Tuesday 3 November 2009

এক চিলতে অবসর

হঠাৎ করেই এক চিলতে অবসর। প্ল্যান করেও আজকাল নিজের জন্য একটু সময় বের করতে পারতাম না সে জায়গায় অযাচিত ভাবে পাওয়া অবসরটা কি করে কাটাবো তাই ভাবছিলাম। কি অবাক ব্যাপার, করার এতো কিছু আছে, এতো কিছু জমে আছে আমার অপেক্ষায় তা এতোদিন কেনো চোখেই পরেনি? আগে সারাক্ষণ মনে মনে একটা তাড়া থাকতো। কোথাও যেতে হবে। সবার সাথে থাকতে হবে, সবার মাঝে। হঠাৎ করেই ছুটির ঘন্টা বেজে গেলো। “সুশীল রাজ্যে তুমি কাম্য নও, তোমায় দিলাম আমরা ছুটি”.........

আসলে “আসক্তি” সেটাযে ধরনেরই হোক না কেনো, খারাপ। আসক্তি কাটিয়ে ফেলা মানেই মনে হয় “মুক্তজীবন”, দায়হীন। যে বইগুলো সময়ের অভাবে জমে পাহাড় হচ্ছিলো সেগুলোতে এখন হাত পড়ছে, সিনেমাগুলো জমে ছিলে একদিন ছুটি হবে এই আশায় সেগুলো এখন দেখা হচ্ছে। অনেকের সাথে রীতিমতো সময় নিয়ে সামাজিক আলাপ সালাপ হয়, ধূলো পরা সম্পর্কের সজীবতা ফিরছে। রাতজাগা কমে চেহারার শ্রীও ফিরেছ কিছুটা। ম্যালথাসের সূত্রানুযায়ী হয়তো প্রকৃতিই আমাকে নিয়ন্ত্রন করেছে। এতো ব্যস্ত জীবনে সারাক্ষণ মনে যে তাড়া লেগে থাকতো, তার থেকে মুক্তি ঘটিয়ে দিয়েছে।

কিছু প্রিয় মুখ অন্যরকম হয়ে গেছে আর কিছু সাধারণ মুখ ছিলো তারা প্রিয়ের তালিকার যোগ হয়েছে। একটা ঝড় আসলে অনেক কিছু নাড়িয়ে দিয়ে যায়, তা যতো আলতোভাবেই হোক না কেনো। অনেককেই নতুনরুপে চেনা যায়। সবচেয়ে অবাক লাগছে, যতোটা কষ্ট হবে ভেবেছিলাম ততোটা কষ্ট হচ্ছে না দেখে। তাহলে কি আমার নিজের মধ্যেই কোন ফাঁক ছিল? যাকগে, এখন আবার বৃত্তের বাইরে দেখার সুযোগ হলো। সব আপাতঃ খারাপ জিনিসের ভালো দিকগুলো খুঁজে নিতে হয়। আসক্তি না কাটলেতো আজ অব্ধি বৃত্তেই পাঁক খেতাম। হয়তো এখন বৃত্তের বাইরে চোখ রাখব। আগেও অনেক সামান্য হতাশায় ভারাক্রান্ত হতাম, কিন্তু পরে দেখেছি সামান্যের জন্যে মন খারাপ করতাম, সামনে আমার বিপুলা পৃথিবী দাঁড়িয়ে ছিলো। এটাও কি তেমন কিছু? সময় হবে তার জবাব।

তানবীরা
০৩.১১.০৯

4 comments:

  1. কি বলব, পুরা ঝড়ের সময় আপনার ঠিক পাশেই দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখলাম কিছু লোকের বৃথা আস্ফালন, তার আসলে কি বলতে চায় আর কি বোঝাতে চায়, কেন যেন মনে হল তা তারা নিজেরাই জানেন না। আর এর মাঝে থেকে বেশ কিছুর হাসির খোরাকও পেয়েছি আমি। আর আসক্তি আপনে একাই কাটিয়ে উঠেন নি, আপনার পাশে থেকেও আরো অনেকের বোধদয় হয়েছে, সত্য উদ্ঘাটিত হয়েছে, আসলে কার অবস্থান কি, আর আদর্শ কি, সেটাও বেশ পরিষ্কার হয়ে ফুটে উঠেছে। আপনাকে মুক্ত জীবনে সুস্বাগতম। আর মন খারাপ করবেন কেন? আপনার কি দোষ ছিল? আপনে সত্য কথাটা সোজা সাপটা বলেছেন সেটা? তাহলে আর হো হো করে হাসা ছাড়া আর তো কিছুই করার নেই। আসলে আপনাকে ছুটি দেবার তারা কে? তারাই আপনার সান্নিধ্য পাবার যোগ্য না। নিজেদের নিরপেক্ষ মুক্তমনা বলে ঘোষনা দিয়ে যখন নিজেরাই যখন গোড়ামি নিয়ে হুটোপুটি খায় তখন আমার মত দুর্মুখের ও বাক্যহারা হয়ে হা করে তাকিয়ে থাকতে হয়।

    ReplyDelete
  2. হুমম সাইফ, প্রাথমিক অবস্থায় একটা আবেগ কাজ করছিলো। এখন সেটা কমছে। অনেক কিছু যুক্তির আলোকে দেখছি। তাই মন খারাপটাও কমছে।

    আমাদের দেশের রাজনৈতিক পরিশিতির উপরে পড়ছি নুরুজ্জামান মানিকের লেখা বইটা। কতো নির্দোষ মানুষকেতো অনেক ভুল্ভাল কারনে প্রানও দিতে হয়েছে। ভাবছি এখন, তাদের কেমন লেগেছিলো তখন।

    ReplyDelete
  3. এইরকম সময় প্রায়ই আসে। তানবীরা,আসাটা অতি দরকার!কখনো কখনো আমরা একটা নিজের তৈরী জগতে বসবাস করতে শুরু করে দেই, তখন দরকার হয় আসল পৃথিবীটাকে একবার দেখে নেয়া। আর এটা কঠিন সময়ে না দাঁড়ালে দেখা সম্ভব নয়। বন্ধু-শত্রু বলে আসলে কিছু হয়না। মানুষকে বেঁচে থাকতে হয় তার কাঙ্খিত অস্তিত্ব ধরে রেখে। কারো ওপরে ক্ষোভ রেখনা। বরং এই যে জানলে সেটা একটা বিশাল প্রাপ্তি। ভালো থেক সবসময়। তোমার মেইল আমার ওয়েস্ট বক্সে এসে জমা হয়েছিল তাই দেখিনি, একটু আগে খুঁজে পেলাম।

    ReplyDelete
  4. আশাকরি সময় এক সময় এই দুঃখ ভুলিয়ে দিবে জীবন এগিয়ে যাবে সামনে। আসলে এমন জায়গা থেকে এই দুঃখটি পেয়েছি যেখান থেকে এর আশা ছিল না।

    ReplyDelete