Tuesday 17 November 2020

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – সতেরই (নভেম্বর)

প্রিমিয়ে মার্ক রুতে সংক্রমণের মাত্রা এখনও বিপদজনক তবে কমতে শুরু করেছে, দুটো গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আলোচনা করার অনেক কারণ আছে আজ। আংশিক লকডাউন নিয়ে আজ আমি আমার অবস্থান পরিস্কার করবো। মানুষ নিয়ম মানছে, সংক্রমনের মাত্রা একের নীচে এসে গেছে। সবাইকে এই জন্যে ধন্যবাদ। কিন্তু পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক না তাই কঠোরভাবে নিয়মগুলো পালন করা দরকার। হাসপাতালগুলো এখনো চাপে, অনেক অপারেশান দ্বিতীয়-তৃতীয়বারের মত ক্যান্সেল করতে হয়েছে, করোনা ছাড়া অনেক রোগীই ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন না। তাদেরকে বলছি, সময়মত ডাক্তারের কাছে যান যাতে পরে ভয়ানক কিছু এড়ানো যেতে পারে। বাসায় তিনজন মেহমান ডাকা যাবে, বাসার বাইরে আবার চারজনের সাথে আড্ডা মারা যাবে। চিড়িয়াখানা, লাইব্রেরী, যাদুঘর, সুইমিংপুল, থিয়েটার, সিনেমা ইত্যাদি আবার ম্যাক্সিমাম ত্রিশজনের জন্যে খোলা হবে। রেস্টুরেন্ট, ইভেন্টস, খেলাধূলা বন্ধ থাকবে। রাত আটটার পর বাসার বাইরে কোন এলকোহল নিষিদ্ধ। প্রথম ডিসেম্বর থেকে সুপারমার্কেটসহ অন্যান্য পাব্লিক প্লেসে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। সিন্টারক্লাশ এবার এই নিয়মের মধ্যেই পালন করতে হবে। ভাইস প্রিমিয়ে হুগো দ্যা ইয়ং ছয়টি ভ্যাক্সিন প্রোডাকশান কোম্পানীর সাথে চুক্তি করা হয়েছে যাতে দ্রুত ভ্যক্সিন পাওয়া নিশ্চিত করা যায়। ইউরোপীয়ান কমিশন যখন ভ্যাক্সিন এপ্রুভ করবে তখনই ভ্যাক্সিন পাবো তার আগে পাওয়া যাবে না। পুরো নেদারল্যান্ডসের মানুষকে একসাথে ভ্যাক্সিন দেয়া যাবে না, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় প্ল্যানিং করছে সামনের বছরের প্রথম দিকে ভ্যাক্সিন পাওয়া গেলে কত দ্রুত সবাইকে ভ্যাক্সিন দেয়া যাবে। ততদিন সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সচল রাখতে পরীক্ষা ব্যবস্থার ওপর জোর দেয়া হয়েছে, এক্সেল টেস্ট কিটের মাধ্যমে সাথে সাথে ফল জানা যাবে। প্রথম ডিসেম্বর থেকে করোনা এপসের মাধ্যমে যখন জানা যাবে কেউ সংক্রমিত রোগীর পাশে এসেছিলো, তার কোন উপসর্গ না থাকলেও পাঁচ দিনের দিন তাকে পরীক্ষা করতে হবে। আর এই পাঁচ দিন তাকে বাসায় কেয়ারন্টিনে থাকতে হবে। পরীক্ষা নেতিবাচক হলে কেয়ারন্টিন আর দরকার হবে না। আর ইতিবাচক হলে দশ দিন কেয়ারন্টিনে থাকতে হবে। প্রতিদিন গড়ে চার হাজার মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে, যদি এই সংখ্যা নীচের দিকে নামে তবে ক্রিসমাসের সময় কিছু নিয়ম সাময়িকভাবে শিথিল করা যায় কিনা দেখা হবে। যারা একা থাকেন, এই অন্ধকার দিনগুলোতে একাকীত্ব অনুভব করেন তাদের জন্যে এ সময়টায় আশেপাশে কিছু মানুষের উপস্থিতি থাকা একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু আমরা কোন তৃতীয় ঢেউ চাচ্ছি না। ক্রিসমাস আর নিউ ইয়ার সেলিব্রেশান নিয়ে আটই ডিসেম্বরে কথা হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর: জানুয়ারী পর্যন্ত কি এই কড়াকড়ি থাকবে? আমরা আশাকরছি জানুয়ারীর মধ্যে আমরা আমাদের টার্গেটের মধ্যে পৌঁছতে পারবো, যতদিন সে লক্ষ্যে না পৌঁছতে পারবো, কড়াকড়ি থাকবে। নেদারল্যান্ডস কোন দ্বীপ না, আশেপাশের দেশদের দেখলে দেখা যাবে সেখানে আরও কত বেশি কড়াকড়িতে আছে সবাই, জার্মানীতে আরও কি কি বন্ধ করে দেয়া যায় তার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, সুইডেনও তাই, অস্ট্রিয়া আর লুক্সেমবার্গে আজ থেকে পুরোপুরি লকডাউন, সেদিক থেকে দেখলে ইউরোপের মধ্যে নেদারল্যান্ডস অনেক ভাল আছে। আটই ডিসেম্বরের মধ্যে তিন হাজার ছয়শোর নীচে সংক্রমণ নামলে, দশ জনের নীচে রোগী আইসিইউতে এলে ক্রিসমাস-নিউ ইয়ারে শিথিলতার করা ভাববো। *** আমার টিপ্পনী, নেদারল্যান্ডসের করোনা নিয়মনীতির অবস্থা খানিকটা ছোটবেলার এরিথমেটিক বইয়ের বান্দরের তৈলাক্ত বাঁশের অঙ্কের জায়গায় দাড়িয়েছে। বাঁশ বেয়ে ওপরে উঠে তারপর নামে, সংক্রমণ কমলেই এটা ওটা খোলে দুই সপ্তাহের জন্যে তাতে সংক্রমণ বাড়লেই আবার বন্ধ করে দুই সপ্তাহের জন্যে। প্রতি দুই সপ্তাহে মনে রাখতে হয়, এ সপ্তায় কি কি এলাউড আর কি কি না।“ তবে প্রিমিয়ে আর ভাইস প্রিমিয়ের লাইভের নীচে যা যা কমেন্ট পরে তাতে শিউরে ওঠে আমি ভাবি, বাংলাদেশে হলে অবমাননার দায়ে চৌদ্দ গুষ্টি জেলে ভরে রাখতো। ভাইস প্রিমিয়ে যখন ভ্যাক্সিনের কথা বলছে, নীচে কমেন্ট ভেসে উঠেছে, তোকে কে বলেছে সবাই ভ্যাক্সিন নেবে? আমি তো ভ্যাক্সিন নেবো না, আমার ভ্যাক্সিন তোর পেছনে দেবো শালা!

No comments:

Post a Comment