Thursday 10 October 2019

আসুন, আজকে শিখি কি করে একজন “সাহী” আওয়ামী লীগার চেনা যাবেঃ

দেশের চলমান কোন জাতীয় ইস্যুতে হয়ত আপনি আপনার ক্ষোভ বা বেদনা বলেছেন, সাথে সাথে শুরু হবে, বিএনপি’র আমলে কি হয়েছিলো। এখন তো আসামী অন্তত ধরা পড়ছে, তখন কি দলের কাউকে ধরা হইছিলো, হ্যাঁ হইছিলো? আপনি যদি মিনমিন করে বলার চেষ্টা করেন, অভি-নীরুকে তো খালেদা জিয়াও বহিস্কার করেছিলো, বাংলা ভাইকে মারা হয়েছিলো, তখন শুরু হবে আরও শাণিত আক্রমন, কারণ তাদের সব কম্পিটিশান বিএনপির সাথে! কথায় কথায় বিএনপি টেনে আনবে, জনগন ভুলে গেলেও তারা ভুলবে না। সেদিন হয়ত আপনি বেশিই দুঃখী, আর একটু ঘাড়াইলেন তারপর যাবে, এরশাদ, এরশাদ থেকে আইয়ুব খান, আইয়ুব থেকে ইয়াহিয়া, এভাবে অতীতের পথে হাঁটতে হাঁটতে আমরা ব্রিটিশ, মোগল, তুর্কি, কারবালা হয়ে ওহুদের যুদ্ধ, বদরের যুদ্ধে পৌঁছে যাবো। এবং এক বাক্যে স্বীকার করে নেবো আমরা আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগ থেকে নিশ্চয়ই ভাল আছি।
এই যে কোন চিপায় দাঁড়াইয়া, নিজস্ব কল্লা কাঁধে নিয়া, আপনার চির পরিচিত বাংলাদেশের নাগরিক মানুষ ভাইটি যে হঠাৎ লীগার হয়ে গেলো তার সাথে আপনি আপনার মনের দুঃখ কওয়ার সুযোগ পাইছেন এটাই বড় গনতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা, এর চেয়ে বেশি আপনি আপনার এই মানব জীবনে কি আশা করতে পারেন?
আমাদের কোন ভবিষ্যত নেই, আমাদের আছে পরস্পরকে দোষারোপ করার গৌরবময় অতীত। শুধুই আঙুল তুলবো অপরের দিকে আর বেহায়ার মত নিজের দিকে তাকিয়ে হায়েনার হাসি হেসে যাবো।
তারপর তারা শুরু করবে নানা উন্নয়নের ফিরিস্তি, যার কিছুই আপনি আপনার ব্যক্তি জীবনে খুঁজে পাবেন না। কারণ আপনি আপনার জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত, যেই বাড়িতে যেই হালতে ছিলেন আজও তাই আছেন। পড়াশোনা করেছেন আর সব সাধারণ নাগরিকরা যেমন করে, বাহাত্তরটা ইন্টারভিউ দিয়ে একটা চাকুরী পেয়ে জীবন ধারণের মত বেতন পেয়ে জীবন ধারন করছেন আর সবার মত। হ্যাঁ এর মধ্যে প্রয়োজনে হয়ত আপনার বাসার সোফা পরিবর্তন হয়েছে, ঘরে এসি এসেছে কিন্তু এর মধ্যে বাত্তি দিয়ে খুঁজলেও আপনি এরশাদ, হাসিনা কিংবা খালেদার অবদান বের করতে পারবেন না। কিন্তু আপনি চুপ থাকবেন, কারণ আপনি জানেন, এই উন্নয়ন কার কার বাড়িতে, ঘরে হচ্ছে এবং হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সে উন্নয়ন তো প্রতি সরকারের আমলেই কিছু জনগোষ্ঠীর বাড়িতে হয়েই যাচ্ছিলো! সরকার বদলায়, গোষ্ঠী বদলায় আর উন্নয়ন বদলায় কিন্তু সাধারণ মানুষের কিছু কি বদলায়?
এদের অন্যান্য প্রধাণ বৈশিষ্ট্যের মাঝে আছে, এরা প্যারানয়া’তে ভোগে, এরা দেশ ও দেশের মানুষের ওপরে “দল”কে রাখে এবং গনতন্ত্র বলতে এরা একনায়কতন্ত্র আর দেশ চালনা বলতে জমিদারী বোঝে। এরা জনগনের যেকোন দুঃখ কষ্টকে প্রজাদ্রোহিতার শামিল ভেবে নিয়ে দমন-পীড়নে নামে। এরা নিজেরা সারাবেলা খাইয়ালামু, মাইরালামু, ফাইরালামু করতে পারবে কিন্তু সে একই কাজ যখন বিএনপি কিংবা অন্য কেউ করবে তখন তারা সরকার পতনের গভীর ষড়যন্ত্র খুঁজে পাবে। কারণ তাদের দৃষ্টিতে, গনতান্ত্রিক দেশে কখনও সরকার পরিবর্তন হয় না, হতে পারে না, সেসব হলো ষড়যন্ত্র। একজন সাধারনস্য সাধারণ মানুষ হিসেবেও যদি আপনি ফেসবুকে দু-লাইন লিখে ফেলেন, কিংবা হয়ত দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলে ফেলেন, এর চেয়ে আগের দিন গুলাই ভাল ছিলো। সাথে সাথে প্যারানয়িক লীগের সৈন্যরা এরমধ্যে “সরকার পতন আন্দোলনের” তীব্র গন্ধ পেয়ে যাবে। ফেসবুকে আপনাকে হুঁশিয়ারি দেবে, বড্ড বেশি স্বপ্ন দেখা হয়ে যাচ্ছে।
এই যে আপনি দু’বেলা দু মুঠো খেয়ে, বাংলাদেশের তেষট্টি জেলার কোথাও মাথা গুঁজে মোবাইলে থ্রি জি, ফোর জি ইউজ করে ফেসবুক গুতান, এ সবই তাদের অবদান, বলেন, কল্লা কাঁধে নিয়ে বেঁচে আছি, আলহামদুল্লিলাহ। বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় হচ্ছে, ফেসবুকে শুধু ছবি পোষ্ট করবেন আর দোয়া শেয়ার করবেন, নিজে কখনো কিছু লিখবেন না, অন্য কারো লেখায়ও কোন লাইক বা কমেন্ট করবেন না, নিশ্বাস নেয়ার জন্যে নাক ব্যবহার করবেন আর খাওয়ার জন্যে মুখ, বলেন, সুবানাল্লাহ।

০৯/১০/২০১৯

No comments:

Post a Comment