Saturday 27 February 2021

“পাভা কাধাইগাল” ---- "রামপ্রাসাদ কি তেহরভি" --- দ্যা সিনার

তামিল ভাষার চারটি বাছাই করা নৃতাত্ত্বিক গল্প নিয়ে নেটফ্লিক্সের সিনেমা “পাভা কাধাইগাল” দেখলাম। পরিচালনায় ছিলেন সুধা কঙ্গারা, গৌতম মেনন, ভেত্রীমরণ এবং ভিগনেশ শিভান। দেখতে দেখতে আসামিজ পরিচালক ভাস্কর হাজারিকার “কথানদী” সিনেমাটির কথা মনে পড়লো। গল্প বলার ভঙ্গীটা অনেকটা একই রকম। ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে চারটি মেয়ের গল্প কিন্তু কোথায় যেনো আবার একই সূতায় গাঁথা। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে পিতামাতার হাতে চারটি মেয়ের অপমৃত্যু ঘটে। যাকে সহজ ইংরেজিতে বলা হয় “অনার কিলিং”। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, যে দেশের স্বাতী মোহন মঙ্গলে পা রেখেছে সেই দেশেই আজও এই পরিস্থিতি বর্তমান। ইন্ডিয়া টুডের জান্নি কে পাঁচের মধ্যে সিনেমাটিকে তিন দিয়েছেন এবং বলেছেন "পাভা কাধাইগাল” আমাদের বর্ণ-ভিত্তিক, লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা এবং অনার কিলিং এর একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়, যদিও ছবিটি কোনও সমাধান দেয় না তবে সমাজে যে অন্যায় কাজ হয়ে চলেছে তার প্রমাণ দেয়। বিহাইন্ডউডস পাঁচের মধ্যে সিনেমাটিকে তিন দিয়ে লিখেছে, "নেটফ্লিক্সের প্রথম তামিল নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু সঠিক জায়গাগুলোতে আঘাত করেছে এবং দর্শকদেরও তাদের পাপের জন্য একটি আয়না রাখা উচিত।" দ্য নিউজ মিনিটের সওম্য রাজেন্দ্রন পাঁচের মধ্যে সাড়ে তিন দিয়ে বলেছেন, “পাভা কাধাইগাল একটি হিংস্র বর্ণবাদী সমাজের এক অবজ্ঞাপূর্ণ চেহারা উপস্থাপন করেছে, এ প্রসংগটি পর্দায় খুব কমই উপস্থাপন করা হয়েছে, নারী দেহের সাথে কীভাবে জাতি, লিঙ্গ, সম্মান জড়িত তা দেখাতেও এটি সফল।
আর একটি সিনেমা দেখলাম, অভিনেত্রী সীমা পাওয়ারের চিত্রনাট্য আর পরিচালনায় “রামপ্রাসাদ কি তেহরভি”। নাসিরুদ্দিন শাহ অলটাইম ফেভারিট আর সাথে আছে অন্য ফেভারিট কঙ্কনা সেনশর্মা। তারকাবহুল সিনেমা যদিও বাকিদের কথা লিখলাম না। ভারতীয় উপমহাদেশের যেকোন কাস্ট এন্ড ক্রিডে আপনি বিলঙ করেন না কেন, এই সিনেমায় আপনি নিজের, সমাজের, পরিবারের প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাবেনই। দুই হাজার উনিশ সালে “মুম্বাই ফিল্ম ফেস্টিভালে” এই সিনেমার প্রিমিয়ার হয়েছিলো। ফিল্ম কম্পেনিয়নের প্রধান সম্পাদক অনুপমা চোপড়া লিখেছেন, “এখানে কোনও ভিলেন নেই। মানুষের বোঝাপড়া, সম্পর্কের ভাঙচুর আর তারপরও আমাদের সুখী হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।“
আড়ম্বরহীন নিরিবিলি বস্তুনিষ্ঠ সিনেমা দেখতে যারা ভালবাসেন তারা মিস করবেন না যেনো। বন্ধুর কুপরামর্শে দেখলাম নেটফ্লিক্সের সিরিয়াল “The Sinner”। IMBD রেট ৭.৯/১০। আমেরিকান এনথোলজি ড্রামা টেলিভিশন সিরিজ যা ইউএসএ নেটওয়ার্কের জন্য ডেরেক সিমন্ডস বানিয়েছেন। এনথোলজি সিরিজ দেখায়, সাধারণ মানুষেরা কিভাবে এবং কেন নির্মম অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। বেস্ট মিনিসিরিজ অফ টেলিভিশনের জন্যে দুই হাজার আঠারোতে গোল্ডেন গ্লোব এওয়ার্ড নমিনেশান পেয়েছিলো। এছাড়া আরও তেরটি বিভিন্ন এওয়ার্ডের জন্যে নমিনেশান পেয়েছে। মোট তিনটি সিজন, তিনটি ভিন্ন ক্রাইমের ওপর করা হয়েছে। প্রতিটি সিরিজে প্রায় পঞ্চাশ মিনিটের আটটি এপিসোড আছে। ফোর্থ সিজনের কাজ চলছে। শুরু হয়েছিলো Petra Hammesfahr এর “দ্যা সিনার” উপন্যাসকে ভিত্তি করে,সত্যি ঘটনা নয়। তিনটিতেই ডিটেক্টিভ হ্যারি এমব্রসের চরিত্রে অভিনয় করেছেন উইলাম জেমস পুলম্যান যিনি বিল পুলম্যান হিসেবেই বেশি পরিচিত। রিচার্ড গেরের মত এপিলিং দেখতে এই ভদ্রলোকের মা ডাচ। সিরিজ দেখতে দেখতে বিলে মুগ্ধ না হওয়া অসাধ্য। যারা ডার্ক থীম ভালবাসেন তাদের জন্য “নট টু মিস”। ব্যক্তিগতভাবে আমি দুই নম্বর সিজনটা বেশি এঞ্জয় করেছি। আর ক্রাইম থ্রিলার যে শুধু বই আর সিরিজে থাকে না তার প্রমাণ হলো, কিছুদিন আগে গুলশানের ঝিলিককে হত্যার পর, এক্সিডেন্ট সাজিয়ে লাশ দেখানোর নাটক কিংবা বাবুল আক্তারের নাটক। সিরিজের থেকে কম রোমাঞ্চকর কি? হ্যাপি ওয়াচিং

No comments:

Post a Comment