Thursday 16 January 2020

মমস উইল বি মমস

 অভিজিত বিনায়ক ব্যানার্জী নোবেল পেলেন, বাঙালি জাতির মুখ আরও একবার দুইশো পাওয়ার বাল্বের আলোয় উজ্জল হলো। পৃথিবীতে যে তিনি বাস করেন সে খবর আমরা জানলাম। দেখলাম, সিল্কের ধূতি পরে তিনি নোবেল গ্রহন করলেন। সাথে এও জানলাম তিনি ইলিশ খেতে ভালবাসেন, এবং তার মা তার জন্যে বেগুন দিয়ে ইলিশ মাছ রাঁধবেন ভেবেছিলেন কিন্তু সেসময় কোলকাতায় ভাল ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছিলো না। এই শুনে চিত্রনায়িকা ও সংসদ সদস্য নুসরাত বসিরহাট থেকে বিরাট ইলিশ কিনে অভিজিতের বাড়ি পৌঁছে দিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সাথে অভিজিতি ব্যানার্জীর যে চুচা ছিলো নোবেল পেয়ে তাও মিটে গেলো, দুজনে আবার বন্ধু হলেন। এছাড়াও আরও অনেক কিছু আমরা জেনেছি তার সম্পর্কে যাহোক আমরা পয়েন্টে থাকি।

নোবেল পুরস্কারের বিকল্প হিসেবে পরিচিত সুইডেনের 'রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড' পেলো দেশটির কিশোরী জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থানবার্গ। বাঙালি সাংবাদিকদের এরকম কর্মযজ্ঞ দেখে সুইডিশ সাংবাদিক স্থির থাকতে পারলো না। সে গেলো গ্রেটার বাড়ি ইন্টারভিউ নিতে। সাংবাদিক দেখে গ্রেটার বাবা কইলো, থাবড়া চিনোস? আমার মাইয়া লেখাপড়া থুইয়া সারাদিন, ময়লা ছয়লা ঘেটে বেড়াচ্ছে। পুরস্কার পাইছে, মাত্র এক লাখ সুইডিশ ক্রোনার। এখনও স্কুল শেষ করে নাই, পড়াশোনা না করলে এই পুরস্কার ভিজাইয়া কি চাকরি আইবো? ভবিষ্যত কি, চলবে কেমনে? সাংবাদিকও রাগে তেড়েমেরে কইলো, আগে কই আছিলেন আপনে? আগে খেয়াল ছিলো না? গ্রেটার ইন্টারভিউ বাবাই দিলো অর্ধেক, বললো, আমি কি করমু, আমার কাজ নাই? মাইয়া আইসা কয়, বাবা আমি জীবনের প্রতি আগ্রহ হারায় ফেলছি, আমার বিষন্ন লাগে। আমি কইলাম, এমন কিছু খুঁজে বের করো, যা তোমাকে বেঁচে থাকতে আগ্রহী করে, সবার কাজেও আসে। আমার অফিস আছে, আমার কাছে ফাও প্যাঁচাল কম করো, গায়ে বেশি চর্বি হইলে বিষন্ন বেশি লাগে। বহুত হইছে এখন এসব, কার্বন ডাই অক্সাইড, ক্লাইমেট, মেয়ে স্কুলে ফেরত, পড়াশোনা আগে।

বাবা –মা হইলো বাবা-মা, যেকোন ফরম্যাটেই। একজন যায় ইলিশ মাছ খুঁজতে তো অন্যজন যায় পড়াশোনা নিয়ে চেঁচামিচি করতে। আচ্ছা কল্পনা করি তো অন্যান্য বিখ্যাত লোকদের বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের কাজে কর্মে কেমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেনঃ

নিউটনের মাঃ তুই পার্কে গাছের নীচে বসেছিলি কেন? কোন মেয়ের আসার কথা ছিলো? দেখস না আজকাল পুলিশ এম-পিদের কি অবস্থা, পার্কে পেলেই ধরে। তাও যদি বসলি সরে বসতে পারলি না? আপেল যদি কপালে পরতো, কয়টা সেলাই লাগতো সেই খবর আছে? প্রেমে দেখি একেবারে দিওয়ানা। হ্যাঁরে নিউটন, খাওয়ার আগে আপেলটা ধুয়ে নিয়েছিলি তো? মাটিতে কত রোগ জীবানু থাকে, হাতও ধোসনি? আর কতবার বললে শিখবি বাবা?

আর্কেমেডিসের মাঃ ছিঃ ছিঃ আর্কেমেডিস ছিঃ। তোদের এত খান্দানি বংশ, তোর দাদাকে সিসিলির সমস্ত লোক এক নামে চেনে আর তার নাতি হয়ে রাস্তা দিয়ে জামা কাপড় ছাড়া এমন ন্যাংটো হয়ে দৌড়াতে তোর একটুও লজ্জা করলো না? বংশের মান সম্মানের কথাটা একবারও ভাবলি না তুই? আর “ইউরেকা” কোন মেয়েটা? বাবা কি করে? নিজের বাড়ি না ভাড়া বাড়িতে থাকে? বংশ কি?

এডিসনের মাঃ লাইট আবিস্কার করছো অনেক অনেক খুশী হইছি বাবা, কিন্তু যাও এখন লাইট অফ কইরা শুইতে যাও। এই যে সারাক্ষণ লাইট অন কইরা পাশের বাড়ির মাইয়াদের সাথে টাংকি মারো, ইলেকট্রিসিটি বিল তো বাপ দেয়। নিজে যখন কামাই করবা দেখবো কত পাওয়ারের বাত্তি জ্বালাও। সব ফুটানি বাপের পয়সায়
গ্রাহাম বেলের মাঃ এই স্টুপিড সিলি জিনিসটা বাসায় আইনা লাগাইছোস, যা ঠিকাছে, তুই একমাত্র ছেলে বলে তাও সহ্য করলাম কিন্তু রাতে বিরাতে যদি মাইয়ারা তোরে ফোন দেয়, তোর বাপ হার্টের রোগী, তার যদি ঘুম ভাঙ্গে তাইলে কিন্তু তোর খবর আছে।

গ্যালিলিওর মাঃ এইটা কি টেলিস্কোপ বানাইলিরে গ্যালিলিও, শুধু আকাশ আর চাঁদই দেখা যায়, একটা ভাল কিছু বানাইতি যেইটা দিয়ে মাঝে মাঝে মিলানে আমার মায়েরে দেখতে পারতাম।

কলম্বাসের মাঃ তুই কই যাইয়া কি আবিস্কার করছোস তা দিয়ে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। তোরে না বইলা দিছি প্রতি সপ্তাহে আমারে একটা চিঠি দিবি, দুই লাইন লেইখ্যা জানাইতে পারোস না কই ছিলি আর কই আছোস!

বিল গেটসের মাঃ কাজ-কাম বাদ দিয়া সারাদিন ব্রাউজিং করোস ঠিকাছে, উল্টা-পাল্টা ব্রাউজিং কইরা দেখিস আবার স্টিভ জব্বার কাকুর হাতে না ধরা খাস, সাবধান।

হোয়াটসএপে পাওয়া মূল জোকটি প্রথম মন্তব্যে যোগ করে দিচ্ছি, আগ্রহীরা পড়তে পারেন। সারা দুনিয়ার খবর কমপাইল্ড বাই মি।

No comments:

Post a Comment