Sunday 14 November 2021

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – বারোই নভেম্বর টুয়েন্টিটুয়েন্টি ওয়ান

প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুতেঃ ষোল হাজার তিনশো চৌষট্টি নতুন সংক্রমণ এই মুহূর্তে, করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে নেদারল্যান্ডসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ রেকর্ড। তাও যারা শুধু টেস্ট করিয়েছেন, সবাই টেস্ট করায় না, তাই ধরে নেয়া যায়, প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি। ভাগ্যিস বেশির ভাগ মানুষই ভ্যাক্সিন নেয়া তারপরও হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীর ভিড়ে আবারও হার্ট, হাঁটু ইত্যাদি অপারেশানগুলো দ্বিতীয়বার তৃতীয়বারের মত পেছাতে হচ্ছে। সামনের তিন সপ্তাহের জন্যে আমরা পার্শিয়াল লক ডাউনে যাবো, এই নিয়মগুলো সবার জন্যে প্রযোজ্য হবে, ভ্যাক্সিন নেয়া কিংবা না নেয়া সবাই এর আওতায় পরবে। কারণ ভ্যাক্সিন কখনোই শতভাগ প্রতিরক্ষা দিতে পারে না। ক্যাবিনেট থ্রিজি করোনা নেগেটিভ টেস্ট, ভ্যাক্সিন সার্টিফিকেট এবং করোনা থেকে সুস্থ হওয়া মানুষজন থেকে টুজিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাতে শুধু ভ্যাক্সিন সার্টিফিকেট এবং করোনা থেকে সুস্থ হওয়া মানুষজন বাইরের ইভেন্টগুলোতে আসতে পারবে। কাল থেকে বাসায় তের বছরের বেশি চারজনের বেশি মেহমান ডাকা যাবে না। হোম অফিস। যেখানে করোনা সার্টিফিকেট আবশ্যিক নয়, দেড় মিটারের সামাজিক দূরত্ব বাধ্যতামূলক। স্পোর্টসক্লাব, পাব্লিক ট্রান্সপোর্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর আওতায় পরবে না। এসেনশিয়াল দোকান আর রেস্টুরেন্ট ছাড়া সবকিছু ছয়টায় বন্ধ করে দিতে হবে। এসেনশিয়াল দোকান আর রেস্টুরেন্ট আটটায় বন্ধ করে দিতে হবে। তবে রেস্টুরেন্টে টেকওয়ে চলতে পারে। থিয়েটার, সিনেমা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেখানে বসার জায়গা নির্দিষ্ট করে দেয়া আছে সেখানে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সকাল ছয়টা বন্ধের নিয়ম প্রযোজ্য নয়। তবে বারোশো পঞ্চাশ জনের বেশি মানুষ এক জায়গায় বসতে পারবে না। খেলাধূলা সব চলতে পারে তবে দর্শকবিহীন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতি ক্লাশে পচাত্তর জনের বেশি বসতে পারবে না। তবে এই নিয়ম পরীক্ষা জন্যে না। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাই সাবসিডি খুব শীঘ্রই আবার শুরু করা হবে। ডিসেম্বরের তিন তারিখে আবার কথা হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হুগো দ্যা ইয়ংঃ নট এসেনশিয়াল দোকানগুলোতে করোনা সার্টিফিকেট দেখানোর কথা ভাবা হচ্ছে। কর্ম প্রতিষ্ঠানেও করোনা সার্টিফিকেট দেখানো বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এতে করে যারা ভ্যাক্সিন নেয়নি তারা হয়তো ভ্যাক্সিন নেবে আর তাতে সুরক্ষা শক্তিশালী হবে। যদি অবস্থা অনেক খারাপ হয় যে অনলাইন স্কুলিং শুরু করতে হয় তাহলে হাইস্কুলেও হয়ত করোনা সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করা হবে। যেসব অনুষ্ঠান আর জায়গায় মানুষ খুব কাছাকাছি আসে সেখানে আমরা টুজি বাস্তবায়ন করবো। যারা টুজির বাইরে তাদের হাসপাতালে যাওয়ার সম্ভাবনা সাইত্রিশ ভাগ আর আইসিইউতে যাওয়ার সম্ভাবনা তেত্রিশ ভাগ। তবে নির্দিষ্ট বসার জায়গা থাকলে কর্ম প্রতিষ্ঠান করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ সার্টিফিকেটে দেখানোর মাধ্যমে মানুষকে কাজে আসার সুযোগ দিতে পারে। সাংবাদিকঃ সংক্রমণ ঠিক কত টুকু নীচে নামলে পার্শিয়াল লক ডাউন তুলে নেয়া হবে? প্রিমিয়ে রুতেঃ এটা ঠিক একটা নির্দিষ্ট সংখ্যার ওপর নির্ভর করে না। এই মূহুর্তে পুনঃ সংক্রমণ (রিপ্রডাকশান) হার শতকরা বিশ ভাগ। এটি এবং অন্যান্য পরিসস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার ওপর আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। সাংবাদিকঃ এক কোটি আঠারো লক্ষ মানুষের জন্যে তিনশো চল্লিশটি আইসিইউ খুব সামান্য নয়? দেড় বছরেও কেন চিকিৎসাক্ষেত্র প্রসারিত হলো না? হুগো দ্যা ইয়ংঃ আসলে চিকিৎসাক্ষেত্র অনেকটাই প্রসারিত করা হয়েছে। এখন সমস্যা হলো, কোভিডের পাশাপাশি অন্য চিকিৎসাগুলোও চলতে হবে, সেখানেও মানুষ দরকার আর সমস্যা হচ্ছে সে জায়গাটায়। সাংবাদিকঃ আপনারা বারবার ভাইরাসকে বাধা দেয়ার কথা বলছেন, সেটা কখন আর কিভাবে? হুগো দ্যা ইয়ংঃ বড় বড় গ্রুপ থেকে ভাইরাসটি দ্রুত ছড়াবে, বেশি মেলামেশা থেকে সংক্রমণের হার দ্রুত বাড়ে, এটিকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমরা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছি, এটাকেই বাধা দেয়া মনে করছি। সেজন্যে টুজি স্ট্যান্ডার্ড প্রয়োগ করছি। সাংবাদিকঃ প্রিমিয়ে রুতে আপনি বলছেন, কর্ম প্রতিষ্ঠানে টুজি বাধ্যতামূলক করা হবে, আপনি নেদারল্যান্ডসের সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সবচেয়ে বড় কর্মকর্তা, তার মানে কি সব সরকারী কর্মচারীদের টুজির আওতায় আনা হবে? প্রিমিয়ে রুতেঃ এ নিয়ে আলোচনা চলছে, আলোচনা হবে তবে আমি এর পক্ষে, খুবই পক্ষে। সাংবাদিকঃ যদি তারা এতে রাজী না হয়? প্রিমিয়ে রুতেঃ তাহলে তাকে বাসা থেকে কাজ করতে বলা হতে পারে, কিংবা অত্যন্ত প্রয়োজন না থাকলে অফিসে আসতে নিষেধ করা হতে পারে। সাংবাদিকঃ অনেককেই চাকুরী থেকে বিদায় জানানো হচ্ছে, এটি কি সে ধরনের কিছু পরিকল্পনা? প্রিমিয়ে রুতেঃ না, অবশ্যই না, চাকুরী থেকে বিদায় জানানোর কিছু নেই এর মধ্যে, কিছুতেই না। সাংবাদিকঃ গত বছর শুনেছিলাম ভ্যাক্সিন এলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, এবছর আবার বলছেন, ভ্যাক্সিনই সব সমাধান নয়। এর শেষ কোথায় তবে? হুগো দ্যা ইয়ংঃ গত বছরের সাথে এবছরের পার্থক্য হলো, আজ বারোই নভেম্বরে যতজন পেশেন্ট আইসিইউতে আছে, গত বছর বারোই নভেম্বরেও ঠিক ততজন পেশেন্টই আইসিইউতে ছিলো। তবে গত বছর আর সব চিকিৎসা বন্ধ ছিলো, এ বছর সে চিকিৎসাগুলো হচ্ছে। আর একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য হলো, গত বছর এসময় কড়া লকডাউন চলছিলো, এ বছর অনেক নিয়ম খুব শিথিল। সংক্রমণ সামনের বছরও থাকবে তবে এবারের চেয়ে কম। আমাদের লক্ষ্য প্রতিবছর সংক্রমণ কমিয়ে আনা। দেড় মিলিয়ন মানুষ যারা আজও ভ্যাক্সিন নেয়নি তারা নিজেদের জন্যে এবং অন্যদের ঝুঁকি বহন করছে। সাংবাদিকঃ চুল কাটার দোকান কিংবা রেস্টুরেন্ট এগুলো সন্ধ্যা বেলায় খোলা থাকলে কি সমস্যা? ভাইরাসের জন্যে সকাল সন্ধ্যা কতটা জরুরী? প্রিমিয়ে রুতেঃ যোগাযোগ খানিকটা নিয়ন্ত্রণের জন্যে এটি করা। আশাকরি মানুষ বুঝবে। সবাই যদি প্রাথমিক নিয়মগুলো মেনে চলতো তাহলেতো এটিরও দরকার পড়তো না। সাংবাদিকঃ ফাইজারের টিকা শিশুদের জন্য অনুমোদন পেয়েছে, নেদারল্যান্ডস এই নিয়ে কি ভাবছে? হুগো দ্যা ইয়ংঃ বারো বছরের নীচে দুর্বল স্বাস্থ্যের শিশু যারা তাদের ভ্যাক্সিনের কি করা যায় আলোচনা চলছে। আমি বারো বছরের নীচের শিশুদের ভ্যাক্সিন দেয়ার পক্ষে নই যদিও এই পরিস্থিতিতে কিচুই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। সাংবাদিকঃ করোনা সহসা আমাদের থেকে যাবে না, এই সত্যটা বলে দেয়াই কি সততা নয়? হুগো দ্যা ইয়ংঃ আমি কখনো বলিনি শীতের পর করোনা চলে যাবে। আমাদের প্রতিদিন করোনার সাথে কি করে ভাল করে থাকা যাবে সেটা শিখতে হচ্ছে। প্রতি শীতেই করোনা কি রূপে আমাদের কাছে ফিরে আসবে সেটাও আমরা জানি না। আমাদের সেটার জন্যে প্রস্তূতি নিতে হবে। সাংবাদিকঃ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি যেসব উপদেশ দেয় আর আপনারা এখানে এসে যেগুলো আমাদের বলেন দুটোর মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকে কিন্তু। হুগো দ্যা ইয়ংঃ অবশ্যই। আমাদেরকে শুধু দুর্যোগ ব্যবস্থপনা কমিটি উপদেশ দেয় না, উপদেশ আমরা অন্য জায়গা থেকেও পাই, সমস্ত উপদেশের ওপর ভিত্তি করে ক্যাবিনেটে যে সিদ্ধান্ত হয় সেটাই আমরা এখানে এসে সবাইকে জানাই। সাংবাদিকঃ এসব নিয়মগুলো যারা ভ্যাক্সিন নিয়েছে তাদের প্রতি অন্যায় নয়? হুগো দ্যা ইয়ংঃ দেখো, অসুস্থ মানুষ হাসপাতালে এলে তাকে চিকিৎসা দিতে হবে, ভ্যাক্সিন দিয়েছে কি দেয়নি তার ওপর সেটা নির্ভর করবে না।
https://www.prothomalo.com/world/europe/%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%A8-%E0%A6%B2%E0%A6%95%E0%A6%A1%E0%A6%BE%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A7%81%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%A7-%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%B8-%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%B6-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A7%8B%E0%A6%AD%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%98%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7-- তানবীরা হোসেন ১৫/১১/২০২১

No comments:

Post a Comment