Wednesday, 29 July 2020
কোভিড ১৯
Saturday, 25 July 2020
অনিল বাগচীর একদিন
Tuesday, 21 July 2020
এক নজরে কিছু চলচিত্রের চালচিত্র – দুই
বনফুলের “অর্জুন মন্ডল” গল্পের অর্জুন কাকার মত মহা উৎসাহী মানুষ আমি, তিনি পড়াশোনা করতেন আর আমি সিনেমা দেখি, কিন্তু উৎসাহ-উদ্দীপনা আমাদের সমান। সেই উৎসাহ থেকে সদ্য দেখা কিছু সিনেমার সিনোপসিস
মহানায়িকা (২০১৭)ঃ পরিচালক সৈকত ভকত তাঁর প্রথম ছবি ‘মহানায়িকা’-র নামভূমিকায় বেছে নিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে। ছবির নাম শুনেই মনে হতে পারে, এ ছবি সুচিত্রা সেনের বায়োপিক না হয়ে যায় না। কিন্তু পরিচালকের মতে, ‘মহানায়িকা’-র কেন্দ্রীয় চরিত্র শকুন্তলা-র সঙ্গে যেমন মিসেস সেনের জীবনের মিল রয়েছে, তেমনই এই চরিত্রের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যেতেই পারে মেরিলিন মনরো অথবা সোফিয়া লোরেনকেও। সিনেমাটা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত একদম টানটান ধরে রাখবে। অনেক সম্ভাব্য পরিনতির কথা মনে আসবে কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিনতি অন্যদিকে গড়ায়। স্পয়লার দিলাম না। এই ছবিতে ঋতুপর্ণার সঙ্গে অভিনয়ে রয়েছেন ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত এবং সাহেব ভট্টাচার্য।
ঢাকাই ছবি আর কোলকাতার ছবির মধ্যে একটা আশ্চর্য মিল হলো, এই দুই জায়গাতেই প্রোডাকশন নায়িকাদের জামাকাপড়ের পেছনে বাজেট খুব কম রাখে। কোলকাতার সিনেমায় তাও শাড়িগুলো চলে যায় কিন্তু ওয়েস্টার্ন গুলো একেবারেই অচল। একেতো ঋতুপর্ণার স্বাস্থ্য মাশাল্লাহ দারুণ, খাতে-পিতে খান্দান কি তারমধ্যে এরকম কোয়ালিটির ওয়েস্টার্ন!। হিন্দী আর ইংরেজি সিনেমায় নায়িকাদের যেমন থাকে ফিগার তেমন দেয়া হয় ডিজাইনার আউটলেটের টপ ডিজাইনারের জামাকাপড়। চোখ তাতে এত অভ্যস্ত যে, এই পার্থক্যটা সহজেই ধরা পরে আর নিদারুণ দৃষ্টিকটু লাগে।
মায়ের বিয়ে (২০১৫)ঃ সমাজে বেড়ে চলেছে “সিংগেল মাদার”। মায়েরা যুদ্ধ করে, বাচ্চা বড় করে, বাচ্চা তার জীবন নিয়ে সামনে এগিয়ে যায়, পেছনে থাকে মা তার একাকীত্ব নিয়ে। পরিচালক সুদেষ্ণা রায় আর অভিজিত্ গুহর ছবি ‘মায়ের বিয়ে’৷ আজকাল অনেক সন্তানই তাদের বাবা-মায়ের দ্বিতীয় পার্টনার খুঁজে পেতে, তাকে দ্বিতীয়বারের মত যুগল জীবনে প্রবেশ করতে উৎসাহ দিচ্ছে, পার্টনার খুঁজে পেতে সাহায্য করছে, এই কনসেপ্টের ওপর তৈরী করা এই সিনেমা। এই পরিচালকদ্বয়ের ছবিতে সবসময়ই থাকে কমিক রিলিফ৷ তারই মধ্যে সমাজ থেকে তুলে আনা নানা সিরিয়াস ইস্যু নিয়ে একটা মেসেজ তুলে ধরার চেষ্টাও থাকে৷ এবারও ফর্মুলা একই।
অসাধারণ একটা সিনেমার নাটকীয় সমাপ্তি হয় যেটির আদৌ কোন দরকার ছিলো না। “সুদক্ষিণার শাড়ি”র মত শেষের পনের মিনিট বাদ দিয়ে দিলে এটি উপভোগ্য একটি সিনেমা। মায়ের চরিত্রে শ্রীলেখা মিত্র, মেয়ের চরিত্রে সায়নি ঘোষ আরও অভিনয় করছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী৷
সত্যি হলেও গল্প (২০০৯)ঃ রুপসী বাংলা টিভির জন্যে বানানো সিনেমা, এতে অভিনয় করেছে ঋত্বিক চক্রবর্তী আর অপরাজিতা ঘোষদাস। এই সিনেমার মন্বত্বর সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে শ্রীপান্থর দায় বইখানি হতে। প্যারালাল সিনেমা দেখতে যারা ভালবাসেন তাদের ভাল লাগতে পারে এই সিনেমাটি। ঋত্বিক আর অপরাজিতা’র পরিমিত অভিনয় সিনেমাটিকে আরও শৈল্পিক করে তুলেছে।
জন্মদিন কথন ২০২০
Saturday, 27 June 2020
দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – ৮ {জুন}
Friday, 19 June 2020
আকাশ কেন ডাকে মন ছুটে যায়
Wednesday, 17 June 2020
কথানদী
আঞ্চলিক চারটি লোক কাহিনীর ওপর ভিত্তি করে তৈরী করা হয়েছে “কথানদী”। ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর তীর ঘেঁষা একটি গ্রামকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে এই কাহিনী। “আমিষ” এর পরিচালক ভাস্কর হাজারিকার প্রথম ছবি এটি। The River of Fables) (2015) আমার দেখা দ্বিতীয় আসামিজ ছবি এটি। চারটি মায়ের কাহিনী সমগতিতে গড়ায় এই সিনেমায়। একটা আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠেছিলো মনে, সিনেমা দেখতে বসে আর আগের মত কাঁদি না, ব্যথিত হই না, এখন জানি, এগুলো সিনেমা, মিথ্যে অভিনয়, সত্যি কিছু না। “কথানদী” সেই আত্মবিশ্বাস ভেঙে গুঁড়ো গুঁড়ো করে দিলো। The Conjuring, এক, দুই, তিন দেখে ভয় না পাওয়া মানুষ আমি, এই সিনেমার শেষের পনের মিনিট দেখতে মিনিমাম পাঁচটা ব্রেক নিয়েছি। মনস্থির করতে পারছিলাম না, দেখবো কি দেখবো না, নাকি শুধু শুনে নেবো। শরীর ঘেমে গেলো। যেহেতু অনুমান করতে পারছিলাম তাই সাহস করতে পারছিলাম না। তবুও বলবো, এত নৃশংসতা এত ডিটেইলে পর্দায় না দেখালেই কি নয়! মানুষ মেরে ফেলা এত সোজা! হবে হয়ত, সবাই কি আমার মত এত দুর্বল চিত্তের যে দেখতে হবে ভেবেই দিশেহারা।
লোককাহিনী একটা সময়ের একটা গোত্রকে উপস্থাপন করে, সে যুক্তিকে ধরলে, আমাদের লোভ, আমাদের অজ্ঞতা, আমাদের কুসংস্কার কত জন্মজন্মান্তরের ব্যাপার সেটা দেখে বিস্মিত হই। আমাদের এই কোনটার মত মনুষ্যহীনতা আর নৃশংসতা পৃথিবীর কোথাও খুঁজে পাওয়া হয়ত টাফ হবে। মায়ের মনে কত লোভ থাকলে অজগর সাপের মনি পাওয়ার লোভে মেয়েকে অজগরের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়। মেয়ে ঘর থেকে কান্না করে মা’কে ডাকছে আর মা বাইরে অপেক্ষা করছে, সোনা গয়নার। ঢেঁকিতে ফেলে সৎ মা কিশোরী মেয়ের মাথা কুঁটে ফেলেছে! কি করে সম্ভব। অথচ এই বয়সী মেয়ে আমার ঘরেও সারাবেলা নাচে, হাসে, ঘুরে বেড়ায়। কি নিষ্পাপ মুখগুলো। আবার সন্তানকে রক্ষা করার আকুলতায় চাচা শ্বশুরকে খুন করতে উদ্যত এক মা, সেই গল্পও আছে সিনেমাতে, আছে চালতা জন্ম দিয়ে, পরে মেয়েতে রুপান্তরিত হওয়ার লোকগাঁথাও।
ভাস্কর হাজারিকা আর লেখক অরূপা কালিটা পাটানগিয়া লিখেছেন চিত্রনাট্য, “আঞ্চলিক ভাষা” ক্যাটাগরীতে ভারতের তেষট্রিতম জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে এই সিনেমা। এছাড়াও দু’হাজার পনের সালের এশিয়ান সিনেমা ফান্ড’স পোস্ট প্রডাকশান ফান্ড এওয়ার্ড জেতে। বুসান, গোথেনবার্গসহ বিভিন্ন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দেখানো হয়েছে এই সিনেমা। Potlocker এ আছে, চাইলে দেখে নিতে পারেন।
তানবীরা
১৮/০৬/২০২০