Monday 16 January 2012

বিষন্নতা দিবস

পশ্চিম বিশ্বে জানুয়ারী মাসের তৃতীয় সোমবারকে বিষন্নতা দিবস হিসেবে চিনহিত করা হয়েছে। স্কাই ট্রাভেল নামে একটি সংস্থা জরিপ চালিয়ে “Blue Monday” নামে অভিহিত করেছে এই সোমবারটিকে। Cardiff University একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে Cliff Arnall নামের অধীনে এই রিপোর্টটি উপস্থাপন করেন। গার্ডিয়ানের কলামিষ্ট Dr. Ben Goldacre বলেন, Cardiff University এর কয়েকজন গবেষক এই রিপোর্টটি বানান এবং প্রকাশ করেন। মূলতঃ গবেষনাটি ছিল Cliff Arnall এর যিনি তখন সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে গৃহশিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। জরিপ অনুযায়ী বছরের এদিনটিতে মানুষ সবচেয়ে বেশি বিষন্ন থাকে। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে নীচের এই ফর্মূলাটাকে

আবহাওয়া (weather) W, ঋন (debt) D, বড়দিনের ছুটি হিসেব থেকে সময় (time) T, নতুন বছরের সূচনা হলো Q, কাজ করার ইচ্ছে খুব কম (low motivational level) M, কিন্তু কাজ করা দরকার (need to take action) Na. “D” কে এখানে কোন ইউনিট হিসেবে আকা হয়নি।

Cliff Arnall এর মতে, তিনি অনেক বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েই এই তারিখটিকে নির্দিষ্ট করে নির্বাচন করেছেন। বিষয়গুলো হলো আবহাওয়া, ঋনের মাত্রা (কতটুকু ঋন এর বোঝা আমার মাথায় আর কতটুকু আমি পরিশোধ করতে সক্ষম), বড়দিনের আনন্দ শেষ হয়ে যাওয়া, নতুন বছর শুরু হওয়ার পর থেকে, নতুন বছরের ইচ্ছা বা স্বপ্ন পূরন করতে না পারার আপাত হতাশা, কাজ করার খুব অনিচ্ছা কিন্তু সারাক্ষণ ভিতরে ভিতরে একটা ভাবনা কুঁড়ে খাওয়া, আমার কিছু কাজ করা প্রয়োজন। এ সমস্ত উপাদান মিলিয়েই দিনটিকে বিষাদপূর্ন করে তোলে। যদিও Dr. Ben Goldacre তার এই তত্বকে সঠিক বলে মেনে নিতে নারাজ। তার মতে, Arnall এর সমীকরন এর কোন গানিতিক ভিত্তি নেই।

গানিতিক ভিত্তি না থাকলেও গত কয়েক বছরের নিবিড় পর্যবেক্ষণে এর সত্যতা পাওয়া গেছে বলে আজকাল কিছু স্বাস্থ্য সংগঠন এ দিনটিকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের কর্মসূচী হাতে নেয়। লাফটার ক্লাব বানিয়ে সকাল থেকে দুপুর অব্ধি হাসির অনুশীলন জাতীয় কর্মকান্ডে তারা আগ্রহী নারী পুরুষকে ব্যস্ত রাখে। যাতে বিষন্নতা থেকে নিজের ক্ষতি করার মতো কোন সিদ্ধান্ত লোকে না নেয়।

Arnall যেমন বিষন্ন দিন খুঁজে পেয়েছেন, তেমনি খুঁজে পেয়েছেন সবচেয়ে আনন্দময় দিন। জুন মাসের মধ্যভাগে মানুষ সবচেয়ে খুশী থাকে। কারণ তখন আবহাওয়া আরামদায়ক ও চারপাশ আনন্দজনক থাকে গরমের আনন্দে।

তানবীরা

১৬/০১/২০১২

2 comments:

  1. ফর্মুলাটি আবহাওয়া ভিত্তিক। সারা পৃথিবীতে একই সময় একই আবহাওয়া থাকেনা, আমরা সবাই জানি। অতএব এটাকে সার্বজনীন ধরে নেওয়া যাবে কি?

    আমি আপনার লেখার একজন গুণমুগ্ধ ভক্ত। আপনার সব লেখা পড়ার চেষ্টা করি।
    ধন্যবাদ।

    ReplyDelete
  2. ফর্মূলাটি শুধু আবহাওয়াভিত্তিক নয়। এর বড় যোগাযোগ আছে মধ্যবিত্তের ক্রীসমাস আর নিউইয়ার এক্সপেন্ডিচার এর সাথে। এমন কি ধনী লোকদের জন্যও এই তত্ত্বটি প্রযোজ্য নয়। তাই এটির সম্বন্ধে যতো প্রচারনা তা শুধু ইউরোপ আর নর্থ এ্যামেরিকাতে সীমাবদ্ধ। এর বাইরে এটির কোন প্রভাব আছে বলে মনে হয় না। প্রতি বছর আলোচনাটা যখন শুনি বেশ মজার লাগে। কারণ আমার নিজের ওপর ও এই ফমূর্লা কাজ করে বলে মনে হয় না। কিন্তু এর অস্তিত্ব আছে। তাই ভাবলাম সবার সাথে শেয়ার করি।
    আমি খুব সাধারণ মানুষ, সবার বন্ধু। ভক্ত অনেক বড় ব্যাপার। ভালো থাকবেন, যোগাযোগ রাখবেন।

    ReplyDelete