Saturday 7 November 2020

কার্টুন আর নেদারল্যান্ডস

রোটারডামের এমাউসকলেজ ও ডেনবোসের (স্কুলের নাম অপ্রকাশিত) স্কুলে “ফ্রীডম অফ স্পীচ” নিয়ে আলোচনায় শার্লি হেব্দোর কার্টুন দেখানোর প্রতিক্রিয়ায় দুই স্কুলের টিচারকেই হুমকি দেয়া হয়েছে। এই নিয়ে ক্যাবিনেটে উত্তপ্ত আলোচনার পর প্রেসের মুখোমুখি মিনিস্টার প্রেসিডেন্ট মার্ক রুতে। ভিয়েনার ইনসিডেন্টের পর সে দেশের সরকারের সাথে কথা হয়েছে, নিহত ও আহত সবার প্রতি নেদারল্যান্ডসের জনগনের পক্ষ থেকে সমবেদনা জানিয়েছেন এই বলে স্পীচ শুরু করেন রুতে তারপর বলেন, দুঃখজনক কিন্তু সত্য হলো, আমরা নিজেদের মত চিন্তা করতে এবং নিজেদের মতামত দিতে ভালবাসি, একদল মানুষ সেটা পছন্দ করে না। কিন্তু আমাদের সমাজ, বিশ্বাস, চিন্তাধারা আর মূল্যবোধ আমাদের বাচ্চাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার স্বাধীনতা আমাদের শিক্ষকদের থাকতে হবে। শিক্ষকদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এবং তাদের ভয় দেখানো বরদাস্ত করা হবে না। রোটারডামের শিক্ষক ভয়ে আত্মগোপন করতে বাধ্য হয়েছে। স্কুলের অন্যান্য বাচ্চারা, তাদের গার্জেনরা, অন্য শিক্ষক ও কর্মচারীরাও দারুণ ভয়ে আছেন আমি তাদের জানাতে চাই, পুরো ক্যাবিনেট তাদের সাথে আছে। আরও বলতে চাই, “ফ্রীডম ও স্পীচ” নিয়ে কোন ধরনের সমঝোতা হবে না। হতে পারে একজনের মতামত অন্যজনের ধর্ম বিশ্বাসকে আঘাত করছে কিন্তু সেটা নির্ভয়ে বলার তার অধিকার আছে, তা নিয়ে কাউকে অপমান করার অধিকার কারো নেই। কারণ, নির্ভয়ে চিন্তা করা কিংবা কথা বলার স্বাধীনতা না থাকলে আমরা সামনের দিকে আগাতে পারবো না, আমাদের সমাজ সামনে আগাবে না। ফ্রীডম অফ স্পীচ, নির্ভয়ে স্কুলে শিক্ষাদান, নির্ভয়ে নিজ নিজ ধর্ম পালন করার স্বাধীনতার ওপর আমাদের গনতান্ত্রিক সমাজ দাঁড়িয়ে আছে। স্কুল ছাড়া কোথাও এগুলো শিক্ষাদানের জায়গা নেই বলে শিক্ষকদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়ার কোন বিকল্প নেই। সুনাগরিক তৈরীতে আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় স্কুল, ক্লাশ, পড়ানোর বিষয় ইত্যাদিতে শিক্ষকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বরং আমি বলবো অত্যন্ত পবিত্র তাই এখানে ভয় দেখানো, হুমকি, সহিংসতার কোন স্থান নেই। শেষ করছি, এমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে, আমরা সবাই নেদারল্যান্ডস থেকে খুব গুরুত্বের সাথে নির্বাচন প্রত্যক্ষ করছি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এমেরিকা আমাদেরকে শত্রুদের থেকে উদ্ধারে সাহায্য করেছিলো, ইউরোপের অর্থনীতি অনেকটাই এমেরিকার ওপর নির্ভরশীল তাই বলতে চাই, ট্রাম্প বা বাইডেন যেই আসুক, আমরা এমেরিকার সরকারের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবো। “ফ্রীডম অফ স্পীচ” নিয়ে কি শিক্ষকরা নিজেরা পাঠের উপাদান বানাতে পারে? এই নিয়ে আমি বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না শুধু বলতে চাই এখানে আমি প্রতিবন্ধকতা বা বাঁধা দেয়ার মত কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। এমেরিকার নির্বাচন নিয়ে জিজ্ঞেস করছি, প্রেসিডেন্ট ভোট গননা বন্ধ করে দিতে বলছেন, বলছেন মিথ্যেবাদীদের কোন দায়িত্ব তিনি নেবেন না। গনতন্ত্রের কালো পিঠ নিয়ে আপনার কি মতামত? আমি নেদারল্যান্ডসের প্রেসিডেন্ট, আমার দায়িত্ব জয়ী প্রার্থীর সাথে নেদারল্যান্ডসের পক্ষ হয়ে কাজ করা এর বাইরে আমি তাদের দেশের ভেতরের রাজনীতিনিতে নাক গলাবো না। কিন্তু আপনি গনতন্ত্রের কথা বলছেন, নিজের দেশের নির্বাচনকে “প্রতারণা” বলা কতটা গনতান্ত্রিক? আমি শুধু বলবো এটি একটি উল্লেখযোগ্য মন্তব্য কিন্তু তার বাইরে কিছুই বলবো না। শিক্ষকদের রক্ষা করতে আপনি কি করবেন? হুমকি থাকলে প্রথমে এজাহার দেখে পুলিশ সেটার দায়িত্ব নেবে। প্রতি ক্লাশে প্রতি শিক্ষকের পাশে একজন নিরাপত্তারক্ষী দেয়া তো সম্ভব না, ক্যাবিনেট থেকে দুইজন শিক্ষকের সাথেই যোগাযোগ করা হয়েছে এবং তাদের অভয় দেয়া হয়েছে কিন্তু আমি সবাইকে বলে দিতে চাই, কোন ধরনের সহিংসতা এবং ভয় দেখানো সহ্য করা হবে না। ক্লাশে ছাত্র-ছাত্রীরা বইয়ের ছবি তুলে ইন্টারনেটে দিচ্ছে হয়ত না বুঝেই দিচ্ছে এই ব্যাপারে? এটি নিয়ে অনুসন্ধান চলছে, এটি শেষ হওয়ার আমি কিছু বলতে চাই না। আমি জানি আপনি এই ব্যাপারে বেশি কিছু বলতে চান না, কিন্তু প্রেসিডেন্ট হওয়ার পাশাপাশি আপনি এই দেশের শিক্ষকদের সহকর্মীও বটে। আপনি তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যে, কোন একটি ক্লাশে তো কার্টুন দেখাতে পারেন। এ কাজ করার আমার কোন ক্ষমতা নেই। একজন প্রেসিডেন্টের কোন ক্ষমতা নেই! হ্যাঁ প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্লাশ যেয়ে কিছু করতে অবশ্যই আমি ক্ষমতাহীন কিন্তু এর বাইরেও আমি আমার সহকর্মীদের বলতে চাই, আমি মার্ক রুতে, সরকার, ক্যাবিনেট, জনগন সবাই তাদের পাশে আছে, তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কার্টুন তাদের ক্লাশের অংশ হতে পারে। কারো অপমানিতবোধ করার কিছু নেই এর মানে এই না যে সবাইকে অপমান করতে হবে। ভদ্রতা সভ্যতার অংগ। কেউ যদি কোন পাবলিক ফোরামে, কম্যুউনিজম কিংবা কার্টুন ইত্যাদি নিয়ে কোন আলোচনায় যেতে চায়, অবশ্যই যাবে কিন্তু সহিংসতা, হুমকি দেয়া হলো সীমা লঙ্ঘন আর সেটি সহ্য করা হবে না। নিস, ভিয়েনা আর নেদারল্যান্ডসেও যারা হুমকি দিয়েছে আপনি তাদের সবার ব্যাকগ্রাউন্ড নিশ্চয় জানেন? হ্যাঁ, তারা সবাই মুসলিম। যে আদর্শ আর ধর্ম তারা সাথে নিয়ে এসেছে তার জন্যে কি নেদারল্যান্ডস পুরোপুরি প্রস্তূত আছে? আঠারশো আটচল্লিশ সাল থেকে আমরা গনতন্ত্র চর্চার মধ্যে আছি, প্রায় দেড়শো বছরের চর্চার মধ্যে দিয়ে আমরা একটি স্থির সমাজে পৌঁছেছি। এখানে কি হচ্ছে, মুসলিমদের একটি ছোট গ্রুপ, কিছু ব্যাপার ভুল ভাবে ব্যাখা করে সহিংসতা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। নেদারল্যান্ডসে বসবাসকারী এখনো প্র্যাক্টিসিং মুসলমানদের বেশির ভাগই খুব শান্তিপ্রিয় ভাবেই তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করে থাকে যেটা আমাদের গনতন্ত্রের মধ্যে আছে। কিন্তু আমি সমস্ত মুসলমাদের বলতে চাই, যদি কেউ সহিংসতার জন্যে ধর্মকে ব্যবহার করতে যায় শুধু নেদারল্যান্ডসের সরকার কেন সমাজেও তাদের জায়গা নেই। বাচ্চারা শিক্ষককে হুমকি দেয়, আমরা ধরে নিতে পারি এই বাচ্চারা নেদারল্যান্ডসেই জন্মেছে এবং এখানেই বড় হয়েছে, এখানে এতদিন এই জিনিসগুলো ছিলো না আর এখন একদম মুখোমুখি সংঘর্ষ যে শিক্ষককে আত্মগোপন করতে হলো? প্রথমে আমি ফর্মাল জবাব দিচ্ছি, পুলিশকে অনুসন্ধানের সুযোগ দেয়া হোক আর দ্বিতীয়ত আমি আমার নিজের মতামত দিচ্ছি, নেদারল্যান্ডসে বসবাসকারী কেউ যদি ভাবে, আমি এখানে অপমানিত হচ্ছি আর সরকারের দায়িত্ব আমাকে অপমান থেকে রক্ষা করা, সেটা সম্ভব না। “জাতীয়তা” বিষয়টি নিয়ে আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে, আমাদের গনতন্ত্রের মূল ব্যাপারগুলো আরও ভাল করে তুলে ধরতে হবে, সেগুলো হলো, স্বাধীনভাবে শিক্ষা দান করা, স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করা, স্বাধীনভাবে নিজের মতামত প্রকাশ করা, পুরুষ ও নারীর সমান অধিকার, বিষকামী–সমকামীদের সমান অধিকার, কালো-সাদাদের সমতা। এই দেশে জন্মানো কোন মানুষই যেনো না ভাবে, আমি এসবের কারণে কোন সুবিধা পাবো। মানুষকে তাদের আচরণ দিয়ে বিবেচনা করাতে হবে তারা কোথা থেকে এসেছে, কিংবা তাদের ধর্ম কি তা দিয়ে নয় আর এই মূল্যবোধগুলো একান্ত অপরিহার্য, এখানে কোন আপোষ হবে না। অতীতে আমরা এই নিয়ে প্রচন্ড দায়িত্বহীন আচরণ করেছি, এখানে আসা মানুষজনকে আমরা আমাদের দেশের সামাজিক মূল্যবোধ নিয়ে সচেতেন করিনি। তাদের জানাইনি কোন সমাজে তাদেরকে মিশে যেতে হবে, আর এই সামাজিক মূল্যবোধগুলো আপোষহীন। একজন টার্কিশ যদি ভাবে ডাচ ফুটবল দলে না খেলে টার্কিশ ফুটবল দলে খেলবো, ঠিকাছে তাতে দোষের কিছু নেই কিন্তু যখন তাদের দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় পুরুষও এদেশে থেকে ভাবে যে আমি এদের মূল্যবোধ নিয়ে খেলবো তখন এটা মেনে নেয়া যায় না। বেশীর ভাগ মানুষ এদেশে এসেছে তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্যে যা তাদেরকে তাদের নিজ দেশ দিতে পারেনি। এবং তারা এটাও দেখেছে এখানে সমাজ ও সরকারের কাছে তাদের যা অধিকার তাই তারা পাচ্ছে, যেটা তারা যে দেশ ছেড়ে এখানে এসেছে সেই দেশের সরকার তাদের দিতে পারেনি। অত্যন্ত গর্বের সাথে আমরা বলতে পারি, যারা এখানে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছে তাদের আমরা প্রচন্ড সম্মান আর জীবনের প্রয়োজনীয় সব জিনিস দিয়েছি। হয়ত এখানের এই স্বাধীনতার সুযোগ নিয়েই তারা শিক্ষককে হুমকি দিয়েছে? আমরা এখনো জানি না কারা শিক্ষকদেরকে হুমকি দিয়েছে, একজন শিক্ষক আত্মগোপন করেছে অন্যজন বাড়িতে আছে কিন্তু এটা গ্রহনযোগ্য নয়। এই দেশে থাকতে গেলে কতগুলো মৌলিক বিষয় আছে যেটা আপনাকে, আমাকে প্রত্যেক নাগরিককে মানতে হবে যেগুলো আপোষযোগ্য নয় আর আপনি যদি ভাবেন তা থেকে শিক্ষককে হুমকি দেবেন তবে আমরা আমাদের শুধু সরকারের সব ক্ষমতা আর শক্তি দিয়ে লড়বো না, সাথে এদেশের জনগনও লড়বে। বেশিরভাগ মুসলিমরাই শান্তিপূর্ণ জীবনে বিশ্বাস করে। অল্প যেকয়জন কার্টুনের মাধ্যমে অশান্তি করছে তাদেরকে ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস সব জায়গায়ই প্রতিহত করতে হবে। শুধু এখন নয়, বহুদিন ধরেই বিশেষ করে ইতিহাসের শিক্ষকরা কমপ্লেইন করে আসছে, তারা হলোকাস্ট নিয়ে, নাইন-ইলাভেন নিয়ে কিছু পড়াতে পারছেন না। সমস্যা কি আসলে আরো গভীরে নয়? হ্যাঁ আমিও আমার আশেপাশের মানুষের কাছে এই নিয়ে শুনি, সহিংসতা অগ্রহনযোগ্য, বাক স্বাধীনতা ছাড়া কিংবা আংশিক বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই এধরনের গনতন্ত্রের থেকে পশ্চিমের আমাদের গনতন্ত্র আলাদা কিন্তু এগুলো যদি আমাদের সৃজনশীলতা কিংবা কাজ করার ক্ষমতাকে আটকে দেয় সেটিও গ্রহনযোগ্য হবে না। ঘটনাগুলো তো এখানেই থেমে থাকে না, যারা নাইন-ইলাভেন জানে না, হলোকাস্ট জানে না শুধু কার্টুন জানে? আমিও শুনতে পাই অনেক মুসলিম নেদারল্যান্ডসের মূল্যবোধের সাথে একাত্ম অনুভব করে না, আমার ধারনা এসব বলার মাধ্যমেই চরমপন্থীদেরকে আস্কারা দেয়া হয়। যারা ইতিমধ্যে নেদারল্যান্ডস কিংবা অস্ট্রিয়ার মূলধারার সাথে মিশে গেছে তাদেরকেও অপবাদ দেয়া হয়। আমরা একটি সভ্য দেশ হিসেবে সবসময় যতদূর পারি শরনার্থীদের আশ্রয় দিয়েছি কিন্তু আমাদের দোষ ছিলো, আমরা কখনো গর্বের সাথে তাদেরকে জানাতে পারি নি, আমাদের কোন কোন মূল্যবোধের সাথে তাদের মিশে যেতে হবে। এই ক্যাবিনেটে আমরা আমাদের পূর্ববতী ক্যাবিনেটের ভুলত্রুটিগুলো শুধরে নেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। শর্তহীনভাবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে আমাদের মূল্যবোধগুলো জানাতে হবে আর এই কাজটি করবেন শিক্ষক। তাই শিক্ষককে কোন সীমারেখা দেয়া যাবে না। স্যমুয়েল পাটির মত ঘটনা যাতে নেদারল্যান্ডসে না ঘটে সেজন্য আপনি কি মনে করেন না এখনই মুসলমান সমাজ এবং হুমকি দেয়া ছাত্রছাত্রীদের বাবা-মায়ের সাথে আলোচনা প্রয়োজন? নেদারল্যান্ডসের মুসলিম সমাজের সাথে ক্যাবিনেটের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে, সামনের সোমবারে পরবর্তী আলোচনার তারিখ। আর আমি কারো একজনের ধর্মীয় পরিচয় ধরে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। একজন মরোক্কান বংশভূত যদি নিজ থেকে তার কমিউনিটির মানুষের সাথে এ নিয়ে আলোচনা করে সেটাকে অত্যন্ত প্রশংসার চোখে দেখি কিন্তু তার ধর্মীয় পরিচয় ধরে তাকে এজন্যে বাধ্য করাও আমাদের গনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার সাথে যায় না। ভিভিডি’র মানুষ হিসেবে আপনি একবার মুক্তচিন্তার জন্যে আলাদা জায়গা করেছিলেন, এখনো কি আমাদের সেরকম কিছু দরকার না? আমি নেদারল্যান্ডসের সব মানুষকে বলবো নিজের স্বাধীন মতামত প্রকাশ করতে কোন ভাবেই যেনো নিজেকে বদ্ধ না মনে করে। বারো বছর আগের পরিস্থিতি আলাদা ছিলো, সেটি এখন আর প্রযোজ্য না। কার্টুনের প্রতিক্রিয়া ভয়ানক, হত্যা, চরমপন্থা, হুমকি, এটা কি তাহলে ঠিক হচ্ছে যে আমরা এই সম্মানের সাথে এটাকে ডীল করছি? সেজন্যেই আলোচনা এত জরুরী। আমরা সবাইকে জানাতে চাই এদেশে কোন কিছুর সীমারেখা নেই। একজন সাংবাদিককে আমরা কি সংবাদ পরিবেশন করা হবে তার মাত্রা ঠিক করে দিতে চাই না। আমি কার্টুনিস্ট, কলামিস্ট না কিন্তু কেউ করতে চাইলে তাতেও আমার সমস্যা নেই, বাঁধা দেবো না। তারপরও বলবো, যা বলতে পারা যায়, সব বলার কোন প্রয়োজনও আমি অনুভব করি না। বুদ্ধিস্ট, খ্রীষ্টান কিংবা ইসলাম সবারই তার ধর্মের প্রতি পবিত্র অনুভূতি আছে। আমি তাতে আঘাত করতে চাই না। কিন্তু কেউ যদি সেটা করতে চায়, আমার দায়িত্ব তাকে রক্ষা করা। কেউ তার প্রতি সহিংস আচরণ করুক সেটা আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় চলবে না। আপনি কি মনে করেন ক্লাশে কার্টুন দেখানো ঠিক হচ্ছে? আমার হ্যাঁ বা না এখানে জরুরী না। শিক্ষক যদি ভাবেন তিনি করবেন সেটি করবেন, কার্টুনিষ্ট ঠিক করবেন তিনি কি ধরনের কার্টুন আঁকবেন। সেজন্যে তাদের প্রতি সহিংস আচরণ করা যাবে না। আপনি এটিকে আরও পরিস্কার করতে পারেন মিনিষ্টার প্রেসিডেন্ট? হ্যাঁ, আমি আবারও বলছি, ক্লাশে হিউমার আনতে, কমেডি আনতে কার্টুন ব্যবহার করা প্রয়োজন মনে করলে শিক্ষক তা করবেন কিন্তু এখন প্রত্যেক শিক্ষক কাল থেকে ক্লাশে এটিই করবেন কিনা সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। আমার কাজ হলো দেখা, প্রত্যেকে যেনো কোন বাঁধা ছাড়াই তাদের মত তারা শিক্ষা দিতে পারেন। সবাইকে জানাতে চাই, আমরা শিক্ষকের পক্ষে অবস্থান নিয়েছি। তানবীরা তালুকদার ০৮/১১/২০২০

No comments:

Post a Comment