ক্ষমতা, বইটি না পড়লে অজানাই থেকে যেতো। যে সময়টিতে মানুষের আজীবনের বন্ধুত্ব হয়, নির্ভেজাল বন্ধুত্ব, স্বার্থহীন, সেসময়টা কেটেছে তার রাশিয়ায়। তাই আজও সেসব দিন, সম্পর্ক, তার স্মৃতিতে, বাস্তবে জ্বলজ্বল করছে। সুখের দিন ছিলো, ছিলো দুঃখেরও দিন। প্রেম, প্রণয়, মেয়ের জন্ম, রাশিয়াতেই। উনিশ থেকে উনত্রিশ, নিজেকে গড়ে তোলার দশ বছর, মানুষের জীবনের একটি মাইলস্টোন টাইমিং, কত কিছু ঘটে এসময়টায়। ব্যক্তিগত জীবনের বাইরে তিনটি সময়ের কথা লিখেছেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন, তার পতন আর সোভিয়েত রাশিয়া। কত নিরাপদ, সম্মানজনক সমাজ ব্যবস্থাও তাদের নিজেদের পতন ঠেকাতে পারেনি। দেখেছেন রাজনৈতিক পতনের এক ধাক্কায় চেনা মানুষদের নৈতিকতাও বদলে যায় অনেকগুণ। রাশিয়ার উন্নত ট্রাম, বাস, রেলের সিস্টেম, বড় বড় প্রাসাদোপম বিশ্ববিদ্যালয়, রাস্তা ঘাটের প্রাচুর্য্যের সাথে ছিলো সাবান-শ্যাম্পুর মতো প্রাত্যহিক ব্যবহারিক জিনিসের অপ্রতুলতা, আর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পরে তো খাবার জিনিসের দুষ্প্রাপ্যতা। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার না পেয়ে ফিরে যাওয়ার গল্প আমি ছোটবেলায় শুনেছি, পত্রিকায় পড়েছি, কিন্তু কেউ কেউ সেগুলোর ভুক্তভোগীও বটে, তা জানলাম। আবার সেই একই সময়ে, যে সোভিয়েত ইউনিয়নে খাবার পাওয়া যাচ্ছে না, শুধুমাত্র খাবারের জন্যে মেয়েরা নিজেদের শরীর পর্যন্ত বিক্রি করছে, অনেকেই ব্যবসা করে মিলিওনিয়ার হয়ে গেছেন। রাষ্ট্রের যেকোনো পরিবর্তনে আজও নারীরাই প্রথম শিকার হয়, এই তিক্ত বাস্তবতাটিও কোথাও বদলায়নি। অথচ রক্ষণশীল রাশিয়ায়, নারীরাই ছিলো অর্থনীতি থেকে পরিবার, সব জায়গায় ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু। "একাত্তরে বাবাকে হারিয়ে একাকি বড় হতে থাকা মেয়েটির মানসিক অবস্থার কথা কেউ কোনদিন ভাবেনি, কাউন্সেলিং তো দূরে থাক। তাই অনুকূল বিষয়কেও সহজেই সে প্রতিকূল করে তুলেছে শুধুমাত্র মানসিক স্থিরতার অভাবে। এমন কতো একাত্তর প্রজন্ম যে আছে, যারা আমারই মতোন হতাশায় ভুগেছে, কে জানে। কার খবর কে রাখে!" এইটুকু পড়ে অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে থেকেছি, যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ নিয়ে অনেক স্বপ্ন আর বাস্তবতার গল্প, প্রকল্প শুনেছি। কোথাও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মানসিক কষ্টের কোন রেমিডির কথা কি উল্লেখ ছিলো? নাটকে কিংবা সিনেমায়? না, মনে পড়ছে না। তারা তাদের মতো নিজেদেরকে এ সমাজে টেনে নিয়ে গেছেন। "কোথাও কি কেউ ছিল আমার? ওই যে ইউক্যালিপটাস বনের পাতার ফাঁক গলে আজ যে দোল পূর্ণিমার চাঁদটা ঝুলে রইলো মধ্য আকাশে, সেই আলোর নিচে আমি কি আছি কোথাও?" যেমন মিষ্টি করে কথা বলেন দিদি, ঠিক তেমন মিষ্টি বাংলায় লেখা তার সেসব গৌরবোজ্জল এবং মধুর দিনের কথা। ইয়েরেভান লেলিনগ্রাদ, ককেশাস পাহাড়, সিভান লেক প্রভৃতির দারুণ বর্ণনা উঠে এসেছে তার লেখায়। শুধু এক দুরন্ত তরুণীর স্মৃতিকথা হিসেবে নয়, সাহিত্যমানেও বইটি পাঠকের হৃদয় কেড়ে নেবে। রাশিয়া, সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে যারা আগ্রহবোধ করেন, অবশ্যই বইটি পড়ে নেবেন, মিস করবেন না। সব্যসাচী থেকে প্রকাশিত, পাওয়া যাবে এবারের বইমেলাতে ০২/০১/২০২০