Monday 21 June 2021

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – আঠারোই জুন টুয়েন্টিটুয়েন্টি ওয়ান

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – আঠারোই জুন টুয়েন্টিটুয়েন্টি ওয়ান প্রিমিয়ে রুতেঃ আমি আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী হুগো দ্যা ইয়ং বহুবার এখানে দাঁড়িয়ে তোমাদেরকে সুন্দর একটা গরমের ছুটি উপহার দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলাম। এটি এখন বাস্তব, অবশেষে এক বছর কঠোর পরিশ্রমের পর স্বাস্থ্যকর্মীরা খানিকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারছে। অন্যান্য রোগের চিকিৎসা, অপারেশনের সুযোগ মিলছে আর তাই এক সপ্তাহ আগেই আমরা আমাদের চতুর্থ ধাপের দিকে পা বাড়াচ্ছি। ছাব্বিশে জুন থেকে দেড় মিটার সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাড়ির ভেতরে বা বাইরে যেকোন ধরনের অনুষ্ঠান করা যাবে। এলকোহল, অনুষ্ঠান করার নির্দিষ্ট সময় বা অতিথির সংখ্যার বাধ্যবাধকতা আর থাকছে না। বাসায় যতজন ইচ্ছে অতিথি নিমন্ত্রণ করা যাবে। দোকানে যাওয়া যাবে। দেড় মিটারের দূরত্ব বজায় রাখলে মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা নেই। দেড় মিটারের দূরত্ব বজায় রাখা না গেলে মাস্ক পরতে হবে, যেমন পাব্লিক ট্রান্সপোর্ট। কোন অনুষ্ঠান করতে দেড় মিটারের দূরত্ব বজায় রাখা না গেলে সেটার জন্যে ভিন্ন/বিশেষ নিয়মাবলী প্রযোজ্য। অফিসে বা কর্মক্ষেত্রে দেড় মিটারের দূরত্ব বজায় রাখার সুবিধার্থে শতকরা পঞ্চাশ ভাগ সময় বাড়ি থেকে কাজ করার উপদেশ রইলো। দেড় মিটারের দূরত্বে রেস্টুরেন্ট আর ক্যাফে পুরোপুরি চালু করা যেতে পারে। ওপেন এয়ার রেস্টুরেন্টগুলোতে পর্দা থাকলে দেড় মিটারের সামাজিক দূরত্বের বাধ্যবাধকতা নেই। সিনেমা, থিয়েটার, কনসার্ট সব কিছুতেই চেকিং এবং রেজিস্ট্রেশানের পর দেড় মিটারের দূরত্বে যত জন ইচ্ছে অতিথি নিতে পারে। চিড়িয়াখানা, যাদুঘর, মেলা, দোকানের জন্যে প্রতি পাঁচ বর্গমিটারে একজন মানুষ। শনিবার থেকে সমস্ত খেলাধূলা পরিপূর্ণভাবে চালু হতে পারে, দর্শক মাঠে, স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখতে পারেন, সমস্ত প্রতিযোগিতা, টুর্নামেন্ট, দল বেঁধে অনুশীলনের আর বাঁধা নেই। ইভেন্টগুলো ত্রিশে জুন থেকে শুরু হবে। ম্যাসাজ, হেয়ার ড্রেসার, বিউটি পার্লারে দেড় মিটারের দূরত্ব মানা সম্ভব না হলেও মাস্ক পরতে হবে না কারণ এখানে চেকিং ও রেজিস্ট্রেশান চলবে। সামার ভ্যাকেশান পর্যন্ত স্কুলগুলোতে মাস্ক বাধ্যতামূলক। চল্লিশ ঘন্টার মধ্যে যাদের করোনা টেস্ট নেগেটিভ এসেছে কিংবা পরিপূর্ণ ভ্যাক্সিন নেয়া মানুষ অথবা ছয় মাসের মধ্যে যাদের করোনা হয়েছে তারা দেড় মিটারের সামাজিক দূরত্ব পালন না করেও পার্টি, ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ডিস্কোথেক আর নাইট ক্লাবও অবশেষে চালু করা হচ্ছে। করোনা এপের মাধ্যমে পরীক্ষা করে তারপর ঢুকতে দেয়া হবে। তবে সবাইকে সবসময় সর্তক থাকতে হবে, ইন্ডিয়ান ভেরিয়েন্ট যেটাকে আমরা ডেল্টা ভেরিয়েন্ট বলছি যুক্তরাজ্যে খুব দ্রুত ছড়িয়েছে, যুক্তরাজ্যকে আবার সবকিছুতে ব্রেক কষতে হয়েছে, গত গরমের ছুটির পরও নেদারল্যান্ডসকে অনেক কিছুর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবো এবং আপডেট দেবো তবে সবার সহযোগিতা কাম্য। হুগো দ্যা ইয়ংঃ এই মূহুর্তে প্রতি ঘন্টায় প্রায় আঠারো হাজার মানুষকে ভ্যাক্সিন দেয়া হচ্ছে। উনিশ তারিখ থেকে সব আঠারো বছর বয়সীদের জন্যে রেজিস্ট্রেশান ওপেন করা হচ্ছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মধ্য আগস্টের মধ্যে সবাইকে ভ্যাক্সিন দেয়া হয়ে যাবে। ছুটিতে যেতে কোন দেশে যাবে তার করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে সব দেশগুলোকে সবুজ, হলুদ, কমলা আর লাল রঙে ভাগ করে রাখা হয়েছে। নেদারল্যান্ডস নিজে এখনও বিপদমুক্ত নয় পৃথিবীর অনেক দেশের কাছেই তাই তারা করোনামুক্ত সার্টিফিকেট চাইতে পারে। পহেলা জুলাই থেকে ডিজিটাল করোনা সার্টিফিকেট (ডিসিসি) পাওয়ার ব্যবস্থা আছে। প্রথম জুলাই থেকে আগষ্টের শেষ পর্যন্ত ভ্রমণের জন্যে ফ্রী করোনা পরীক্ষা করানো যাবে। যতদিন যাবে সংক্রমণের পরিমান ইউরোপে কমে আসবে আর ভ্রমণ ততই সহজ হয়ে উঠবে। বিদেশ থেকে ফিরে অসুস্থ বোধ করলে জিজিডিতে যেয়ে পরীক্ষা করবে আর অসুস্থ বোধ না করলে বাড়িতে নিজে পরীক্ষা করবে। বাইশে জুন থেকে এটা প্রত্যেকের জন্যেই বাধ্যতামূলক। তেরই আগষ্ট শুক্রবার আমরা জানাবো দেড় মিটার সামাজিক দূরত্বের বাধ্যবাধকতা আর থাকবে কিনা। সেজন্যে আমরা কলেজ আর ইউনিভার্সিটিগুলোকে নির্দেশ দিয়েছি দুইভাবেই যেনো তারা নতুন শিক্ষা বছরের জন্যে প্রস্তূত থাকে। হেমন্ত কেমন হবে আমরা জানি না তবে চতুর্থ ধাক্কা সামাল দেয়ার জন্যে আমাদের প্রস্তূত থাকতে হবে। ভাইরাস প্রতি নিয়ত তার ধরন বদলাচ্ছে। ছুটির পর স্কুল শুরু হলে তাই সব ছাত্র ছাত্রীদেরকে আমরা প্রতি সপ্তাহে দুবার পরীক্ষা করতে বলেছি। ভাইরাস যদি তার রুপ বদলায়ও তাহলে যেনো সহজেই আমরা ধরতে পারি। এর মধ্যে বারো থেকে আঠারো বছরের সবাইকেও ভ্যাক্সিন দিয়ে দেয়া হবে, আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের নির্দেশের অপেক্ষায় আছি।

ফাটা টাইলস, পলেস্তরা ওঠা মডেল মসজিদ আর আমাদের রাজনীতি

চিকিৎসা সরঞ্জামের অপ্রতুলতায়, হাসপাতাল সংকটে বাংলাদেশে অতীতে অনেক মানুষ মরেছে, বর্তমানেও মরছে, ভবিষ্যতেও যে মরবে না তার কোন নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা, গীর্জা, প্যাগোডা সংকটে কখনো মানুষ মরেনি আর কোনদিন মরবেও না এটা নিশ্চিত। বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি যদি ভয়ানক আকার ধারন করে বা ভবিষ্যতে যদি আরও ভয়ানক কোন ভাইরাস আক্রমণ করে আর হাসপাতাল সংকটে যদি মানুষ মারা যায় তাহলে বেশির ভাগই মুসলিম মারা যাবে। মডেল মসজিদ গুলি কি কাউকে বাঁচাতে পারবে? পেরেছে আজ অব্ধি কাউকে রক্ষা করতে? মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসায়, হরদম ধর্ষণ হয়, খুন হয়, চুরি হয়। অনেক সময়ই সামান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা, ভেঙ্গে যায়। এরপর আছে, মন্দির, গীর্জা দখল করে মসজিদ বানানো আবার মসজিদ, গীর্জা দখল করে মন্দির হওয়া। অন্যায়ের কাছে, জুলুমের কাছে স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা অসহায়। ঘুষখোর, সুদখোর, দুর্নীতিবাজদের হারাম টাকায় মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, মাদ্রাসা নির্মাণ হয়, হারাম টাকায় মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, মাদ্রাসা পরিচালিতও হয়। এসব ধর্ম প্রতিষ্ঠান থেকে মানব জাতি অতীতে কি উপকার পেয়েছিলো, বর্তমানে কি উপকার পাচ্ছে বা ভবিষ্যতে মানব জাতি এসব থেকে কি উপকার লাভ করতে পারে? জীবন চলার ক্ষেত্রে অতীতে কোন ধর্ম প্রতিষ্ঠান কি অবদান রেখেছিলো, বর্তমানে কি অবদান রাখছে বা ভবিষ্যতেই এদের হাত ধরে কি আসবে? ‘যদি বেঁচে যাও এবারের মতো। যদি কেটে যায় মৃত্যু ভয়। জেনো বিজ্ঞান লড়েছিলো একা। কোন মন্দির-মসজিদ নয়’। স্বার্থান্বেষী রাজনীতির অবসান হোক, রাজনীতি হোক মানবকল্যানমুখী। মডেল মসজিদের মত বাস্তবতা বির্বজিত, অনুৎপাদনশীল অশ্বডিম্বের জায়গায় আসুক চিকিৎসাকেন্দ্র, পাঠাগার, কেয়ার হোম, হাতের কাজ শেখার মত প্রাত্যহিক প্রয়োজনীয় জনকল্যানমূলক ব্যবস্থা। সুস্থভাবে বেঁচে থাকা হোক মানুষের বড় ধর্ম। শফিউল আলমের লেখা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে।

প্রসঙ্গ ই-ব্যাঙ্কিং

দেশব্যাপী দুর্নীতি দমনে দুর্নীতি দমন ব্যুরোর কোন পরিকল্পনা আছে কি না কখনো জানতে পাইনি। তাদের কাজ কি সেটাও অনেকটা ধোঁয়াশা। এখনো পর্যন্ত যেটা জানি, সিনেমার শেষ দৃশ্যে যেমন পুলিশ এসে আসামীকে বলে, "আইন নিজের হাতে নিয়ে হাডুডু খেলছো, সবাই জেনে গেছে এখন গ্রেফতার না করে উপায় নেই" তারপর তারা তদন্তে নামে কিংবা তাদের অফিসে হাই প্রোফাইল আসামীদের দাওয়াত করে। যাহোক, প্রায় দুর্নীতিমুক্ত একটি দেশে জীবনের বেশীরভাগ সময় কাটিয়ে দেয়া আর সামান্য পেশাগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যতদিন ব্যাঙ্কিং ট্রান্সপারেন্ট না হবে ততদিন কোন নেতা কেন ফেরেশতাও দুর্নীতি দমন করতে পারবে না। ব্যাঙ্কিং মানে ব্যাঙ্কে চেক আর বিল জমা দেয়া নয়। ই-ব্যাঙ্কিং চালু করতে হবে। দুর্নীতি দমন শুরু করতে হবে নগদ লেনদেন বন্ধ করার মধ্য দিয়ে। বাড়িওয়ালার ব্যাঙ্ক একাউন্টে ভাড়াটিয়া তার নিজের একাউন্টের মাধ্যমে ভাড়া দেবেন, চেক বা ক্যাশ নয়, সবার বেতন আসবে যার যার একাউন্টে, চেক বা ক্যাশ নয়, কেনাকাটা হবে ব্যাঙ্ক ট্রান্সফার, ডেবিট/ক্রেডিট কিংবা এটিএম কার্ড। যতবেশি একাউন্ট টু একাউন্ট লেনদেন হবে, ট্রান্সপেরেন্সি বাড়বে। ফলে বাম হাতের ব্যাপার এমনিতেই কমে আসবে। ট্যাক্স,রেভিনিউ ইত্যাদি আদায়ের পরিমান বাড়লে, টাকা সাইকেল বা রিসাইকেল হয়ে সেটা জনসেবাতেই খরচ হবে (আশাকরি)। ব্যক্তির ক্ষেত্রে ই-ব্যাঙ্কিং আর প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে ই-ব্যাঙ্কিং এর পাশাপাশি অথোরাইজেশানের ব্যবহার অন্তত "টাকা পাচার হইয়া যাইবার পূর্বেই অন্যের কাছে খবর চলে যাওয়া" নিশ্চিত করবে বলে আশা করছি। বাংলাদেশে প্রচুর ছেলেমেয়ে অনলাইন ব্যাঙ্কিং খাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছে। আমার ধারনা, তাদের যোগাযোগ করা হলে, বিনা পারিশ্রমিকেই তারা দেশের ব্যাঙ্কিং খাত আমূল বদলে দিয়ে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সাহায্য করবে। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাইলে, ই-ব্যাঙ্কিইয়ের কোন বিকল্প নেই।

Tuesday 1 June 2021

করোনায় নেদারল্যান্ডসের শিক্ষা

https://bn.bdeduarticle.com/%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a1%e0%a6%b8%e0%a7%87%e0%a6%b0/?fbclid=IwAR2eMlNUSbamuGBcaHtxwQF9jwJQYO332A_H3q7dI8IqQ9b5b2KVb3wfXkM করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সুইডেনের পরে ইউরোপে সবচেয়ে বাজে অবস্থানে আছে নেদারল্যান্ডস। সংক্রমণের উচ্চহার, মৃত্যু, ভ্যাক্সিনের অপ্রতুল সরবরাহ সব মিলিয়ে নেদারল্যান্ডস যারপর নাই নাজেহাল। নেদারল্যান্ডসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে ধরা হয় “শিক্ষা”কে। প্রাইম মিনিস্টার মার্ক রুতে তার করোনা ভাষণে বারবার শিক্ষাকে এক নম্বরে রেখে কথা বলেছেন। “অনলাইন ক্লাশ” শিক্ষার্থীদের জন্যে যথেষ্ঠ নয় তাই নানারকম কৌশলের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু রাখার চেষ্টা করেছেন। বাচ্চাদের যন্ত্রের চেয়ে মানুষের সংস্পর্শ বেশি প্রয়োজন আর সে লক্ষ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্যে প্রথমে নিয়ম ছিলো, আজ এই ক্লাশের শিক্ষার্থীরা আসবে তো কাল অন্য ক্লাশের। পরেরদিকে সবাইকেই আসতে দেয়া হলো। মাধ্যমিকে ক্লাশ ভাগ করলেন। একদিন ক্লাশের পঞ্চাশ ভাগ স্কুলে এসে ক্লাশ করবে বাকি পঞ্চাশ ভাগ অনলাইনে সেই ক্লাশ ফলো করবে, আগেরদিন যারা অনলাইনে ক্লাশ করেছে পরেরদিন তারা স্কুলে আসবে বাকিরা সেই ক্লাশ অনলাইনে ফলো করবে। প্রথমবার লকডাউনে সব স্কুল অনলাইন থাকলেও দ্বিতীয়বার লকডাউন ও কার্ফিউ যখন চলছিলো তখন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা ছিলো আর সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে ক্লাশ চলছিলো। মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে দেড় মিটারের সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং ক্লাশ চলাকালেও মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক। সামাজিক দূরত্ব মেনে স্কুলের পাঠাগার এবং শরীরচর্চা কেন্দ্র খোলা তবে স্কুলের ক্যান্টিন বন্ধ। সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, নাটক, নাচ –গানের অনুষ্ঠান, ডিস্কো, ফান নাইট ইত্যাদিও সব বন্ধ। বাচ্চারা দেশের ভেতরে যেসব এসকারশান, দেশের বাইরে যেসব এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে যায় কিংবা ভিন্ন দেশ থেকে নেদারল্যান্ডসে বাচ্চারা আসে, সেসবও পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। কোন বাচ্চার করোনার কোন রকম লক্ষণ থাকলে তার স্কুলে আসা নিষেধ এবং তাকে অনলাইনে ক্লাশ করতে বলা হয়েছে। যদি কোন বাচ্চা বা শিক্ষক করোনা পজিটিভ হতো সাথে সাথে তা স্কুলে জানানোর নিয়ম ছিলো এবং তার আশেপাশে যারা ছিলো তাদের সবাইকে বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষা করতে হতো। কোন বাসায় কেউ করোনা পজিটিভ থাকলে বাসার সবাইকে কেয়ারন্টিনে থাকতে হতো, সেক্ষেত্রে সেই শিক্ষার্থীও স্কুলে আসতে পারতো না, অনলাইন ক্লাশ করতে হতো। করোনার প্রথম বছরে সারা বছরের স্কুলের ফলাফল আর এসাইন্টমেন্টের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ণ করা হলেও দ্বিতীয় বছরে অর্থ্যাৎ এ বছরে পরীক্ষার জন্যে ব্যাপক প্রস্তূতি বছরের শুরু থেকেই নেয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব মেইনটেইন করে পরীক্ষার হল তৈরী করা হয়েছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে যেনো যথেষ্ঠ দূরত্ব থাকে সেদিকে নজর দেয়া হয়েছে। পরীক্ষার সময়টাকেও দুভাগে ভাগ করা হয়েছে, যারা পরীক্ষার সময় করোনায় আক্রান্ত থাকবে, তাদের জন্যে আবার দ্বিতীয় বার পরীক্ষার রুটিন রাখা হয়েছে। দুই পরীক্ষায় দুই প্রশ্নপত্র দেয়া হবে। মধ্যে মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও অনলাইনের পাশাপাশি ক্লাশরুমে ক্লাশ শুরু হয়েছে। ভ্যাক্সিন কার্যক্রম এগিয়ে গেলে পুরোপুরি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে বলে সরকার জানিয়েছে। নেদারল্যান্ডসের শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। সরকারী ভাষ্যমতে, করোনাক্রান্ত রোগীদের পরে চিকিৎসকদের কাছে দ্বিতীয় স্থানে ছিলো মানসিকভাবে পীড়িত মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্রদের ভীড়। অনেককেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। বন্ধুহীন একাকীত্ব, অনলাইন ক্লাশ, আত্মীয় স্বজনের সাহচর্যহীনতার মানসিক চাপ অনেক বাচ্চাই নিতে পারেনি, প্যানিক এটাক, বিষন্নতায় আক্রান্ত বারো থেকে আঠারো বছরের অনেক বাচ্চাকেই ডাক্তার ও ওষুধের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। মানুষের জীবনে মানুষের সাহচর্য কত গুরুত্বপূর্ণ এটি আবারও প্রমাণ হলো। বিষন্নতা আর একাকীত্বের সাহায্য দেয়ার জন্যে আলাদা হেল্প লাইন খোলা হয়েছে। প্রাইম মিনিস্টারের ভাষায় করোনা ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে অত্যন্ত দুঃখজনক অংশ এটি। আজ স্কুল খোলা, কাল লকডাউন, পরশু অনলাইন ক্লাশ ইত্যাদি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত পরিস্থিতির ভুক্তভোগী বাচ্চারা। অনলাইন ক্লাশে অনেক বাচ্চাদের মনো সংযোগের বিরাট ব্যাঘাত ঘটে। বলা বাহুল্য, মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের অনেকেই আশানুরূপ ফলাফল পায়নি। এখানে যেহেতু অটোপাশ বা গ্রেস পদ্ধতি নেই, দূর্ভাগ্যজনকভাবে অনেককেই হয়ত আবার এই ক্লাশটি-বছরটি পুনরায় পড়তে হবে। নেদারল্যান্ডসে এখন সপ্তাহে এক মিলিয়ন মানুষকে ভ্যাক্সিন দেয়ার পরিকল্পনা চলছে। আশা করা হচ্ছে, জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে প্রত্যেকে অন্তত টিকার প্রথম ডোজটি পেয়ে যাবে আর তাতে সংক্রমণ কমে আসবে। পরিকল্পনামত কাজ হলে, প্রথম যেই সেক্টরটিকে পুরোপুরিভাবে চালু করা হবে সেটি হলো শিক্ষা ক্ষেত্র। প্রচুর ক্ষতি ইতিমধ্যে হয়েছে, সেটিকে পুনরুদ্ধার করার সর্বত চেষ্টা করা হবে। তানবীরা হোসেন ২৪/০৫/২০২১