Tuesday 21 July 2020

এক নজরে কিছু চলচিত্রের চালচিত্র – দুই

বনফুলের “অর্জুন মন্ডল” গল্পের অর্জুন কাকার মত মহা উৎসাহী মানুষ আমি, তিনি পড়াশোনা করতেন আর আমি সিনেমা দেখি, কিন্তু উৎসাহ-উদ্দীপনা আমাদের সমান। সেই উৎসাহ থেকে সদ্য দেখা কিছু সিনেমার সিনোপসিস

মহানায়িকা (২০১৭)ঃ পরিচালক সৈকত ভকত তাঁর প্রথম ছবি ‘মহানায়িকা’-র নামভূমিকায় বেছে নিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে। ছবির নাম শুনেই মনে হতে পারে, এ ছবি সুচিত্রা সেনের বায়োপিক না হয়ে যায় না। কিন্তু পরিচালকের মতে, ‘মহানায়িকা’-র কেন্দ্রীয় চরিত্র শকুন্তলা-র সঙ্গে যেমন মিসেস সেনের জীবনের মিল রয়েছে, তেমনই এই চরিত্রের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যেতেই পারে মেরিলিন মনরো অথবা সোফিয়া লোরেনকেও। সিনেমাটা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত একদম টানটান ধরে রাখবে। অনেক সম্ভাব্য পরিনতির কথা মনে আসবে কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিনতি অন্যদিকে গড়ায়। স্পয়লার দিলাম না। এই ছবিতে ঋতুপর্ণার সঙ্গে অভিনয়ে রয়েছেন ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত এবং সাহেব ভট্টাচার্য।

ঢাকাই ছবি আর কোলকাতার ছবির মধ্যে একটা আশ্চর্য মিল হলো, এই দুই জায়গাতেই প্রোডাকশন নায়িকাদের জামাকাপড়ের পেছনে বাজেট খুব কম রাখে। কোলকাতার সিনেমায় তাও শাড়িগুলো চলে যায় কিন্তু ওয়েস্টার্ন গুলো একেবারেই অচল। একেতো ঋতুপর্ণার স্বাস্থ্য মাশাল্লাহ দারুণ, খাতে-পিতে খান্দান কি তারমধ্যে এরকম কোয়ালিটির ওয়েস্টার্ন!। হিন্দী আর ইংরেজি সিনেমায় নায়িকাদের যেমন থাকে ফিগার তেমন দেয়া হয় ডিজাইনার আউটলেটের টপ ডিজাইনারের জামাকাপড়। চোখ তাতে এত অভ্যস্ত যে, এই পার্থক্যটা সহজেই ধরা পরে আর নিদারুণ দৃষ্টিকটু লাগে।

মায়ের বিয়ে (২০১৫)ঃ সমাজে বেড়ে চলেছে “সিংগেল মাদার”। মায়েরা যুদ্ধ করে, বাচ্চা বড় করে, বাচ্চা তার জীবন নিয়ে সামনে এগিয়ে যায়, পেছনে থাকে মা তার একাকীত্ব নিয়ে। পরিচালক সুদেষ্ণা রায় আর অভিজিত্‍ গুহর ছবি ‘মায়ের বিয়ে’৷ আজকাল অনেক সন্তানই তাদের বাবা-মায়ের দ্বিতীয় পার্টনার খুঁজে পেতে, তাকে দ্বিতীয়বারের মত যুগল জীবনে প্রবেশ করতে উৎসাহ দিচ্ছে, পার্টনার খুঁজে পেতে সাহায্য করছে, এই কনসেপ্টের ওপর তৈরী করা এই সিনেমা। এই পরিচালকদ্বয়ের ছবিতে সবসময়ই থাকে কমিক রিলিফ৷ তারই মধ্যে সমাজ থেকে তুলে আনা নানা সিরিয়াস ইস্যু নিয়ে একটা মেসেজ তুলে ধরার চেষ্টাও থাকে৷ এবারও ফর্মুলা একই।


অসাধারণ একটা সিনেমার নাটকীয় সমাপ্তি হয় যেটির আদৌ কোন দরকার ছিলো না। “সুদক্ষিণার শাড়ি”র মত শেষের পনের মিনিট বাদ দিয়ে দিলে এটি উপভোগ্য একটি সিনেমা। মায়ের চরিত্রে শ্রীলেখা মিত্র, মেয়ের চরিত্রে সায়নি ঘোষ আরও অভিনয় করছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী৷


সত্যি হলেও গল্প (২০০৯)ঃ রুপসী বাংলা টিভির জন্যে বানানো সিনেমা, এতে অভিনয় করেছে ঋত্বিক চক্রবর্তী আর অপরাজিতা ঘোষদাস। এই সিনেমার মন্বত্বর সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে শ্রীপান্থর দায় বইখানি হতে। প্যারালাল সিনেমা দেখতে যারা ভালবাসেন তাদের ভাল লাগতে পারে এই সিনেমাটি। ঋত্বিক আর অপরাজিতা’র পরিমিত অভিনয় সিনেমাটিকে আরও শৈল্পিক করে তুলেছে।

No comments:

Post a Comment