Thursday 23 December 2021

মেয়েদের কি কোনো নিজের পক্ষ আছে???

যেসব শিশুরা উনিশ অতিক্রম করেনি তারা খেললো মহিলা ফুটবল! তারপরও বলি, নামে কিবা আসে যায়। ভারতকে হারিয়ে আবারো সাফ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ। অভিনন্দন আমাদের বাঘিনীদের। আর সবার মত কৌতুহলবশতঃ আমিও তাদের নিয়ে লেখা খবরগুলো পড়ছি। বেশীরভাগ মেয়েদের পরিবারই প্রথমে ফুটবল খেলতে সম্মতি দেয়নি। মেয়ে আবার খেলাধূলা তাও পুতুল নয়, রান্নাবাটি নয়, ঠ্যাঙ দেখিয়ে ফুটবল!!!! মানসম্মান কই থাকে??? মেয়েরা কি তবে শুধু ফুটবলের বাঁধা অতিক্রম করেছে? না মেয়ে হওয়ার কারণে কিংবা বাংলাদেশের ভূখন্ডে জন্মানোর কারণে, প্রথমে পরিবার, তারপর সমাজ আর সবশেষে ফুটবলের যুদ্ধে জয়ী হয়েছে। বাচ্চা যদি স্কুলে ইনডিসিপ্লিনড থাকে, পড়াশোনায় অমনোযোগী থাকে, প্রথমেই তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করে, বাড়িতে সবাই কেমন আছে। অফিসে কাজে ভুল হলে, ডিপ্রেসড কিংবা মুড অফ যেকোন কারণেই জিজ্ঞেস করা হয়, বাসায় সব ঠিকাছে? এই যে ইউরোপ কিংবা পশ্চিম নিয়ে প্রাচ্যে মীথ প্রচলিত আছে, বাচ্চা আঠারো হলে বাবা-মা তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয় কিংবা বাবা-মা বুড়ো হলে বাচ্চারা তাদের ওল্ড হোমে পাঠিয়ে দেয়, মাদার্স ডে আর ফাদার্স ডে ছাড়া তাদের দেখতে যায় না, সেই ইউরোপে প্রত্যেক ইস্যুতেই প্রথমেই পরিবারকে খোঁজা হয়। যেকোন ইন্সটিটিউট পরিবারকে মূল ধরে তারপরে সামনে আগায়। আচ্ছা, মানুষ ঠিক কতটা সফল, শিক্ষিত, স্বাবলম্বী হলে তার পরিবার দরকার হয় না? কতটা পরিপূর্ণ হলে একটা ভাল গান শুনলে প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছে করবে না? জ্বরে কঁকিয়ে উঠলে কাউকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করবে না? ফুলের গন্ধে মন উচাটন হবে না কিংবা আঙুল কাটলে রক্ত বের হবে না? কে বলতে পারেন? প্রায় প্রতিদিনই বাংলাদেশে দু/চারটে “বউ” খুনের সংবাদ থাকবে। যেগুলো সংবাদপত্রের পাতায় ঠায় পায় আর কি। সবই কি আর ঠায় পায়? তবে আলোচনা আর প্রতিবাদ হয় শুধুমাত্র হাই প্রোফাইল খুন গুলো নিয়ে। এখানেও শুরু হয় ভিক্টিম ব্লেমিং, খুন হয়ে যাওয়া মেয়েগুলোকেও কেউ ছেড়ে দেয় না। ইউনিভার্সিটি পড়তো, ডাক্তার ছিলো, অতো টাকা বেতনে চাকুরী করতো তারপরও সব মেনে নিয়ে সংসারে কেন ছিলো? কি দরকার ছিলো ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। সিরিয়াসলি??? বাংলাদেশে একটা সিঙ্গেল মেয়েকে বাড়িওয়ালা বাড়ি ভাড়া দেয়? এছাড়া, প্রায় প্রতিনিয়ত কি এই খবরও আসে না, পুরো পরিবারশুদ্ধ বাড়ির ভেতরে গলা কেটে রেখে গেছে? প্রাইমমিনিস্টার কি বলেননি, বাড়ির ভেতরে তিনি নিরাপত্তা দিতে পারবেন না? ইউরোপ যে এত সিকিওর বলি, বন্ধুভাবাপন্ন পুলিশ আছে, সোশাল সার্ভিস আছে তারপরেও ক’টা মেয়ে পরিবারের সমর্থণ ছাড়া ডিভোর্সে আগায়? লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, যে মেয়েগুলো খুন হয়, তাদের বয়স সব ত্রিশের নীচে। নিতান্ত জীবন সম্বন্ধে অনভিজ্ঞ বাচ্চা। একা থাকার মত এত মানসিক চাপ নিতে পারে না। যারা একা থাকে তাদের বেশীর ভাগই ত্রিশের ওপরে। জীবনের তিক্ততা খেয়ে খানিকটা শক্ত হয়ে গেছে। জীবনের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে পরিবারের সমর্থণ আর পাশে থাকা জরুরী আর এরকম ভলনারেবল সিচুয়েশানেতো আরও বেশী জরুরী। ইলমা’র খুনের পরে একটা আলোচনা অনেকেই করছেন, মেয়ের পরিবার কোথায় ছিলো? মেয়ের প্রতি তাদের দায়িত্ব ছিলো না? আলোচনা অন্তত শুরু হয়েছে, ইলমার আত্মত্যাগের ইতিবাচক দিক, এই কথাটি অসংখ্যবার আমি বিভিন্ন খুনের সংবাদের নীচে মন্তব্যে লিখেছি, লিখে যাবো। এসব ব্যক্তিগত বিষয় নয়, এগুলোর জন্য সামাজিক আন্দোলন দরকার। সমাজ পরিবর্তনশীল তাই সামাজিক দাবীগুলোও পরিবর্তিত হবে। ***বিয়েতে, মেয়েকে স্বামী/শ্বশুর বাড়ির হাতে তুলে দিলাম, এই সংলাপ/মানসিকতা পুরোপুরি বন্ধ হতে হবে। আপনার সন্তানকে আপনি যত ভালবাসবেন ততটা অন্যকেউ বাসবে না। তাই নাটক বন্ধ করেন। ***ডিভোর্স হলে শুধু কাবিনের টাকা দিয়ে মেয়ে বিদায় বন্ধ করুন, মেয়ের যতটুকু অধিকার আছে তা নিশ্চিত করুন। সংসার গড়ে তুলতে মেয়ের ভূমিকা, ত্যাগ কিছুই কম থাকে না। *** সম্পত্তিতে ছেলে-মেয়ের সমান অধিকার নিশ্চিত করুন। ভবিষ্যতে মেয়ে খুন হলে, টিভির সামনে যখন মেয়ের মা-বাবা কাঁদবে, আমার মেয়েকে এভাবে অত্যাচার করছে, ঐভাবে অত্যাচার করছে তখন মেয়ের বাবা-মা’কেও যদি খুনের মদতদাতা হিসেবে পুলিশ গ্রেফতার করে তাহলে খুনের রেট নিসন্দেহে কমবে। বাংলাদশে খুব কম খুনের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে মেয়ের মা-বাবা জানতো না, মেয়ে অত্যাচারিত ও নিগৃহীত হচ্ছিলো এবং তারা কিছুই করে নাই। চট্রগ্রামে খুন হওয়া মিতুর পুলিশ বাবাও জানতো, মেয়ে বিপদে আছে। পরিশেষে, বাবা-মা’য়েদের প্রতি মিনতিঃ সন্তানের দায়িত্ব নিন,পাশে থাকুন। মেয়েকে মারলেই অত্যাচার হয় না, অত্যাচার আরও অনেক ধরনের হয়। সেগুলোও বোঝার চেষ্টা করুন। আর অত্যাচারই লাগবে কেন? মেয়ের যদি সংসারে/স্বামীর সাথে মন না লাগে, তালাকের জন্যে এই কারণটাই যথেষ্ঠ নয়? অসুখী হয়ে পুরোটা জীবন তাকে কাটাতে হবে? “মানুষ কি বলে তার থেকে ভাল থাকা জরুরী আর বিয়ে টিকিয়ে রাখার চেয়ে বেঁচে থাকা জরুরী”।

Friday 10 December 2021

তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসানকে পদত্যাগ করতে বলায় যারা বগল বাজিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের একাউন্টে দশ পয়েন্ট যোগ হল বলে তাদের জন্যে পরদিনই দুঃসংবাদ। মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে বৃটেন, কানাডা আর এমেরিকা ছয় জন বাঘা বাঘা সিনিয়র খাস সরকারী উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার তাদের দেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে। বিএনপি আর জাপা’র একাউন্টে আবার ছয় ইন্টু দশ ইক্যুয়ালটু ষাট পয়েন্ট যোগ হলো। কারণ তাদের শাসনামালে বাংলাদেশের কোন খাস সরকারী কর্মকর্তারা এরকম নিষেধাজ্ঞার কবলে পরে নাই। অবশ্য এটিকেও জাস্টিফাই করার জন্যে “কোয়াড”কে টানার চেষ্টা করে যাচ্ছেন কেউ কেউ। কিন্তু ক’দিন আগে বাইডেনের “ডেমোক্রেসি সাম্মিট” এও বাংলাদেশকে কেন ডাকা হয়নি তা নিয়ে এখনো জাস্টিফিকেশান আসেনি। যেকোন ইস্যুতে জাস্টিফায়েড লীগারদের একটাই যুক্তি থাকে, জাতীয় পার্টি আর বিএনপির তুলনায় যেহেতু আওয়ামী লীগ ভাল করছে, জনগনের এতেই তুষ্ট থাকা উচিৎ, এরচেয়ে ভাল কিছু আশা করা ঠিক না। কিন্তু ভোট চাওয়ার সময় তারা সেটা বলে না। তখন তারা ঢাকাকে লস এঞ্জেলস আর সিলেটকে ম্যানচেষ্টার বানিয়ে দেয়ার ওয়াদা দেয়। বারো বছর ক্ষমতায় থেকেও যখন তাদের ব্যারোমিটার বদলায় নাই তাহলে আমি সাজেস্ট করি, ক্রিকেট - ফুটবল খেলার প্লেয়ার, কোচ যেমন বিদেশ থেকে আনা হয়, তেমনি বিদেশ থেকে সৎ, দক্ষ পলিটিশিয়ানস এজ ট্রেনার বাংলাদেশে আনা হোক। তারা বাংলাদেশে এক্সপার্ট এন্ড ফেয়ার প্রশাসনের একজাম্পল সেট করুক। জনগনের চয়েস লিস্ট এলাবোরেট হওয়া এখন সময়ের দাবী, নতুন ব্যারোমিটার তৈরী হোক, লেবার পার্টি নাকি কনজার্ভেটিভ, পিভিডিএ না ভিভিডি। নইলে “রাজনীতি আর দুঃশাসনের দুষ্ট চক্র” থেকে এই দেশ, এই জাতি কখনো মুক্তি পাবে না। জেনারেশান বাই জেনারেশান আমরা এসব অসৎ রাজনীতিবিদদের অপশাসন আর তারপর সেটাকে জাস্টিফায়েড লীগ দিয়ে প্রমোট করার ভুক্তভোগী থেকেই যাবো। আর বস্তাপচা ডায়লগতো আছেই, “বিকল্প নেই”। বিকল্প না থাকলে দেশ আর জাতির অস্তিত্বের প্রয়োজনেই সুচিন্তিতভাবে সুস্থ বিকল্প তৈরী করা হোক। বিকল্প নাই বলে, অত্যাচারের বিরুদ্ধে দেশে প্রতিরোধ, প্রতিবাদ নেই আর এর ফল হলো, বিদেশীরা ধরে ধরে এখন সাইজ করে দেবে।

Thursday 9 December 2021

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – টুয়েন্টি সিক্সথ নভেম্বর টুয়েন্টিটুয়েন্টি ওয়ান

প্রিমিয়ে রুতেঃ চৌদ্দই ডিসেম্বর দুই হাজার বিশে প্রথমবারের মত নেদারল্যান্ডসে লকডাউন হয়েছিলো, এই বছরের সাথে গত বছরের পার্থক্য হলো, বেশীর ভাগ মানুষরেই এবছর ভ্যাক্সিন দেয়া। যার ভ্যাক্সিন দেয়া আছে তার করোনার কারণে ইনটেন্সিভ কেয়ারে আসার সম্ভাবনা শতকরা পঁচিশ ভাগ কম। আগামী তিন সপ্তাহের জন্যে এই নিয়মগুলো থাকবে তারপর অবস্থা বুঝে আবার বিবেচনা করা হবে। সামনের চৌদ্দই ডিসেম্বর আবার আপনাদের সাথে পর্ববর্তী করনীয় নিয়ে কথা হবে। বারোই নভেম্বর থেকে দেয়া সব নিয়মগুলো বলবৎ থাকবে আজকের গুলো তার ওপর দিয়ে প্রযোজ্য হবে। আটাশে নভেম্বর রোববার থেকে সামনের তিন সপ্তাহ, সন্ধ্যা পাঁচটা থেকে সকাল পাঁচটা পর্যন্ত সমস্ত কিছু বন্ধ থাকবে। সুপারমার্কেট, ওষুধের দোকান সন্ধ্যা আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। গাড়ির তেলের দোকান আর চিকিৎসাকেন্দ্রগুলো খোলা থাকবে তাদের স্বাভাবিক সময়সূচী অনুযায়ী। প্রফেশনাল টুর্নামেন্টগুলো চলবে তবে দর্শকবিহীন। ক্ষতিগ্রস্ত বিভাগগুলোকে সমস্ত রকম সহযোগিতা দেয়া হবে। আর বিশেষজ্ঞদের সাথে সব সম্ভাবনা দেখা হচ্ছে, ভবিষ্যতে এরকম বন্ধ করে দেয়ার পরিস্থিতি কি করে এড়ানো যায়। যেখানে যেখানে বসার স্থান নির্দিষ্ট করে দেয়া আছে সেখানেও, মাস্ক আর দেড় মিটারের সামাজিক দূরত্ব বাধ্যতামূলক করা হলো। নির্দিষ্ট ধারন ক্ষমতার এক তৃতীয়াংশ মানুষ আসতে পারবে। আর দোকানে কিংবা যেসব জায়গায় মানুষ চলাচল করে সেখানে প্রতি পাঁচ বর্গমিটারে একজন মানুষ থাকবে। যতদূর সম্ভব ভ্রমণ না করাই শ্রেয়। চারজনের বেশী কোথাও অতিথি না হওয়া, এক বাসায় আতিথেয়তা নেয়ার পর সেদিনই অন্য আর এক বাসায় না যাওয়া। অন্য বাসায় যাওয়ার আগে সেলফ টেস্ট করিয়ে নেয়া। কিংবা একদিনে দুইবার অতিথি আসার আগে হোস্ট আগে সেলফ টেস্ট করে নেয়া। অফিসে দেড় মিটারের সামাজিক দূরত্ব আবশ্যিক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। এমন নয় যে সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে না, তবে স্কুল বন্ধ করে দিলে বাচ্চাদের মানসিক ও শারীরিক সমস্যা এত প্রবল আকার ধারণ করে এবং সামাজিক জীবনের এর প্রভাব এত মারাত্বক পরে যে যতদূর পারা যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে রাখার চেষ্টা করা হবে। হাঁটার সময় বাচ্চাদের মাস্ক পরতে হবে। গার্জেনদের বলছি, বাচ্চাদের পৌঁছে দেয়ার দরকার নেই, তারা একাই স্কুলে আসুক। প্রাইমারি স্কুলের গ্রুপ সিক্স থেকে শুরু করে প্রত্যেক ক্লাশের টিচার আর ছাত্রদের সপ্তাহে দু’দিন সেলফ টেস্ট করা বাধ্যতামূলক। শিক্ষার সাথে যুক্ত প্রত্যেকটি মানুষকে তাদের আন্তরিকতা আর সদয়তার জন্যে পুরো জাতির পক্ষ থেকে আবারও আমার আন্তরিক ধন্যবাদ রইলো। সর্ত্তোধ্ব মানুষদের সাথে বাচ্চাদের যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বাচ্চাদের মাধ্যমে দাদা-দাদী, নানা-নানী অসুস্থ হচ্ছেন সেদিকটিতে তীব্র দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। দেখা করার চেয়ে বেশি ভিডিওকল করার জন্যে অনুরোধ করছি। সিন্টারক্লাশ পালন করার আগেও প্রত্যেককে সেলফ টেস্ট করার অনুরোধ করছি। নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে, গতকাল নেদারল্যান্ডসের অনেক বিল্ডিংই কমলা রঙে রাঙা হয়েছিলো। করোনার কারণে পারিবারিক সহিংসতা অনেক বেড়ে গেছে, নারীরা তার শিকার আর বাচ্চারা অনিরাপদ। তাদেরকে সাহায্য করো। অনেকেই একাকীত্বে ভুগছেন। একাকী বয়স্ক মানুষদের পাশে দাঁড়াও এবং তাদের সঙ্গ দেয়ার চেষ্টা করো। খুব কঠিন সময় যাচ্ছে আমরা জানি তারপরও পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতা ধরে রাখতে হবে। হুগো দ্যা ইয়ংঃ আটাশি দশমিক পাঁচ ভাগ মানুষের ভ্যাক্সিন নেয়া হয়ে গেছে। তারপরও গত এক সপ্তাহ ধরে বাইশ হাজারেরও বেশী মানুষ প্রতিদিন সংক্রমিত হচ্ছে। ছাব্বিশো মানুষ করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে যাদের মধ্যে পাঁচশো আটাশ জন ইনটেনসিভ কেয়ারে। তবে হাসপাতালে আসা শতকরা পঞ্চাশ জন আর ইনটেন্সিভ কেয়ারে থাকা শতকরা সত্তর জন ভ্যাক্সিন না নেয়া মানুষ। যে এক দশমিক দুই মিলিয়ন মানুষ এখনো ভ্যাক্সিন নেয়নি এই শীতের শেষে তারাও করোনপ্রুফ হয়ে যাবে, হয় তারা ভ্যাক্সিন নেবে নয় করোনায় ভুগে। ভ্যাক্সিন দেয়ার পরও এত অল্প সময়ে এত মানুষ সংক্রমিত হবে এটা আমাদের কল্পনার বাইরে ছিলো। ভাইরাস বা করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা আগে থেকে আর আশাবাদী হতে চাই না, বারবারই সংক্রমনের গতি প্রকৃতি আমাদের নিরাশ করছে। আমরা যত চেষ্টাই করি না কেন দেখা যাচ্ছে এই শীতের পরেও ভাইরাস আমাদের মধ্যে থেকে যাবে, হয়ত অন্য কোন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে, পুরোপুরি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না। তানবীরা হোসেন ১২/০৯/২০২১

আসপিয়া

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম আর সামাজিক মাধ্যমে দেখছিলাম শৈশবে বাবা হারানো, গ্রামবাসীর বাড়িতে আশ্রিত থেকে বড় হওয়া আসপিয়া। পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় বরিশাল বিভাগে মেধা তালিকায় পঞ্চম হয়েছে। তারপর একে একে ডিঙিয়ে এসেছে পরীক্ষার বাকি সবকটি ধাপ। কিন্তু ভূমিহীন, অন্যের জমিতে আশ্রিত হওয়ায় তার চাকরি হচ্ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কর্মকর্তারা। খবরটা বুকের মধ্যে বিরাট ধাক্কা দিলো। ছোটবেলায় দাদুর মুখে গল্প শুনেছি, অমুক-তমুক অনেক পড়াশোনা করেছে কিন্তু জায়গাজমি নাই তাই ইংরেজ/পাকিস্তান সরকার চাকুরী দিচ্ছিলো না। তখন স্থায়ী ঠিকানার জায়গায় অন্যের বাড়ির নাম, প্রয়োজনে অনুমতি সাপেক্ষে বাবার নামও বদলে চাকুরীর ফর্ম পূরণ করা হতো। বিজয়ের পঞ্চাশ বছরের প্রাক্কালে আমরা কি এখনো সেখানেই দাঁড়িয়ে আছি প্রিয় স্বদেশ? বারবার ইচ্ছে হচ্ছিলো মেয়েটিকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলি, আমারতো ঠিকানা আছে কিন্তু তোমার মত এত ধাপ পেরিয়ে এত দূর আসতে পারিনি। সম্ভব হলে আমার ঠিকানাই না হয় তুমি নিয়ে নাও। তবুও লড়াই চালিয়ে যাও, থেমে যেও না। আসপিয়ার জন্যে এক বুক ভালবাসা। আসপিয়া হারতে পারে না, আসপিয়া হারলে হেরে যাবে বাংলাদেশ। বিজয়ের মাসে আমি আসপিয়ার বিজয় দেখতে যাই। তাতে মুরাদের মত অপরাধীকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার নির্লজ্জ অন্যায় ভুলে যাবো। দশ মুরাদের চেয়ে এক আসপিয়া অনেক দামী একটি আনন্দ সংবাদের প্রত্যাশায়