Saturday 26 October 2019

নুসরাত হত্যার বিচার ও আমার কথা


আমার ছোট চাচা, বিধবা মায়ের খুব আদরের ধন ছিলো। সব কিছু নিয়ে খুব পিটপিটানি ছিলো। একবার এক ঝুম বৃষ্টির দিনে, বাড়িতে খিচুড়ী আর গরুর মাংস রান্না হলো। আমার চাচী রান্নার সময় মাংসে কাঁচা মরিচ দিয়েছিলো। ব্যস শুরু হলো ছোট চাচার টিপটিপানি, মাংসে কেন কাঁচামরিচ দেয়া হলো। চাচার টিপটিপানিতে অস্থির হয়ে চাচি বলেই ফেললো, দিয়েছিলাম, একটু রেজালা রেজালা গন্ধ হবে তাই।
চাচা মহা বিরক্ত গলায় বলেছিলো, রেজালা কি খিচুড়ি দিয়ে খায়?  

নানা ইস্যুতেই শুনতে হয়, সভ্য দেশে এই হয়, সভ্য দেশে ঐ হয় না – এই সভ্য দেশে যখন ডাইনী অপবাদ দিয়ে মেয়েদের পুড়িয়ে মারার প্রচলন ছিলো তখন শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড ও ছিলো এমনকি কিছুদিন আগে পর্যন্ত চেয়ারে বসিয়ে ইলেকট্রিক শক দিয়ে পুড়িয়ে মারার রীতি ছিলো।

এই সভ্য দেশ গুলোতে যেখানে খাওয়ার জন্যে মুরগী, গরু কিংবা খাসী বর্বর প্রথায় জবাই না করে, এদের সবচেয়ে ব্যথাহীন মৃত্যু নিশ্চিত করা হয় সেখানেই বিশেষ কারণে এবং বিশেষ দিনে বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্যে বলির ব্যবস্থা উন্মুক্ত ও করে দেয়া হয়।

তাই বলছি, রেজালা কি দিয়ে খাবেন?

সভ্য দেশে কি শিক্ষক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করে?
উনিশজন মিলে পুড়িয়ে মারার ষড়যন্ত্র স্কুলে করে?
স্কুলে পুড়িয়ে মারে?
পুলিশ অভিযোগকারীকে হেনস্থা করে?
পুলিশ কেস নেয় না?
রাজনৈতিক নেতারা শুদ্ধ সবাই আসামীকে বাঁচাতে তৎপর থাকে?
সাক্ষী কেনা যায়?
মামলার মোটিভ বদলে দেয়া যায়?
নিম্ন আদালতের আসামীরা সব উচ্চ আদালতে খালাস পেয়ে যায়?
রায় হওয়ার পর আসামীরা বাদি পক্ষকে “দেখে নেবো” বলে শাসায়?

যে দেশে আকছার সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েও মানুষ পোড়ানো, হত্যা বন্ধ করা যায় না, সে দেশে মৃত্যুদন্ড বন্ধ করে দিলে কোন পর্যায়ে ভাবে আমি ভাবতেও পারি না
২৬/১০/২০১৯




No comments:

Post a Comment