Friday 28 August 2015

ধর্ম মানে মানবতার পরাজয়

ধর্ম মানে ভূমধ্য সাগরে কোটি ডলারে
রাজ রাজার নীল উষ্ণ জলে স্নান
ধর্ম মানে দরিদ্র সিরিয়াতে শত শত
অবুঝ নিরীহ শিশুর রক্ত স্নাত প্রাণ।

ধর্ম মানে নাস্তিক ইউরোপে লক্ষ প্রাণের আশ্রয়
সমস্ত আরব কীভাবে চুপ আছে পৃথিবীর বিস্ময়
ধর্ম মানে যুদ্ধ, হানাহানি, লক্ষ প্রাণের ক্ষয়
ধর্ম মানে তরবারীর কাছে মানবতার নিদারুন পরাজয়।  

ধর্ম মানে বৃদ্ধার আর্তনাদ, পিতৃহীন অবোধ শিশু
সংসার ফেলে, প্রাণ নিয়ে ছেড়ে যাওয়া সব পিছু  
ধর্ম মানে রাজনীতি আর ডলার তেলের খেলা
ধর্ম মানে মানুষ নয়, যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা।

28-08-2015

Thursday 27 August 2015

প্রসঙ্গঃ অলিখিত ৫৭ ধারাটি

লেখার শুরুতেই জেনে নেই ৫৭ ধারাটিতে আসলে কী আছে? ৫৭ (১) ধারায় বলা আছে:
কোন ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েব সাইটে বা অন্য কোন ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোন ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি প্রদান করা হয়, তাহা ইহলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ৷
এখন থেকে ১৪৫০ বছর আগে রোমের সামন্ত রাজারা প্রতিক্রিয়াশীল মৌলবাদী খ্রিস্টানেরা ক্যাথলিক চার্চের যাজকদের সহায়তায় জনগণের উপর ধর্মের নামে যে অত্যাচার করেছিলো, তার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ব্লাসফেমি’। ৫৭ ধারার কাছাকাছি কিংবা এপিঠ ওপিঠ বলা যেতে পারে কিংবা উল্টোটাও।
ব্লাসফেমি আইন কী?
ব্লাসফেমি শব্দের অর্থ’-‘ধর্মনিন্দা’ বা ‘ঈশ্বরনিন্দা’।
প্রাচীন ও মধ্যযুগে ইউরোপে ব্লাসফেমির উদ্ভব হয়েছিল। সে সময় রাজা বাদশাদের বলা হত ঈশ্বরের প্রতিনিধি,তাই রাজাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা মানে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বলা,এইভাবে রাজার অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে জনগণের আন্দোলন যাতে গড়ে না- উঠতে পারে সেই জন্য ওই সময় ব্লাসফেমি নামের এই কালো আইন তৈরি হয়েছিলো। ঈশ্বরদ্রোহিতার আড়ালে রাজদ্রোহিতা বা রাষ্ট্রদ্রোহিতা ঢাকতে চাওয়া হতো এর সহায়তায়।
এই আইনের কারণে পোলিশ বিজ্ঞানী কোপারনিকাসের সেই দ্য রেভোলিওশনিবাস’ বইটি ধর্মের বিরুদ্ধে যাওয়ায় গির্জার পাদ্রীরা বইটি নিষিদ্ধ করে দেয়,কারন ওই বইটিতে লিখা ছিল পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে,কিন্তু বাইবেলে লেখা ছিল পৃথিবীর চারদিকে সূর্য ঘোরে। ১৫৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। এরপর ইতালির বিজ্ঞানী জিয়োর্দানো ব্রুনো সেই অপ্রকাশিত সত্য উদ্ঘাটন করেন,এবং তা তিনি প্রচার করতে শুরু করলেন। এ কারণে তাঁর প্রতি ধর্মযাজকেরা ক্ষিপ্ত হন এবং কঠোর শাস্তি প্রদানের উদ্যোগ নেন। বাধ্য হয়ে ব্রুনো ইতালি ছেড়ে সুইজারল্যান্ডে যান,সেখানেও তিনি একই কারণে বহিষ্কৃত হন। পোপের নির্দেশে একের পর এক দেশ ব্রুনোর জন্য নিষিদ্ধ হয়ে যায়।এই সময় পোপের এক গুপ্তচর এক মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে ব্রুনোকে ইতালিতে নিয়ে আসে। ১৫৯২ সালের ২৩ মে বিজ্ঞানী ব্রুনোকে বন্দী করে তার উপর শুরু হয় নির্যাতন। টানা আট বছর ধরে তাকে সিসের ছাদের নিচে আটকে রেখে (গরমের সময় যা তীব্র গরম, শীতের সময় যা প্রবল ঠান্ডা) বিচারের নামে প্রহসন চালায়, শেষে বিচারের রায় হল, ‘পবিত্র গির্জার আদেশে পাপী ব্যক্তির এক বিন্দু রক্তও নষ্ট না-করিয়া হত্যা’, অর্থাৎ আগুনে পুড়িয়ে হত্যা। ১৬০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রুনোকে নিয়ে যাওয়া হল এক বধ্যভুমিতে। তাঁর জিভ শক্ত করে বাঁধা ছিল,যাতে শেষ বারের মতও তার আদর্শের কথা তিনি বলতে না-পারেন,আগুনে পুড়িয়ে এই বধ্যভূমিতে বিজ্ঞানী ব্রুনোকে হত্যা করা হল। এই হল ব্লাসফেমি আইনের নির্মম নিষ্ঠুর পরিণাম। এখানেই শেষ নয়,ব্রুনোর পর ব্লাসফেমির আরেক শিকার বিজ্ঞানী গ্যালিলিও তাঁর শেষ আটটি বছর কারাগারে দিন কাটান এবং সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
৫৭ ধারা নিয়ে প্রায়ই ফেসবুকে আলোচনা হয়। ৫৭ ধারা বাতিলের জন্যে আন্দোলন হয়, লোকে এই কালো আইনের প্রতিবাদস্বরূপ ফেসবুকের কভার পেজ, প্রোফাইল পিকচারে নানা রকম টেক্সট দিয়ে রাখে। আমার সাদাসিদে দৃষ্টিতে ৫৭ ধারা আসলে আর কিছুই না, আমাদের সমষ্টিগত রক্ষণশীল বাংলাদেশি জনগণের মানসিকতার সার্থক প্রতিফলন মাত্র। পৃথিবী যতোই সামনে আগাক না কেন বাংলাদেশ এখনো আটকে আছে সেই চৌদ্দশ সালেই।
অনেকেই বলেন আমাকে, আমি অনেক বেশি ‘জেনারালাইজ’ করি, তাই কি? কতোটুকু বেশি-কম হলে জেনারালাইজ করা যায় কিছু? “কতোটা পথ হাঁটলে পরে পথিক বলা যায়?”
নাস্তিক, তার ওপরে মেয়ে? আবার যা ইচ্ছে তাই ধর্মের বিরুদ্ধে, সংস্কারের বিরুদ্ধে, রীতিনীতির বিরুদ্ধে লিখে বেড়ায়? যে-কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে একথা, ওকথার পরে সেই মেয়ের বাবা, ভাই কিংবা মা, বোনকে এই নিয়ে প্রায়ই হেনস্তা করা হয়।
-মেয়েটা কি আল্লাহ-খোদা মানে না! একদম উচ্ছন্নে গেছে।
-আপনারাতো নামাজ রোজা করেন, ধর্মকর্ম মানেন, মেয়েকে বোঝান না কিছু? মেয়ে কি একদম কন্ট্রোলের বাইরে, শোনে না আপনাদের কথা?
মেয়ের বাবা-মা মরমে মরে যান। এমনিতেই তাঁদের ধর্ম ভীরু দুর্বল মন, মেয়েকে সেভাবে শাসন করেননি এসব নিয়ে, আগে ভেবেছেন, বয়সের দোষ, সময়ে সেরে যাবে, মেয়ের মন ঘুরে যাবে। আজ তার প্রায়শ্চিত্ত করছেন। সামাজিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়েন এধরনের আলোচনায়। সুযোগ পেলেই সমাজ নাস্তিকদের পরিবারকে মানসিকভাবে ‘চমৎকার’ করে দেয়। করে খুব আন্তরিক মুখে, সইতেও পারবে না, কইতেও পারবে না। সবই তো আসলে ভালোর জন্যেই বলা হচ্ছে। এসব করা কি ভালো, বলেন? পরকালে কী জবাব দিবেন? হাশরের ময়দানে কোন মুখে তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়াবেন? তাছাড়া, দেখতেসেন না আজকাল কুপায়ে মেরে ফেলতেসে, দরকার কি এসব কথা বলার বা লেখার?
যেসব পরিবারে সমকামী কিংবা তৃতীয় লিঙ্গ কিংবা বিকলাঙ্গ কোন সন্তান থাকে তাদেরকে সামাজিকভাবে কত চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় সেটা অনুভব করতে পারা যায় এসব আলোচনার মধ্যে দিয়ে। যখন কোপাবে তখন হয়তো দূরে দাঁড়িয়ে ছবি তুলবে, ভিডিও করবে, কাছে এসে আহত মানুষটাকে ধরবে না কিন্তু যখন নিরাপদ জায়গায় থাকবে তখন কেউ তাদের সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে ভুলবে না।
সামাজিক ‘চমৎকার’-এর মানসিক চাপ সহ্য করার পর শুরু হয় ঘরোয়াভাবে ‘ইমোশোন্যাল ব্ল্যাকমেইলিং’।
-আমার বাবা-মা, ভাইবোন তোমার জন্যে সমাজে হেনস্তা হবে, সেটা কেন আমি মানবো?
-আমি বিশ্বাস করি না করি সেটা আমার মধ্যে রাখি, আমিতো মানুষকে লিখে জানাতে যাই না। এমনিতে কি জীবনে সমস্যার কমতি আছে? তুমি কেন ইনভাইটেড সমস্যা তৈরি করো?
-আজকে আমরা ছেলেরা যখন ওখানে আড্ডা দিচ্ছিলাম, ওমুক ভাই বললো, ফেসবুকে ভাবির ঐ-লেখাটা পড়লাম। উনি বিশ্বাস করে না করে সেটা ঠিকাছে, কিন্তু অন্যরাতো বিশ্বাস করে, সেটা বুঝে লেখা উচিত। অন্যদের সম্মান করে লেখা উচিত, আপনি কি ভাবিকে এসব নিয়ে কিছুই বলেন না? আমি কোন জবাব দিতে পারি নি, তোমার জন্যে কি আমি জায়গায় জায়গায় ছোট হবো নাকি? বন্ধ করো এসব। লিখতে হলে অন্য কিছু নিয়ে লেখো, এসব স্পর্শকাতর বিষয় বন্ধ। কী এমন মানুষ তুমি, আর কী এমন লেখো যে ঘরেবাইরে এসব নিয়ে এতো আলোচনা সহ্য করতে হবে? আমি একটা নিরিবিলি সংসার চেয়েছি। সারাদিন কাজ করে এসে এতো অশান্তি আমার পোষাবে না।
একজন কী লিখবে, কতোটুকু লিখবে সেটা ঠিক করে দেয় এ-দেশের পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র। কোনটা শোভন, কতটুকু শোভন তাও ঠিক করে দেবে পরিচিত সার্কেল। কতোটুকু লিখলে বাবা, মা, শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামী, সন্তান হেনস্তা হবে না সেটুকু মেপে বুঝে লিখতে হবে। মেয়েদের কোন বিষয়ে কতোটুকু লেখা মানায় তার একটি অলিখিত মাপকাঠিও আছে। তারপরেও ব্লাসফেমি আইন বা ৫৭ ধারা আলাদা কিছু মনে হয়? ঘরে ঘরে, সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অদৃশ্য পর্দায় ঢাকা নেই ৫৭ ধারা? একটা মেয়ে সে লিখুক আর নাই লিখুক, প্রতি পদে পদে ঘরে, অফিসে, বাইরের সোশ্যাল গেটটুগেদারে কতো রকমের অলিখিত ৫৭ ধারার মধ্যে দিয়ে যায় তার খবর কেউ কি জানে? সঠিক এবং সমুচিত জবাব জানা থাকলেও, সমাজ, সংসার আর পরিবারের কারণে তাকে সীমাহীন আপোস দিয়েই হাসিমুখে সব সয়ে যেতে হয়। আইনের ৫৭ ধারা বাদ গেলে এই বাংলাদেশ আর কতোটুকু বদলাবে? যেখানে লেখার স্বাধীনতা নেই, বলার স্বাধীনতা নেই, সেখানের কাগুজে স্বাধীনতায় চিনি লিখে আর কতো চেটে খেয়ে ভাববো মিষ্টি খেলাম তবে?
মেয়েরা লিখবে হালকা পাতলা প্রবন্ধ, এই সমাজের নারীদের ওপর ঘটে যাওয়া চিরকালের বৈষম্য নিয়ে। কিংবা ফুল, পাখি, প্রকৃতি নিয়ে কবিতা, মাঝে মাঝে ভাষা আন্দোলন কিংবা মুক্তিযুদ্ধ থাকতে পারে সমাজসচেতনতার প্রতীক হিসেবে। গল্প লিখলেও নানাবিধ সাংসারিক ঘটনার মধ্যেই আটকে থাকতে হবে, শারীরিক ঘনিষ্ঠতার অংশটুকু খুব সচেতনভাবে লেখা থেকে দূরে রাখতে হবে। ভালো মেয়েরা এসব নিয়ে লেখে না, লিখতে হয় না কারণ তারা শারীরিক ব্যাপারটা সেভাবে হয়তো জানেই না, কারণ ভালো মেয়েদের শরীর থাকতে নেই। এসব নিয়ে লিখলেই আবার স্বামী, ভাই, মা তাদের মুখ ছোট হবে সমাজে, পরিবারে। কোন কোন বিষয়ে ঠিক কতোটুকু লেখা যাবে সেটা নিক্তি মাপা আছে।
কাউকে বলে কী বোঝানো যায়, মানুষ লেখে না, লেখা ভেতর থেকে আসে। লেখা একটা মানুষের অনুভূতি, চিন্তা, চেতনা, মনন, বিশ্বাস, ধর্মের প্রতিচ্ছবি। দর্জি বাড়ির অর্ডার দিয়ে বানানো জামা কিংবা বেকারিতে অর্ডার দিয়ে বানানো কেক নয়। ওতে কতটুকু ময়দা কিংবা ঘি পরবে সেটা বাইরের কেউ বলে দিতে পারে না। ওটা যে লেখে তার ভিতর থেকেই আসে। লেখক যা ভাবে সেটাই তার লেখাতে আসা স্বাভাবিক, দরকারে বা প্রয়োজনে নয়। বাইরের কারো ক্রমাগত ভাবে কাউকে বলে দেয়া ঠিক নয়, এটা লেখো কিংবা এতোটুকুই লেখো। যারা বলছে তারা ভাবছে, তারা তার শুভাকাঙ্ক্ষী কিন্তু আসলে তারা তার মৌলিক অধিকারে ক্রমাগত হস্তক্ষেপ করছে, তাকে বিষাদের দিকে, বিপন্নতার দিকে, অসহায়ত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ক্রমাগত।
অনেকেই অনেক বিষয় নিয়ে লেখে, অনেক বিষয়ের মত ‘ধর্ম’ও একটা বিষয়। এ নিয়ে দুচারটি কথা লিখলে সামাজিক ভাবে ক্রমাগত একজন মানুষকে কেন অপদস্থ হয়ে যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে? কেন তাকে বার বার বলা হবে, ধর্ম বাদ দিয়ে আর সব কিছু নিয়ে লেখো। বলি, তুমি কে হে লেখার বিষয় নির্বাচন করে দেওয়ার?
সামাজিক ভাবে বয়কট করছোতো ভাল কথা। বলে চলছো-
-নাস্তিক ওদের আবার কী দাওয়াত দিবো?
-আল্লাহ মানে না, রাসুল মানে না তাদের সাথে আবার কী মেলামেশা করবো?
ঠিক আছে, তুমি আমায় নিচ্ছো না, আমিও নেবো না তোমায়। তাই বলে তোমার কোন অধিকারটা আছে যা খুশি তাই বলে আমায় বা আমার আপনজনদের তাচ্ছিল্য দেখানোর?
কথায় কথায় লোকে নেতাদের, রাজনীতির দোষ দেয়। নেতা কিংবা রাজনীতিবিদগণ কি আকাশ থেকে পড়ে না পড়বে? নেতাতো জনগণের মাঝ থেকেই উঠে আসে। জনপ্রতিনিধিরা জনগণের প্রতিচ্ছবি। আমরা যেমন, আমাদের নেতারাও ঠিক তেমন। লতিফ সিদ্দিকী তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার হারিয়ে প্রমাণ করলেন বাংলাদেশের জনগন কেমন। এখন অবশ্য তিনি নিজেকে সাচ্চা মুসলমান প্রমাণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, এমনকি দলের বা মানুষের সুনজরে আসতে তিনি স্বেচ্ছায় সংসদ সদস্যপদও ছাড়লেন সম্প্রতি। গোলাম আযম, দেলোয়ার হোসেন সাঈদী এতো অন্যায়ের পরেও ফাঁসিতে না-ঝুলে প্রমাণ করলেন এ-দেশের জনতা কেমন। রাজনীতিবিদদের অযথা দোষারোপ করে কী হবে, তারা আমাদেরই প্রতিচ্ছবি। আমরা নিজেরা না বদলে শুধু আশা করবো তাঁরা বদলাবেন আর নতুন বাংলাদেশ উপহার দেবেন?
কাকেই বা দেবেন তাঁরা সে উপহার! বাংলাদেশের মানুষ কি বদলানো বাংলাদেশ গ্রহণ করার মতো উপযুক্ত? না তাদের সে মানসিকতা তৈরি হয়েছে? কেবল “বদলে দাও, বদলে যাও” বললেই কি এই দেশ বদলায়, বদলাবে? ভেতর থেকে পরিবর্তন না-এলে চাপানো জিনিস কি কখনো টেকে? মুনতাসীর মামুন তো আর কম দুঃখকষ্টে বলেন নি, “বঙ্গবন্ধু একটি অনিচ্ছুক জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন”!
৫৭ ধারা সংবিধানে বাতিল হলেই বা কি? ঘরে ঘরে, সমাজের প্রতি স্তরে যে ব্লাসফেমি আইন চালু রয়েছে তার প্রতিবিধান কে করবে? কিভাবে করবে? কবে করবে?
আমরা যদি না-বদলাই মা
কেমনে সকাল হবে?
এ দেশের ঘন কালো এই রাত
আর পোহাবে কবে?
মুছবে কবে এই প্রশ্নবোধক চিহ্ন? বাংলার ঘরে ঘরে চৌকাঠে, জানালার গ্রীলে, ছাঁদের কড়িকাঠে অলিখিত অনুচ্চারিত যে ৫৭ ধারা মিশে আছে সেটা বাতিল হবে কবে? এই প্রশ্নের উত্তরটি না জেনে অনেকেই এই পৃথিবী থেকে চলে গেছেন হয়তো আমি, আমরাও এভাবে, এভাবেই…
২৫/০৮/২০১৫

Thursday 13 August 2015

জার্নাল ৩৩

১. পবিত্র ধর্মগ্রন্থে আছে, “সৃষ্টিকর্তা সীমা লঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।” দেশ চলছে মদিনা সনদ অনুযায়ী। সেই সূত্রানুসারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজি, কমিশনার সবাই ব্লগারদের হুঁশিয়ারি দিয়েছে, সীমা লঙ্ঘন করলে একেবারে খোঁয়াড়ে পুরে  দেবে, হুঁহ। ধর্মগ্রন্থে কার্টুন আঁকা নিষেধ, লেখালেখি নিষেধ, কিন্তু কোপাকোপি নিষেধ নয়। তাই তারা লেখার বদলে লেখা নয়, কার্টুনের মোকাবেলায় কার্টুন নয়, চাপাতির পর চাপাতি চালাবে। তাদেরকে পুলিশ ধরবে না, মন্ত্রী বকবে না, ধর্ম গ্রন্থে কোপাকোপি যেহেতু আইনসিদ্ধ তাই তারা আইনত সীমা লঙ্ঘন করছে না। তারা লাইনেই আছে।

২. এবার ব্লগার এক্টিভিস্টদের শ্লোগান হোক, “অনলাইন এক্টিভিস্টরা সামনের জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেবে না, কাউকেই না।” (যদি কেউ দেশে থাকে কিংবা বেঁচে থাকে) একদলকে ভোট দিলে হয়তো গুলি খাবে অন্য দলকে ভোট দিলে চাপাতি। দুটোর ফলাফলই মৃত্যু। ছয় মাসে চার খুনের পর, ব্রিটিশ মন্ত্রীর টুইট, বান কি মুনের স্পিচের পর আমাদের প্রধানমন্ত্রী অরিন্দম এতোদিনে কহিলেন বিষাদে এক খানা লাইন, কিন্তু তথাকথিত আপোসহীন নেত্রী মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন। এদেশের রাজনীতি ভোটের রাজনীতি। নাস্তিকেরা কারো সন্তান নয়, কারো ভাই নয়, বন্ধু নয়, বাংলাদেশের নাগরিকও হয়তো নয়, আদৌ মানুষ কিনা, তাই সন্দেহ হয় মাঝেসাঝে

৩. যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে অনলাইনে ও অফলাইনে গণসচেতনতা বৃদ্ধি, গনজাগরণ মঞ্চ আরো অনেক কিছুই অনলাইন এক্টিভিস্টদের আন্দোলন, সংগ্রাম, ত্যাগতিতিক্ষার ফসল। ফসল পাকার পর তাতে কাঁচি লাগিয়ে আওয়ামী লীগ নিজের ঘরে তুলে নিয়ে খাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে তারা কতটা আন্তরিক ছিলো, তা বড়ই প্রশ্নবোধক। অনেক আগেই তারা রাজাকারের সাথে আত্মীয়তা করে নিয়েছে। বাবার হত্যাকারীর দলের কাছে নিজের পুত্রকন্যাকে বিয়ে দিয়ে আত্মীয়তা শানিয়েছেমেয়ের দাদাশ্বশুর শান্তি কমিটিতে থাকলেও সে যে রাজাকার নয়, সে-ব্যাপারে খোদ প্রধানমন্ত্রী বয়ান দিয়েছে, তার নামে স্বাধীন বাংলাদেশে রাস্তা হওয়া ডিফেন্ড করেছে। স্বার্থের টানে সবই সম্ভব এই বাংলাদেশে।

কিন্তু যারা নিজের জীবনের মায়া তুচ্ছ করে, অফিসের পর অনলাইনে ফালতু সময় ব্যয় না-করে, নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে লেখালেখি করে যাচ্ছে দেশের টানে তাদের আন্দোলন, দাবি বৃথা যাবে না। দুই দলেরই যেহেতু হুজুরদের ভোট চাই, নাস্তিকদের ভোট তাদের চাই না তাহলে দাবি হোক ব্লগে ব্লগে, মঞ্চে মঞ্চে, মিছিলে মিছিলে, “অনলাইন এক্টিভিস্টরা সামনের জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেবে না, কাউকেই না।”

সরকার দাবি উপেক্ষা করবে জানি, তাতে লোকসান কিছু নেই। মানুষের জীবন যেখানে উপেক্ষিত, সেখানে ক্রন্দনে কান নাই পাতলো, তবু কেঁদে ফরিয়াদ জানিয়ে যাবো। প্রতিবাদে মুখ ফিরিয়ে নেবো এই নোংরা খেলার মঞ্চ থেকে।

৪. যার পক্ষে যতোটা সম্ভব বিদেশি মিডিয়াতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তার এই সংবাদগুলো তুলে ধরতে হবে, আওয়াজ তুলতে হবে। বিদেশি মিডিয়াতে বাংলাদেশের এই কলঙ্কিত নিকৃষ্ট অধ্যায়ের খতিয়ান জানাতে হবে। স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পর আবার বুদ্ধিজীবী হত্যা, এবার সরকারী মদদে বা নিষ্ক্রিয়তায় নিলয় হত্যায় জড়িত সন্দেহে আওয়ামী মন্ত্রীর ভাতিজা গ্রেফতার। লাভ হবে কি কিছু? নাকি, সেই মন্ত্রী ছহিহ লীগার না?

৫. শুক্রবারে যখন নিলয় রক্তাক্ত হয়ে পৃথিবী ছাড়লো, তার কাছাকাছি সময়ে সৌদি আরবে জুম্মার নামাজ আদায় করতে গিয়ে নামাজিরা বোমার আঘাতে মসজিদের ভেতরেই ছিন্নভিন্ন হয়েছে। সৃষ্টিকর্তা তাদের রক্ষা করলেন না? তাদের কী অপরাধ ছিলো? নাকি সৃষ্টিকর্তাও অসহায় বোমাবাজদের কাছে? প্রকৃত ধর্ম ব্যাখ্যাকারীদের এই ব্যাপারে কোন ব্যখা যদি থাকে তাহলে শুনতে চাই, নাস্তিকদের শাস্তি তাহারা বুঝিয়া পাইলো কিন্তু নামাজিরা কিসের শাস্তি তবে পাইলো! আমরা অনলাইন এক্টিভিস্টরা প্রত্যেকটি মৃত্যুর নিন্দা করি, আস্তিক–নাস্তিক ভেদ করে নয়, কাউকে এ ধরনের শাস্তি দেয়ার অধিকার সভ্য পৃথিবীতে কারো নেই।

৬. কোপানোর জন্যে যেভাবে জেলা ভিত্তিক “নাচতেক বোলগার”দের লিস্ট করা হচ্ছে তাতে একাত্তরের রাজাকারদের ইতিহাস মনে পড়ছে বার বার। পাকিস্তানি সৈন্যদের বাঙালি বাড়ি চিনিয়ে তারাই নিয়ে যেতো। যার যার ব্যক্তিগত আক্রোশের প্রতিশোধ নেয়ার সেইতো ছিলো মোক্ষম সুযোগ আর সময়। এবং এই কাজটি করেছিলো তারা ধর্মের নামে। “মুসলিম ব্রাদারহুড” এর নাম দিয়ে বাঙালি চেতনা, আর্দশ, জাতীয়তার খুন। টুপি, দাঁড়ি, পাঞ্জাবী লুংগিতে সজ্জিত আর মুখে সৃষ্টিকর্তার নাম হাতে হাতিয়ার ...... চোখে ভাসে কোন দৃশ্য? রাস্তায় ধরে ধরে কলেমা জিজ্ঞেস করা হতো

ধর্মের জন্যে মানুষ, মানুষের জন্যে ধর্ম নয় ---- যুগে যুগে এই প্রমান হয়ে আসছে।

বাংলাদেশে চুয়াল্লিশ বছর আগেও ধর্মের নামে “জেনোসাইড” হয়েছে, আজও তাই হচ্ছে। তখন পাকিস্তানি সৈন্যদের মাথা কারা খেয়েছিলো, কারা তালিকা তৈরী করে দিয়েছিলো কাদের কাদের খুন করতে হবে? তবে তখন যুদ্ধ চলছিল বলে একদিন দেশ স্বাধীন হলে এই অমানিশা কেটে যাবে সেই আশা ছিলো।

আজ আশা নেই, ভালবাসাও নেই

৭. যারা যারা জীবন নিয়ে আশঙ্কায় আছেন তারা বাংলাদেশের আশে পাশের দেশ গুলোতে আপাতত চলে যেতে পারেন। সেখান থেকে অন্য দিকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। অনন্ত আর নিলয় জানতো তাদের জীবনে হুমকি আছে। তারা অন্তত ভারতে আশ্রয় প্রার্থণা করে নিজেকে সাময়িকভাবে রক্ষা করতে পারতো তারপর অন্য চেষ্টা। বেঁচে না থাকলে লড়াই চলবে কী করে? লড়াই করার জন্যে নিজেকে রক্ষা করা এখন প্রত্যেকের কর্তব্য।

পরিশেষে:

পণ্ডিত মরে তত্ত্ব নিয়া
মূর্খ মরে তর্ক নিয়া,
জ্ঞানী গুণী চিন্তায় মরে,
তবে বাঁচল কে?

আরে সেইতো বাঁচল
সুযোগ মত যেই পল্টি লয়,
এই দুনিয়া সেই দুনিয়া নয়

যেদিকে যতটুকু সুবিধা হয় সেদিকে ততটুকু মোচড় দেয়ার নাম হলো ‘মডারেট’যতটুকু সুবিধা ততটুকু ধর্ম আর যতটুকু সুবিধা ততটুকু দুনিয়াদারির চর্চার নাম হলো ‘মডারেট ধর্মপ্রাণ’ জনগোষ্ঠী, শক্তিবাণীতে “ধর্মেও আছো জিয়াফতেও আছো”নাস্তিক নিধন শেষ হলো বলে, আগে পরে হিন্দুবৌদ্ধপাহাড়ি তথা মালাউনদেরও হয়তো অস্তগামিতার পালা, তারপর আসবে তাদের পালা...।।

মার্টিন নিয়েমোলার আজও প্রাসঙ্গিক। তাই আবারো উল্লেখ করতে হয়

First they came for the Socialists, and I did not speak out—
Because I was not a Socialist.
Then they came for the Trade Unionists, and I did not speak out— 
Because I was not a Trade Unionist.
Then they came for the Jews, and I did not speak out— 
Because I was not a Jew.
Then they came for me—and there was no one left to speak for me.

I do not agree with what you have to say, but I'll defend to the death your right to say it.


“Sometimes people don't want to hear the truth because they don't want their illusions destroyed.”



“The greatest enemy of knowledge is not ignorance, it is the illusion of knowledge.”


Stephen Hawking



Monday 10 August 2015

বাবা বলে দিলো



বাবা বলে দিলো
আর কোনদিন লেখালেখি করো না
প্রাণে বেঁচে থাকো
সন্তানের কি কোন হয় তুলনা?

লেখাপড়া যদি পৃথিবীতে নাই থাকতো
কলম্বাস কি করে আমেরিকা খুঁজে পেতো
যে মানুষগুলো একাত্তরে মারা গিয়েছিলো
তাদের নিয়ে কেন তবে এতো লেখালেখি হলো?

চিরদিন কেন তবে জেনে এলাম
জ্ঞানের চেয়ে বেশী কিছুর নেই কোন দাম।

দরিদ্র কৃষকেরা কেন বারে বারে
সন্তানকে পাঠায় জ্ঞান অর্জনের তরে?

প্রতিদিন বিদ্যালয়ের দ্বারে দ্বারে
নিত্য নতুন দিশা হাত তবে নাড়ে?

বিজ্ঞান, গবেষনা, যুক্তি যদি থেমে থাকে
জেনে রেখো আটকে রেখেছো নিজেকেই বাঁকে
সব গবেষক যদি পিছিয়ে যায় কাল
এই বিশ্বে আমরা লাড্ডু থাকবো চিরকাল।


 https://www.youtube.com/watch?v=cDo8cQKgFEY






Friday 7 August 2015

নীলয় নীল

একজনের পর একজন “নাস্তিক” খুন করে ধর্মপ্রাণ মানুষেরা প্রমান করছে “ধর্ম” নামক আফিমটি মানুষকে কতো ভয়াবহ হিংস্র, অসহনশীল, কঠিনপ্রাণ উগ্র খুনী বানাতে পারে। “শক্তির ধ্বংস নেই” বিজ্ঞানের এই সূত্র ধরে আশা রাখছি, আত্মারা হয়তো অন্য কোন রুপে আবার ফিরে আসবে কিংবা এসেছে।

"আবার আসিব ফিরে ধানসিড়ির তীরে — এই বাংলায় হয়তো মানুষ নয়
হয়তো বা শঙ্খচিল শালিখের বেশে; হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে"

না, প্লীজ না, এই কার্তিক নবান্নের দেশে আর এসো না তোমরা। এ দেশে ফুল, পাখি, শিশু, নারী, পাহাড়ি, নাস্তিক কেউই নিরাপদ নয়। অন্য কোন দেশে এসো যেখানে নিজের মতামত নিয়ে স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারো।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কালে ঘটে যাওয়া ঘটনার কারণে এই গেলো রমজান মাসে আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, শুধুমাত্র পরকালে অসীম সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের প্রলোভনের কারণে এই ইউরোপে অনেকে এতো গরমে বিশ ঘন্টা পর্যন্ত উপবাস পালন করেছে। উপবাস প্রায় সব ধর্মেই আছে, সনাতন ধর্ম্বালম্বীরাও সে আগের যুগে নির্জলা উপবাস দিতেন, সেও অনেক ঠান্ডা – গরম মিলিয়েই দিতেন। মৃত্যুর পরে অসীম সুখের জন্য বীমার কিস্তি পরিশোধে কেউ পিছপা নন। ধর্ম ছাড়া অন্য কোন কারণে কী মানুষ এভাবে পর পর ত্রিশ দিন বিশ ঘন্টা না খেয়ে থাকবে? মনে হয় না

এখন একদল ফেবুতে সোচ্চার হবে, “প্রকৃত ধর্ম এই বলেনি, প্রকৃত ধর্ম মানে এই না, ধর্ম মানে শান্তির এয়ারকন্ডিশানের হাওয়া” ইত্যাদি ইত্যাদি নিয়ে। হেদায়েত করতে নামবে মুক্তমনা-নাস্তিকদের যাদের দ্বারা এক মাছিও আঘাতপ্রাপ্ত হয় না। কিন্তু যেখানে ধর্ম শিক্ষা দেয়া হয়, খুনী তৈরী করা হয় বছরের পর বছর ধরে সেখানে যেয়ে কেউ প্রকৃত ধর্ম, ধর্মের উদ্দেশ্য, বানী শিক্ষা দেয় না। হায় সেলুকাস। নিজের ছেলেমেয়েকে লাইন দিয়ে মারামারি করে সরকারী স্কুলে পড়ায় আর নিজেদের করের টাকায়, খুনী তৈরী করে নিরাপদে অন্য জায়গায়। এ সমস্ত ধার্মিক স্কুলে যেখানে “প্রকৃত ধর্ম” না শিখিয়ে খুনী তৈরী করা হচ্ছে তার খরচ কোথা থেকে আসে? আমাদের নিজেদের দেয়া করের টাকা থেকে।

তাই বলি কি, কাইন্দা আর কী হবে? কল্লা রেডি করে রাখলাম,

যস্মিন দেশ যদাচার
কাছ খুলে যতো তাড়াতাড়ি
সম্ভব দেশ ছাড়