Friday 25 September 2020

জন্ম হোক যথা তথা #পার্ট ওয়ান

এরকম একটি অবাস্তব ভাবাবেগপূর্ণ কথা বাঙালির কলম থেকেই বেরনো সম্ভব। অনেকবার লিখেছি, জন্মের ওপর মানুষের হাত নেই কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত, কোথায় জন্মাবে সেই ভৌগলিক সীমানা কিংবা জাতীয়তা-পাসপোর্টই মানুষের জীবনযাপন তথা কর্মকে নিয়ন্ত্রণ করে। ছবির এই মুখটি “জিনিয়া”, যদি সুইডেন, নরওয়ে, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া কিংবা জাপানে জন্মাত তাহলে হয়ত তার নাম হতো, জেনিফার, জ্যাকুলিন, জ্যানেট অথবা জেন। ওসব দেশের খুব দরিদ্র পরিবারে যদি তার জীবন হতো, ধরে নেই, বাবা নেই, মা সোশ্যাল ওয়েলফেয়ারের টাকায় সংসার চালায়, তিন ভাই-বোন, খুব কষ্টের তাদের জীবন। পায়ে জুতো, গায়ে সোয়েটার, ওভারকোট কিংবা নিদেনপক্ষে এইচ এন্ড এম অথবা প্রাইমার্কের জামা থাকতো তার গায়ে। ভেজালবিহীন রুটি, ডিম, দুধ, পনির, বাটার, জ্যাম, ফল, মাংস হতো রোজদিনের খাবার যেহেতু টাকা কম তাই সস্তা সব আইটেম। সরকারের দেয়া বাড়িতে থাকতো, সবার আলাদা ঘর তবে ছোট, হিটিং, পানি সবই আছে। স্কুলে তো যেতেই হবে, আঠারো বছর পর্যন্ত স্কুল বাধ্যতামূলক। অবশ্য জামিলা বা জান্নাত নাম নিয়ে সৌদি কিংবা দুবাইয়ের খাস এরাব পরিবারে জন্মালে, জামা-জুতো, খাবারের অভাব হয়ত হতো না, মুক্ত স্বাধীন জীবন হয়ত পেতো না, নিগৃহীতও হতে পারতো তবে সেটা অন্যভাবে। এখন যেভাবে হচ্ছে সেভাবে কিছুতেই না। শুধু নিয়তির কারণে আজ বাংলাদেশে জন্মেছে বলে, ফুল বিক্রি করছে, অপহৃত হচ্ছে, বারান্দায় ঘুমোচ্ছে, এসি বিস্ফোরিত হয়ে মরে যাচ্ছে, পুলিশের গুলিতে মারা যাচ্ছে, সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে, গার্মেন্টস ধসে মারা যাচ্ছে, নির্যাতিত হচ্ছে, আগুনে ঝলসে মারা যাচ্ছে। কার কাছে প্রতিবাদ জানাবো? কোথায় জানাবো নালিশ? অথচ পাসপোর্টে রঙটা বদলে দিলে জীবনটাও মুহূর্তে তার বদলে যাবে। আহা পাড়তাম, যদি পাড়তাম. আঙুলগুলো ছুঁয়ে থাকতাম আহারে জীবন, আহা জীবন. জলে ভাসা পদ্ম জীবন

No comments:

Post a Comment