Thursday 9 December 2021

আসপিয়া

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম আর সামাজিক মাধ্যমে দেখছিলাম শৈশবে বাবা হারানো, গ্রামবাসীর বাড়িতে আশ্রিত থেকে বড় হওয়া আসপিয়া। পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় বরিশাল বিভাগে মেধা তালিকায় পঞ্চম হয়েছে। তারপর একে একে ডিঙিয়ে এসেছে পরীক্ষার বাকি সবকটি ধাপ। কিন্তু ভূমিহীন, অন্যের জমিতে আশ্রিত হওয়ায় তার চাকরি হচ্ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কর্মকর্তারা। খবরটা বুকের মধ্যে বিরাট ধাক্কা দিলো। ছোটবেলায় দাদুর মুখে গল্প শুনেছি, অমুক-তমুক অনেক পড়াশোনা করেছে কিন্তু জায়গাজমি নাই তাই ইংরেজ/পাকিস্তান সরকার চাকুরী দিচ্ছিলো না। তখন স্থায়ী ঠিকানার জায়গায় অন্যের বাড়ির নাম, প্রয়োজনে অনুমতি সাপেক্ষে বাবার নামও বদলে চাকুরীর ফর্ম পূরণ করা হতো। বিজয়ের পঞ্চাশ বছরের প্রাক্কালে আমরা কি এখনো সেখানেই দাঁড়িয়ে আছি প্রিয় স্বদেশ? বারবার ইচ্ছে হচ্ছিলো মেয়েটিকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলি, আমারতো ঠিকানা আছে কিন্তু তোমার মত এত ধাপ পেরিয়ে এত দূর আসতে পারিনি। সম্ভব হলে আমার ঠিকানাই না হয় তুমি নিয়ে নাও। তবুও লড়াই চালিয়ে যাও, থেমে যেও না। আসপিয়ার জন্যে এক বুক ভালবাসা। আসপিয়া হারতে পারে না, আসপিয়া হারলে হেরে যাবে বাংলাদেশ। বিজয়ের মাসে আমি আসপিয়ার বিজয় দেখতে যাই। তাতে মুরাদের মত অপরাধীকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার নির্লজ্জ অন্যায় ভুলে যাবো। দশ মুরাদের চেয়ে এক আসপিয়া অনেক দামী একটি আনন্দ সংবাদের প্রত্যাশায়

No comments:

Post a Comment