Monday 14 December 2020

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক - চৌদ্দই ডিসেম্বর

দ্যা করোনা ডায়রী অফ তাতা ফ্র্যাঙ্ক - চৌদ্দই ডিসেম্বর গায়ে হলুদ, নবান্ন উৎসব, বইমেলার আয়োজনে ব্যস্ত বাংলাদেশ আর ইউরোপ ক্রিসমাসে পার্শিয়াল থেকে পুরোপুরি লকডাউনে যাচ্ছে। বেলজিয়াম লকডাউনে আছে আর জার্মানী যেহেতু যাচ্ছে, ক্রিসমাস কেনাকাটার জন্যে নেদারল্যান্ডস-জামার্ন-বেলজিয়াম বর্ডারে থাকা ডাচ আউটলেটগুলোতে প্রচন্ড ভীড় হচ্ছে, জার্মান গাড়ির কিউ শহরে প্রায় যানজটের উপক্রম করছে তাই ডাচ সরকারও লকডাউনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে (বেসরকারী খবর)। আপাতত জার্মানী দশই জানুয়ারী পর্যন্ত লকডাউনে যাচ্ছে তাই নেদারল্যান্ডসও উনিশে জানুয়ারী পর্যন্ত লকডাউনের ঘোষনা দিয়েছে। করোনা শুরু হওয়ার পর এই প্রথম নেদারল্যান্ডস পুরোপুরি লকডাউনে যাচ্ছে। ডাচ’রা যেনো বেলজিয়ামে শপিং করতে না যায় সেজন্য বেলজিয়ান মন্ত্রীও হুঁশিয়ারি দিয়েছে। বড়লোকদের এই চক্করে,এই গরীব মায়ের “মেয়ের জন্মদিন” আয়োজনটা ভেসে গেলো। সংক্রমণ সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়েছে। আজ রাত থেকেই লকডাউন কার্যকর হবে যাতে কেনাকাটার জন্যে মানুষজন কাল দোকানে যেতে না পারে আর সংক্রমণ বেড়ে না যায়। এই শুনে কয়েকটি শহরে সাথে সাথে দোকান সন্ধ্যা ছয়টার পরিবর্তে নয়টা পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ড্রেন্টে তারমধ্যে অন্যতম। সকাল থেকে ডাচ মিডিয়াতে শুধু লকডাউনের চর্চা, হেয়ার সেলুনে ভীড় বেড়েছে, উটরেক্টের রাস্তায় বাড়তি পুলিশ দেয়া হয়েছে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে। প্রিমিয়ে রুতেঃ এ বছরে অনেকে এত কিছু হারিয়েছে যে আমরা এবার সত্যি অনুভব করছি, একজনের কাছাকাছি অন্যজনের থাকা কত জরুরী। এক মিলিয়নের বেশী অন্যান্য অপারেশান এ বছর পেছাতে হয়েছে। করোনাক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ত্রিশ হাজার মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে যার মধ্যে ছয় হাজার আইসিইউ পেশেন্ট ছিলো, এই ছয় হাজার আইসিইউ পেশেন্টের মধ্যে আড়াই গুন মানুষ ছিলো যাদের বয়স পঞ্চাশের নীচে। আর আইসিইউতে সেবা না পেলে এই ছয় হাজার মানুষও মারা যেতো। দিনরাতের এই অক্লান্ত সেবা দানের জন্যে আবারও সব স্বাস্থ্য ও সেবাকর্মীকে ধন্যবাদ জানালেন জাতির পক্ষ থেকে। সব রকম স্কুল থেকে ইউনিভার্সিটি ষোলই ডিসেম্বর থেকে আঠারোই জানুয়ারী পর্যন্ত অনলাইনে চলবে। যেসব বাচ্চারা পড়াশোনায় দুর্বল, যাদের ফাইন্যাল ইয়ার, যাদের আলাদা সাহায্য দরকার তাদের জন্যে আলাদা ব্যবস্থা। পুলিশ, সেবা ও স্বাস্থ্যকর্মী, বাস-ট্রেনের চালক ইত্যাদি পেশা আর বিশেষ শিশু ছাড়া সবার জন্যে ডেকেয়ার বন্ধ থাকবে। বেকারী, সুপার মার্কেট, মাংসের দোকান, ঔষধের দোকান, ওপেন মার্কেট, লন্ড্রী, চশমার দোকান, মেডিক্যাল স্টোর এগুলো খোলা থাকবে। “নন এসেনসিয়াল” সব দোকান কাল থেকে বন্ধ। অনলাইন শপিং। বাকি ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দেয়া হবে, যত বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, প্রণোদনাও ততো বেশিই দেয়া হবে। যারা কর্মচারীদের বেতন দিতে পারবে না, তাদেরকে এন ও ডব্লু এর আন্ডারে সাবসিডির আবেদন করতে বলা হয়েছে। হোটেল খোলা থাকলেও রুম সার্ভিস, আর রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে। মিউজিয়াম, থিয়েটার, সিনেমা, চিড়িয়াখানা, হেয়ার সেলুন, নেল সেলুন, স্পা, ক্যাসিনো, সাওনা বন্ধ থাকবে। লাইব্রেরীতে বসে পড়া যাবে না তবে বই আনা-নেয়া করা যাবে। দাঁতের ডাক্তার, গাইনী আর ফিজিও খোলা থাকবে। ব্যাঙ্ক, মিউনিসিপ্যালটি অফিস আর মৃতদেহ সৎকার কেন্দ্র খোলা থাকবে। চব্বিশ, পঁচিশ আর ছাব্বিশে ডিসেম্বর তের বছরের ওপর তিন জন গেস্ট এলাউড। পরিবারের বাইরে দুজনের বেশি বাইরেও হাঁটা যাবে না তবে সেটাও দেড় মিটার দূরত্ব রাখতে হবে। খেলাধূলার স্কুল, জিম, সুইমিংপুল সহ সব ধরনের ইন্ডোর এক্টিভিটি বন্ধ থাকবে, আঠারো বছর পর্যন্ত দল বেঁধে আউটডোর স্পোর্টস চলতে পারে। আঠারোর ওপরে কোন টিম স্পোর্টস হবে না, ম্যক্সিমাম দুজন দেড় মিটার দূরত্বে প্র্যাক্টিস করতে পারে। কোন প্রতিযোগিতা, গ্রুপ লেসন চলবে না। মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত অদরকারী ট্রাভেল বাদ। যারা এই মুহূর্তে নেদারল্যান্ডসে আসতে চাইছে তাদের নিষেধ করা হচ্ছে। ইউরোপের বাইরে থেকে কেউ আসতে চাইলে "করোনা নেগেটিভ" সার্টিফিকেট দেখাতে হবে। প্রিমিয়ে রুতে তার অফিসে বসে স্পীচ দিচ্ছিলেন,লকডাউনের বিরুদ্ধে বাইরে এত ডেমোনেস্ট্রেশান আর প্রটেষ্ট হচ্ছিলো যে আওয়াজ টিভির পর্দা কাঁপিয়ে দিচ্ছিলো। বারোই জানুয়ারী দুই হাজার একুশে আবার প্রেস কনফারেন্স হবে, প্রিমিয়ে রুতে আর ভাইস প্রিমিয়ে হুগো তখন নতুন ব্যবস্থা জানিয়ে দেবেন।

No comments:

Post a Comment