Wednesday 10 May 2017

জার্নাল মে 2017

“পিঙ্ক” মুভিটার সাথে “আপন ঘর” মুভিটার পার্থক্য হবে এটুকুই – হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল জেনে এখানে এডভোকেট হিসেবে কোন অমিতাভ বচ্চন জান দিয়ে লড়বে না (হয়তো) আর কেইসে অনেক ভুল ভ্রান্তি আছে জেনেও “সারকামসিয়াল এভিডেন্টস” মাথায় রেখে কোন জাজ হয়ত এসটাব্লিশমেন্টের বিপক্ষে গিয়ে রায় দিয়ে এই ঘুনে ধরা রক্ষনশীল সমাজে কোন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করবে না। যারা সারাক্ষণ মেয়েদের দায়ী করে যায় তাদের চৈতন্য উদয় হয়, এমন কিছু হওয়ার সম্ভাবনা হয়ত খুব কম। দিনের শেষে সিনেমা সিনেমাই আর বাস্তবতা বাস্তবতা।

সুযোগ আর কিছুটা সাহসের অভাবে যেসব সম্ভাব্য ধর্ষকরা ফেসবুকে বসে বিপুল জোশে মেয়েদের শালীনতা নিয়ে টানাটানি করছে, আর বলছে, “মেয়েরা ওখানে গিয়েছিলো কেন?” কেন ভাই? গেলে কি সমস্যা? আপনারা গেলে তো মেয়েদের সমস্যা হয় না, মেয়েরা গেলে আপনাদের সমস্যা কি? গেলেই ঝাপিঁয়ে পরতে হবে কেন? আপনারা কি হায়েনা? সমস্যা কি আপনাদের? ধর্ষককে ঘৃণা না করে, ধর্ষিতা কেন গেছে তা নিয়ে তোলপাড়? বাইরে যাওয়ার ইউনিভার্সেল অধিকার নিয়ে শুধু আপনারাই জন্মেছেন, সেটা ভাবার কারণ কি? মেয়েরা মহাকাশে অভিযান করতে পারলে, দেশের নেতৃত্ব দিতে পারলে, যুদ্ধ পরিচালনা করতে পারলে, বন্ধুর সাথে বাইরে যেতে পারবে না কেন?

“পিঙ্ক” এর সূত্রানুযায়ী যদি ধরি, তাহলে মেয়ে দুটো যদি কলগার্লও হয়, সেদিন তারা স্বেচ্ছায় সেখানে সম্মত ছিলো না, কি অধিকার ছিলো কারো তাদের জোর করার?

দিলদার সাহেব তো আরো জোশ, তিনি বলে যাচ্ছেন, তার দামড়া ছেলে কে ফাঁসানো হয়েছে। ফাঁসলো কেন আপনার বাবু সোনা? কোন ইন্টারেস্টে ফেঁসে গেলো, সেটা বলছেন না যে? এতো টাকা, বডিগার্ড, পুলিশ আপনার আয়ত্ত্বে থাকা সত্বেও ফেঁসে গেলো এই ডাব্বা গোল? আপনাদের বেতনভুক্ত পালিত দেহরক্ষী, এই ঘটনার ভিডিও করেছে, ভিডিও পুলিশের কাছে জমা দেন, দেখি, কি করে আপনার ছেলে ফাঁসলো? আপনার ছেলে ফেঁসে গেলো বলে, পিস্তল দিয়ে ভয় দেখালো? আবার এক মাস ধরে বিভিন্ন ভাবে হুমকিও দিয়ে গেলো? ফেঁসে যাওয়া লোকেরা বুঝি এই করে?

পুলিশের ভূমিকা এখানে সবচেয়ে আনন্দজনক। আসামীরা পুলিশের সাথে কোলাকুলি করার ছবি টুইট করছে আর পুলিশ তাদের খুঁজে পায় না। এই ছোট্ট দেশে, যেখানে মানুষের মাথার সাথে মানুষের মাথা ঠোকর খায়, পুলিশ আসামী প্রায়ই খুঁজে পায় না । ভাই, দায়িত্ব ঠিক মতো যখন পালন করতে পারেন না, তখন বেতন নিয়েন না। বেতন নিতে আপনাদের লজ্জা হয় না। ফেসবুকে তো আসামীদের ছবি দিয়ে সয়লাব, অপেক্ষা করেন, জনগন এনে আপনাদের হাতে দিয়ে যাবে, তাতেও লাভ হবে না অবশ্য আপনারা আবার নানা উছিলা দিয়ে তাদের ছেড়ে দিবেন।

যে সিনেমার শেষটা জানা থাকে সেটা দেখে যাওয়া ক্লিশে, ক্লান্তিকরও বটে। তবুও প্রতিবাদ করে সামনে আসার জন্যে মেয়ে দু’টোকে অভিবাদন।

https://www.instagram.com/nayem.ashraf/

11-05-2017 


No comments:

Post a Comment