Monday 10 January 2022

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – আঠারোই ডিসেম্বর টুয়েন্টিটুয়েন্টি ওয়ান

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – আঠারোই ডিসেম্বর টুয়েন্টিটুয়েন্টি ওয়ান প্রিমিয়ে রুতেঃ গত সংবাদ সম্মেলনের মাত্র চারদিন পরেই, শনিবার রাতে আবার সংবাদ সম্মেলন করার অর্থই হলো, আজকে খারাপ খবর আছে। এক লাইনে বলতে গেলে, কাল থেকে নেদারল্যান্ডস আরো একবারের জন্য পুরোপুরি বন্ধ হবে। আমরা করোনার পাঁচ নম্বর ঢেউয়ের মধ্যে আছি যার মধ্যে ওমিক্রণের নতুন ধরনটিও উল্লেখযোগ্য। দেখা যাচ্ছে অন্যান্য ধরনের চেয়ে ওমিক্রণ অনেক বেশি দ্রুত ছড়াচ্ছে। এই জটিল সংবাদটি নিয়ে আজকে আলোচনা হবে বলে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপরি ইয়ান ভান ডিজেলকে সাথে নিয়ে আসা হয়েছে। ইয়ান ভান ডিজেলঃ হাসপাতাল, জেনারেল ফিজিশিয়ান, কেয়ার হোমে যথেষ্ঠ ভীড় থাকা সত্বেও আমরা ভেবেছিলাম ডেল্টার ঢেউ আমরা সামলে উঠেছি, কিন্তু সেটার সংক্রমণের হার না কমতেই ওমিক্রণ ছড়িয়ে পড়ছে সব জায়গায়। আমর্স্টাডাম, লন্ডনের সংক্রমণের হার দেখে আমরা ধারনা করছি, ক্রিসমাস আর নিউ ইয়ারে ওমিক্রণ অনেক বেশি ছড়াবে যেহেতু এটির সংক্রমণের ক্ষমতা অনেক বেশি। ওমিক্রণ লীডিং থাকবে আর ডেল্টা হয়ত বিদায় নেবে। ওমিক্রণ দ্রুত ছড়ায় ছাড়া এটি নিয়ে আর অনেক বেশি কিছু এখনও জানা যায়নি। তবে ভয়ের কথা হলো, যখন ভ্যাক্সিন বানানো হয়েছিলো, তখন করোনার যেই রুপটি উপস্থিত ছিলো, ওমিক্রণের চরিত্র তার থেকে অনেক আলাদা। তাই ভ্যাক্সিন এটাকে পুরোপুরি প্রতিরোধ করতে হয়ত পারবে না। তারপরও বুস্টার নেয়া দরকার যাতে প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার থাকে, ওমিক্রনের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায়। আমরা যদি লন্ডনের সংক্রমণের হার ধরে আমাদের মডিউল হিসেব করি তাহলে দেখা যায়, এতো বেশি সংক্রমণ বাড়বে যে প্রথম ঢেউয়ের মত পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থা করোনা রোগী সামলাতেই ব্যস্ত থাকবে। হয়ত, এত খারাপ অবস্থা নাও হতে পারে কিন্তু অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা সময় থাকতে সাবধান হতে পারি। প্রিমিয়ে রুতেঃ নতুন লক ডাউন উনিশ তারিখ সকাল পাঁচটা থেকে শুরু হবে চৌদ্দই জানুয়ারী পর্যন্ত চলবে। বাসায় দুজনের বেশি মেহমান নয়। বাইরে হাঁটতেও দুজনের বেশী নয়। তবে ক্রিসমাসের দুদিন আর থার্টি ফাস্টে চারজন মেহমান আসতে পারে আর বাইরেও চারজন এক সাথে আড্ডা দিতে পারে। সমস্ত দোকানপাট বন্ধ থাকবে তবে ক্লিক এন্ড কালেক্ট চলতে পারে। সুপারমার্কেট আর ওষুধের দোকান সন্ধ্যা আটটা পর্যন্ত খোলা থাকতে পারে। গাড়ির ট্যাকিং, লাইব্রেরি ইত্যাদি খোলা থাকবে। প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সব বন্ধ থাকবে সাথে ডে-কেয়ার সেন্টার। তবে দশই জানুয়ারী থেকে অনলাইন ক্লাশ চলবে। যাদুঘর, কনসার্ট, সিনেমা, চিড়িয়াখানা, এমিউজমেন্ট পার্ক সব বন্ধ থাকবে। রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে বন্ধ থাকবে তবে টেকওয়ে চলতে পারে। বিয়ে আর শেষ কৃত্যানুষ্ঠান নিয়মের মধ্যে চলতে পারে। চুল, নখ, বিউটি সেলুন সব বন্ধ থাকবে। সবরকম খেলাধূলা আর প্রতিযোগিতা বন্ধ থাকবে। তবে মাঠে খেলাধূলা চলতে পারে, দুজনের মধ্যে, দেড় মিটার দূরত্ব মেনে। যারা যারা ছুটিতে যাবে, যে দেশে যাবে সেখানকার নিয়ম মেনে চলতে হবে। সাবসিডি যেমন চলছিলো চলতে থাকবে। হুগো দ্যা ইয়ংঃ সংক্রমণ ঠেকানোর সর্বোচ্চ ব্যবস্থা হিসেবে আমরা প্রতি সপ্তাহে দেড় মিলিয়ন মানুষকে বুস্টার দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। জানুয়ারীর মাঝামাঝির মধ্যে সবাইকে বুস্টার দিয়ে সুরক্ষা করাই আমাদের আপাতত লক্ষ্য। এরমধ্যে আমরা বেশী সংখ্যক রোগীকে চিকিৎসা দেয়ার মত করে নিজেদের প্রস্তূত করছি। তিন মাস আগে যাদের করোনা ভ্যাক্সিনের শেষ ডোজ নেয়া হয়েছে তাদেরকে অবশ্যই অতি দ্রুত বুস্টার নেয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে, নইলে ওমিক্রন প্রতিরোধের জন্যে যথেষ্ঠ প্রস্তূত নয় বলেই দেয়া যাচ্ছে। সাংবাদিকঃ আপনারা কি বুস্টার শুরু করতে দেরী করে ফেলেছেন? ইয়ান ভান ডিজেলঃ দু’বছর ধরে কাজ করলে আপনি কিছুতেই বলতে পারেন না, আপনি কখনো ভুল করেন নি। তবে যেভাবে ভ্যাক্সিন নেয়া মানুষও এসে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে তাতে আমরা ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা ও বুস্টার নিয়ে কিছুটা পর্যবেক্ষণের মধ্যে ছিলাম। বুস্টার দেয়ার জন্যে এখন আমরা এত মানুষ এপয়ন্ট করেছি, এভাবে পরিকল্পনা করেছি, আপনি দেখছেন এখন বুস্টার কার্যক্রম সময়ের আগে চলছে। সাংবাদিকঃ আজকের সার্ভে থেকে দেখা গেছে মাত্র ত্রিশ পার্সেন্ট মানুষ আপনার এই লকডাউন সমর্থণ করছে। হয়ত দেখা গেলো, ক্রিসমাসে তবুও মানুষ পরিবারের সাথে পার্টি করছে, তখন আপনি কি করবেন? প্রিমিয়ে রুতেঃ আজকের প্রেস কনফারেন্সে ইয়ান ভান ডিজেল পরিস্কার বলে দিয়েছে, কি কি ঝুঁকি আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছে। আমি বিশ্বাস করি ও জানি যে ছয়/সাত মিলিয়ন মানুষ এখন এই প্রেস কনফারেন্স দেখছে, তারা এটি উপলব্ধি করবে এবং আপনি পরের সপ্তাহে এই সার্ভেটি আবার করলে, আমি নিশ্চিত অন্যরকম ফলাফল আসবে। সাংবাদিকঃ ভ্রমণের ব্যাপারটা যদি আরেকটু পরিস্কার করতেন, হুগো দ্যা ইয়ংঃ স্যাঙ্গেইনের সাতাশটি দেশের মধ্যে আমরা ভ্রমনের ব্যাপারটা একটি ফর্মে নিয়ে আসতে চাই। এতদিন শুধু ডিসিসি থাকলেই চলতো কিন্তু এখন থেকে টেস্ট ও বাধ্যতামূলক করতে চাই। ইউরোপের বাইরে থেকে এলে/গেলে সবাইকে টেস্ট কিংবা ডাবল টেস্ট করা সহ, যে দেশে যাবে তার নিয়মগুলোও মানতে হবে। এতদিন যাদের ভ্যাক্সিনের সার্টিফিকেট ছিলো তাদের কেয়ারন্টিন করতে হতো না। কিন্তু এখন থেকে ইউরোপের বাইরে থেকে এলেই কেয়ারন্টিন বাধ্যতামূলক করার করা ভাবা হচ্ছে। এমনকি যুক্তরাজ্য থেকে এলেও। সাংবাদিকঃ এত অল্প সময়ে সবাইকে বুস্টার দেয়ার মত যথেষ্ঠ ভ্যাক্সিনের মজুদ আছে কি? হুগো দ্যা ইয়ংঃ ভ্যাক্সিন যথেষ্ঠ আছে, মর্ডানা, ফাইজার দরকারে ইয়ানসেন কিন্তু দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা ভ্যাক্সিন পুশ করার মত মানুষ নেই। লোকবল যোগাড় করতে পারলে আরও দ্রুত সবাইকে বুস্টারের আওতায় আনা হবে। সাংবাদিকঃ দুই ডোজ ভ্যাক্সিন যেই ভাইরাস আটকাতে পারেনি তাকে একটি বুস্টার দিয়ে আটকে দেবেন, এমন ভাবনার কারণ কি? ইয়ান ভান ডিজেলঃ খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন যদিও আমি এর উত্তর জানি না। শুধু ভাবছি, বুস্টার ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করবে যা ভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
তানবীরা হোসেন ১১/০১/২০২২

No comments:

Post a Comment