Thursday 23 September 2021

যৌনতা কি শুধুই শারীরিক?

"যৌনতা” মানুষের জীবনের মৌলিক চাহিদা। এই চাহিদা সমাজে অন্যতম একটা ভূমিকা রাখে, জানো কেন? এটা যার তার সাথে হয় না। এর মূল উপাদান হলো প্রেম – ভালবাসা। যে মেয়েটি প্রেমিক পুরুষের সাথে সাত রকম ভাবে খেলে, তার সঙ্গীর সব খেলায় তাল দেয়, অজানা-অচেনা স্পর্শে, কিংবা অনাকাঙ্খিত স্পর্শে সেইই আবার গুটিয়ে যায়, নিজেকে অশুচি অনুভব করে। আচ্ছা, এটা কি শুধু মানুষের বেলায়? না তো, পশু-পাখিরাও তো কাউকে পছন্দ করে, নির্বাচন করে, তার সাথে সময় কাটায়, তারপর খেলায় লিপ্ত হয়। শরীর থেকে শরীরে যা প্রবেশ করে তার নাম অনুভূতি, প্রেম, মায়া। প্রাচীন যুগে আদিম নর-নারীরা কি সবাই সবার সাথে শুয়ে বেড়াতো? ইতিহাস কিন্তু তা বলে না, প্রেম-মায়ার বড় ভূমিকা ছিলো বলেই, বিয়ে এসেছে, সঙ্গী প্রথাটি এসেছে, পরিবার সৃষ্টি হয়েছে, তার থেকে সমাজ, রাষ্ট্র। এখনও যেখানে "সভ্যতা" নামের জীবানু পৌঁছে যায় নি, তারা কি প্রত্যেকে প্রত্যেকের সাথে শোয়? ডকুমেন্টরী, সিনেমা, বই কিন্তু উলটো কথা বলে। টারজানের সাথে তো নোরা ছিলো, তারা শ্রেণীহীন, মুক্ত পৃথিবীর সদস্য। তাদের যার সাথে “মন” মজে তার সাথেই শোয়। প্রেম এই খেলার মূল উপাদান বলে, যেখানে প্রেম আছে সেখানে এর নাম “লাভ মেকিং” আর যেখানে নেই তার নাম “রেপ”। ***** মুসলিম ধর্মে বিয়ের আগে ছেলেমেয়ে মেলামেশা নিষিদ্ধ। কবুল বলার পর তাদেরকে সাধারণতঃ একঘরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। দুটো অচেনা-অজানা ছেলেমেয়ে যারা নিজেদের পছন্দ-অপছন্দ, স্বপ্ন, লক্ষ্য, গন্তব্য একসাথে বিনিময় করে নাই তারা শরীর বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে জীবন শুরু করে। প্রাকৃতিক স্বাভাবিক সংকোচ থেকে সাধারণতঃ মেয়েরা এখানে প্যাসিভ থাকে আর জোর কিংবা এক্টিভ রোলটা পুরুষের থাকে। সামাজিকভাবে ছেলেরা এটা দেখে বড় হয় বলে, “বল” খাটানোকেই পৌরুষত্ব ভাবে। অথচ উলটো ব্যাপারটা স্বাভাবিক ছিলো না? দুটো মানুষের মধ্যে তাদের ভাল লাগা-মন্দ লাগা বিনিময়ের পর সিদ্ধান্ত নেয়া, এই কি সেই, যাকে খুঁজেছিলাম? যে জীবনটা উলটো দিক থেকে শুরু হয় সেটি কি করে স্বাভাবিক চলতে পারে? জোর খাটানো দিয়ে যে জীবনের শুরু, তাতে জোর করাই স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ায়, তাই নয়?

No comments:

Post a Comment