Wednesday 20 January 2021

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক - একুশে জানুয়ারী

আছিলাম লকডাউনে যাচ্ছি কার্ফিউতে আর কটা দিন আর কটা দিন, ভেবে ভেবে রসুন বুনে যাচ্ছিলাম, রসুন কখনো ছিলো নিউইয়র্কে তো কখনো ঢাকাতে কিন্তু ইট সীমস এ নেভার এন্ডিং স্টোরি ---- ক্যাপিটল হিলতো বিএনপি অফিস দখলের ঘটনাকেও হার মানালো। এখন বাকি হলো নেদারল্যান্ডসের ক্যাবিনেট। প্রিমিয়ে মার্ক রুতে বুধবার দুপুরে কি বলবেন সেটা মঙ্গলবার দুপুর বারোটার মধ্যেই রেডিও, নিউজপোর্টাল, টিভি চ্যানেল আর হোয়াটসএপে গ্রুপ ম্যাসেজ হয়ে ঘুরতে থাকে। বেহুলার বাসর ঘরের অবস্থা। প্রিমিয়ে রুতে জানালেন, ভাইরাস তার রুপ পরিবর্তন করছে প্রতিনিয়ত আর আমাদেরকে এটি খুব সর্তকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তৃতীয় ঢেউ আসন্ন, তার জন্যে বড় প্রস্তূতি দরকার যাতে সামান্য ক্ষতির মধ্যে দিয়ে আমরা এটিকে পেরিয়ে যেতে পারি। পার্লামেন্ট অনুমোদন দিলে রাত সাড়ে আটটা থেকে ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত পুরো নেদারল্যান্ডসে কারফিউ থাকবে। আপাতত ফেব্রুয়ারির নয় তারিখ পর্যন্ত। পেশাগত কারণে কিংবা কুকুরকে পার্কে নিয়ে যেতে একা বের হতে পারবে তবে বাকি অন্যরা যদি যথাযথ কারণের প্রমাণ না থাকে তবে তাদেরকে জরিমানা গুনতে হবে। সুপারমার্কেট এবং অন্যান্য খাবারের দোকানও সাড়ে আটটার মধ্যেই বন্ধ হয়ে যাবে। কার্ফিউ দেয়ার লক্ষ্য হলো, মানুষের বাইরে ঘুরতে যাওয়া, এক সাথে হয়ে আড্ডা দেয়া আর বাড়ি বাড়ি বেড়ানো কমিয়ে আনা। যত কম মেলামেশা হবে সংক্রমণ তত কম হবে। আজ থেকে বাসায় দিনে একজন মাত্র অতিথি আসতে পারবে। তবে যদি কোন আত্মীয় বা বন্ধুকে সেবা দিতে কেউ যায় সেখানে এর ব্যতিক্রম হতে পারে। পঁচিশে জানুয়ারী থেকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে পঞ্চাশ জনের বেশি থাকতে পারবে না। কেউ নেদারল্যান্ডস ভ্রমণ করতে চাইলে এতদিন শুধু বাহাত্তর ঘন্টা আগে পিসিআর পরীক্ষা করলেই চলতো কিন্তু এখন থেকে প্লেনে ওঠার আগে আর একটি দ্রুত পরীক্ষা করাতে হবে। বলাবাহুল্য দুটি পরীক্ষার ফলই নেতিবাচক হতে হবে। এবং আসার পর দশদিন কেয়ারন্টিন বাধ্যতামূলক। যদি পাঁচদিন পর পরীক্ষায় নেতিবাচক ফলাফল আসে তবে কেয়ারন্টিনের মেয়াদ কমতে পারে। অনেকেই আসার পর কেয়ারন্টিন পালন করে না, তাই এখন থেকে যারা নেদারল্যান্ডসে আসবে তাদের ডিটেলস রেজিস্ট্রেশান করা হবে এবং চেক করা হবে, যারা নিয়ম মানবে না তাদের জরিমানা করা হবে। এই নিয়ম চালু করতে কিছুদিন সময় লাগবে তাই সামনের শনিবার থেকে যুক্তরাজ্য, দক্ষিন আফ্রিকা, আর দক্ষিন আমেরিকার সব দেশ থেকে প্লেন আসা বন্ধ থাকবে। মালামালের প্লেন, কাজের জন্যে আর চিকিৎসার জন্যে যারা বাইরে ছিল তারা আসতে পারবে। সাংবাদিক ও খেলোয়ারদেরও নিষেধের বাইরে রাখা হয়েছে। হুগো দ্যা ইয়ং বললেন, সংক্রমণ নীচের দিকে আসার পরও কেন এত কড়াকড়ি? সাধারণ করোনা সংক্রমণ একের নীচের দিকে আসলেও ব্রিটিশ টাইপ সংক্রমণের হার এক দশমিক তিন। আর ধারনা করা হচ্ছে, এপ্রিলের মধ্যে সাধারণ করোনা চলে যেয়ে পুরোটাই ব্রিটিশ করোনা দখল নেবে, সেই পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই সতর্কতা। যারা করোনা পজিটিভ হওয়ার পরও বাইরে যাচ্ছে, কেয়ারন্টিন পালন করছে না তাদের জন্যে কেয়ারন্টিন বাধ্যতামূলক করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কত দ্রুত কি পরিমান ভ্যাক্সিন আমরা পাবো তার ওপর নির্ভর করবে কত দ্রুত সবাইকে আমরা ভ্যাক্সিন দিতে পারবো। সংক্রমণ কমিয়ে আনতে আমরা আরো কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি যেমন, বায়োটেক আর ফাইজারের ভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজটি তিন সপ্তাহ পর না দিয়ে আমরা ছয় সপ্তাহ পর দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে কম সময়ে বেশী মানুষকে টিকার আওতায় আনতে পারি। ছয় জানুয়ারীতে ফেঘেল শহরে যেখানে প্রথম নেদারল্যান্ডসের করোনা ভাইরাস ধরা পরেছিলো, সেখান স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দিয়ে টিকাদান কর্মসূচী চালু হয়। ইতিমধ্যে একশো হাজারেরও বেশী মানুষকে ভ্যাক্সিন দেয়া হয়েছে এবং দিনে দিনে অনেক বেশী মানুষ ভ্যাক্সিন নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের পর সোমবারে হাসপাতাল আর পরিচর্যাকেন্দ্রে থাকা বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের ইতিমধ্যে টিকা দেয়া হয়েছে, বৃহসপ্রতি বার থেকে শুরু হবে হাউজ ফিজিশিয়ানদের তারপর তারা তাদের এলাকায় থাকা বৃদ্ধ ও ঝুঁকিপূর্ন মানুষদের টিকা দেয়া শুরু করবেন। সামনের সপ্তাহ থেকে নিজের বাসায় থাকা নব্বই বছর বয়সীদের টিকা নেয়ার জন্যে জিজিডিতে আসার আমন্ত্রণ জানানো হবে। ফেব্রুয়ারীর প্রথম সপ্তাহ থেকে পঁচাশি প্লাসদের ডাকা হবে জিজিডিতে। এবং এই সবই পরিকল্পিত সময়ের থেকে আগে হচ্ছে। এই বসন্তের মধ্যে আমরা বয়স্ক ও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের টিকাদান সম্পন্ন করে ফেলবো। এস্ট্রোজোনিকার ভ্যাক্সিন কত দ্রুত পাবো তারওপর নির্ভর করবে বাকি পরিকল্পনা। আমাদের লক্ষ্য আটই ফেব্রুয়ারী থেকে প্রাইমারী স্কুলগুলো আর তারপর মাধ্যমিক স্কুলগুলো খুলে দেয়া। সাংবাদিকঃ তাহলে ধরে নেবো ক্যাবিনেট কাল থেকে সন্ধ্যায় আর কোন মীটিং করবে না? প্রিমিয়ে রুতেঃ যত কম সম্ভব, যেগুলো নিরাপত্তার কারণে বাসা থেকে করা যাবে না সেগুলোই শুধু অফিস থেকে করা হবে, সেক্ষেত্রে আমরাও ব্যতিক্রম পেশার ক্যাটাগরীতে আসবো। সাংবাদিকঃ তিন সপ্তাহের টিকা ছয় সপ্তাহে দেয়া কতটা স্বাস্থ্যসম্মত? ঝুঁকিপূর্ণ নয়? হুগো দ্যা ইয়ংঃ আমরা এটি নিয়ে সব জায়গায় কথা বলেছি, তাদের মতামত নিয়েছি, ছয় সপ্তাহ পার হয়ে গেলে ঝুঁকি হতে পারে কিন্তু এই সময়ের মধ্যে টিকা দেয়াতে কোন ঝুঁকি নেই। সাংবাদিকঃ সতেরোই মার্চ নির্বাচন কি তাহলে হবেই? সংক্রমণের হার বেশী থাকলেও? প্রিমিয়ে রুতেঃ আমরা ডাকযোগে ভোটের ব্যবস্থা করবো, দরকার হলে একদিনে না করে কয়েকদিনে ভাগ করে করবো, আরো বেশী কেন্দ্র ভাগ করে দেবো।
২০/০১/২০২১

No comments:

Post a Comment