Thursday, 4 June 2020

প্রাপক: জাস্টিন ট্রুডো (প্রিয়তমেষু)

প্রতিদিন কি ভাল হতে ইচ্ছে করে! থাকে না কিছুদিন, যেদিন কোন কাজে মন লাগে না। মেইল ভর্তি কিউরি থাকে, প্রশ্ন থাকে, ইস্যুস থাকে, খুলে পড়তে ইচ্ছে করে না, মনে হয়, মরুক সব, আমার কি। টিম মিটিং এর সব আপডেট কানের এপাশ থেকে ওপাশে ঘুরে যায়, কানে ঢোকে না, এটেনশান থাকে না, মাঝে মাঝে বস জিজ্ঞাসাও করে, আর ইউ দেয়ার!
কোন কিছু ভাল লাগে না, ক্লান্ত লাগে। কাজ করতে ইচ্ছে করে না, কথা বলতে ইচ্ছে করে না, বই পড়তে ইচ্ছে করে না, মা হতে ইচ্ছে করে না। সবকিছু ছেড়ে অচেনা অসীমে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে, দুষ্ট হতে ইচ্ছে করে, স্বার্থপর হতে ইচ্ছে করে। কিন্তু হারাবো কোথায়! না, সেটাও জানি না। ইচ্ছেরাও তো ডানা মেলে ওড়া ভুলে গেছে।
শুক্রবার সপ্তাহের সবচেয়ে বেঈমান দিন, সিভিয়ার কনসেনট্রেশান প্রবলেম। সামনের দুদিন শনিবার-রবিবার এটাই কি এই চিত্ত চাঞ্চল্যের কারণ? সামনের আশাই মনের পেন্ডুলাম দুলিয়ে দেয়।
যেসব কথার কোন মানে হয় না, অর্থহীন সেসব কথা জড়ো করে বিশাল লম্বা একটা চিঠি লিখে ফেলতে ইচ্ছে করে না? মাঝে মাঝে সত্যিই করে না?
"এই বাস স্টপ, কেউ নেই, তুই ভেসে আসা গান
দলছুট পাখিদের, তুই হলি খোলা আসমান"

মার্ক রুতে

সফল ব্যবসায়ী ছিলেন তারপর দুই হাজার দুই থেকে সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদে আসীন, প্রভূত ক্ষমতা, ডুবে যাওয়া দলকে নেতৃত্ব দিয় সরাসরি সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা, তারপর দুই হাজার দশ থেকে একটানা "প্রাইম মিনিস্টার" অফ দ্যা রয়্যাল নেদারল্যান্ডস, ডাচ ভাষায় "প্রিমিয়ে কিংবা প্রিমেই"। থাকেন একটি ফ্ল্যাটে, আমি জানি না, কোন দেশের ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যক্তি ফ্ল্যাটে থাকেন কি না। নেদারল্যান্ডসে মুম্বাইয়ের মত পাঁচ হাজার স্কোয়ার ফিট বা মিটারের ফ্ল্যাট আছে বলে শুনি নি কখনো। ডাচ সংবাদ মাধ্যমের ভাষায়, মডেস্ট এপার্টমেন্টে থাকেন প্রিমেই। নিজেও টিভিতে বলেছেন, আমার ফ্ল্যাট খুব বড় নয়।

যদিও তার একটা পুরনো "Saab" গাড়ি আছে যেটি তিনি শুধুমাত্র তাড়াহুড়ো থাকলে (সময় বাঁচাতে কখনো সখনো) ব্যবহার করেন বলে জানা যায়, নিয়মিত সাইকেলেই অফিস করেন তিনি ।

কোন রকম সরকারী প্রটোকল তিনি তার ব্যক্তিগত জীবনে ব্যবহার করেন না। নিজের কফির দাম নিজেই দেন। দায়িত্ব পালনের সময় খরচ হওয়া যেকোন এমাউন্টের রিইমবার্স তিনি বিনয়ের সাথে প্রত্যাখ্যান করেন। নাচতে ভালবাসেন আর যেকোন কনসার্টে কিংবা পাব্লিক ইভেন্টে আর সকলের সাথে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন, নিজের টার্নের অপেক্ষা করেন।

তিপান্ন বছর বয়সী মার্ক রুতে, ইউরোপীয়ান নেতাদের মধ্যে বলতে গেলে জনপ্রিয় ও সবচেয়ে বেশীদিন ধরে দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি দৃঢ়ভাবে নিয়মানুবর্তীতা ও আইনের প্রতি আস্থা রাখেন এবং তা প্রতিদিন তার কর্ম ও ব্যক্তিগত জীবনে মেনে চলেন।

জীবনের বেশীর ভাগ সময় আমার নেদারল্যান্ডসে কেটে গেছে আর কর্মজীবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে ডাচ কোম্পানী ফিলিপ্সে। ব্যক্তি আমার পর্যবেক্ষণ বলে, "ক্ষমতার দম্ভ - হায়ার্কি - ফুটানি" জিনিসটা এদের জিনেই নেই। প্রাউড টু বি পার্ট অফ ডাচ সোসাইটি।

বাই উইকলি করোনা স্পীচে জর্জ ফ্লইয়েডের মৃত্যু নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি রুতে


জর্জ ফ্লইয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদে আমস্টার্ডামের ডাম স্কোয়ারে বিক্ষোভে পুলিশের বাঁধা দেয়া নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রিমেই বলেন, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ গনতান্ত্রিক দেশের মানুষের গনতান্ত্রিক অধিকার। সেটা দেড় মিটার সোশ্যাল ডিসটেন্স মেইনটেইন করেও করা যায়। সোমবারে যা হয়েছে আমস্টার্ডামে তা মেনে নেয়া যায় না। এখন আমস্টার্ডাম আর রটারডামে প্রটেস্ট চলছে জর্জ ফ্লইয়েডের মৃত্যু আর ডাচ পুলিশের বিরুদ্ধে।

জর্জ ফ্লইয়েডের মৃত্যু নিয়ে মার্কিন সরকারের সাথে কোন যোগাযোগ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে রুতে বলেন, না, তিনি যোগাযোগ করেন নি। আর এমন ঘটনা নেদারল্যান্ডসেও ঘটে, তিনি নিজেই জানেন। মানুষকে তার ভবিষ্যত দিয়ে বিবেচনা না করে, তার অতীত দিয়ে বিবেচনা করা হয়, মানুষকে তার সামনে থাকা জায়গা দিয়ে না দেখে ফেলে আসা দেশ, ধর্ম, বর্ণ, লিংগ ও অন্যান্য ক্রাইটেরিয়াতে ফেলে এই দেশেও বিবেচনা করা হয়।

সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেন, তিনি এই প্রটেস্টের মোর‍্যাল অনুভব করেছেন কি না? পুলিশ কেন তবে বাঁধা দিলো? জবাবে রুতে বলেছেন, তিনি মোর‍্যাল অনুভব করছেন কি না কিংবা তিনি একমত কি না, তিনি কি ভাবছেন, সেটা দিয়ে তো প্রটেস্ট চলতে পারে না। প্রটেস্ট হবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, এখানে তার মতামত কেন জরুরী? তাহলে কি জনগন তার দল ভিভিডি কিংবা ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে না? কিন্তু তিনি অবশ্যই করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রটেস্ট চান, এই ব্যাপারে কোন নিগোশিয়েশান হবে না। খ্রোনিংগেনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রটেস্ট এর উদাহরণ রয়েছে। এখন প্যান্ডেমিক চলছে, সবাইকে সেটা অনুধাবন করতে হবে।

কেন এমেরিকাতে কোন প্রতিবাদলিপি পাঠানো হলো না তার জবাবে রুতে বলেন, তার কাছে নেদারল্যান্ডস অনেক জরুরী। নেদারল্যান্ডস এখনো রেসিসিজম, ডিস্ক্রিমিনেশানের উর্ধ্বে উঠতে পারে নি। এখানে মানুষকে আজও এই কারনগুলো নিয়ে সাফার করতে হচ্ছে। এই ঘটনা তো শুধু এমেরিকাতেই ঘটছে না, তাই না? তিনি জর্জ ফ্লইয়েডের মৃত্যুকে আনএক্সেপ্টবল বলেছেন কিন্তু তিনি এমেরিকার সরকারকে কি করে তার দেশ পরিচালনা করতে হবে এই নিয়ে কোন উপদেশ দেবেন না কারণ নেদারল্যান্ডস নিজে এই সমস্যাগুলোর উর্ধ্বে এখনও উঠতে পারে নি। নেদারল্যান্ডসের নিজের সিস্টেমে অনেক গলদ রয়ে গেছে আর তাই এখানেও মানুষ এসমস্ত কারণে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে। মানুষকে তাদের সম অধিকারের জন্যে রেসিজিমের বিরুদ্ধে আজও এই নেদারল্যান্ডসেই সংগ্রাম করতে হচ্ছে।

নেদারল্যান্ডসের মানুষের প্রতিবাদে তার হাজার ভাগ সমর্থণ আছে কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি ভাঙা তিনি মেনে নেবেন না।

সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেন, তাহলে নেদারল্যান্ডসের এই সিস্টেম শোধরানোর ব্যাপারে তিনি বা তার সরকার কি করছেন? জবাবে রুতে বলেন, সর‍্যি, তাহলে আপনারা আমার কাজ ঠিক করে অনুসরণ করছেন না। আমি কত বার কত জায়গায় এই নিয়ে কথা বলেছি, তার ইয়ত্তা নেই। আমি আইনের পর আইন শোধরাতে পারি, জরিমানার ওপর জরিমানা দিতে পারি, নিয়ম কঠিন থেকে কঠিন করতে পারি কিন্তু দ্ব্যার্থ কন্ঠে বলতে চাই, নেদারল্যান্ডসে এই মনোভাব আনএক্সেপ্টবেল আর এই ধরনের মনোবৃত্তির মানুষ এই রাস্ট্রে কঠিন থেকে কঠিন সমস্যায় পরবে। কোন শুধরে যাওয়া পরিকল্পনায় এসব পরিবর্তন হয় না। দিনের পর দিন চর্চার মধ্যে দিয়ে পরিবর্তনের শুদ্ধতা আনতে হবে, আনতে হয়।

হ্যাটস অফ টু রুতে ওয়ান্স এগেইন।
04/06/2020

Saturday, 23 May 2020

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – ৬ {মে}

উনিশে মে প্রাই মিনিস্টার মার্ক রুতে জাতির উদ্দেশ্যে তার নিয়মিত বাই-উইকলি ভাষণ দিলেন, করোনা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়ন হওয়াতে, জুন মাস থেকেই নিয়ম আরও শিথিল করা হচ্ছে, যদিও বেসিক নিয়ম সব ঠিক থাকবে। তারপর শুরু হলো সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্ব। পরিস্থিতির যেহেতু উন্নতি হয়েছেই বলা হচ্ছে, নিয়ন্ত্রণে আছে সব, তাহলে কেন এত আস্তে আস্তে সব নিয়ম শিথিল করা হচ্ছে? কেন সব খুলে দেয়া হচ্ছে না? অর্থনীতি মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্ত, তার কি হবে?


প্রাই মিনিস্টার জানালেন, দ্বিতীয়বার আবার লকডাউনে যেতে হলে অর্থনৈতিক অবস্থা আরও খারাপ হবে তাই সর্তকতার সাথে দ্বিতীয় ধাপে সব কিছু শিথিল করা হচ্ছে। আগের পরিস্থিতি যেনো আর ফিরে না আসে।

পহেলা জুন থেকে মুভি, থিয়েটার, ক্যাফে, রেস্টুরেন্ট, কনসার্ট, মিউজিয়াম সব খোলা থাকবে তবে সোশ্যাল ডিসটেন্স মেইনটেইন করতে হবে। একই পরিবারের মানুষ হলে সোশ্যাল ডিসটেন্স মানার বাধ্যবাধকতা নেই। মুভি-থিয়েটারে যারা কাজ করে তারা বাদেই ত্রিশ জন যেতে পারবে। তবে সবই হতে হবে প্রি-রিজার্ভেশানের মাধ্যমে। স্বাস্থ্য নিয়ে যা যা তথ্য জানতে চাওয়া হবে, সবাই সত্যি সত্যি বলতে বাধ্য থাকবে। এটার নাম, চেক ইন্টারভিউ।

স্পোর্টস স্কুল প্রথম সেপ্টেম্বরের আগে খোলা যায় কি না সেটার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত জিম বন্ধ। ডিস্কোথেক, ক্লাব, পার্টি হল বন্ধ থাকবে, কারণ ওখানে সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি।

বাস, ট্রাম, ট্রেন সব পহেলা জুন থেকে স্বাভাবিক নিয়মে চলবে, চল্লিশ পার্সেন্ট ক্যাপাসিটি যার মানে শুধুমাত্র কাজের পারপাসে সবাই ব্যবহার করবে, ফান রাইড নয় এই আশা করা হচ্ছে। পনের দিন আগের ভাষনে যখন পাব্লিক ট্রান্সপোর্টে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক বলা হলো তখন বিরোধী দল থেকে সাধারণ জনগনের তুমুল সমালোচনায় পরেছিলো প্রাই মিনিস্টার। “মাস্ক” দ্বারা উপকার হয় এটার যেহেতু কোন ফাস্ট হ্যান্ড প্রমাণ মেলে নি তাহলে কেন মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক? পনের দিনের ব্যবধানে তাই প্রাই মিনিস্টার বলেছে, তের বছর বয়স থেকে পাব্লিক ট্রান্সপোর্টে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক নয়।

২রা জুন থেকে হাই স্কুল খুলবে কিন্তু হেঁটে, সাইকেলে অথবা স্কুলের গাড়িতে যেতে হবে, পাব্লিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করা যাবে না। ৮ই জুন থেকে প্রাইমারি স্কুল পুরোপুরি খুলে দেয়া হবে সাথে ডে কেয়ারও। গভঃমেন্ট এই সেক্টরের সাবসিডি বন্ধ করে দেবে। ১৫ই জুন থেকে মেডিক্যাল কলেজ, সাধারণ কলেজ সব খুলে দেয়া হবে।

সমস্ত বাচ্চা, আর অপ্রাপ্ত বয়স্কদের প্রিমিয়ে আলাদা ধন্যবাদ জানিয়েছেন, তাদের সহযোগিতার জন্যে। নেদারল্যান্ডসের সামনের জীবন কিভাবে যাবে সে নিয়ে তাদের আইডিয়া ও ক্রিটিক আহবান করা হয়েছে। সোসাইটি কিভাবে চলবে, নতুন গঠন কি হবে তা নিয়ে ভাবতে বলা হয়েছে।
ভবিষ্যত জীবন আর সমাজের রূপরেখা নিয়ে দেশের সবাইকেই ভাবতে বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী হুগো দ্যা ইয়ং বলেছেন, উপসর্গ দেখা দিলে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে স্বাস্থ্য দপ্তরে যোগাযোগ করতে, টেস্ট করা হবে, পজিটিভ এলে বাড়ির সবাই হোম কেয়ারন্টিনে থাকবে। স্বাস্থ্য দপ্তর ফোনে, চিঠিতে পরামর্শ দেবে। কেমন থাকে, কি অবস্থা, কি দরকার সেটা প্রতি নিয়ত স্বাস্থ্য দপ্তর ফলোআপ করবে।

হাসপাতাল, ওল্ডহোম, আর সব জায়গায় ২৫শে মে থেকে ভিজিটর এলাউড, যাদেরকে অলরেডি পারমিশান দেয়া হয়েছে, প্রতি রোগীর জন্যে একজন ভিজিটর। যেসব জায়গায় করোনা সংক্রমণ নেই সেসব জায়গায় ১৫ই জুন থেকে ভিজিটর এলাউড।

একটাই শর্ত ভীড় করা যাবে না কোথাও।

ঘরবন্দী থাকার এই সময়টাতে কি যেনো একটা কি মিশে ছিলো। অলরেডি এই সময়টাকে মিস করা শুরু করেছি। নির্দ্বিধায় বলা যায়, জুনের দুই তারিখ থেকে নেদারল্যান্ডস তার হারানো প্রাণস্পন্দন আবার ফিরে পাবে। তবে নিতান্ত নিরিবিলি এই সময়টা জীবনে নাম না জানা কিছু একটা খুব মূল্যবান উপহার মত যেনো রেখে গেলো।

তীরে এসে তরী ডুবল। মেঘ সিভিয়ার ডিপ্রেশানে আক্রান্ত। বসে আছি মেয়ে কোলে। আশাকরছি তরী তীরে ভিড়িয়ে নেবো।

২৩/০৫/২০২০





Wednesday, 20 May 2020

আমিষ

যারা যারা আমাকে "আমিষ" (২০১৯) নিয়ে রিভিউ লিখতে বলেছো, আমি এখানে মাংস খাওয়া-খাওয়ির ওপরে যেটা দেখলাম সেটা একটা নিটোল নিরবিচ্ছিন প্রেম কাহিনী। দুটো মানুষের প্রেম হতে একটা কিছু "কমন ফ্যাক্টর" লাগে হয়ত। এখানে সেটা ছিলো খাওয়া কিংবা মাংস খাওয়া। 

প্রথমে ভাবলাম  আনফেইফুলের (২০০২) দিকে যাবে। পরে  মনে হলো সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার পার্ফিউম (২০০৬) এর কিছুটা আভাস আছে।  
যদিও সবার রিভিউ পড়ে পড়ে আমি সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে মুভিটা দেখেছিলাম, আন্দেজের সারভাইভারদের নিয়ে বানানো সিনেমা এলাইভ (১৯৯৩) এর মত না আবার মরা মানুষের মাংস খেতে দেখায়। শেষ পর্যন্ত তার কাছাকাছি যেয়েই থেমেছে। 

যারা পরিচিত লাইনের বাইরে সিনেমা দেখতে পছন্দ করে কিংবা ডার্ক রোমান্টিক থীম পছন্দ করে তারা দেখতে পারে। অনেকের মতে সাউথ কোরিয়ান মুভি থার্স্ট এর অনুকরণ করা হয়েছে এতে। 

জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী ভাস্কর হাজারিকার পরিচালনায় মিষ্টি একটা সিনেমা, অসমীয়া ভাষার গান শুনেছি, সিনেমা এই প্রথম দেখলাম, দারুণ লেগেছে মেকিং। আমিষের অভিনেত্রী লিমা দাস জাস্ট গর্জেস। অনুরাগ কাশ্যপ তার নিজস্ব প্রোডাকশন হাউজ Phantom Films থেকে এই সিনেমার প্রচার করেছেন বলে সিনেমাটি সুধী সমাজে আরও আলাদা গুরুত্ব পেয়েছে। 

পরিশেষেঃ নিজের মাংস কেটে প্রেমিকাকে খাইয়ে দেবে, সেই প্রেম ও নাই, সেই প্রেমিকও নাই। বরং চুলের মুঠি ধরে খাবলা মেরে প্রেমিকার গালের মাংস খেয়ে ফেলবে এমন প্রেমিকই বাস্তব। প্রেমের তীব্রতা বোঝাতে নিজের শরীরের মাংস বা কাউকে খুন করে ফেলতে দ্বিধাহীন ব্যাপারটা এলেগোরিকাল। দিনের শেষ আমিষ একটা সিনেমাই। এত হাউকাউ এর কিছু নাই।

সিনেমার শেষ দৃশ্যটি মন কাড়া। পুরো সিনেমায় একান্তে যেখানে কেউ কাউকে স্পর্শ করে নি, সেখানে সবার সামনে দুজন দুজনের হাত ধরেছে। 




তানবীরা
২০/০৫/২০২০

Tuesday, 12 May 2020

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক – ৫ (মে)


ফাইন্যালি দ্যা রয়াল নেদারল্যান্ডস স্টেপ্স এহেড, দ্বিতীয় ধাপ শুরু --- হুরররা


প্রথম ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছে নেদারল্যান্ডস, সেই অর্থে বলতে গেলে মোটামুটি পুরো সেন্ট্রাল ইউরোপ। যত রেস্ট্রিকশান কমানো হবে ততো ইনফেক্টেড মানুষের সংখ্যা বাড়বে। হেলথ মিনিস্টার হুগো ডি ইয়োনগেন বললেন, সারা দেশে সতেরশো আইসিইউ বেড আছে এখন, যদিও সবাইকে সাবধান থাকতে বলা হয়েছে বারবার, দায়িত্বশীল আচরণ করতে বলা হয়েছে, নিজের জন্যে নয়, অপরের জন্যে। আস্তে আস্তে করোনার বাইরেও আরো যে সব গুরুত্বপূর্ণ অপারেশান আছে, চিকিৎসা আছে, সেগুলো শুরু করতে হবে। ডাচ গর্ভমেন্ট এই পরিস্থিতিকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছে, ১. বিস্ফোরণ পর্ব যা আমরা পার হয়ে এসেছি ২. উত্তরণ পর্ব যেটাতে আমরা এখন আছি, ৩. নিয়ন্ত্রণ পর্ব যেটাতে আমাদের যেতে হবে, এস্টিমেটেড টাইম পহেলা সেপ্টেম্বর। এখন আমরা পরবর্তী ধাপে এগোচ্ছি, স্ক্যান্ডিনেভিয়ায় বাচ্চাদের স্কুল খুলে দেয়া হয়েছে, আমরা স্ক্যান্ডেনেভিয়াকে ফলো করতে চাই তাই উইথ সাম স্পেশাল রেস্ট্রিকশান বাচ্চাদের প্রাইমারি স্কুল, ডে-কেয়ার এগুলো এগারোই মে থেকে খুলে দেয়া হয়েছে আর স্পেশাল কেয়ার স্কুল পুরোপুরি খুলে দেয়া হয়েছে।  

আইকিয়া সরকারী বিধি-নিষেধ মেনে নিজেদেরকে রিএরেঞ্জ করে অবশেষে এপ্রিলের শেষে খুলেছে। রেস্টুরেন্ট-খাবার দোকান, ক্যাফে, মুভি, থিয়েটারে সর্বোচ্চ ত্রিশ জন পর্যন্ত ইনক্লুডেড ওয়ার্কাস এগারোই মে থেকে খুলেছে। তবে আগে থেকে রিজার্ভ করতে হবে, এবং রিজার্ভেশানের সময় জিজ্ঞেস করা হবে, সর্দি, হাঁচি, কাশি, জ্বর আছে কিনা, এবং সবাই সত্যি উত্তর দেবে এই আশা করা হচ্ছে। ইন এনি কাইন্ড অফ সিকনেস, স্টে এট হোম। পহেলা জুন থেকে মুভি, রেষ্টুরেন্ট ইত্যাদি একশো জন এটেন্ড করতে পারবে। অবশেষে এগারোই মে থেকে হেয়ার ড্রেসার, বিউটি পার্লার, নেল সেলুন, ফিজিওথেরাপি, আকুপাংচার, অপটিশিয়ান, লাইব্রেরী, মিউজিয়াম সব খুলছে, ওয়ান এন্ড হাফ মিটারের সোশ্যাল ডিসটেন্সের ভিত্তিতে। আউটডোর স্পোর্টস এলাউড তবে পহেলা জুলাই পর্যন্ত বাড়িতে গোসল করতে হবে। ইনডোর স্পোর্টস, জিম, ফিটনেস সম্ভবত পহেলা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। সবকিছু পরিকল্পনা মত ঠিকঠাক চললে তবে, তৃতীয় ধাপে আগানো হবে, সব নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপর। পহেলা জুন থেকে সবাই টেস্ট করাতে পারবে। আঠারোই মে থেকে পুলিশ, বাস-ট্রেন চালক, টিচার, যারা লোকের সান্নিধ্যে নিয়ে কাজ করে তারা টেস্ট করাতে পারবে। এগারোই মে থেকে, ওল্ডহোম, হসপিটাল ভিজিটর এলাউ করবে। হেলথ মিনিস্টার বলেছেন, স্বাস্থ্যখাতকে তিন গুন বড় করা হয়েছে, সামনের সময়কে সামলানোর জন্যে।

ইউরোপের অনেক দেশেই ইনফেশকানের কার্ভ নীচে নামাতে, পরিস্থিতি খানিকটা স্টেবল হওয়াতে, আস্তে আস্তে রেস্ট্রিকশান কমানোর যে ধাপ সরকার নিচ্ছে, ডব্লু-এইচ-ও তাতে হুশিয়ারি দিয়ে বলেছে, প্রথম ধাক্কা গেছে, সামারে আসবে দ্বিতীয় ধাক্কা, তৃতীয় ধাক্কার জন্যেও সবাইকে প্রস্তূত হতে হবে। যতদিন কার্যকারী ভ্যাকসিন হাতে না আসছে, ততদিন ইমুনিটি ভরসা তবে আশার কথা এই, সেকেন্ড –থার্ড ওয়েভে সংক্রমণের সম্ভাবনা কিছুটা কম। যদিও ভাল আবহাওয়ার কারণে সেভাবে “স্টে এট হোম” অনেক ডাচেরা ধরতে গেলে একদমই মানে নি। পার্কে বার্বিকিউ, পিকনিক, হৈ চৈ হয়েই যাচ্ছিলো। পুলিশ এসেছে, জরিমানা করেছে কিন্তু তারপর আবার যে কে সেই। তারপরও পিক সামারে বাইরে বের হওয়া বাড়বেই বাড়বে, সেদিকটার জন্যে এখন থেকেই সবাইকে প্রস্তূত হতে হবে। প্রতিবার সামারে বন্ধুরা প্রত্যেকেই বাড়ি যায় বা অন্য কোথাও বেড়াতে যায়, এবারের সামার হবে (আপাতত আমার দেখা) একটা ব্যতিক্রমী সামার ভ্যাকেশান যে আমরা সবাই হল্যান্ডে থাকবো, কোথাও যাবো না কারণ যেতে পারবো না। বাড়ি যাই কিংবা বেড়াতে যাই এর মধ্যেও বন্ধুরা সবাই সবাই মিলে প্রতিবার পিকনিক কিংবা বার্বিকিউ করি, এবার সেটাও হবে না। নেদারল্যান্ডস বর্ডার কখনো বন্ধ করে নি কিন্তু অন্যদেশ করেছে। তারা বর্ডার না খুললে হয়ত এবার নেদারল্যান্ডসের ভেতরেই কোথাও ছুটি কাটাতে হবে। পহেলা জুন থেকে দেড় মিটার সোশ্যাল ডিসটেন্স মেইনটেইন বাইরে টেরাসে বসা যাবে আর, পহেলা জুলাই থেকে ক্যাম্পিং, ভ্যাকেশান পার্ক এগুলো খুলে দেয়া হবে। 


“করোনা” সহসা ওভার হওয়ার সম্ভাবনা নেই, প্রিমিয়ে বারবার ওয়ার্ক ফ্রম হোম বলেই যাচ্ছে। আমরা ডিসেম্বর পর্যন্ত মানসিক প্রস্তূতি নিয়েছি। এটিকে পার্মানেন্ট হোম অফিস সেট করেছি। অফিস থেকে বলা হয়েছে, সোশ্যাল ডিসটেন্স মেইনটেইন করে টিম ভাগ করে রোস্টার দেয়া হবে। এক সপ্তাহ এই টীম অফিসে আসবে তো পরের সপ্তাহে ঐ টীম। তবে এই রোস্টার কতটুকু কার্যকর হবে কে বলতে পারে, অনেকেই পাব্লিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে অফিস আসতো আর এসময় সেটাতে তারা এখন আগ্রহী না। অফিস কাউকে আসতে বাধ্যও করতে পারবে না। সরকারও পাব্লিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহারে কাউকে উৎসাহী করছে না যদিও পহেলা জুন থেকে স্বাভাবিক নিয়মে সব ট্রেন-বাস চলবে বলে বলা হয়েছে, তবে পাব্লিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করলে দেড় মিটার সোশ্যাল ডিসটেন্স মেইনটেইন করা কষ্টকর হবে বিধায় মাস্ক ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক বলা হয়েছে। নইলে জরিমানা হবে। মাস্কের কথা বলায় প্রিমিয়েকে বিরাট সমালোচনা করেছেন খিয়ার্ট উইলডার্স, তার মতে, মাস্ক দিয়ে কোন উপকার হয়েছে, কোথাও তো বলা হয় নি তাহলে মাস্ক কেন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে?

প্রিমিয়ে রুতে তার ভাষণে লেছেন, “হাতের নাগালে সবকিছু থাকায় আজকাল এত দ্রুত খবর ছড়িয়ে যায় আর তার চেয়ে অনেক দ্রুত মানুষ তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে, কিন্তু সব ধরনের ব্যতিক্রমের পেছনে কিছু কারণও থাকে। যত সামনের দিকে আমরা এগুবো তত নানারকম নতুন সমস্যার মুখোমুখি হবো, সবকিছুর সমাধান আমার হাতের কাছে নেই। প্রতিদিনের সমস্যা প্রতিদিন আমাদেরকে পরিস্থিতির সাথে সমাধান খুঁজে দেখতে হবে। প্রতিটি মিউনিসিপ্যালটিকে তার এলাকার পার্ক, শপিং সেন্টার এসবের দায়িত্ব নিতে হবে, লোকজনের ভীড়ের দায়িত্ব তাদের। পাব্লিক ট্রান্সপোর্ট কে নানাভাবে রিএরেঞ্জ করা হয়েছে, কম মানুষ যেহেতু এক বারে ট্রেনে বা বাসে চড়তে পারবে তাই বেশি বেশি বাস আর ট্রেন চলাচল করবে, সারাদেশের মানুষদের খাবার-দাবার ইত্যাদি পৌঁছে দিতেও লজিস্টিক কর্মীরা নিবেদিত প্রাণ ছিলেন তাই তারা এক্সট্রা ধন্যবাদ তো পেতেই পারেন। দ্বিতীয় ধাপ আরও কঠিন, প্রত্যেককে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে তবেই প্রথম সেপ্টেম্বর থেকে আমরা তৃতীয় ধাপে যেতে পারবো। স্টে এট হোম, ওয়ার্ক ফ্রম হোম,  ভীড় না করা, অসুস্থ হলে বাসায় থাকো, দেড় মিটার সোশ্যাল ডিসটেন্স মেইনটেইন, নিয়ম করে হাইজিনিক থাকা কে আপাতত নর্ম হিসেবে দেয়া হয়েছে।“

সোশ্যাল ডিসটেন্সিং এর মিসইউজ করলে বা ইন্টিলিজেন্ট লকডাউনের মিসইউজ করলে প্রাপ্ত বয়স্কদের তিনশো নব্বই ইউরো জরিমানা করা হবে সাথে পাঁচ বছরের ক্রিমিন্যাল রেকর্ড মেইনটেইন করা হবে যা তার ক্যারিয়ারে প্রভাব ফেলতে পারে। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জরিমানা হবে পঁচানব্বই ইউরো আর ওদের কোন ক্রিমিন্যাল রেকর্ড থাকবে না।


ডাচ সুপার মার্কেটে জিনিসের দাম স্টেবল আছে বা একই আছে কিন্তু চায়নীজ বা ইন্ডিয়ান গ্রোসারীতে শাক সব্জির প্রায় ডাবল দাম তবুও পাওয়া যাচ্ছে এটাই সান্ত্বনা। প্লেন চলাচল বন্ধ হয়ত জাহাজে আসছে, কেন এত দাম কে জানে। সাধারণতঃ ঝিংগা, বেগুন এগুলো পাঁচ ইউরো কিলো রাখে, শিভামনি দশ ইউরো করে কিলো রাখলো। ওরিয়েন্টাল থেকে মাগুর, রূপচাঁদাও প্রায় ডাবল দামেই আনলাম। চিংড়ি আর টার্কিশ শপে মাংসের দাম একই আছে।

আশাকরছি দ্বিতীয় ধাপ সফল ভাবে শেষ করে আমরা তৃতীয় ধাপও শুরু করবো। কিন্তু মানুষের মনের এই যে ভয়, এটি কতদিনে যাবে কে জানে। সব বন্ধ ছিলো সেটাই স্বাভাবিক লাগছিলো, এই যে সব খুলে দেয়া হবে এটাই এখন অস্বাভাবিক আর খানিকটা ভীতিকর লাগছে।

তানবীরা
১০/০৫/২০২০

এক নজরে কিছু চলচিত্রের চালচিত্র – এক

সিনেমা হয়ে উঠতে পারতো কিন্তু উঠেনিঃ

অসুর (২০২০) খাপছাড়া চিত্রনাট্যর ভিত, অবাস্তবতা। কিগান মান্ডি, বোধিসত্ত্ব ও অদিতি- তিন বন্ধুর সম্পর্কের চড়াই উতরাই এই ছবি। ১৫ বছর পরে কিগান আর্ট কলেজের প্রফেসর এবং বোধি বড় ব্যবসায়ী। অদিতি বোধির স্ত্রী এবং কিগানের বন্ধু, একমাত্র কাঁধ। আর এই কিগানের উদাসীন শিল্পীসত্ত্বা ও অদিতির প্রতি নির্ভরশীলতাই বোধির সঙ্গে অদিতির বৈবাহিক সম্পর্কে চিড় ধরিয়েছে। বিশ্বের সবথেকে বড় দুর্গা বানানোর চ্যালেঞ্জ নেয় কিগান, সাহায্য করে অদিতি। বাবার সঙ্গে কথা বলে, বোধির বিপরীতে দাঁড়িয়ে কিগানের পাশে মহীরুহ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়না। দেশপ্রিয় পার্কের ঘটনাকে আবেগের মায়াজালে বুনতে চেয়েছিলেন পরিচালক। তবে যুক্তিতে কম পড়ল। ভিড়, স্ট্যা্ম্পেড কিংবা কর্পোরেট- রাজনৈতিক যোগসাজস প্রতিটা রসদ থাকা সত্ত্বেও সেগুলো কাজে লাগল না। প্রাণহীন থেকে গেল। কোলকাতার অনেক পত্রিকা এই সিনেমার ভূয়সী প্রশংসা করলেও আমি বলবো, জিৎ, নুসরত জাহান, আবির চট্টোপাধ্যায় এর অভিনয়ে বিরাট একটা জগাখিচুরীর নাম অসুর। তবে সিনেমায় একটা ম্যসেজ আছে, আপনি যদি সরকারী উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করেন আর তারা আপনার দাবী না মানে, তারপর আত্মহত্যা করে ফেললে অবশ্যই আপনার দাবী তারাই আবার মেনে নেবেন। দাবী আদায় করার থাকলে আত্মহত্যার নাটক করা যেতে পারে।

ক্রিসক্রস (২০১৮)ঃ তারকাবহুল এই সিনেমায় কোন সেরকম গল্প নেই। তবে কোলকাতা বাংলা সিনেমার এ সময়ের মোটামুটি সব তারকাকে একসাথে দেখে ফেলতে চাইলে এই সিনেমাটি দেখে নিতে পারেন। আর একটু যত্নশীল হলে ২০১৩ সালে লেখা "সাদামাটা" উপন্যাসের ততোধিক সাদামাটা চলচ্চিত্রায়ন না-ও হতে পারত! পরিচালক বিরসা দাসগুপ্ত বোধহয় ওভার কনফিডেন্ট ছিলেন। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের অতি ব্যবহার একঘেয়েমি লেগেছে। দিনের শুরুর সব সমস্যা দিনের শেষে যেভাবে সমাধান হয়ে গেলো, জিনি তাতে চাকুরীতে ইস্তফা দিয়ে সমুদ্রের নীচে আবার হয়ত মুখ লুকালো।

রবিবার (২০১৯)ঃ অতনু ঘোষ পরিচালিত সিনেমাটিতে প্রথমবার একসঙ্গে অভিনয় করছেন জয়া আহসান ও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। আদতে রোম্যান্টিক থ্রিলার 'রবিবার'। তাঁদের দুজনের অতীত সম্পর্ক নিয়েই সিনেমা। হঠাৎ এক রবিবার আবার দেখা হয় এই দুই চরিত্রের। গল্প বলার বিরাট একটা স্কোপ ছিলো এই সিনেমায়। খানিকটা রোমান হলিডে কনসেপ্টের এই সিনেমায় অনেক কিছু দেখানো যেতো, কিন্তু এক জায়গায় গিটটু লেগে রইলো সারাবেলা। জয়ার অভিনয় খুবই টিপিক্যাল ছিলো, শুদ্ধ বাংলায় বললে, ক্লান্তিকর, একঘেয়ে, ন্যাকা। ভালবাসার শহর, বিসর্জনের সেই জয়াকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় নি। ভুরু কুঁচকে, সেই মনোটোনাস ভঙ্গীতে রাগ দেখিয়ে কথা বলার এই স্টাইলটা এখন খুব পুরনো, জয়ার অন্যকিছু ভাবা দরকার। প্রসেনজিৎ অসাধারণ অভিনয় করেছে, বুম্বাদার থেকে প্রসেনজিতে উত্তরণ লক্ষ্যনীয়। তবে গল্পে কোন চমক নেই, সময় নষ্ট, টাকা নষ্ট টাইপ মুভি।

আরশিনগর (২০১৫)ঃ অভিনেত্রী অপর্ণা সেনকে আমার যত না পছন্দ তারচেয়ে অনেক বেশি পছন্দ আমার পরিচালক অপর্ণা সেনকে। তার পরিচালনায় সবচেয়ে বাজে (আজ অব্ধি) ছবি বোধহয় এটি। সেক্সপীয়ারের “রোমিও জুলিয়েট” এর ভারতীয় সংস্করণ। বিশাল তারকাবাহিনী নিয়ে বানানো এই সিনেমার রোমিও হলো দেব! তারপরও দাঁতে দাঁত চেপে মুভি শেষ করেছি, শুরু করলে শেষ করতে হয় এই হাইপোথিসিস এর কারণে। এক বন্ধু বললো, দেব নাকি এখন ভারতের এম।পি। শুনে মনে হলো, ভারতের পার্লামেন্টের অবস্থা বোধহয় বাংলাদেশ থেকে বেশি সুবিধাজনক না। যারা যারা এম।পি শুনছি তাতে ভিরমি খাওয়ার যোগাড়।