Sunday 12 September 2021

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – তেরই আগষ্ট টুয়েন্টিটুয়েন্টি ওয়ান

প্রিমিয়ে রুতেঃ ছাব্বিশে জুন অনেক নিয়মনীতি শিথিল করার পর গ্রীস্মের শুরুতে সংক্রমণের যেরকম উর্ধ্বগতি ছিলো তা ছিলো বিস্ময়কর। তারপরও আমরা সবাই নিয়মনীতির বাইরে খানিকটা করোনাবিহীন একটি সুন্দর গ্রীস্ম উপভোগ করতে পেরেছি। এই পুরোটা সময় আমাদের জন্যে ছিলো শিক্ষনীয়। এখন সবার মনে একটাই প্রশ্ন, হেমন্ত কেমন যাবে আমাদের? দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির উপদেশ অনুযায়ী আমরা আস্তে আস্তে একটি একটি করে নিয়ম শিথিল করবো। যদিও আমরা জানি প্রতিটি পদক্ষেপই ঝুঁকিপূর্ণ, আর বিশেষ করে সেটি শিক্ষার্থী ও ক্যাটারিং ব্যবসায়ীদের জন্যে খুবই বেদনাদায়ক। প্রায় এক মিলিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দেড় বছর ধরে অনলাইন ক্লাশ করছে তাতে অনেকেই পড়ায় পিছিয়ে গেছে, রেজাল্ট খারাপ করছে ইত্যাদি। এছাড়াও নিঃসঙ্গতা থেকে অনেক বেশী মানসিক সমস্যায় ভুগছে তারা। তাই শিক্ষাঙ্গনে ত্রিশে আগষ্ট থেকে সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধ থাকছে না। তবে পচাত্তর জনের বেশী একসাথে হতে পারবে না। সবাই সপ্তাহে দুবার নিজেরা করোনা পরীক্ষা করবে, মাস্ক পরবে এবং রুমে প্রচুর বাতাস খেলা করার সুযোগ থাকতে হবে, হাইজিন মেইনটেইন করতে হবে। তবে বিশে সেপ্টেম্বর থেকে সমস্ত নেদারল্যান্ডস থেকে দেড় মিটার সামাজিক দূরত্বের বাধ্যবাধকতা উঠে যাচ্ছে, পাব্লিক ট্রান্সপোর্টে আর মাস্ক পরতে হবে না, ওয়ার্ক ফ্রম হোমও আর দরকার নেই। ইউনিভার্সিটিগুলোয় শিথিলতা দেয়ার প্রতিক্রিয়া কি হয়, সংক্রমণের হার কতটুকু বাড়ে সেটা দেখে শুক্রবার সতেরই সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হবে। তবে যেখানে সবচেয়ে বেশী সংক্রমণ হয়, ডিস্কোথেক আর নাইট ক্লাবস তখনও বন্ধই থাকবে। উৎসব, সিনেমা, থিয়েটার, কনসার্ট, কংগ্রেস, স্টেডিয়াম ইত্যাদিতে পচাত্তর জনের ওপরে হলে ভ্যাক্সিন/অনুমতিপত্র বাধ্যতামূলক। ক্যাটারিং সার্ভিস সহ অন্যান্য যেসব ব্যবসায়ীরা করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত তারা পয়লা অক্টোবর পর্যন্ত সরকারী অনুদান পাবে। আর উৎসব আয়োজনকারীদের জন্যে বিশে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আপাতত অনুদান বরাদ্দ আছে। আর ডিস্কোথেক আর নাইট ক্লাবসের অনুদান চলমান থাকবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হুগো দ্যা ইয়ংঃ সমস্ত জনসংখ্যা থেকে এক দশমিক আট মিলিয়ন মানুষের এখনো কোন ইম্যুনিটি তৈরি হয়নি। তারা করোনাক্রান্ত ও হয়নি তারা ভ্যাক্সিন ও নেয়নি। আমরা ভয় পাচ্ছি হেমন্তে তাদের থেকে হাজার হাজার মানুষ অসুস্থ হতে পারে এবং খুব বাজে ভাবে অসুস্থ হতে পারে। হয়ত তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হতে পারে আর যদি হাজার হাজার মানুষ একই সময় অসুস্থ হয় তাহলে আবার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, হাসপাতালের সাধারণ রুটিন, ডিসিপ্লিন ভেঙে পড়বে। তাই যারা যারা এখনো ভ্যাক্সিন নেয়নি তাদের বলছি, দ্রুত ভ্যাক্সিন নিয়ে নিতে। আর জিজিডিতে ভ্যাক্সিন নিতে গিয়ে যারা ঝগড়া ও মারামারি করেছে, আমি স্বাস্থ্যকর্মীদের পক্ষ হয়ে তাদের আন্তরিক নিন্দা জানাচ্ছি। সাংবাদিকঃ যদি কোন রেস্টুরেন্ট মালিক বলে, ভ্যাক্সিন না থাকলে আমি রিজার্ভেশান নেবো না, তাহলে কি হবে? প্রিমিয়ে রুতেঃ নেদারল্যান্ডসের আইন অনুযায়ী এরকম একজন একজনকে বলতে পারে না, সেটা বেআইনী হবে তারপরও আমি বলবো, যারা যারা এখনো ভ্যাক্সিন নেয়নি তারা যেনো দ্রুত ভ্যাক্সিন নিয়ে নেয়, অনেক জায়গায় প্রবেশ করতেই ভ্যাক্সিনেশান সার্টিফিকেটের দরকার হবে। সাংবাদিকঃ বিশে সেপ্টেম্বর থেকে ঠিক কোথায় কোথায় প্রবেশ করতে করোনা চেক বাধ্যতামূলক? প্রিমিয়ে রুতেঃ রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে, উৎসব, স্টেডিয়াম, মেলা, সিনেমা ও থিয়েটার, ভেতরে এবং বাইরে। সাংবাদিকঃ পয়লা সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মত নেদারল্যান্ডসে উৎসব পালিত হচ্ছে যেখানে প্রায় একশো হাজারেরও বেশী মানুষের পদচারণা হবে সেটি কি নিয়মের সাথে সাংঘর্ষিক নয়? প্রিমিয়ে রুতেঃ নিয়ম মানলে সাংঘর্ষিক কেন হবে? ওখানে সবাই বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করবে। ভ্যাক্সিন সার্টিফিকেট দেখালে ধারন ক্ষমতার দুই তৃতীয়াংশ মানুষ আসতে পারবে আর সার্টিফিকেটের বাধ্যবাধকতা না থাকলে এক তৃতীয়াংশ। সাংবাদিকঃ অনেক শিক্ষকই ভয় পাচ্ছেন ক্লাশে ভ্যাক্সিন নেয়নি এমন ছাত্র ছাত্রীও থাকবে, সেক্ষেত্রে সংক্রমণ অনেক তাড়াতাড়ি ছড়াবে হুগো দ্যা ইয়ংঃ সুখবর হলো, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাথে কথা বলে চুক্তি করে নিয়েছে, যারা যারা এখনো ভ্যাক্সিন নেয়নি তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বসেই ভ্যাক্সিন নিতে পারবে। ভ্যাক্সিন নিতে তাকে কোথাও যেতে হবে না, স্বাস্থ্যকর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসে ভ্যাক্সিন দিয়ে যাবে। সাংবাদিকঃ কিছু কিছু মানুষের ভ্যাক্সিন নেয়ার থেকে সমস্যা হচ্ছে, বা নেয়াতে সমস্যা আছে, ইম্যুইন সিস্টেমও ভাল না তাদের সম্পর্কে কি ভেবেছেন? হুগো দ্যা ইয়ংঃ তাদের জন্য বুস্টার ডোজের কথা ভাবা হচ্ছে যদিও সেটি ডাক্তারের প্রেসক্রিপশানুযায়ী হবে তাতে হয়ত তাদের ইম্যুইন সিস্টেম খানিকটা ডেভেলাপ করবে। তাছাড়া সবসময় কিছু মানুষ থাকবেই বিভিন্ন কারণে যাদের ভ্যাক্সিন দেয়া যাবে না, দুর্বল, অন্য কিছু সমস্যা, তাদের ব্যাপারে কি করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা চলছে। তানবীরা হোসেন ১১/০৯/২০২১

No comments:

Post a Comment