Sunday 29 November 2009

বন্ধু মনিকা রাশিদের সঙ্গে যখন কথা বলছিলাম, সে বলছিল, যুদ্ধের পর রাজাকাররা তাদের বাড়িতে এসে তাদেরকে বলতো, এই মালাউন বাড়ি ছাড়, মালাউন বাড়ি ছাড়। আশেপাশে পাড়া প্রতিবেশি সবাই ছিল কিন্তু কেউ কোনদিন ওদের পক্ষ হয়ে প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসেনি। আসেনি কেউ ওদের হাত ধরতে। কিন্তু অন্যসময় হয়তো তারা নিশ্চয়ই ওদের বাড়ি আসতো গল্প গুজব করতে, কি করে মুখ দেখাতো তখন ওদের?

যুদ্ধ শেষ হয়েছে আজ অনেক অনেক বছর। আজোও মনিকার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় দিনযাপন করছে নিজ ভিটাতে। মনিকার সদ্য কৈশোর পেরোনো ছোট বোন তার তারুন্যের কোন কিছুই উপভোগ করতে পারছে না অজানা শঙ্কায়। তার অপরাধ "হিন্দুর মেয়ে"। এধরনের হৃদয় ভাঙ্গা কিছু শুনলে আমি সাথে সাথে কথা বলতে পারি না, কথাগুলো আমার মাথার মধ্যে দিয়ে আমার হৃদয়ে যেতে থাকে বলে সেই মূহুর্তে আমি স্থানুর মতো হয়ে যাই। শুধু ভাবতে থাকি, এক দিন দুদিন চার দিন, ছয় দিন কিংবা প্রতিফিন। আর কতোদিন কাটবে এভাবে? কতো বছরে শেষ হবে ধর্মের নামে রক্তের এ হোলি খেলা?

তাহলে প্রতিবাদ কি এখন শুধু অন্তর্জাল আর মিডিয়া ভিত্তিক? যারা অর্ন্তজালে কাউকে পেলে ঝাপিয়ে পড়েন তারা আসলে কোন পৃথিবীর বাসিন্দা? তাদের বন্ধু প্রতিবেশীদের এ ধরনের মূহুর্তে তারা কোথায় থাকেন? এতো প্রতিবাদ্ মুখের সচেতন সুশীল ন্যায়পরায়ন বাঙ্গালী থাকতে কেনো মনিকার তরুনী বোনকে তার নিজ ভিটেতে বিনিদ্র রাত্রি যাপন করতে হবে? মেয়ে হয়ে জন্মানোর একী মাশুল শুধাতে হবে তাকে?

ধিক এই মানব সভ্যতা আর মুখোশ পরা সভ্য সাজা মানুষগুলোকে। আবারো বলছি ধিক তোমাদেরকে। নিজ প্রতিবেশি, আত্মীয় বন্ধুকে যারা নিরাপত্তা দিতে জানো না, তারা আবার আসো সুশীল কথা বলতে। ধিক্কার জানাই তোমাদেরকে।

০৩.১২.০৯

No comments:

Post a Comment