Monday 15 November 2021
দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – সেকেন্ড নভেম্বর টুয়েন্টিটুয়েন্টি ওয়ান
প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুতেঃ
আমি জানি ইতিমধ্যে সবাই জেনে গেছে, আজকের এই সংবাদ সম্মেলন খুব আনন্দের কিছু নয়। প্রতিদিন যারা নিউজ ফলো করছে তারা ইতিমধ্যে জানে, সংক্রমণ এবং হাসপাতালে ভর্তি দুটোর হারই অনেক বেড়েছে, দুঃখিত এ সময়ে আমাদেরকেও আরও কিছু সাবধানতা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। দুঃখজনক যে করোনার সাথে সম্পর্কিত সবকিছুই পরস্পরের মধ্যে বাদানুবাদে চলে যাচ্ছে। আজকের দিনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে সমাজে দুটো প্রতিপক্ষ তৈরী না হয়। বাস্তবতা হলো, কিছু কিছু মানুষ আছে যারা সব সময়ই সব নিয়মের বিরোধিতা করে। সাবধানী মানুষরা চায় কড়া নিয়মকানুন আর বেশীরভাগ মানুষ মাঝামাঝি কিছু একটা যায়। আসলে প্রত্যেকে নিজের অবস্থান থেকে সবকিছু বিবেচনা করে, সেটা অবশ্য যৌক্তিক। সব কিছুই আপেক্ষিক, তুমি কি বুড়ো না যুবক, বাড়ি থেকে কাজ করার সুযোগ আছে কি নেই, শহরে ফ্ল্যাটে থাকো না গ্রামে বাড়িতে, পার্মানেন্ট চাকরি না ব্যবসা, ছাত্র না কর্মজীবি, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতা আছে কি নেই এবং করোনার টিকা নিয়েছো কি নাও নি।
অন্যান্য দেশের মত আমরাও এই কারণগুলো নিয়ে যুদ্ধ করছি। বাস্তবতা হলো, যত দিন যাচ্ছে তত নতুন ভাবে এই ঢেউয়ের মোকাবেলা করতে হচ্ছে। সমস্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবার মন্ত্রীসভায় আমাদের একটি নতুন পরিকল্পনা বের করতে হয়। সত্যি কথা বলতে, এটিও একটি যুদ্ধ। আমরা এমন একটি দেশে বাস করি যেখানে প্রত্যেকে নিজের মতামত দিতে পারে, নিজের পছন্দে চলতে পারে, কাউকে বাদ দেয়া সম্ভব না। অন্যদিকে করোনা এমন একটি বিষয় যেটা শুধুমাত্র একতাবদ্ধ হয়েই মোকাবেলা করা যায়। সেখানে, স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়, অর্থমন্ত্রণালয়, পরিকল্পনামন্ত্রণালয়, সমাজসেবামন্ত্রণালয়, সংস্কৃতিমন্ত্রণালয়, শহরের মেয়র প্রত্যেকের মতামতকে সমন্বয় করতে হয়। প্রত্যেকটি বিভাগই সমান গুরুত্বপূর্ণ আর কাউকে পূর্ণ অগ্রাধিকার দেয়া যায় না। এখন নতুন নিয়মগুলো নিয়ে কথা বলছি, যেসব নিয়ম চালু আছে সেগুলো থাকবে আর তার সাথে যোগ হবে,
ভ্যাক্সিন নেয়া থাকলেও যদি সিমটম দেখা দেয় তবে পরীক্ষা করবে। পজিটিভ হলে বাড়িতে থাকবে এবং জিজিডির এডভাইস মেনে চলবে।
ছয়ই নভেম্বর থেকে সবাইকে রেস্টুরেন্ট, জিম, ক্যান্টিন, স্টেডিয়াম, কনফারেন্স, সিনেমা, থিয়েটার, যাদুঘর, কালচারাল ক্লাব আর উৎসবগুলোতে করোনা/ভ্যাক্সিনের প্রমাণ দেখাতে হবে।
ছয় তারিখ থেকে স্টেশান, এয়ারপোর্ট, সরকারী অফিস, হাসপাতাল, লাইব্রেরী, দোকান, নার্সিং হোম, কেয়ার হোম সব জায়গাতেই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলোতেও হাঁটাহাঁটি করার সময়, ক্যান্টিনে বসে গল্প করার সময় মাস্ক পরতে হবে। বিউটিশিয়ান, মাসাজ, ফিজিওথেরাপিস্ট সবার জন্যে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হলো। যৌনকর্মীরা শুধু এর বাইরে থাকবে।
যেখানে যেখানে করোনা/ভ্যাক্সিনের প্রমাণ দেখাতে হবে, সেখানে মাস্ক পরতে হবে না।
সব নিয়ম মানা হচ্ছে কিনা সেটা দেখার দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানের, জরিমানা বা শাস্তি দেয়া সবচেয়ে শেষ পদক্ষেপ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী হুগো দ্যা ইয়ংঃ
ভ্যাক্সিন নিয়ে কথা বলতে গেলে আজকাল কেউ কেউ হুমকিও দিচ্ছে কিন্তু বাস্তবতা হলো, এখনই এই সংক্রমণের গতি থামানো না গেলে ডিসেম্বরে এখনের চেয়ে ডবল মানুষ আইসিইউতে শয্যাশয়ী থাকবে। কিন্তু আমরা চাই করোনা রোগী ছাড়াও অন্য রোগীদেরও সমান স্বাস্থ্য সেবা দিতে। তাই সর্তক হয়ে পা ফেলতে হবে।
রেস্টুরেন্ট, ক্যাফের মালিকরা তাদের কর্মচারীদের কাছে করোনা/ভ্যাক্সিন সার্টিফিকেট চাইতে পারে।
অন্যান্য কর্মস্থলে এটি আসতে পারে।
স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও আমরা এটি চালু করার কথা ভাবছি।
যেসব শহর আর গ্রামে ভ্যাক্সিন নেয়ার পার্সেন্টেজ কম আর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা বেশি সেখানে এটিকে বাধ্যতামূলক করা না হলেও তার কাছাকাছি করা হবে যাতে বেশি মানুষ ভ্যাক্সিন নেয় এবং সংক্রমণ কমে আসে। হাসপাতালে এখন যারা ভর্তি আছে তাদের প্রায় সবাই ভ্যাক্সিন না নেয়া মানুষেরা। বারোই নভেম্বরে ক্যাবিনেটে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ডিসেম্বর থেকে আশির বেশি বয়স, অসুস্থ আর দুর্বল স্বাস্থ্যের মানুষদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বুস্টার ডোজ দেয়া হবে। তারপর সত্তর, ষাট, স্বাস্থ্যকর্মীরা পাবে। এদের সবার হয়ে গেলে অন্যরাও নিতে পারবে।
যারা যারা এখনো ভ্যাক্সিন নিতে ভয় পাচ্ছেন, তারা যেকোন প্রশ্নের উত্তরের জন্যে জিজিডি অফিসের ভেতরে চলে যেতে পারেন, ওয়েবসাইটে তথ্য আছে পড়ে দেখতে পারেন। যারা ভাবছেন, ভ্যাক্সিন নিলে তাদের প্রজননশীলতা নষ্ট হতে পারে তাদেরকে বলছি, এটি মোটেও সত্য নয়, এসব অসত্য ধারনার মধ্যে নিজেকে আর আটকে রাখবেন না, আরও ভাবুন। অন্যদের জন্যে নয়, নিজের জন্যে, সমাজের জন্য ভাবুন। সময় এখনো পেরিয়ে যায় নি।
সাংবাদিকঃ ক্যাবিনেটে প্রথমে আলোচনা হয়েছিলো, যারা এখনো ভ্যাক্সিন নেয়নি শুধুমাত্র তাদের জন্যে আলাদা বিধি নিষেধ আসবে কিন্তু এখন আপনি সবার জন্যেই বিধি নিষেধ নিয়ে এসেছেন, ব্যাপারটা কি ঠিক হলো?
প্রিমিয়ে রুতেঃ যারা ভ্যাক্সিন নিয়েছে তাদের শুধু কিউ আর কোড দেখালেই হবে আর যারা ভ্যাক্সিন নেয়নি তাদের প্রতিবার পরীক্ষা করিয়ে রেজাল্ট দেখাতে হবে, সুতরাং তাদের ব্যাপারটা কঠিনই থাকবে। সামনের দিনগুলোতে আইসিইউ’র অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে নিয়মের ধরন হয়ত আবারো বদলে দেয়া হতে পারে।
সাংবাদিকঃ কিউ আর কোড সবসময় সঠিক নিশ্চয়তা দিতে পারে না। ভ্যাক্সিন নেয়া মানুষেরওতো করোনা হচ্ছে।
হুগো দ্যা ইয়ংঃ সেটা সত্যি। তবে ইউরোপে যেহেতু কিউ আর কোড সেন্ট্রাল, তাই কেউ কোভিড পজিটিভ হলেই আমরা তার কিউ আর কোড ফিরিয়ে নিতে পারি না।
সাংবাদিকঃ আপনি চান মানুষেরা শরীরচর্চা করুক আবার জিমে যেতে প্রত্যেকবার করোনা টেস্ট করতে হবে বলছেন, অনেক ঝামেলা না?
হুগো দ্যা ইয়ংঃ সামান্য একটু ঝামেলার বিনিময়ে সব শরীরচর্চার সুযোগ খোলা রাখা হয়েছে। আর হাসপাতালের আইসিইউতে যাওয়ার চেয়ে অনেক কম ঝামেলাতো এটা বটেই।
সাংবাদিকঃ অন্যভাবে মানুষকে ভ্যাক্সিন নিতে বাধ্য করছেন, এইতো?
হুগো দ্যা ইয়ংঃ ইটালী-ফ্রান্সে যেমন মানুষকে চাকুরী থেকে বিদায় করে দিচ্ছে আমরা সেরকম কোন কিছুই করছি না।
তানবীরা হোসেন
১৬/১১/২০২১
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment