Friday 2 October 2020

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – ২৮শে (সেপ্টেম্বর) সামনের তিন সপ্তাহের জন্যে পরীক্ষামূলক কড়া নিয়মনীতি

ওয়ার্ক ফ্রম হোম আর ঐচ্ছিক নয় এখন থেকে নিয়ম, রেস্টুরেন্ট - ক্যাফে সব দশটায় বন্ধ আর সব খেলাধূলা চলবে মাঠে দর্শকদের অনুপস্থিতিতে উইকএন্ডের আগে ভাবা হয়েছিলো শুধুমাত্র বড় শহরগুলোকে কড়া শৃংখলার মধ্যে আনা হবে, এখন গড়ে প্রতিদিন তিন হজার মানুষ করোনাক্রান্ত হচ্ছে, আজকের এই নিয়ম নীতির পরও ধারনা করা হচ্ছে আগামী সপ্তাহ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার লোক করোনাক্রান্ত হবে। তাই উনত্রিশে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পুরো দেশকেই এই নিয়মের আওতায় আনা হচ্ছে। আমরা ক্রমাগত ভাইরাসের পেছনে পরে যাচ্ছি, আমাদের উদ্দেশ্য ভাইরাসকে পেছনে ফেলে দেয়া। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানালেন, আজকের ডাটা অনুযায়ী প্রায় একশো হাজারের ওপর করোনাক্রান্ত রোগী, আরও সঠিক ভাবে বললে, প্রতি একশো সত্তর জনে একজন করোনাক্রান্ত। মানুষ নিয়মনীতি মেনে চলছে না, এই সংখ্যা শুধু তারই উদাহরণ মাত্র। এখন হয়ত গুরুতর মনে হচ্ছে না কিন্তু একমাস পর সেটা ঝড়ের মত মনে হতে পারে। গত সপ্তাহে গড়ে পঁচাশি জন আইসিইউতে ছিলো, এই সপ্তাহে আছে একশো বিয়াল্লিশ জন। আজকে যে নিয়মগুলো দেয়া হবে তারপরও আমরা জানি, মধ্য অক্টোবরে আইসিইউতে গুলোতে প্রায় চারশো রোগী থাকবে। আমি শুধু সংখ্যা বলছি আর সংখ্যার কোন চেহারা নেই কিন্তু এই সংখ্যার কারণেই অন্যান্য রোগের চিকিৎসা আটকে যাবে। চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পরলে সবাই সমস্যায় পরবো। নতুন নিয়মগুলো দিয়ে আমাদের লক্ষ্য, সংক্রমণ এক দশমিক চার থেকে একের নীচে নামিয়ে আনা। আজ থেকে যে পদক্ষেপটা শুরু হবে তার কার্যকারিতা জানার জন্যে আমাদের এক থেকে দেড় সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। সাংবাদিক জানতে চাইলেন তাহলে আপনি কি সিদ্ধান্ত নিতে দেরী করে ফেলেন নি? স্বাস্থ্যমন্ত্রী দ্যা হুগো জানালেন, না, বরং সংক্রমণ ঠেকানোর জন্যে অগ্রীম পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। জার্মানী সহ অনেক দেশেই বলা হচ্ছে, ভেন্টিলেশান সংক্রমণ রোধে সাহায্য করে, এই নিয়ে আপনারা কি ভাবছেন? স্কুল, বৃদ্ধাশ্রম, নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র সব জায়গার ভেন্টিলেশান সিস্টেম পরীক্ষা করা হচ্ছে, কি করে আরও ভাল করা যায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হোম অফিস ম্যান্ডেটরি, তারপরও যদি অফিস করা হয় এবং অফিস থেকে সংক্রমণ হয় তাহলে সে অফিস চৌদ্দ দিনের জন্যে বন্ধ করে দেয়া হবে। চল্লিশ জনের বেশি বাইরে জমায়েত হওয়া যাবে না, ত্রিশজনের বেশি ভেতরে জমা হওয়া যাবে না। চার জনের বেশি একসাথে হয়ে আড্ডা দেয়া যাবে না, সেটা বাইরে চল্লিশ জনের পার্টিই হোক আর ভেতরে ত্রিশ জনের পার্টিই হোক। বাসায় তের বছরের বড় তিন জনের বেশি মেহমান ডাকা যাবে না। ব্যতিক্রম, ছাত্রছাত্রীরা, উপসনালয়, ডেমোনস্ট্রেশান আর সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের ব্যাপারে শহরের মেয়র সিদ্ধান্ত নেবেন ব্যতিক্রম হবে কি হবে না। যাদুঘর, এমিউজমেন্ট পার্ক এসব জায়গায় দেড় মিটার দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন কতজন ঢুকতে পারবে তবে সেটা আগে থেকে রিজার্ভ করতে হবে। দোকানের ব্যাপারে তাদের নিজেদের দেখতে হবে মানুষ যেনো দেড় মিটার দূরত্বের মধ্যে চলাচল করতে পারে। আপাতত অতিরিক্ত সংক্রমনের কারণে আমস্টার্ডাম, রোটারডাম আর ডেনহাগে দোকানে থাকার সময় মাস্ক বাধ্যতামূলক। কাস্টমাররা মাস্ক না পরলে দোকানদার ইচ্ছে করলে তার দোকানে নাও ঢুকতে দিতে পারে। এওটি এর কাছে মাস্কের ব্যাপারে আরও তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। সুপারমার্কেটদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে দিনের মধ্যে দুবার আলাদা সময় নির্ধারণ করতে যখন শুধু বয়স্ক, অসুস্থ-দুর্বল স্বাস্থ্যের মানুষেরা বাজার সারবে, আমরা বুঝতে পারছি এটা কালকেই হয়ত সম্ভব নয় কিন্তু এটা করতে হবে, এটা দরকার। এবার ক্যাটারিং, আমি বলছি না তারা কিছু নিয়ম মানছে না বা ভুল করছে তারপরও এক-দেড়শো মানুষের সমাগম থেকে সংক্রমন হচ্ছে। কাল থেকে সব রেস্টুরেন্টে রাত ন'টার পর গেস্ট আসা বন্ধ আর দশটার মধ্যে সব বন্ধ করে দিতে হবে। রেস্টুরেন্টের থেকে এটা বেশি এলকোহলের জন্যে দরকার। খেলাধূলার জায়গায় ক্যান্টিন বন্ধ থাকবে এবং সমস্ত খেলাধূলায় বাইরের লোকের সমাগম বন্ধ থাকবে। আর রেস্টুরেন্টের মত, বডি ম্যাসাজ বা হেয়ার ড্রেসারের কাছে গেলেও এখন থেকে সব ডিটেলস লিখিত দিতে হবে। আমরা দেখছি এটি মিউনিসিপ্যালটির জন্যেও দরকার কিনা। আমরা জানি, এটি অনেকের জন্যেই খুব কঠিন একটি পরিস্থিতি, কিন্তু আপাতত এটিই বাস্তবতা, আমরা ব্যবসায়ী ও চাকুরীজীবিদের সাথে কথা বলবো, অর্থনৈতিক ভাবে কি করে ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়। নিয়মনীতি নিজ থেকে কাজ করবে না যদি আমরা এটি পালন না করি। ব্যবসায়ীদের যেমন দায়িত্ব থাকবে, ভোক্তাদেরও দায়িত্ব থাকবে নিয়ম মানার। এর অন্যথা হলে পুলিশ, মেয়র ব্যবসা বন্ধ করে দিতে পারে কিন্তু আমরা এত চাই না এত দূর কিছু আসুক। এই নিয়মগুলো সামনের তিন সপ্তাহের জন্যে প্রযোজ্য হবে। এটি একটি পরীক্ষামূলক মেয়াদ তারপর আবার নতুন নিয়ম আসবে। যদি পরীক্ষার ফলাফল ইতিবাচক নয় তাহলে জাতীয় নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে আঞ্চলিক নিষেধাজ্ঞায় যাওয়া হবে আর ফলাফল নেতিবাচক হলে ইন্টিলিজেন্ট লক ডাউনের কাছাকাছি প্রসিডিউরে ফিরে যেতে হবে। মোদ্দা কথা, আমরা সবাই ভাল করছি কিন্তু ভাইরাস আমাদের চেয়েও ভাল করছে তাই আমাদের পন্থা পরিবর্তন করতে হবে।

No comments:

Post a Comment